ঢাকা ১২:৪৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অপহরণের পর গুম

যশোরে সাবেক এসপি আনিচসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা

শহিদুল ইসলাম দইচ, যশোর
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ১০:৪৮:০৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ৪৭ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

যশোর শহরের শংকরপুরের  সাইদুল ইসলাম সাঈদ নামে যবককে অপহরণ ও গুমের অভিযোগে সাবেক পুলিশ সুপার আনিসর রহমান আনিচসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন তৌহিদুল ইসলাম ওরফে খোকন কাজী। 

 এসআই ও কাউন্সিলরসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। ১ সেপ্টেম্বর  (রোববার ) সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম কিবরিয়ার আদালতে অভিযোগ করেন। 

আদালতের বিচারক  অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করে কোতয়ালি থানার ওসিকে ৭ দিনের মধ্যে আদালতকে অবহিত করার আদেশ দিয়েছেন।

 বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীর আইনজীবী আমিনুর রহমান।

 অপর আসামিরা হল , এসআই এইচএম শহিদুল ইসলাম, এসআই আমির হোসেন, এএসআই হাসানুর রহমান, এইসআই রাজন গাজী, এএসআই সেলিম মুন্সি, এএসআই বিপ্লব হোসেন, এএসআই সেলিম আহম্মেদ, টিএসআই রফিক, কনস্টেবল আরিফুজ্জামন, হাবিবুর রহমান, আবু বক্কার, ড্রাইভার মিজান শেখ, মাহমুদুর রহমান, টোকন হোসেন, যশোর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিল গোলাম মোস্তফা, শহরের শংকরপুরের সাদেক দারোগার মোড় এলাকার মৃত রোস্তম আলীর ছেলে নুর ইসলাম নুরু, মৃত খলিল মিয়ার ছেলে আনিস, মুরগির ফার্ম এলাকার মৃত বাবলুর ছেলে অগ্র, রায়পাড়ার মৃত কাওছার আলীর ছেলে হাসমত, হোসেন আলীর ছেলে মাসুম ও গোলপাতা মসজিদ এলাকার মোহাম্মদ আলীর ছেলে খালেদুর রহমান চন্নু।

মামলার অভিযোগে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ৫ এপ্রিল সকালে সাঈদ ও তার বন্ধু শাওন যশোর পৌরপার্কে বেড়াতে যায়। এ সময় তৎকালীন পুলিশ সুপারের নির্দেশে অপর পুলিশ কর্মকর্তা ও কনস্টেবলরা সাঈদ ও শাওনকে গ্রেপ্তার করে। সাঈদ ও শাওনের গ্রেপ্তার হওয়ার খবর জানতে পেরে খোকন কাজী ও তার স্ত্রী দ্রুত পৌরপার্কের গেটে গিয়ে দেখেন পুলিশ তাদের গাড়িতে ওঠাচ্ছে। সাঈদকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি এসআই এইচএম শহিদুল ইসলামসহ অন্যদের কাছে জানতে চাইলে তারা থানায় গিয়ে কথা বলতে বলেন। 

তাৎক্ষণিক থানায় গেলে কর্তব্যরত পুলিশ সাঈদের মা ও  পিতাকে থানায় ঢুকতে দেয়নি। থানার গেটে অবস্থান কালে সাঈদের মা ও পিতার কাছে ২ লাখ টাকা দাবি করে ছেড়ে দেয়ার আশ্বাস দেন এসআই এইচএম শহিদুল ইসলাম ও এসআই আমির হোসেন। অন্যথায় তাদের দুই জনকে মেরে লাশ গুম করে দেবে বলে হুমকি দেন।  ৭ এপ্রিল সাঈদের মা হিরা খাতুন পত্রিকার মাধ্যমে জানতে পারেন ছেলে সাঈদ ও তার বন্ধু শাওন পুলিশ হেফাজত থেকে পালিয়ে গেছে। পত্রিকার এ সংবাদের সত্যতা জানতে থানায় গেলে সাঈদের মা হিরার সাথে খারাপ ব্যবহার করে তাড়িয়ে দেয় পুলিশ। 

