ঢাকা ১২:১৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

উজাড় হচ্ছে বনাঞ্চল, হুমকিতে জীববৈচিত্র

বান্দরবান প্রতিনিধি
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৯:১৭:৫৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ মার্চ ২০২৪ ১২৬ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বান্দরবানে নির্বিচারে বন উজাড় করে কাঠ পাঁচারের মহোৎসব চলছে। বান্দরবান জেলা সদরের মেঘলা, নীলাচল,টাইগার পাড়া,কানাপাড়া,চেমীরমুখ,মাঝের পাড়ার চা বোর্ডের আশপাশসহ সদরের বিভিন্ন এলাকার সেগুন, গামারীসহ বিভিন্ন প্রজাতির বন উজার করছে একটি অসাধু কাঠ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট চক্র। এতে করে উজাড় হচ্ছে শত শত একর বনাঞ্চল, যার ফলে হুমকি পড়েছে প্রাকৃতিক জীব বৈচিত্র।

বনাঞ্চল উজাড় করা বন্ধ না হয়, তাহলে অদুর ভবিষ্যতে বড় ধরনের পরিবশে বিপর্যয়ের আশংকা রয়েছে এমনটাই মনে করছেন স্থানীয়রা।স্থানীয়রা জানায়, সোহেল, সরোয়ার জামাল ও মেঘলার কামালসহ আরো কিছু অসাধু কাঠ ব্যবসায়ী কয়েকবছর ধরে বান্দরবান সদরের মেঘলা, নীলাচল, কানাপাড়া, মাঝের পাড়ার চা বোর্ড এলাকা, চেমীরমুখ, গোয়ালিয়া খোলা, রেইচা, টাইগার পাড়াসহ বিভিন্ন এলাকার গাছ কেটে বন উজার করছে। আর উজার করা এসব গাছ বন কর্তাদের ম্যানেজ করে ও বন বিভাগের দেয়া প্রহরা চৌকি পার হয়ে চলে আসছে বান্দরবান সদরে। আবার কিছু কিছু গাছ চলে যাচ্ছে চট্টগ্রামেও।

এছাড়া বিভিন্ন ব্রিক ফিল্ড, তামাক পুড়ানো ও লুম্বিনী গার্মেন্টসের লাকড়ির জোগানও দিচ্ছে এসব অসাধু কাঠ ব্যবসায়ীরা। বিষয়টি বন বিভাগের নজরে আসলে বান্দরবান বন বিভাগের একটি টিম জেলা শহরের টাইগার পাড়া এলাকায় অভিযান চালায়। এসময় কোন রকম পারমিট ছাড়া গাছ কর্তন করে অবৈধভাবে পাঁচারের উদ্দেশ্যে রাখা বিপুর পরিমাণ কাঠ জব্দ করে।

এসময় বান্দরবান বন বিভাগের সদর রেঞ্জ কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ টিটু বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা টাইগার পাড়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে থাকি। বিনা পারমিটে বাগানের গাছ কর্তন করে পাঁচারের উদ্দেশ্যে মজুদ করে রাখা বিপুল পরিমাণ কাঠ জব্দ করা হয়েছে। এ ধরনের অভিযান আগামীতেও অব্যাহত থাকবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

এদিকে, সোমবার দুপুরে সরেজমিনে টাইগার পাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বড় বড় বেশ কয়েকটি বাগানের গাছ ২০ থেকে ২৫ জন লেভার দিয়ে কর্তন করা হচ্ছে। অধিকাংশ গাছ কর্তন করে মজুদ করে রাখা হয়েছে পাঁচারের জন্য। শুধু তাই নয়, গাছ কর্তন করার কারণে বিশাল এলাকা মরুভ‚মিতে পরিণত হয়েছে।

গাছ কর্তন কাজে নিয়োজিত শ্রমিকরা বলেন, আমরা দৈনিক মজুরীতে কাজ করতে এসেছি। সোহেল নামে এক কাঠ ব্যবসায়ী বাগান গুলো ক্রয় করেছে। তবে বন বিভাগ থেকে পারমিশন নিয়েছে কিনা তা আমরা জানিনা। এ সময় টাইগার পাড়া এলাকার

বেশ কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দাদের জানান,দীর্ঘদিন ধরে সোহেল, সরোয়ার ও কামালসহ বেশ কয়েকজন কাঠ ব্যবসায়ী অবৈধভাবে বাগানের গাছ কর্তন ও বিক্রয় করে আসছে। এসব দেখার কেউ নাই। হয়তো তারা ক্ষমতার জোরে অবৈধভাবে কাঠ ব্যবসা করে যাচ্ছে। এভাবে নির্বিচারে গাছ কর্তন করা হলে এলাকায় থাকাও কষ্ট হয়ে যাবে। এসময় তিনি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দাবী জানান।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

