ঢাকা ০৮:৩৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কদর বাড়ছে গোলের গুড়ের

উত্তম কুমার হাওলাদার, পটুয়াখালী
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৮:০২:৩৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ মার্চ ২০২৪ ১০৯ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

পিঠা-পায়েসে অন্য গুড়ের চেয়ে গোলের গুড়ের আলাদা স্বাদ। তাই দিনদিন গোলের গুড়ের চাহিদা বাড়ছে। ক্রেতারাও চাহিদা মতো গোলের গুড় কিনতে বাজারে ভিড় করেছেন। মোটকথা পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় গোলের গুড়ের বাজার এখন জমজমাট। তবে ক্রেতাদের চাপে ব্যস্ত সময় কাটাতে হচ্ছে ব্যবসায়ীসহ গুড় তৈরির কারিগরদের। গোল গাছের সংগৃহীত রস থেকে বছরে এ উপজেলায় প্রায় ৩ কোটি টাকার গুড় বিক্রি হয় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে থেকে জানা গেছে।

কিন্তু গুড় প্রস্তুতকারকরা বলছেন, সুষ্ঠু বাজার ব্যবস্থাপনা না থাকার কারণে তারা ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তবে অতি মিষ্টি এ গুড়ের পরিচিতি এক সময় এলাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও বর্তমানে এটি বেশ বাণিজ্যিক প্রসারতা লাভ করেছে।

স্থানীয়রা জানান, পতিত জমিতে বেড়ে ওঠা গোল গাছ থেকে শীত মৌসুমের শুরুর দিকে গোলের রস সংগ্রহ করা হয়। প্রতিদিনই সূর্য ওঠার সাথে সাথে কলশ নিয়ে বগানে গোল গাছে রস সংগ্রহ করতে বেড়িয়ে পরে চাষিরা। এরপর সেই রস টিনের তাপালে আগুনে ফুটিয়ে তৈরি করে গুড়। এ উপজেলার নীলগঞ্জ, মিঠাগঞ্জ, চাকামইয়া ইউনিয়নের ৩০০ পরিবার এ গুড় উৎপাদনে সাথে জড়িত রয়েছে। তাদের জীবিকার একটি অংশ গোলের গুড় থেকে আসে। এখানকার গোলের গুড় খুবই সুস্বাদু এবং চাহিদা সম্পন্ন। স্থানীয়রা এ গোলের গুড় তৈরি করে মৌসুমভিত্তিক বাড়তি উপার্জনের সুযোগ পান। বিশেষ করে এখন খেজুর গাছসহ তাল ও গোলের গাছের সংখ্যা কমে গেছে। তাই গুড় উৎপাদন কম হচ্ছে এমনটাই জানিয়েছেন গোল চাষিরা।

নীলগঞ্জ ইউনিয়নের নবীপুর গ্রামের সুনিতি বলেন, বিয়ের পর থেকেই বছরের এ সময়ে রস ফুটিয়ে গুড় তৈরি করি। আগে অনেক বেশি গুড় হতো। এখন কমে গেছে। একই গোল চাষি নিঠুর হাওলাদার বলেন, এখন বাজারে গিয়ে গুড় বিক্রি করতে হয় না। একশ্রেণির খুচরা বিক্রেতা বাড়ি এসেই গুড় নিয়ে যান। প্রতি কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে।

অপর এক চাষি পরিমল হাওলাদার জানান, তার প্রায় ৩০০ গোল গাছ থেকে প্রতিদিন ৮-১০ কলস রস সংগ্রহ করেন। সেখান থেকে দৈনিক ২৫ থেকে ৩০ কেজি গুড় তৈরি করে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করছেন।

গুড় ক্রেতা আনসার উদ্দিন বলেন, অন্য গুড়ের চেয়ে গোলের গুড় আলাদা স্বাদযুক্ত, সাশ্রয়ী হওয়ায় এবং দীর্ঘদিন সংরক্ষনে রাখা যায় বলে গোলের গুড়ের ব্যাপক চাহিদা। গুড়ের বাজারে গুড় ক্রয় করতে আসা মরিয়ম বেগম বলেন, গোলের গুড়ের পিঠা বা পায়েস অতি সুস্বাদু। তিনিও ৩ কেজি গুড় কিনেছেন বলে জানান।

কলাপাড়া ব্যবসায়ী সমিতির অর্থ সম্পাদক মো.নুরুজ্জামান খালাশি বলেন, গোলের গুড়ের চাহিদা বেশি। তাই বাজারে ক্রেতাদেরও ভীড় থাকে।

বন বিভাগের মহিপুর ভারপ্রাপ্ত রেঞ্জ কর্মকর্তা আবুল কালাম জানান, পরীক্ষামূলকভাবে বেশ কয়েকটি স্থানে গোলগাছের বীজ রোপণ করা হয়েছে। এতে ব্যাপক সফলতা পেয়েছি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

