‘এদেশে পাহাড়ী ও সমতল জাতিগোষ্ঠীর সমান অধিকার রয়েছে’
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ১০:৫৪:৩৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫ ১২ বার পড়া হয়েছে
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ বলেছেন, এদেশে বসবাসরত পাহাড়ী ও সমতল জাতিগোষ্ঠীর সমান অধিকার রয়েছে। পুলিশ ও প্রশাসন আপনাদের পাশে রয়েছে। নিজস্ব সংস্কৃতি ধরে রেখে নির্ভয়ে বসবাস করবেন।
শনিবার (২৫ জানুয়ারি) রাজশাহীর গোদাগাড়ীস্থ রাজাবাড়ীর চৈতন্যপুরে শিল্পকলা একাডেমির ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সেল আয়োজিত তারুণ্যের উৎসব উদযাপন উপলক্ষে দুই দিনব্যাপী রাজোয়াড় জাতিগোষ্ঠীর আলপনাচিত্র প্রদর্শন এবং ১৩ জাতিগোষ্ঠীর নৃত্য-গীত ও নাট্যানুষ্ঠানের উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
মহাপরিচালক বলেন, আপনারা সব সময় মনে রাখবেন, এ বরেন্দ্রভ‚মি ও পুণ্ডভূমিতে রাজোয়াড়, ওরাওঁ, সাঁওতাল, বাঙালি নির্বিশেষে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী যারা আছেন আপনাদের সবার সংস্কৃতি ধরে রেখে একসাথে বসবাস করার পূর্ণ অধিকার রয়েছে। সংস্কৃতি কেবল আমরা কীভাবে হাঁটি, খাই, বসবাস করি, চলন-ফিরন, আত্মীয়তা, বিবাহ বন্ধন শুধু তাই নয়, সংস্কৃতি হলো আমার নাচ, গান এবং ছবি আঁকাও। এর ভেতর থেকে আমি জীবনকে কেমন করে দেখি, জীবন কেন গুরুত্বপূর্ণ সেটা পরিষ্কার হয়।
ভাষার গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, ভাষা মানুষকে তার জীবনের উপলব্ধি প্রকাশ করতে সাহায্য করে। একটা ভাষা হারিয়ে যাওয়া মানে এক রকম উপলব্ধি হারিয়ে যাওয়া। আপনাদের রাজোয়াড় ভাষা ধরে রাখতে কর্মশালার আয়োজন করবো এবং আপনাদের নিয়ে কাজ করব। প্রয়োজনে বেশি করে কাজ করব যাতে এই ভাষার চর্চাটা আবারও শুরু হয়। ভাষা যাতে অন্যের দ্বারা আত্তীকৃত না হয়ে যায় সেদিকে সচেতন থাকার আহবান জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, হাতের পাঁচটি আঙ্গুল সমান না, ভিন্নতাই আত্মপরিচয়ের সৃষ্টি করে। আপনি ভিন্ন বলেই বাঙালি আলাদা। একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা চাই এই ১৩ জাতিগোষ্ঠী একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধা ব্যক্ত করবেন, বাঙালি যারা আছেন তারাও শ্রদ্ধা করতে শিখবেন। কারণ শ্রদ্ধা না করলে অন্য কোথাও গিয়ে আপনি অশ্রদ্ধার পাত্র হয়ে যাবেন।
রাজশাহী জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার এর সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ, পুলিশ সুপার ফারজানা ইসলাম, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সভাপতি বিমল চন্দ্র রাজোয়াড়, অনগ্রসর সমাজ উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক রাজকুমার শাও।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির উপপরিচালক এস এম শামীম আকতার, গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবুল হায়াত, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারী দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, চৈতন্যপুর এলাকাবাসী, বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিবৃন্দ ও গণমাধ্যমকর্মীরা।
অনুষ্ঠান শুরুর পূর্বে চৈতন্যপুর গ্রামের বিভিন্ন আলপনাচিত্র পরিদর্শন করেন অতিথিবৃন্দ। উদ্বোধনী আলোচনার শুরুতে অতিথিবৃন্দকে পা ধুইয়ে ও উত্তরীয় পরিয়ে বরণ করা হয়। আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে অতিথিবৃন্দ ১৩ জাতিগোষ্ঠীর পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।