ঢাকা ০৪:১৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইসলামপুরে ৬ ইউনিয়ন পরিষদের ভবন নেই, সেবা বঞ্চিত গ্রহীতারা

লিয়াকত হোসাইন লায়ন, জামালপুর
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০১:১২:০৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৯ মার্চ ২০২৪ ১১৫ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

জামালপুর ইসলামপুর উপজেলায় ৬টি ইউনিয়নে পরিষদে নিজস্ব কমপ্লেক্স ভবন না থাকায় ডিজিটাল সেবা থেকে বঞ্চিত হওয়া সহ প্রতিনিয়তই ভোগান্তিতে রয়েছে সাধারন মানুষ। বর্তমান সরকার ডিজিটালাইজ সেবা নিশ্চিত করলেও উপজেলার কুলকান্দি,বেলগাছা,চিনাডুলী,সাপধরী,নোয়ারপাড়া ও গোয়ালেরচর এই ৬টি ইউনিয়র পরিষদ দীর্ঘদিন ধরে যমুনা নদীর গর্ভে বিলীন হওয়ায় প্রতিনিয়তই বঞ্চিত হচ্ছে সেবাগ্রহীতারা।

জানা গেছে, উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের মধ্যে ৬টি ইউনিয়ন পরিষদ ভবন থাকলেও সাপধরী ইউনিয়ন পরিষদ ভবন ১৯৯৩ সালে – কুলকান্দি ইউনিয়ন পরিষদ ভবন ১৯৯৬ সালে বেলগাছা ইউনিয়ন পরিষদ ভবন ২০০৫ সালে নোয়ারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ ভবন ২০০৬ সালে এবং চিনাডুলি ইউনিয়ন পরিষদ ভবন ২০১০ সালে যমুনা গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এরপর দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও এসব ইউনিয়ন পরিষদ স্থাপনে কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।

উপজেলায় ৬টি ইউনিয়ন পরিষদ না চেয়ারম্যানের বাড়িতে,কিংবা বাজারের ভাড়াটে ঘরে ঝুলছে পরিষদের সাইনবোর্ড। আর সেখানেই ভ্রাম্যমান ভাবে চলে পরিষদের সভা সমাবেশেসহ যাবতীয় কার্যক্রম। অন্যদিকে গুদামঘর না থাকায় টি.আর, জি.আর, ভিজিএফ, ভিজিডিসহ সরকারি বিভিন্ন রিলিফ সামগ্রী বিতরণ কার্যক্রমে ভোগান্তিতেই পড়তে হয় জনপ্রতিনিধিদের।

সরেজমিনে দেখা গেছে, নোয়ারপাড়া ইউনিয়নের জন সাধারন প্রতিনিয়তই হয়রানির শিকার হচ্ছে। প্রয়োজনের তাগিদে পরিচয়পত্র নিতে পারলেও ডিজিটালইজ সেবা থেকে প্রতিনিয়ত বঞ্চিত হচ্ছে। দেখাগেছে,অস্থায়ী কার্যালয়ে কোন নেটওয়ার্ক নেই, বিদ্যুতের ব্যবস্থা নেই। কোন তথ্য সেবাকেন্দ্রও নেই। ইচ্ছা করলেও জন সাধারন তথ্য সেবাকেন্দ্র সাধ গ্রহন করতে পারছেনা। পরিচয়পত্র, লাইসেন্স, জন্ম-মৃত্যু সনদ ও তথ্য কেন্দ্র এবং গ্রাম্য বিচার পাওয়া থেকে দীর্ঘদিন যাবত বঞ্চিত হচ্ছেন তারা।

সেবা নিতে আসা ওই ইউনিয়নে করিরতাইর গ্রামের রেজাউলের স্ত্রী পারভীন বেগম,সাদা মিয়ার স্ত্রী ফরিদা বেগমের ডিজিটালাইজ সেবা পেতে হয়রানী ও আক্ষেপের কথা জানান। এ ব্যাপারে ওই ইউনিয়নের উদ্যোক্তা জানান, এখানে কোন নেটওয়ার্ক নাই,তাই জনগন সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

বেলগাছা ইউনিয়র পরিষদের চেয়ারম্যান আঃ মালেক বলেন, ইউনিয়ন পরিষদটি অনেক আগে বিলীন হওয়ায় গত কয়েকমাস আগে যমুনা নদীর এপার ও ওপার দুই পার্শে টিনসেড অস্থায়ী পরিষদ নির্মাণ করেছি। নির্ধারিত কোন ইউপি ভবন না থাকায় কার্যক্রম পরিচালনা করা খুবই কষ্ট হচ্ছে।

