ঢাকা ০৬:১৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হাফিজুরের হোটেলে ইফতারের বাহার

আজিজুল হক সরকার,ফুলবাড়ী (দিনাজপুর)
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৩:০০:৫৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ মার্চ ২০২৪ ১৬১ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে হাফিজুরের হোটেল যেন রকমারি ইফতার আয়োজনের এক অনন্য প্রতিষ্ঠান। এখনে নানা পদের ইফতার তৈরি হলেও ‘মিহি দানা’, ‘ছানার পোলাও’, ‘পিয়াজু’ রোজাদারদের বিমোহিত করেছে।

ফুলবাড়ী পৌর শহরের হাশমীপট্টি এলাকায় দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ মহাসড়ক ঘেষে ‘হাফিজুরের হোটেল’। চৈত্রের তপ্ত দুপুর পেরিয়ে বিকেল হতে না হতেই ভিড় বাড়তে শুরু করে এখানে। আগে আসার কারণ হিসেবে সবারই কথা এখন সব পদের ইফতারিই রুচি সম্মত তবে স্পেশাল হলো ‘মিহি দানা’, ‘ছানার পোলাও’। একটু দেরী হলে পাওয়া যায় না বলেই এমন ছুটোছুটি করে আসা।

মহাসড়ক সংলগ্ন হওয়ায় যাত্রাপথে অনেকের কাছেই জনপ্রিয় হয়ে ওঠা ‘মিহি দানা’, ‘ছানার পোলাও’। সারা বছর হাফিজুরের হোটেলে নানা ধরনের মুখ রোচক খাবার তৈরি হয়। তবে রমজান এলে স্পেশাল ভাবেই তৈরি হয়ে ‘মিহি দানা’, ‘ছানার পোলাও’। তাই অনেকেই আবার এখান থেকে ‘মিহি দানা’, ‘ছানার পোলাও’ কিনে আত্মীয় -স্বজনের কাছে পাঠাতে কেউ ভুল করেন না। ফলে পুরো রমজান মাসে এর জনপ্রিয়তা থাকে ব্যাপক।

ফুলবাড়ীর হোটেলে গিয়ে দেখা যায় ,হাফিজুরের হোটেলের ইফতারসামগ্রী সাজিয়ে বসেছেন কর্মচারীরা। বিকেল ৫টার মধ্যে ‘মিহি দানা’, ‘ছানার পোলাও’ প্রায় শেষ হয়ে গেছে।একটি কাচের শোকেসে পিয়াজু,ডিমের চপ, আলুর চপ,মাংসের চপ,মাছের চপ, বেগুনি, নিমকি, বুন্দিয়া কয়েক রকম, জিলাপি কয়েক রকমের রাখা আছে,বুট,নিমকি,ঝুরি,মুড়ি.খেজুর রকমারি ইফতারসামগ্রীর পসরা সাজিয়ে বসে আছে । তবে এসব খাদ্যদ্রব্যের চেয়ে এখান থেকে লোকজন বেশি কিনছেন ‘মিহি দানা’, ‘ছানার পোলাও’,পিয়াজু।

হোটেলের স্বত্বাধিকারী মো. হাফিজুর রহমান বলেন,এই হোটেল ব্যবসা করে ৮ বছর আগে বড় ছেলে মো. জাহিদ হাসানকে কুয়েতে পাঠিয়েছেন। বর্তমানে আমার স্ত্রী জরিনা খাতুন শাবানার সাথে রোকসানা বেগম,জমিলা খাতুনসহ আরো ৭ জন পুরুষ কর্মচারী এ কাজে নিয়োজিত আছেন। তাঁরা হলেন,সাখাওয়াত হোসেন,অহেদ আলী,ছোটুয়া হোসেন, এরশাদ আলী, মো. সাগর, মো. তানজিল ও মংলু হোসেন।তিনি বলেন, নিজের জায়গায়, নিজেই তৈরি ও বিক্রির ক্ষেত্রে নিজেদের লোকজন নিয়োজিত থাকায় চড়া এই দ্রব্যমূল্যের বাজারে সীমিত লাভে বিক্রি করেন।