কদর বাড়ছে গোলের গুড়ের

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৮:০২:৩৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ মার্চ ২০২৪

পিঠা-পায়েসে অন্য গুড়ের চেয়ে গোলের গুড়ের আলাদা স্বাদ। তাই দিনদিন গোলের গুড়ের চাহিদা বাড়ছে। ক্রেতারাও চাহিদা মতো গোলের গুড় কিনতে বাজারে ভিড় করেছেন। মোটকথা পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় গোলের গুড়ের বাজার এখন জমজমাট। তবে ক্রেতাদের চাপে ব্যস্ত সময় কাটাতে হচ্ছে ব্যবসায়ীসহ গুড় তৈরির কারিগরদের। গোল গাছের সংগৃহীত রস থেকে বছরে এ উপজেলায় প্রায় ৩ কোটি টাকার গুড় বিক্রি হয় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে থেকে জানা গেছে।

কিন্তু গুড় প্রস্তুতকারকরা বলছেন, সুষ্ঠু বাজার ব্যবস্থাপনা না থাকার কারণে তারা ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তবে অতি মিষ্টি এ গুড়ের পরিচিতি এক সময় এলাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও বর্তমানে এটি বেশ বাণিজ্যিক প্রসারতা লাভ করেছে।

স্থানীয়রা জানান, পতিত জমিতে বেড়ে ওঠা গোল গাছ থেকে শীত মৌসুমের শুরুর দিকে গোলের রস সংগ্রহ করা হয়। প্রতিদিনই সূর্য ওঠার সাথে সাথে কলশ নিয়ে বগানে গোল গাছে রস সংগ্রহ করতে বেড়িয়ে পরে চাষিরা। এরপর সেই রস টিনের তাপালে আগুনে ফুটিয়ে তৈরি করে গুড়। এ উপজেলার নীলগঞ্জ, মিঠাগঞ্জ, চাকামইয়া ইউনিয়নের ৩০০ পরিবার এ গুড় উৎপাদনে সাথে জড়িত রয়েছে। তাদের জীবিকার একটি অংশ গোলের গুড় থেকে আসে। এখানকার গোলের গুড় খুবই সুস্বাদু এবং চাহিদা সম্পন্ন। স্থানীয়রা এ গোলের গুড় তৈরি করে মৌসুমভিত্তিক বাড়তি উপার্জনের সুযোগ পান। বিশেষ করে এখন খেজুর গাছসহ তাল ও গোলের গাছের সংখ্যা কমে গেছে। তাই গুড় উৎপাদন কম হচ্ছে এমনটাই জানিয়েছেন গোল চাষিরা।

নীলগঞ্জ ইউনিয়নের নবীপুর গ্রামের সুনিতি বলেন, বিয়ের পর থেকেই বছরের এ সময়ে রস ফুটিয়ে গুড় তৈরি করি। আগে অনেক বেশি গুড় হতো। এখন কমে গেছে। একই গোল চাষি নিঠুর হাওলাদার বলেন, এখন বাজারে গিয়ে গুড় বিক্রি করতে হয় না। একশ্রেণির খুচরা বিক্রেতা বাড়ি এসেই গুড় নিয়ে যান। প্রতি কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে।

অপর এক চাষি পরিমল হাওলাদার জানান, তার প্রায় ৩০০ গোল গাছ থেকে প্রতিদিন ৮-১০ কলস রস সংগ্রহ করেন। সেখান থেকে দৈনিক ২৫ থেকে ৩০ কেজি গুড় তৈরি করে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করছেন।

গুড় ক্রেতা আনসার উদ্দিন বলেন, অন্য গুড়ের চেয়ে গোলের গুড় আলাদা স্বাদযুক্ত, সাশ্রয়ী হওয়ায় এবং দীর্ঘদিন সংরক্ষনে রাখা যায় বলে গোলের গুড়ের ব্যাপক চাহিদা। গুড়ের বাজারে গুড় ক্রয় করতে আসা মরিয়ম বেগম বলেন, গোলের গুড়ের পিঠা বা পায়েস অতি সুস্বাদু। তিনিও ৩ কেজি গুড় কিনেছেন বলে জানান।

কলাপাড়া ব্যবসায়ী সমিতির অর্থ সম্পাদক মো.নুরুজ্জামান খালাশি বলেন, গোলের গুড়ের চাহিদা বেশি। তাই বাজারে ক্রেতাদেরও ভীড় থাকে।

বন বিভাগের মহিপুর ভারপ্রাপ্ত রেঞ্জ কর্মকর্তা আবুল কালাম জানান, পরীক্ষামূলকভাবে বেশ কয়েকটি স্থানে গোলগাছের বীজ রোপণ করা হয়েছে। এতে ব্যাপক সফলতা পেয়েছি।