উপজেলা নির্বাচন/ নির্বাচনী মাঠে ব্যস্ত প্রার্থীরা
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ১১:৩২:১৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ১৫০ বার পড়া হয়েছে
উপজেলা পরিষদ প্রথম ধাপে আগামী ৮ এপ্রিল গোদাগাড়ী উপজেলা পরিষদের নির্বাচন। এই নির্বাচনকে সামনে রেখে ব্যাস্ত প্রার্থীদের সাথে সাথে সাধারন কর্মী ও সমর্থকরা।
গোদাগাড়ী উপজেলায় লড়াই করছে চেয়ারম্যান পদে ৫ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২ জন প্রার্থী। দিন যত ঘনিয়ে আসছে প্রচার-প্রচারনায় ততই ব্যাস্ত হয়ে উঠছে প্রার্থী, কর্মী ও সমর্থকরা। ব্যানার ও পোষ্টারে গোদাগাড়ী উপজেলার বিভিন্ন এলাকা নতুন রুপে সেজেছে। কমতি নেই কোন প্রার্থীর ব্যানার ও পোষ্টারের।
সবাই যেন জয়ের প্রতিযোগিতায় ছুটছে কর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে ভোটারের দ্বারে দ্বারে। প্রার্থীরা ভোটারদের ভোট পাওয়ার জন্য নতুন নতুন কৌশল নিয়ে ভোটারদের মাঝে গিয়ে দাড়াচ্ছে। চেয়ারম্যান প্রার্থীরা ভোটারদের মন জয়ের দৌড়ে এগিয়ে থাকলেও কোন অংশে পিছিয়ে নেই ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা। গোদাগাড়ী উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় নিজ নিজ প্রার্থীর পক্ষে কর্মী ও সমর্থকদের ভোট চ্ওায়ার ব্যাস্ততা।
তবে সকল সাধারন ভোটারদেরে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীদের চাইতে চেয়ারম্যান প্রার্থীদের নিয়ে উৎসাহ বেশী দেখা যাচ্ছে। রাস্তা ঘাটে, মোড়ে মোড়ে, পাড়া মহাল্লায় ও চায়ের দোকানে চেয়ারম্যান প্রার্থীদের নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। নিজ নিজ সমর্থীত প্রর্থীদের জিতাতে সাধারন কর্মী ও সমর্থকরা ব্যাস্ত হয়ে পড়েছে নানান গুনোগানে। কেউ যেন হার মানতে নারাজ তার নিজ প্রার্থীর গুনোগানে। থেমে নেই মাইকিং। মাইকিং এর জন্য মাইক ব্যাবসায়ীদের পাশাপাশি অটোরিক্সা চালকদের এসেছে সুদিন।
তবে এবার দলীয় প্রার্থী না থাকায় চেয়ারম্যান পদে ৫ জন প্রার্থীর মধ্যে ৪ জনই হচ্ছে ক্ষমতাসীন দল আ”লীগের। অন্য একজন প্রাথী আগে বিএনপি করলেও দির্ঘ দিন ধরে বিএনপি দলে ছিল নিস্ক্রীয়।
গোদাগাড়ী উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে গোদাগাড়ী উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম ( কাপ-প্রিজ প্রতিক), গোদাগাড়ী পৌর আ”লীগের সভাপতি ও সাবেক জেলা পরিষদে সদস্য রবিউল আলম (আনারস প্রতিক), উপজেলা যুবলীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক ও সদ্য পদত্যাগকৃত ইউপি চেয়ারম্যান বেলাল উদ্দিন সোহেল (দোয়াত-কলম প্রতিক), উপজেলা আ”লীগের সহ প্রচার সম্পাদক ও সহকারী পরিচালক ( অবসরপ্রাপ্ত) কাষ্টম গয়েন্দা সুনন্দন দাস রতন ( মটর সাইকেল প্রতিক) ও নিস্ক্রীয় রাজশাহী জেলা যুবদলের সাবেক সাধারন সম্পাদ সাজেদুর রহমান মার্কনি (ঘোড়া প্রতিক) লড়াই করছে জয়ের প্রতিযোগিতায় নির্বাচনী মাঠে।
এদিকে চেয়ারম্যান পদে ক্ষমতাসীন দল আ”লীগের ৪ জন প্রার্থী হওয়ায় নির্বাচনী সমীকরন জটিল হয়ে দাড়িয়েছে। দলিয় প্রতিক না থাকায় আ”লীগের তৃনমুলের নেতা কর্মিরা নিজ পছন্দের চেয়ারম্যান প্রার্থীর পিছনে ছুটতে গিয়ে বিভক্ত হয়ে পড়ছেন। এদিকে চেয়ারম্যান প্রার্থীদের নিজ দলের নেতা কর্মীদের মান ভঞ্জন করতে দেখা যাচ্ছে। মান ভঞ্জন করতে সাধারন ভোটার বাদ দিয়ে দলের নেতা কর্মীদের পিছনেও ছুটতে হচ্ছে চেয়ারম্যান প্রার্থীদের।