উজাড় হচ্ছে বনাঞ্চল, হুমকিতে জীববৈচিত্র

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৯:১৭:৫৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ মার্চ ২০২৪

বান্দরবানে নির্বিচারে বন উজাড় করে কাঠ পাঁচারের মহোৎসব চলছে। বান্দরবান জেলা সদরের মেঘলা, নীলাচল,টাইগার পাড়া,কানাপাড়া,চেমীরমুখ,মাঝের পাড়ার চা বোর্ডের আশপাশসহ সদরের বিভিন্ন এলাকার সেগুন, গামারীসহ বিভিন্ন প্রজাতির বন উজার করছে একটি অসাধু কাঠ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট চক্র। এতে করে উজাড় হচ্ছে শত শত একর বনাঞ্চল, যার ফলে হুমকি পড়েছে প্রাকৃতিক জীব বৈচিত্র।

বনাঞ্চল উজাড় করা বন্ধ না হয়, তাহলে অদুর ভবিষ্যতে বড় ধরনের পরিবশে বিপর্যয়ের আশংকা রয়েছে এমনটাই মনে করছেন স্থানীয়রা।স্থানীয়রা জানায়, সোহেল, সরোয়ার জামাল ও মেঘলার কামালসহ আরো কিছু অসাধু কাঠ ব্যবসায়ী কয়েকবছর ধরে বান্দরবান সদরের মেঘলা, নীলাচল, কানাপাড়া, মাঝের পাড়ার চা বোর্ড এলাকা, চেমীরমুখ, গোয়ালিয়া খোলা, রেইচা, টাইগার পাড়াসহ বিভিন্ন এলাকার গাছ কেটে বন উজার করছে। আর উজার করা এসব গাছ বন কর্তাদের ম্যানেজ করে ও বন বিভাগের দেয়া প্রহরা চৌকি পার হয়ে চলে আসছে বান্দরবান সদরে। আবার কিছু কিছু গাছ চলে যাচ্ছে চট্টগ্রামেও।

এছাড়া বিভিন্ন ব্রিক ফিল্ড, তামাক পুড়ানো ও লুম্বিনী গার্মেন্টসের লাকড়ির জোগানও দিচ্ছে এসব অসাধু কাঠ ব্যবসায়ীরা। বিষয়টি বন বিভাগের নজরে আসলে বান্দরবান বন বিভাগের একটি টিম জেলা শহরের টাইগার পাড়া এলাকায় অভিযান চালায়। এসময় কোন রকম পারমিট ছাড়া গাছ কর্তন করে অবৈধভাবে পাঁচারের উদ্দেশ্যে রাখা বিপুর পরিমাণ কাঠ জব্দ করে।

এসময় বান্দরবান বন বিভাগের সদর রেঞ্জ কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ টিটু বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা টাইগার পাড়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে থাকি। বিনা পারমিটে বাগানের গাছ কর্তন করে পাঁচারের উদ্দেশ্যে মজুদ করে রাখা বিপুল পরিমাণ কাঠ জব্দ করা হয়েছে। এ ধরনের অভিযান আগামীতেও অব্যাহত থাকবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

এদিকে, সোমবার দুপুরে সরেজমিনে টাইগার পাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বড় বড় বেশ কয়েকটি বাগানের গাছ ২০ থেকে ২৫ জন লেভার দিয়ে কর্তন করা হচ্ছে। অধিকাংশ গাছ কর্তন করে মজুদ করে রাখা হয়েছে পাঁচারের জন্য। শুধু তাই নয়, গাছ কর্তন করার কারণে বিশাল এলাকা মরুভ‚মিতে পরিণত হয়েছে।

গাছ কর্তন কাজে নিয়োজিত শ্রমিকরা বলেন, আমরা দৈনিক মজুরীতে কাজ করতে এসেছি। সোহেল নামে এক কাঠ ব্যবসায়ী বাগান গুলো ক্রয় করেছে। তবে বন বিভাগ থেকে পারমিশন নিয়েছে কিনা তা আমরা জানিনা। এ সময় টাইগার পাড়া এলাকার

বেশ কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দাদের জানান,দীর্ঘদিন ধরে সোহেল, সরোয়ার ও কামালসহ বেশ কয়েকজন কাঠ ব্যবসায়ী অবৈধভাবে বাগানের গাছ কর্তন ও বিক্রয় করে আসছে। এসব দেখার কেউ নাই। হয়তো তারা ক্ষমতার জোরে অবৈধভাবে কাঠ ব্যবসা করে যাচ্ছে। এভাবে নির্বিচারে গাছ কর্তন করা হলে এলাকায় থাকাও কষ্ট হয়ে যাবে। এসময় তিনি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দাবী জানান।