ঢাকা ১২:২৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

‘নতুন বছর অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রেরণা জোগাবে’

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৭:০৮:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৪ ৮৩ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলা নতুন বছর- ১৪৩১ আমাদের জঙ্গিবাদ, মৌলবাদ, উগ্রবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রেরণা জোগাবে । রোববার( ১৪ এপ্রিল) বাংলা নববর্ষ উপলক্ষ্যে বাণীতে তিনি এ কথা বলেন ।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, শুভ নববর্ষ- ১৪৩১ । বাংলা নববর্ষের এই দিনে দেশবাসীসহ সব বাঙালিকে আমি জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন ।

তিনি বলেন, পহেলা বৈশাখ এটি সর্বজনীন উৎসব । এইদিন নতুন বছরকে বরণ করে নেওয়া হয়। আবহমান কাল ধরে ধর্ম- বর্ণ নির্বিশেষে সমগ্র জাতি এই উৎসব পালন করে আসছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাঙালির চিরায়ত ঐতিহ্যে ‘ পহেলা বৈশাখ ’ বিশেষ স্থান দখল করে আছে । বাংলা নববর্ষ পালনের সূচনা হয় মূলত মুগল স ¤ ্রাট আকবরের সময় থেকে । কৃষিকাজের সুবিধার্থে স ¤ ্রাট আকবর ‘ ফসলি সন ’ হিসেবে বাংলা সন গণনার যে সূচনা করেন, তা কালের পরিক্রমায় সমগ্র বাঙালির কাছে অসা ¤ প্রদায়িক চেতনার স্মারক উৎসবে পরিণত হয়েছে । পহেলা বৈশাখ বাঙালিয়ানার প্রতিচ্ছবি । এই উদ্যাপন আমাদের শেকড়ের সন্ধান দেয়, এর মধ্য দিয়ে খুঁজে পাওয়া যায় জাতিসত্তার পরিচয় ।

তিনি বলেন, বাঙালির জীবনে পহেলা বৈশাখ এক অনন্য উৎসব। পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে যেমন লোকজ- সংস্কৃতি প্রাণ ফিরে পায়, তেমনি দেশের ব্যবসা- বাণিজ্যেও গতি আসে ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পহেলা বৈশাখ পূর্ণপ্রাণ নিয়ে অবারিতভাবে বেড়ে ওঠার বাতায়ন । এটি ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতিকে ধারণ ও লালন করতে শেখায় । অসাম্প্রদায়িকতার চর্চা ও অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পহেলা বৈশাখ আমাদের মনে আনে নতুন তেজ । একারণেই আমরা দুর্বার প্রতিরোধে রুখে দিতে পেরেছি পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক অপশক্তিকে, যারা বাঙালির ঐতিহ্য নস্যাৎ করতে চেয়েছিল ।

তিনি বলেন, আত্মপরিচয় ও স্বীয় সংস্কৃতির শক্তিতে বলিয়ান হয়ে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আমরা ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম মুক্তির সংগ্রামে । সংস্কৃতি ও রাজনীতির মিলিত স্রোত পরিণত হয়েছিল স্বাধিকার ও স্বাধীনতার লড়াইয়ে । এভাবেই স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটেছে বিশ্বের বুকে । ’

ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি লালনের মাধ্যমে বিশ্বসমাজে বাঙালি শ্রেষ্ঠ জাতি হয়ে উঠবে বলে আশা প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ এরই ধারাবাহিকতায় ইউনেস্কো ২০১৬ সালে পহেলা বৈশাখের ‘ মঙ্গল শোভাযাত্রা’কে বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে । নববর্ষের- এ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি সারাবিশ্বের বাঙালির জন্য নিঃসন্দেহে বিরাট অর্জন । ’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অসা ¤ প্রদায়িক, উদারনৈতিক, জাতীয়তাবাদী ও গণতন্ত্রের ভাবাদর্শে আজীবন যে সংগ্রাম করে গেছেন তার মূলমন্ত্র জাতিগত ঐতিহ্য ও অহংকার । একারণেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন এবং দেশ পুনর্গঠনে কাজ করেছে তাঁর অভিন্ন চেতনা । আমরা বীরের জাতি, এ জাতিকে কেউ দাবিয়ে রাখতে পারবে না ।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আসুন আমরা পুরনো বছরের গ্লানি, দুঃখ- বেদনা, অসুন্দর ও অশুভকে ভুলে গিয়ে নতুন প্রত্যয়ে, নতুন উদ্যমে সামনের দিকে এগিয়ে চলি । আসুন আমরা সুখী, শান্তিময়, আনন্দপূর্ণ বাংলাদেশ গড়ে তুলি । বাংলা নববর্ষ ১৪৩১ এই হোক আমাদের অঙ্গীকার ।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