নিজের তৈরি ‘মিহি দানা’, ‘ছানার পোলাও’ এর জনপ্রিয়তা বিষয়ে কথা হয় তাঁর সঙে। তিনি জানান, পৈতৃক সূত্রে প্রায় ৩৭ বছর পূর্বে বড় ভাই আব্দুর রহমানের কাছ থেকেই হোটেল ব্যবসা শুরু করেন। তার ঠিক ১৩ বছর পর তার হোটেলে ‘মিহি দানা’, ‘ছানার পোলাও’ তৈরি শুরু করেন। সেই থেকেই চলছে। এটা তৈরিতে বুটের বেসন ও নানা ধরেনের মসল্যা ব্যবহার করতে হয়। একই সাথে ছানার পোলাও তৈরিতে বুটের বেসনের পাশাপাশি আংশিক ছানা ব্যবহার করতে হয়। বর্তমানে প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি দরে মিহি দানা এবং ছানার পোলাও বিক্রি করে থাকেন। প্রতিদিন ২৫ থেকে ৩০ কেজি করে বিক্রি হয়।অন্যান্য পণ্য ৫ টাকা পিচ। এছাড়াও টেবিলে বসিয়েও পছন্দের মতো খাওয়ানো হয়।

হোটেলের সামনে ইফতার কিনতে এসেছেন কলেজ শিক্ষক মোস্তাক আহম্মদ,ন্যাশনাল হার্ডওয়ারের বিপ্লব হোসেন, রিক্সা চালক মাসুদ এবং কয়েকজন এনজিও কর্মী তাঁরা জানান, হাফিজুরের হোটেলের মিহি দানা ও ছানার পোলাও,পিয়াজু নিতে এসেছেন। এই মিহি দানা খুবই সুস্বাদু। তাই ইফতারিতে মিহি দানা রাখার চেষ্টা করেন। পরিবারের অন্য সদস্যরাও তা পছন্দ করেন বলে জানান। মোটকথা ইফতারের জন্য ফুলবাড়ীতে হাফিজুরের হোটেলের বিকল্প নেই।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

হাফিজুরের হোটেলে ইফতারের বাহার

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৩:০০:৫৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ মার্চ ২০২৪

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে হাফিজুরের হোটেল যেন রকমারি ইফতার আয়োজনের এক অনন্য প্রতিষ্ঠান। এখনে নানা পদের ইফতার তৈরি হলেও ‘মিহি দানা’, ‘ছানার পোলাও’, ‘পিয়াজু’ রোজাদারদের বিমোহিত করেছে।

ফুলবাড়ী পৌর শহরের হাশমীপট্টি এলাকায় দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ মহাসড়ক ঘেষে ‘হাফিজুরের হোটেল’। চৈত্রের তপ্ত দুপুর পেরিয়ে বিকেল হতে না হতেই ভিড় বাড়তে শুরু করে এখানে। আগে আসার কারণ হিসেবে সবারই কথা এখন সব পদের ইফতারিই রুচি সম্মত তবে স্পেশাল হলো ‘মিহি দানা’, ‘ছানার পোলাও’। একটু দেরী হলে পাওয়া যায় না বলেই এমন ছুটোছুটি করে আসা।

মহাসড়ক সংলগ্ন হওয়ায় যাত্রাপথে অনেকের কাছেই জনপ্রিয় হয়ে ওঠা ‘মিহি দানা’, ‘ছানার পোলাও’। সারা বছর হাফিজুরের হোটেলে নানা ধরনের মুখ রোচক খাবার তৈরি হয়। তবে রমজান এলে স্পেশাল ভাবেই তৈরি হয়ে ‘মিহি দানা’, ‘ছানার পোলাও’। তাই অনেকেই আবার এখান থেকে ‘মিহি দানা’, ‘ছানার পোলাও’ কিনে আত্মীয় -স্বজনের কাছে পাঠাতে কেউ ভুল করেন না। ফলে পুরো রমজান মাসে এর জনপ্রিয়তা থাকে ব্যাপক।

