আবু সাইদ হত্যা মামলা
দুই আসামীকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৮:৪৭:৩১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ৪৬ বার পড়া হয়েছে
রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাইদকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় প্রধান দুই আসামী এএসআই আমীর আলী কন্সটবল সুজন চন্দ্র রায়কে বৃহসপতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) সন্ধা ৬টায় রংপুর মেট্রোপলিটান ম্যাজিষ্ট্রেট তাজহাট আমলী আদালত ২ এর বিচারক আসাদুজ্জামানের আদালতে হাজির করা হয়। শুনানী শেষে তাদের দুই আসামীকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
এদিকে, ৪ দিনের রিমান্ডে নিয়ে একদিন আগেই তড়িঘড়ি আদালতে হাজির করে তাদের স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি না নিয়ে আদালতে হাজির করিয়ে কারাগারে পাঠানোর পিবিআইয়ের কর্মকান্ড নিয়ে বাদী পক্ষের আইনজিবীরা সন্দেহ ও বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। তারা গুলি করার নির্দ্দেশ দাতাসহ অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারে কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় তীব্র ক্ষোভ ও অসেন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় মামলার শুনানী শুরু হলে মামলার তদন্তকারী পিবিআই পুলিশ সুপার জাকির হোসেন আদালতে লিখিত ভাবে জানান আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে অনেক তথ্য পাওয়া গেছে। আসামীদের একজন অসুস্থ হয়ে পড়ায় চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী তাদের আপাতত রিমান্ডে রাখার প্রয়োজন নেই মর্মে তাদের কারাগারে পাঠানোর আবেদন জানান। এ সময় আদালতে কোর্ট ইন্সপেক্টর পৃথিশ কুমার জানান তারা অসুস্থ বিধায় তাদের কারাগারে পাঠানোর আবেদন করা হয়েছে। উভয় পক্ষের শুনানী শেষে আদালত আসামী পক্ষের কোন আইনজিবী আছে কিনা জানতে চান আসামীরা তাদের কোন আইনজিবী নেই জানালে আদালত দুই আসামীকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ প্রদান করেন। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশের বিশাল বহরের নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে সন্ধা পৌনে ৭ টায় প্রিজন ভ্যানে করে রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
এদিকে, নিহত শিক্ষার্থী আবু সাইদ হত্যা মামলার বাদী তার বড় ভাই রমজান আলীর আইনজিবী রায়হানুল ইসলাম এ্যাডভোকেট মামলার তদন্তকারী পিবিআই পুলিশ সুপারের তদন্তে অবহেলা ও সন্দেহ প্রকাশ করে অভিযোগ করেন পিবিআই আসামী দুই পুলিশ সদস্যকে গ্রেফতার করে মঙ্গলবার আদালতে নেয়ার সময় ৫ দিনের রিমান্ডে নেবার আবেদন করে। আদালতে দুই আসামী ঘটনার সাথে পুলিশের কোন কোন কর্মকর্তা তাদের নির্দ্দেশ দিয়েছিলো গুলি করার তার নাম বলার চেষ্টা করেছে। সেই সাথে ছাত্রলীগসহ ও বেরোবির বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা কর্মচারী জড়িত ছিলো তাও বলছিলো। আদালতের দেয়া রিমান্ডের ৪ দিনের স্থলে ৩দিনের মাথায় বৃহসপতিবার আদালতে দুই আসামীকে হাজির করেছে। তারা নতুন করে রিমান্ডের আবেদন করেনি এমনকি আসামীরা আদালতে ঘটনা সম্পর্কে যেসব কথা বলেছে কারা তাদের নির্দ্দেশ দিয়েছে আর কারা কারা ছিলো তাদের নাম বলেছে এ বিষয় গুলো আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি গ্রহন করা উচিত ছিলো যা মামলার জন্য গুরুত্বপূর্ণ আইনগত বিষয় হিসেবে কাজ করতো। এসব কিছুই না করে ৪ দিনের রিমান্ড শেষ হবার একদিন আগে তড়িঘড়ি করে আদালতে হাজির করে কারাগারে পাঠানোর আবেদন তদন্ত কারী পিবিআই কর্মকর্তার আমাদের বিস্মিত ও হতবাক করেছে। তিনি বলেন আমরা এসব কর্মকান্ডে আবু সাইদ হত্যা মামলার তদন্তকারীদের তদন্ত করা নিয়ে আমাদের মাঝে সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে যা তাদের কর্মকান্ডে স্পষ্ঠ হচ্ছে।
তিনি বলেন, আসামীদের ১৫ দিনের রিমান্ডে নেয়ার বিধান আছে সে কারনে আগামী রোববারের মধ্যে তাদের আবারো রিমান্ডের আবেদন না করা হলে আমরা পিবিআইয়ের তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে আবেদন করে তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তনের আবেদন করবো বলে জানান ।
একই অভিযোগ করেন বাদী পক্ষের অপর আইনজিবী শামীম আল মামুন এ্যাডভোকেট তিনি বলেন আমরা মামলা দায়ের করার পর আদালত বলেছিলো মামলায় যেসব পুলিশের উচ্চ পদস্থ পুলিশ কর্মকর্তা আছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য কিন্তু এখন পর্যন্ত ডিসি মারুফ, সহকারী কমিশনার আরিফ হোসেন, আল ইমরান ওসি রবিউলের বিরুদ্ধে কোন বিভাগীয় ব্যাবস্থা নেয়া হয়নি বরং আসামীরা প্রকাশ্যই ঘুরে বেড়াচ্ছে। এ ছাড়া মামলায় আরও অজ্ঞাত ৩০/৩৫ জনের কথা উল্লেখ করা হয়েছিলো আজ পর্যন্ত কাউকেই গ্রেফতার করা হয়নি। তারা অবিলম্বে সকল আসামীদের গ্রেফতার করার দাবি জানান।