ঢাকা ০২:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চাকরি হারালেন ইউনিয়ন ব্যাংকের ২৬২ কর্মকর্তা

চট্টগ্রাম ব্যুরো
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ১২:০৯:১৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪ ১০ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

শিল্প গ্রুপ এস আলমের নিয়ন্ত্রণাধীন সাবেক সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক (এসআইবিএল)’র পর এবার চাকরিচ্যুত হলেন ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসির ২৬২ জন কর্মকর্তা।

সোমবার (১৮ নভেম্বর) ব্যাংকটির এসভিপি ও এইচআরডি ইনচার্জ মো. কবিরুল হাসান স্বাক্ষরিত চিঠিতে এসব চাকরিচ্যুতির আদেশের চিঠি ২৬২ জন কর্মকর্তার কাছে পৌঁছে দেয়া হয়। চাকরিচ্যুতরা অধিকাংশ চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার বলে জানা গেছে।

চাকরিচ্যুতির চিঠিতে বলা হয়, নিয়োগ পরিসমাপ্তি ধারার শর্তে, আপনার পরিষেবা বন্ধ করা হয়েছে। ব্যাংক থেকে আপনার পরিষেবা বন্ধ করা সত্ত্বেও, আপনার চাকরির সময়কালে আপনার কাজ, ভুল, অবহেলা বা কোনো ত্রুটির কারণে ভবিষ্যতে ব্যাংকের যেকোনো ধরনের ক্ষতি বা ক্ষতির জন্য আপনি দায়ী থাকবেন। এ ধরনের ক্ষতি ব্যাংক থেকে আপনার সমাপ্তির পরে স্পষ্ট হয়ে উঠতে পারে।

ইউনিয়ন ব্যাংকের এসভিপি ও এইচআরডি প্রধান মো. কবিরুল হাসান চাকরিচ্যুতির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসি নবগঠিত পরিচালনা পর্ষদের অষ্টম সভা গত ১৭ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় পর্ষদের সব সদস্যবৃন্দের উপস্থিতিতে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সম্মানিত চেয়ারম্যান মু. ফরীদ উদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় ব্যাংকের ব্যবসা বাণিজ্য বিষয়ে বিশদ আলোচনা করা হয়। এবং ইউনিয়ন ব্যাংকের প্রতি সর্বস্তরের জনগণ আস্থা রাখায় ধন্যবাদ জ্ঞাপন এবং ব্যাংকের ব্যয় সংকোচন কমাতে ২৬২ জন কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুতির ব্যাপারে সর্বসম্মতিক্রমে নীতিগতভাবে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এদিকে, বেশ কয়েকজন চাকরিচ্যুত হওয়ার ইউনিয়ন ব্যাংক কর্মকর্তার কাছ থেকে পাওয়া টার্মিনেশন লেটারে দেখা যায়, চলতি বছরের ৪ এপ্রিল তাদের দেয়া অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটারের ধারা অনুযায়ী তাদের ১৮ নভেম্বর থেকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।

অপরদিকে, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী থেকেও ২১৪ কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করার গুঞ্জন উঠেছে। এ ছাড়াও এস আলমের নিয়ন্ত্রণে থাকাকালীন আরও কয়েকটি ব্যাংকও এখন কর্মী ছাঁটাইয়ের পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে।

সম্প্রতি সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের চাকরিচ্যুত ৫৭৯ জন কর্মকর্তার কর্মকর্তাদের অধিকাংশের বাড়ি চট্টগ্রামের পটিয়ায়।

অভিযোগ রয়েছে, পরীক্ষা ছাড়াই তাদের নিয়োগ দিয়েছিলেন এস আলম গ্রুপ। নিয়োগপ্রক্রিয়া আইনসম্মত ছিল না।

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ২৭ আগস্ট ইউনিয়ন ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেয়া হয়। নতুন করে এ ব্যাংকের প‌রিচালনা পর্ষদ গঠন করে দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। একই দিনে এস আলম গ্রুপের দখলে থাকা গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকসহ মোট তিন ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে নতুন পরিচলনা পর্ষদ গঠন করা হয়।

ইউনিয়ন ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে দিয়ে নতুন ৫ পরিচালক নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। নতুন নিয়োগ পাওয়া পাঁচ পরিচালকরা হলো- ইসলামী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মু. ফরীদ উদ্দীন আহমদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক মো. হুমায়ুন কবীর, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুল আলম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অব ব্যাংকিং অ্যান্ড ইনস্যুরেন্সের অধ্যাপক ড. শহিদুল ইসলাম জাহীদ এবং চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট শেখ জাহিদুল ইসলাম। এর মধ্যে ইউনিয়ন ব্যাংকে চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন মু. ফরীদ উদ্দীন আহমদ।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