ফুলবাড়ীর হোটেলে গিয়ে দেখা যায় ,হাফিজুরের হোটেলের ইফতারসামগ্রী সাজিয়ে বসেছেন কর্মচারীরা। বিকেল ৫টার মধ্যে ‘মিহি দানা’, ‘ছানার পোলাও’ প্রায় শেষ হয়ে গেছে।একটি কাচের শোকেসে পিয়াজু,ডিমের চপ, আলুর চপ,মাংসের চপ,মাছের চপ, বেগুনি, নিমকি, বুন্দিয়া কয়েক রকম, জিলাপি কয়েক রকমের রাখা আছে,বুট,নিমকি,ঝুরি,মুড়ি.খেজুর রকমারি ইফতারসামগ্রীর পসরা সাজিয়ে বসে আছে । তবে এসব খাদ্যদ্রব্যের চেয়ে এখান থেকে লোকজন বেশি কিনছেন ‘মিহি দানা’, ‘ছানার পোলাও’,পিয়াজু।

হোটেলের স্বত্বাধিকারী মো. হাফিজুর রহমান বলেন,এই হোটেল ব্যবসা করে ৮ বছর আগে বড় ছেলে মো. জাহিদ হাসানকে কুয়েতে পাঠিয়েছেন। বর্তমানে আমার স্ত্রী জরিনা খাতুন শাবানার সাথে রোকসানা বেগম,জমিলা খাতুনসহ আরো ৭ জন পুরুষ কর্মচারী এ কাজে নিয়োজিত আছেন। তাঁরা হলেন,সাখাওয়াত হোসেন,অহেদ আলী,ছোটুয়া হোসেন, এরশাদ আলী, মো. সাগর, মো. তানজিল ও মংলু হোসেন।তিনি বলেন, নিজের জায়গায়, নিজেই তৈরি ও বিক্রির ক্ষেত্রে নিজেদের লোকজন নিয়োজিত থাকায় চড়া এই দ্রব্যমূল্যের বাজারে সীমিত লাভে বিক্রি করেন।

নিজের তৈরি ‘মিহি দানা’, ‘ছানার পোলাও’ এর জনপ্রিয়তা বিষয়ে কথা হয় তাঁর সঙে। তিনি জানান, পৈতৃক সূত্রে প্রায় ৩৭ বছর পূর্বে বড় ভাই আব্দুর রহমানের কাছ থেকেই হোটেল ব্যবসা শুরু করেন। তার ঠিক ১৩ বছর পর তার হোটেলে ‘মিহি দানা’, ‘ছানার পোলাও’ তৈরি শুরু করেন। সেই থেকেই চলছে। এটা তৈরিতে বুটের বেসন ও নানা ধরেনের মসল্যা ব্যবহার করতে হয়। একই সাথে ছানার পোলাও তৈরিতে বুটের বেসনের পাশাপাশি আংশিক ছানা ব্যবহার করতে হয়। বর্তমানে প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি দরে মিহি দানা এবং ছানার পোলাও বিক্রি করে থাকেন। প্রতিদিন ২৫ থেকে ৩০ কেজি করে বিক্রি হয়।অন্যান্য পণ্য ৫ টাকা পিচ। এছাড়াও টেবিলে বসিয়েও পছন্দের মতো খাওয়ানো হয়।

হোটেলের সামনে ইফতার কিনতে এসেছেন কলেজ শিক্ষক মোস্তাক আহম্মদ,ন্যাশনাল হার্ডওয়ারের বিপ্লব হোসেন, রিক্সা চালক মাসুদ এবং কয়েকজন এনজিও কর্মী তাঁরা জানান, হাফিজুরের হোটেলের মিহি দানা ও ছানার পোলাও,পিয়াজু নিতে এসেছেন। এই মিহি দানা খুবই সুস্বাদু। তাই ইফতারিতে মিহি দানা রাখার চেষ্টা করেন। পরিবারের অন্য সদস্যরাও তা পছন্দ করেন বলে জানান। মোটকথা ইফতারের জন্য ফুলবাড়ীতে হাফিজুরের হোটেলের বিকল্প নেই।