এরপর অপহৃত সাঈদের মা সংবাদ সম্মেলন করে ছেলেকে ফিরে পেতে প্রশাসনসহ সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। অপহৃত সাঈদের মা ও পিতার ধারনা পুলিশের দাবিকৃত ২ লাখ টাকা না দেয়ায় সাঈদকে হত্যা করে লাশ গুম করে দিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় অপহৃত সাঈদের মা পুলিশ সুপারসহ পুলিশের ১৬ জনকে আসামি করে আদালতে মামলা করেন। 

মামলার অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, অপহৃত সাঈদকে ফিরিয়ে দিতে কাউন্সিলর ও তার সহযোগীরা হিরা খাতুনের কাছে ১০ লাখ টাকা দাবি করে। হিরা খাতুনের কাছ থেকে তারা ১০ লাখ টাকা গ্রহণ করেও ছেলেকে ফিরিয়ে না দিয়ে হিরা খাতুনকে ধরে নিয়ে শাহিন চাকলাদারের বাড়িতে নিয়ে আদালতে করা মামলা প্রত্যাহারের জন্য চাপ দেয়। হিরা খাতুন মামলা প্রত্যাহারে রাজি না হওয়ায় তাকে এসপি অফিসে নিয়ে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে হত্যার হুমকি দিয়ে মামলা প্রত্যাহার করতে বাধ্য করা হয়। পরবর্তীতে হিরা খাতুন বৈদ্যুতিক শকে অসুস্থ হয়ে মারা গেছে। সেই থেকে আজ আবধি অপহৃত সাঈদ আর ফিরে আসেনি। আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় তখন মামলা করার সাহস হয়নি। বর্তমানে পরিবেশ অনুকলে আসা আদালতে এ মামলা করা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

অপহরণের পর গুম

যশোরে সাবেক এসপি আনিচসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা

সংবাদ প্রকাশের সময় : ১০:৪৮:০৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

যশোর শহরের শংকরপুরের  সাইদুল ইসলাম সাঈদ নামে যবককে অপহরণ ও গুমের অভিযোগে সাবেক পুলিশ সুপার আনিসর রহমান আনিচসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন তৌহিদুল ইসলাম ওরফে খোকন কাজী। 

 এসআই ও কাউন্সিলরসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। ১ সেপ্টেম্বর  (রোববার ) সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম কিবরিয়ার আদালতে অভিযোগ করেন। 

আদালতের বিচারক  অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করে কোতয়ালি থানার ওসিকে ৭ দিনের মধ্যে আদালতকে অবহিত করার আদেশ দিয়েছেন।

 বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীর আইনজীবী আমিনুর রহমান।

 অপর আসামিরা হল , এসআই এইচএম শহিদুল ইসলাম, এসআই আমির হোসেন, এএসআই হাসানুর রহমান, এইসআই রাজন গাজী, এএসআই সেলিম মুন্সি, এএসআই বিপ্লব হোসেন, এএসআই সেলিম আহম্মেদ, টিএসআই রফিক, কনস্টেবল আরিফুজ্জামন, হাবিবুর রহমান, আবু বক্কার, ড্রাইভার মিজান শেখ, মাহমুদুর রহমান, টোকন হোসেন, যশোর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিল গোলাম মোস্তফা, শহরের শংকরপুরের সাদেক দারোগার মোড় এলাকার মৃত রোস্তম আলীর ছেলে নুর ইসলাম নুরু, মৃত খলিল মিয়ার ছেলে আনিস, মুরগির ফার্ম এলাকার মৃত বাবলুর ছেলে অগ্র, রায়পাড়ার মৃত কাওছার আলীর ছেলে হাসমত, হোসেন আলীর ছেলে মাসুম ও গোলপাতা মসজিদ এলাকার মোহাম্মদ আলীর ছেলে খালেদুর রহমান চন্নু।