‘নতুন বছর অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রেরণা জোগাবে’

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৭:০৮:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৪

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলা নতুন বছর- ১৪৩১ আমাদের জঙ্গিবাদ, মৌলবাদ, উগ্রবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রেরণা জোগাবে । রোববার( ১৪ এপ্রিল) বাংলা নববর্ষ উপলক্ষ্যে বাণীতে তিনি এ কথা বলেন ।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, শুভ নববর্ষ- ১৪৩১ । বাংলা নববর্ষের এই দিনে দেশবাসীসহ সব বাঙালিকে আমি জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন ।

তিনি বলেন, পহেলা বৈশাখ এটি সর্বজনীন উৎসব । এইদিন নতুন বছরকে বরণ করে নেওয়া হয়। আবহমান কাল ধরে ধর্ম- বর্ণ নির্বিশেষে সমগ্র জাতি এই উৎসব পালন করে আসছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাঙালির চিরায়ত ঐতিহ্যে ‘ পহেলা বৈশাখ ’ বিশেষ স্থান দখল করে আছে । বাংলা নববর্ষ পালনের সূচনা হয় মূলত মুগল স ¤ ্রাট আকবরের সময় থেকে । কৃষিকাজের সুবিধার্থে স ¤ ্রাট আকবর ‘ ফসলি সন ’ হিসেবে বাংলা সন গণনার যে সূচনা করেন, তা কালের পরিক্রমায় সমগ্র বাঙালির কাছে অসা ¤ প্রদায়িক চেতনার স্মারক উৎসবে পরিণত হয়েছে । পহেলা বৈশাখ বাঙালিয়ানার প্রতিচ্ছবি । এই উদ্যাপন আমাদের শেকড়ের সন্ধান দেয়, এর মধ্য দিয়ে খুঁজে পাওয়া যায় জাতিসত্তার পরিচয় ।

তিনি বলেন, বাঙালির জীবনে পহেলা বৈশাখ এক অনন্য উৎসব। পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে যেমন লোকজ- সংস্কৃতি প্রাণ ফিরে পায়, তেমনি দেশের ব্যবসা- বাণিজ্যেও গতি আসে ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পহেলা বৈশাখ পূর্ণপ্রাণ নিয়ে অবারিতভাবে বেড়ে ওঠার বাতায়ন । এটি ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতিকে ধারণ ও লালন করতে শেখায় । অসাম্প্রদায়িকতার চর্চা ও অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পহেলা বৈশাখ আমাদের মনে আনে নতুন তেজ । একারণেই আমরা দুর্বার প্রতিরোধে রুখে দিতে পেরেছি পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক অপশক্তিকে, যারা বাঙালির ঐতিহ্য নস্যাৎ করতে চেয়েছিল ।

তিনি বলেন, আত্মপরিচয় ও স্বীয় সংস্কৃতির শক্তিতে বলিয়ান হয়ে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আমরা ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম মুক্তির সংগ্রামে । সংস্কৃতি ও রাজনীতির মিলিত স্রোত পরিণত হয়েছিল স্বাধিকার ও স্বাধীনতার লড়াইয়ে । এভাবেই স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটেছে বিশ্বের বুকে । ’

ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি লালনের মাধ্যমে বিশ্বসমাজে বাঙালি শ্রেষ্ঠ জাতি হয়ে উঠবে বলে আশা প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ এরই ধারাবাহিকতায় ইউনেস্কো ২০১৬ সালে পহেলা বৈশাখের ‘ মঙ্গল শোভাযাত্রা’কে বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে । নববর্ষের- এ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি সারাবিশ্বের বাঙালির জন্য নিঃসন্দেহে বিরাট অর্জন । ’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অসা ¤ প্রদায়িক, উদারনৈতিক, জাতীয়তাবাদী ও গণতন্ত্রের ভাবাদর্শে আজীবন যে সংগ্রাম করে গেছেন তার মূলমন্ত্র জাতিগত ঐতিহ্য ও অহংকার । একারণেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন এবং দেশ পুনর্গঠনে কাজ করেছে তাঁর অভিন্ন চেতনা । আমরা বীরের জাতি, এ জাতিকে কেউ দাবিয়ে রাখতে পারবে না ।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আসুন আমরা পুরনো বছরের গ্লানি, দুঃখ- বেদনা, অসুন্দর ও অশুভকে ভুলে গিয়ে নতুন প্রত্যয়ে, নতুন উদ্যমে সামনের দিকে এগিয়ে চলি । আসুন আমরা সুখী, শান্তিময়, আনন্দপূর্ণ বাংলাদেশ গড়ে তুলি । বাংলা নববর্ষ ১৪৩১ এই হোক আমাদের অঙ্গীকার ।