চাকরি হারালেন ইউনিয়ন ব্যাংকের ২৬২ কর্মকর্তা

সংবাদ প্রকাশের সময় : ১২:০৯:১৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪

শিল্প গ্রুপ এস আলমের নিয়ন্ত্রণাধীন সাবেক সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক (এসআইবিএল)’র পর এবার চাকরিচ্যুত হলেন ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসির ২৬২ জন কর্মকর্তা।

সোমবার (১৮ নভেম্বর) ব্যাংকটির এসভিপি ও এইচআরডি ইনচার্জ মো. কবিরুল হাসান স্বাক্ষরিত চিঠিতে এসব চাকরিচ্যুতির আদেশের চিঠি ২৬২ জন কর্মকর্তার কাছে পৌঁছে দেয়া হয়। চাকরিচ্যুতরা অধিকাংশ চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার বলে জানা গেছে।

চাকরিচ্যুতির চিঠিতে বলা হয়, নিয়োগ পরিসমাপ্তি ধারার শর্তে, আপনার পরিষেবা বন্ধ করা হয়েছে। ব্যাংক থেকে আপনার পরিষেবা বন্ধ করা সত্ত্বেও, আপনার চাকরির সময়কালে আপনার কাজ, ভুল, অবহেলা বা কোনো ত্রুটির কারণে ভবিষ্যতে ব্যাংকের যেকোনো ধরনের ক্ষতি বা ক্ষতির জন্য আপনি দায়ী থাকবেন। এ ধরনের ক্ষতি ব্যাংক থেকে আপনার সমাপ্তির পরে স্পষ্ট হয়ে উঠতে পারে।

ইউনিয়ন ব্যাংকের এসভিপি ও এইচআরডি প্রধান মো. কবিরুল হাসান চাকরিচ্যুতির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসি নবগঠিত পরিচালনা পর্ষদের অষ্টম সভা গত ১৭ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় পর্ষদের সব সদস্যবৃন্দের উপস্থিতিতে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সম্মানিত চেয়ারম্যান মু. ফরীদ উদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় ব্যাংকের ব্যবসা বাণিজ্য বিষয়ে বিশদ আলোচনা করা হয়। এবং ইউনিয়ন ব্যাংকের প্রতি সর্বস্তরের জনগণ আস্থা রাখায় ধন্যবাদ জ্ঞাপন এবং ব্যাংকের ব্যয় সংকোচন কমাতে ২৬২ জন কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুতির ব্যাপারে সর্বসম্মতিক্রমে নীতিগতভাবে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এদিকে, বেশ কয়েকজন চাকরিচ্যুত হওয়ার ইউনিয়ন ব্যাংক কর্মকর্তার কাছ থেকে পাওয়া টার্মিনেশন লেটারে দেখা যায়, চলতি বছরের ৪ এপ্রিল তাদের দেয়া অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটারের ধারা অনুযায়ী তাদের ১৮ নভেম্বর থেকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।

অপরদিকে, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী থেকেও ২১৪ কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করার গুঞ্জন উঠেছে। এ ছাড়াও এস আলমের নিয়ন্ত্রণে থাকাকালীন আরও কয়েকটি ব্যাংকও এখন কর্মী ছাঁটাইয়ের পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে।

সম্প্রতি সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের চাকরিচ্যুত ৫৭৯ জন কর্মকর্তার কর্মকর্তাদের অধিকাংশের বাড়ি চট্টগ্রামের পটিয়ায়।

অভিযোগ রয়েছে, পরীক্ষা ছাড়াই তাদের নিয়োগ দিয়েছিলেন এস আলম গ্রুপ। নিয়োগপ্রক্রিয়া আইনসম্মত ছিল না।

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ২৭ আগস্ট ইউনিয়ন ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেয়া হয়। নতুন করে এ ব্যাংকের প‌রিচালনা পর্ষদ গঠন করে দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। একই দিনে এস আলম গ্রুপের দখলে থাকা গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকসহ মোট তিন ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে নতুন পরিচলনা পর্ষদ গঠন করা হয়।

ইউনিয়ন ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে দিয়ে নতুন ৫ পরিচালক নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। নতুন নিয়োগ পাওয়া পাঁচ পরিচালকরা হলো- ইসলামী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মু. ফরীদ উদ্দীন আহমদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক মো. হুমায়ুন কবীর, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুল আলম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অব ব্যাংকিং অ্যান্ড ইনস্যুরেন্সের অধ্যাপক ড. শহিদুল ইসলাম জাহীদ এবং চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট শেখ জাহিদুল ইসলাম। এর মধ্যে ইউনিয়ন ব্যাংকে চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন মু. ফরীদ উদ্দীন আহমদ।