চিনাডুলী ইউনিয়নে আঃ সালাম জানান- অস্থায়ী টিনসেড ঘর তুলে কোনমতে চলছে পরিষদ। নেট সমস্যার কারনে সেবা গ্রহিতাদের নানা ধরনের বিড়াম্বনা পোহাতে হয়। তাই অতি জরুরী স্থায়ী একটি ইউপি ভবন নির্মাণ প্রয়োজন।
একই অবস্থা উপজেলার,কুলকান্দি,সাপধরী,গোয়ালেরচর ইউনিয়ন বাসীর। ইউনিয়নবাসীর দাবী স্থায়ীভাবে ভবন থাকলে সেবার মান নিশ্চিত হবে। এলাকাবাসী জানায়, স্থায়ী ভবন না থাকায় পরিচয়পত্র.জন্ম সনদের প্রয়োজনেও চেয়ারম্যান,সচিবদের দেখা মেলা দূস্কর হয়ে দাড়ায়।

এলাকাবাসী আরো জানায়,প্রতিবারই যিনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তার বাড়িতে অস্থায়ী কার্যালয় হওয়ার ফলে নথিপত্র,সোলার প্যানেল,ডিজিটালাইজ যন্ত্রাংশ টানা হেচড়ায় বেশীর ভাগই নষ্ট হয়ে যায়। এতে একদিকে সরকারে ক্ষতি অন্যদিকে ডিজিটালাইজ সেবা থেকে বঞ্চিত হয় ইউনিয়নবাসী। তারা প্রশাসনের নিকট আবেদন জানিয়ে দ্রæত ব্যবস্থা গ্রহন সহ ডিজিটালাইজ সেবার মান নিশ্চিত করার দাবী জানান এলাকাবাসী।

ইসলামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমি ইতিমধ্যে পরিষদগুলো পরিদর্শনও করেছি। নদী যাতে আর ভাঙ্গতে পারে, সেই দিক লক্ষ রেখেই ৩টি ভবন নির্মানের জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ইসলামপুরে ৬ ইউনিয়ন পরিষদের ভবন নেই, সেবা বঞ্চিত গ্রহীতারা

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০১:১২:০৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৯ মার্চ ২০২৪

জামালপুর ইসলামপুর উপজেলায় ৬টি ইউনিয়নে পরিষদে নিজস্ব কমপ্লেক্স ভবন না থাকায় ডিজিটাল সেবা থেকে বঞ্চিত হওয়া সহ প্রতিনিয়তই ভোগান্তিতে রয়েছে সাধারন মানুষ। বর্তমান সরকার ডিজিটালাইজ সেবা নিশ্চিত করলেও উপজেলার কুলকান্দি,বেলগাছা,চিনাডুলী,সাপধরী,নোয়ারপাড়া ও গোয়ালেরচর এই ৬টি ইউনিয়র পরিষদ দীর্ঘদিন ধরে যমুনা নদীর গর্ভে বিলীন হওয়ায় প্রতিনিয়তই বঞ্চিত হচ্ছে সেবাগ্রহীতারা।

জানা গেছে, উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের মধ্যে ৬টি ইউনিয়ন পরিষদ ভবন থাকলেও সাপধরী ইউনিয়ন পরিষদ ভবন ১৯৯৩ সালে – কুলকান্দি ইউনিয়ন পরিষদ ভবন ১৯৯৬ সালে বেলগাছা ইউনিয়ন পরিষদ ভবন ২০০৫ সালে নোয়ারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ ভবন ২০০৬ সালে এবং চিনাডুলি ইউনিয়ন পরিষদ ভবন ২০১০ সালে যমুনা গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এরপর দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও এসব ইউনিয়ন পরিষদ স্থাপনে কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।

উপজেলায় ৬টি ইউনিয়ন পরিষদ না চেয়ারম্যানের বাড়িতে,কিংবা বাজারের ভাড়াটে ঘরে ঝুলছে পরিষদের সাইনবোর্ড। আর সেখানেই ভ্রাম্যমান ভাবে চলে পরিষদের সভা সমাবেশেসহ যাবতীয় কার্যক্রম। অন্যদিকে গুদামঘর না থাকায় টি.আর, জি.আর, ভিজিএফ, ভিজিডিসহ সরকারি বিভিন্ন রিলিফ সামগ্রী বিতরণ কার্যক্রমে ভোগান্তিতেই পড়তে হয় জনপ্রতিনিধিদের।

