কুমিল্লায় বললেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা
পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে জনগণের সিদ্ধান্তই সরকার বাস্তবায়ন করবে
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৮:৪২:৫৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ৪২ বার পড়া হয়েছে
যুব ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে অন্য আরেকটি রাষ্ট্রের সাথে চোখে চোখ রেখে মাথা উচু করে কথা বলতে চাই, চোখ নিচু করে নয়। আমরা জাতীয় স্বার্থের জন্য কথা বলতে চাই, দলীয় স্বার্থের জন্য নয়। এতোদিন ভারত শুধু একটি দলের সাথে কথা বলতো, এখন আর সেই সুযোগ নেই। এখন কথা বলতে হবে এদেশের জনগণের সাথে। পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে জনগণ যে সিদ্ধান্ত নিবে, সেটি এই সরকার বাস্তবায়ন করবে। সুতরাং জনগণের বুকে গুলি চালিয়ে, জনগণকে হত্যা করে বাংলাদেশকে আগ্রাসনের শিকার করে এতোদিন যে প্র্যাকটিস তারা করে এসেছে, সেখান থেকে তাদের সরে আসতে হবে।
মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় কুমিল্লা টাউন হল মাঠে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আয়োজনে জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদদের স্পিরিটকে ধারণ করে দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসমুক্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠন ও রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্যে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মতবিনিময় সভায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় সমন্বয়কদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন-আব্দুল কাদের, আবু বাকের মজুমদার, সুমাইয়া আক্তার, হামযা মাহবুব, জিয়া উদ্দিন আয়ান, আলী আহমেদ আরাফ, আবু রায়হান, তাছনিয়া নাওরিন, মহিদুল ইসলাম রিন্তু, ফারিয়া রহমান, খালেদ হাসান, নাঈম আবেদিন প্রমুখ।
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ আরও বলেন, বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনভাবে তাদের মত প্রকাশ করতে চায়, বিলাসিতা চায় না। যে মৌলিক অধিকার রয়েছে, সেগুলো নিশ্চিত হয়ে শান্তিতে-সুখে বসবাস করতে চায়। কিন্তু একটা দীর্ঘ ফ্যাসিবাদের শাসনের যাত্রার ফলে আমরা এমনভাবে স্পৃষ্ট হয়েছি যে ফেসবুকে একটা পোস্ট দিতে গেলে দশবার ভাবা লাগত। গান গেয়ে, কবিতা লিখে জেল খাটতে হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বিগত ৫৩ বছরে এমন কোন বন্যা দেখাতে পারবেন না যেখানে ত্রাণ চুরির ঘটনা ঘটেনি। এবার কিন্তু এরকম একটা ঘটনাও ঘটেনি। চাল চুরি করে, ত্রাণ চুরি করে, খাটে লুকিয়ে রাখার ঘটনা একটাও ঘটেনি। প্রবাসী ভাইয়েরা আমাদের দেশের অর্থনীতিকে সচল রেখেছেন, এয়ারপোর্টে তাদের কীভাবে লাঞ্ছিত করা হতো, তাদের লাগেজ আটকে রেখে তাদেরকে কীভাবে কষ্ট দেওয়া হত, এখন আর সেটা নেই।
আসিফ বলেন, আপনারা দেখেছেন বিআরটিএ-সহ সরকারি অফিসগুলো জনগণকে ঘুরাতো, কষ্ট দিত, ঘুরিয়ে তাদের কাছ থেকে ঘুস আদায় করত। এখন আর কেউ কি সেই সাহস দেখাচ্ছে? সেটি যেন আর কেউ ভবিষ্যতেও সাহস না দেখায় আমরা সেই সংস্কারে কথা বলছি। সেই কাঠামোগত সংস্কার কিভাবে হবে তা আমরা ২১ জন যারা সরকারে বসেছি সেটি আমরা ঠিক করব না, সেটি নির্ধারণ করবে এদেশের জনগণ। শুধুমাত্র বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনই নয় অন্যান্য সংগঠন যারা আছে, সাধারণ মানুষ যারা আছে- সবার কথা আমরা শুনবো।
বর্তমান ছাত্র সমাজ রাজনীতি করবে কি না প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রাজনীতি করা কিংবা না করা এটা সকলেরই ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত এবং অধিকারের প্রশ্ন। কিন্তু রাজনৈতিক সচেতনতা সকলের মধ্যে থাকতে হবে। এটা না থাকায় দীর্ঘ সময় ধরে ফ্যাসিবাদের শাসিত হয়েছি। আমরা অতীতে ৫ আগস্টের মত একবারও এক হতে পারিনি। আমরা যখনই এক হতে চেষ্টা করেছি বিভিন্ন ইস্যু দিয়ে বিভিন্নভাবে আলাদা করে রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে শহীদের তালিকা করা হচ্ছে। অনেককেই বেওয়ারিশভাবে দাফন করা হয়েছে। কবর দেওয়া হয়েছে। ৫ আগস্টের পরে অনেক প্রমাণ লোপাট করা হয়েছিল, তা আমাদের খুঁজে পেতে একটু সময় লাগছে।
পরে তিনি কুমিল্লা সার্কিট হাউসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদদের পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ করেন।