এস আলম কাণ্ডে কপাল পুড়লো বিএনপির ৩ নেতার
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ১০:৩৬:১০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ৮৯ বার পড়া হয়েছে
আলোচিত এস আলম গ্রুপের ১৪টি বিলাসবহুল গাড়ি সরিয়ে নিতে সহযোগিতার অভিযোগে কপাল পুড়েছে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়কসহ ৩ প্রভাবশালী নেতার। এই তিন নেতার প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব ধরণের পদ দল থেকে স্থগিত করা হয়েছে । একই সাথে বিলুপ্ত করে দেয়া হয়েছে দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটি।
এই তিন নেতা হলো- চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ান, প্রথম যুগ্ম আহবায়ক এনামুল হক এনাম ও কর্ণফুলী উপজেলা বিএনপির আহবায়ক এস এম মামুন মিয়া। এরমধ্যে শেষের এনামুল হক এনাম ও এস এম মামুন মিয়া এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদের ঘনিষ্ঠজন।
রোববার (১ সেপ্টেম্বর) রাতে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত চিঠিতে দক্ষিণ জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্তি ও তাদের সদস্য পদ স্থগিতের কথা জানানো হয়।
চিঠিতে বলা হয়, দলের গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। পরবর্তী কমিটি ঘোষিত না হওয়া পর্যন্ত চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির নামে কোন সাংগঠনিক কার্যক্রম চালানো যাবে না।
আরেক চিঠিতে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক আবায়ক আবু সুফিয়ান, প্রথম যুগ্ম আহবায়ক মো. এনামুল হক এনাম ও আহবায়ক কমিটির সদস্য এম এম মামুন মিয়ার প্রাথমিক সদস্যসহ সব পর্যায়ের পদ স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এ আদেশ কার্যকর থাকবে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে কর্ণফুলীর দক্ষিণ পাড়ে মইজ্জার টেক এলাকায় এস আলম গ্রুপের একটি ওয়্যারহাউজ থেকে দক্ষিণ জেলা বিএনপির কয়েকজন প্রভাবশালী নেতার তত্ত্বাবধানে ১৪টি বিলাসবহুল গাড়ি সরিয়ে নেয়ার অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারিত হলে বিষয়টি নজরে আসে বিএনপির নীতি নির্ধারণী মহলের।এরপর কেন্দ্র থেকে এ বিষয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জবাব চেয়ে দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ান, প্রথম যুগ্ম আহবায়ক এনামুল হক এনাম ও কর্ণফুলী উপজেলা বিএনপির আহবায়ক এস এম মামুন মিয়াকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়। নোটিশ পেয়ে তড়িঘড়ি সংবাদ সম্মেলন করে গাড়ি সরিয়ে নিতে সহযোগিতার বিষয়টি সাংবাদিকদের কাছে অস্বীকার করেন তারা। উল্টো একটি মহলের ইশারায় এ ধরণের সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপি নেতা আবু সুফিয়ান।
দলীয় সূত্রমতে, নোটিশপ্রাপ্ত তিন নেতা ঢাকায় গিয়ে কেন্দ্রের কাছে আত্মপক্ষ সমর্থন করে নোটিশের জবাব দেন এবং সেই সাথে ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করেন। জবাবে তারা সংবাদ সম্মেলনে আওড়ানো বুলির পুনরাবৃত্তি করে বলেন, মূলত মীর গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠানে বিএনপির নামে চাঁদাবাজির খবর পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। তিন নেতার এই জবাবে সন্তুষ্ট হতে না পেরে হাইকমান্ডের নির্দেশে কেন্দ্র থেকে তাদের সদস্যপদ স্থগিত এবং দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির বিলুপ্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
২০১৯ সালের ২ অক্টোবর আবু সুফিয়ানকে আহবায়ক করে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির ৬৫ সদস্যের একটি আহবায়ক কমিটি ঘোষণা দেয়া হয়েছিল কেন্দ্র থেকে। তিন মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটির গঠনের নির্দেশনা ছিল আহবায়ক কমিটির প্রতি। কিন্তু বিগত প্রায় ৫ বছরে তারা পূর্ণাঙ্গ কমিটি দিতে পারেনি।