মামলার অভিযোগে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ৫ এপ্রিল সকালে সাঈদ ও তার বন্ধু শাওন যশোর পৌরপার্কে বেড়াতে যায়। এ সময় তৎকালীন পুলিশ সুপারের নির্দেশে অপর পুলিশ কর্মকর্তা ও কনস্টেবলরা সাঈদ ও শাওনকে গ্রেপ্তার করে। সাঈদ ও শাওনের গ্রেপ্তার হওয়ার খবর জানতে পেরে খোকন কাজী ও তার স্ত্রী দ্রুত পৌরপার্কের গেটে গিয়ে দেখেন পুলিশ তাদের গাড়িতে ওঠাচ্ছে। সাঈদকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি এসআই এইচএম শহিদুল ইসলামসহ অন্যদের কাছে জানতে চাইলে তারা থানায় গিয়ে কথা বলতে বলেন। 

তাৎক্ষণিক থানায় গেলে কর্তব্যরত পুলিশ সাঈদের মা ও  পিতাকে থানায় ঢুকতে দেয়নি। থানার গেটে অবস্থান কালে সাঈদের মা ও পিতার কাছে ২ লাখ টাকা দাবি করে ছেড়ে দেয়ার আশ্বাস দেন এসআই এইচএম শহিদুল ইসলাম ও এসআই আমির হোসেন। অন্যথায় তাদের দুই জনকে মেরে লাশ গুম করে দেবে বলে হুমকি দেন।  ৭ এপ্রিল সাঈদের মা হিরা খাতুন পত্রিকার মাধ্যমে জানতে পারেন ছেলে সাঈদ ও তার বন্ধু শাওন পুলিশ হেফাজত থেকে পালিয়ে গেছে। পত্রিকার এ সংবাদের সত্যতা জানতে থানায় গেলে সাঈদের মা হিরার সাথে খারাপ ব্যবহার করে তাড়িয়ে দেয় পুলিশ। 

এরপর অপহৃত সাঈদের মা সংবাদ সম্মেলন করে ছেলেকে ফিরে পেতে প্রশাসনসহ সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। অপহৃত সাঈদের মা ও পিতার ধারনা পুলিশের দাবিকৃত ২ লাখ টাকা না দেয়ায় সাঈদকে হত্যা করে লাশ গুম করে দিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় অপহৃত সাঈদের মা পুলিশ সুপারসহ পুলিশের ১৬ জনকে আসামি করে আদালতে মামলা করেন। 

মামলার অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, অপহৃত সাঈদকে ফিরিয়ে দিতে কাউন্সিলর ও তার সহযোগীরা হিরা খাতুনের কাছে ১০ লাখ টাকা দাবি করে। হিরা খাতুনের কাছ থেকে তারা ১০ লাখ টাকা গ্রহণ করেও ছেলেকে ফিরিয়ে না দিয়ে হিরা খাতুনকে ধরে নিয়ে শাহিন চাকলাদারের বাড়িতে নিয়ে আদালতে করা মামলা প্রত্যাহারের জন্য চাপ দেয়। হিরা খাতুন মামলা প্রত্যাহারে রাজি না হওয়ায় তাকে এসপি অফিসে নিয়ে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে হত্যার হুমকি দিয়ে মামলা প্রত্যাহার করতে বাধ্য করা হয়। পরবর্তীতে হিরা খাতুন বৈদ্যুতিক শকে অসুস্থ হয়ে মারা গেছে। সেই থেকে আজ আবধি অপহৃত সাঈদ আর ফিরে আসেনি। আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় তখন মামলা করার সাহস হয়নি। বর্তমানে পরিবেশ অনুকলে আসা আদালতে এ মামলা করা হয়েছে।