তবে রাজনৈতিক দল বিএনপি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ গ্রহন না করায় এবং ভোট বর্জন করায় এর প্রভাব পড়েছে নির্বাচনী মাঠে। নিস্ক্রীয় বিএনপি নেতা সাজেদুর রহমান মার্কনির (ঘোড়া প্রতিক) পক্ষে বিএনপির নেতা কর্মিদের দেখা যাচ্ছে না। সাধারন ভোটার নিয়ে নির্বচনী মাঠে লড়াই করতে হচ্ছে এই প্রার্থীকে।
ফলে নির্বাচনী মাঠে ক্ষমতাসীন দল আ”লীগ করা প্রার্থীদের মধ্যেই লড়াইয়ে সম্ভাবনা সবচাইতে বেশী। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রভাব পড়ছে উপজেলা নির্বাচনে। তাদের মতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তৃণমুল আওয়ামীলীগ ২ ভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছিল। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধুরী নৌকা প্রতিক নিয়ে নির্বাচিত হলেও তার নিকটতম প্রতিদ্ব›দ্বী ছিলেন কাঁচি প্রতিক নিয়ে সতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামীলীগ নেতা গোলাম রাব্বানী। এই দুই নেতার প্রভাব পড়ছে এবারের উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে। এছাড়াও রাজশাহীর আরেক এমপি আসাদুজ্জামান আসাদেরও প্রভাব পড়ছে এ উপজেলা পরিষদের নির্বচনে। সাথে সাথে আঞ্চলিকতারও প্রভাব পড়ছে।
সাধারন ভোটারদের মাঝে গুনজন রয়েছে বর্তমান এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীর আস্থাভাজন বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি চেয়ারম্যান প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম। অন্যদিকে আওয়ামীলীগ নেতা গোলাম রাব্বানী ও এমপি আসাদুজ্জামান আসাদের আস্থাভাজন গোদাগাড়ী পৌর আ”লীগের সভাপতি চেয়ারম্যান প্রার্থী রবিউল আলম। এছাড়াও আঞ্চলিকতায় ও অর্থের দিক দিয়ে আলোচনায় রয়েছে সদ্য পদত্যাগকৃত ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক বেলাল উদ্দিন সোহেল। সব মিলিয়ে নির্বাচনী মাঠে কোন প্রার্থী জয়লাভ করবে তার হিসাব নিকাশ মিলানো জটিল হয়ে পড়েছে।
সাধারন ভোটাররা জয়-পরাজয়ের হিসাব নিকাশ কশতে পিছিয়ে নাই। সাধারন ভোটার ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকদেও মতে এবারের উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ত্রিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা সবচাইতে বেশী। গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাচনে দলিয় প্রতিক না থাকায় মর্যাদার লড়াইয়ে পড়েছেন প্রার্থীরা। নিজ নিজ কৌশল অবলম্বন করেই প্রার্থীরা চষে বেড়াছেন ভোটের মাঠ।
এছাড়াও ভাইস চেয়ারম্যান পদে নাজমুল হক (চসমা প্রতিক), সফিকুল ইসলাম সরকার (তালা প্রতিক), সালমান ফিরোজ ফয়সাল (টিয়া পাখী প্রতিক) ও হুরেন মুরমু (টিউবয়েল প্রতিক) নির্বাচনী মাঠে জয়ের প্রতিযোগিতায় লড়ছেন।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে সুফিয়া খাতুন মিলি (প্রজাপতি প্রতিক) ও কৃঞ্চা দেবী (ফুটবল প্রতিক) নির্বাচনী মাঠে লড়ছেন।