সরেজমিনে দেখা গেছে, নোয়ারপাড়া ইউনিয়নের জন সাধারন প্রতিনিয়তই হয়রানির শিকার হচ্ছে। প্রয়োজনের তাগিদে পরিচয়পত্র নিতে পারলেও ডিজিটালইজ সেবা থেকে প্রতিনিয়ত বঞ্চিত হচ্ছে। দেখাগেছে,অস্থায়ী কার্যালয়ে কোন নেটওয়ার্ক নেই, বিদ্যুতের ব্যবস্থা নেই। কোন তথ্য সেবাকেন্দ্রও নেই। ইচ্ছা করলেও জন সাধারন তথ্য সেবাকেন্দ্র সাধ গ্রহন করতে পারছেনা। পরিচয়পত্র, লাইসেন্স, জন্ম-মৃত্যু সনদ ও তথ্য কেন্দ্র এবং গ্রাম্য বিচার পাওয়া থেকে দীর্ঘদিন যাবত বঞ্চিত হচ্ছেন তারা।

সেবা নিতে আসা ওই ইউনিয়নে করিরতাইর গ্রামের রেজাউলের স্ত্রী পারভীন বেগম,সাদা মিয়ার স্ত্রী ফরিদা বেগমের ডিজিটালাইজ সেবা পেতে হয়রানী ও আক্ষেপের কথা জানান। এ ব্যাপারে ওই ইউনিয়নের উদ্যোক্তা জানান, এখানে কোন নেটওয়ার্ক নাই,তাই জনগন সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

বেলগাছা ইউনিয়র পরিষদের চেয়ারম্যান আঃ মালেক বলেন, ইউনিয়ন পরিষদটি অনেক আগে বিলীন হওয়ায় গত কয়েকমাস আগে যমুনা নদীর এপার ও ওপার দুই পার্শে টিনসেড অস্থায়ী পরিষদ নির্মাণ করেছি। নির্ধারিত কোন ইউপি ভবন না থাকায় কার্যক্রম পরিচালনা করা খুবই কষ্ট হচ্ছে।

চিনাডুলী ইউনিয়নে আঃ সালাম জানান- অস্থায়ী টিনসেড ঘর তুলে কোনমতে চলছে পরিষদ। নেট সমস্যার কারনে সেবা গ্রহিতাদের নানা ধরনের বিড়াম্বনা পোহাতে হয়। তাই অতি জরুরী স্থায়ী একটি ইউপি ভবন নির্মাণ প্রয়োজন।
একই অবস্থা উপজেলার,কুলকান্দি,সাপধরী,গোয়ালেরচর ইউনিয়ন বাসীর। ইউনিয়নবাসীর দাবী স্থায়ীভাবে ভবন থাকলে সেবার মান নিশ্চিত হবে। এলাকাবাসী জানায়, স্থায়ী ভবন না থাকায় পরিচয়পত্র.জন্ম সনদের প্রয়োজনেও চেয়ারম্যান,সচিবদের দেখা মেলা দূস্কর হয়ে দাড়ায়।

এলাকাবাসী আরো জানায়,প্রতিবারই যিনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তার বাড়িতে অস্থায়ী কার্যালয় হওয়ার ফলে নথিপত্র,সোলার প্যানেল,ডিজিটালাইজ যন্ত্রাংশ টানা হেচড়ায় বেশীর ভাগই নষ্ট হয়ে যায়। এতে একদিকে সরকারে ক্ষতি অন্যদিকে ডিজিটালাইজ সেবা থেকে বঞ্চিত হয় ইউনিয়নবাসী। তারা প্রশাসনের নিকট আবেদন জানিয়ে দ্রæত ব্যবস্থা গ্রহন সহ ডিজিটালাইজ সেবার মান নিশ্চিত করার দাবী জানান এলাকাবাসী।

ইসলামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমি ইতিমধ্যে পরিষদগুলো পরিদর্শনও করেছি। নদী যাতে আর ভাঙ্গতে পারে, সেই দিক লক্ষ রেখেই ৩টি ভবন নির্মানের জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।