ঢাকা ০৬:৪৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সুবিধা নিয়ে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের প্রতিবাদে বিক্ষোভ

আজিজুল হক সরকার, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর)
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৬:০৩:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ জুন ২০২৪ ১০৬ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে অব্যাহতিপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষক মামনুর রশীদকে জয়নগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগে নীলনকশা বাস্তবায়নের প্রতিবাদে বিক্ষোভসহ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।

সোমবার (১০ জুন) বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচির করেন জয়নগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক-কর্মচারী, শিক্ষার্থী-অভিভাবকসহ এলাকাবাসীর যৌথ আয়োজনে।

মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন-বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির শিক্ষক প্রতিনিধি রায়হান আলী, সহকারী শিক্ষক ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির শিক্ষক তাহেরা বেগম, সহকারী শিক্ষক ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির শিক্ষক শাহানুর আলম, সহকারী শিক্ষক আশরাফুল আলম, সহকারী শিক্ষক ওয়াহেদ আলী, বিদ্যালয়ের জমিদাতা আফজাল তালুকদার, অভিভাবক মো. আলম, শিক্ষার্থী মোছা. লামিয়া আক্তার, এজাজ মন্ডল, সুরাইয়া আক্তার রিতু, রিক্ত চন্দ্র রায় প্রমুখ।

মানবন্ধন শেষে প্রতিবাদ জানিয়ে বিদ্যালয় চত্বরে বিক্ষোভ করেন সব শিক্ষক-কর্মচারী, শিক্ষার্থী-অভিভাবকসহ এলাকাবাসী।

জানা যায়, ২০২৩ সালের ১৭ মে প্রধান শিক্ষক মো. শাহরিয়ার রশিদ মারা গেলে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে সুনীল রায় দায়িত্ব পালন করেন। এরমধ্যে সুনীল রায়সহ কমিটির ক’জন বিতর্কিত এবং আগের প্রতিষ্ঠানের অব্যাহতিপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষক মামনুর রশীদকে জয়নগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগদানের পরিকল্পনা করে।এতে করে জয়নগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক-কর্মচারী, শিক্ষার্থী-অভিভাবকসহ এলাকাবাসী ফুঁসে ওঠে। তবে বিক্ষোভ ও মানববন্ধনের জন্য সকালে নিয়োগ পক্রিয়া স্থাগিত করেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। বর্তমান ম্যানেজিং কমিটির মেয়াদ চলতি মাসের ১১ তারিখ (মঙ্গলবার) শেষ হয়ে যাবে। এ কারণে সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক তড়িঘড়ি করে নিয়োগ পক্রিয়া শেষ করে তাদের অসৎ উদ্দেশ্য হাসিলের অপচেষ্টা চালাচ্ছেন।সেজন্য বিতর্কিত মামনুর রশীদের নিয়োগের ব্যাপারে এলাকাবাসী সোচ্চার হয়।

দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী সুবর্ণা রায়,লামি আক্তার, ফারজানা আক্তার,৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী মোস্তফা আক্তার মিঠু,আশিকুর রহমান জানান, আমরা শুনেছি প্রধান শিক্ষককে যাকে নিতে চাওয়া হচ্ছে তার নাকি আচরণ ভালো না। তার নামে অনেক মামলা আছে। তাকে নাকি আগের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে। এমন বিতর্কিত মানুষকে আমরা প্রধান শিক্ষক হিসেবে মেনে নেবো না। তাকে নিয়োগ দেয়া হলে আমরা শ্রেণিকক্ষে যাবো না।

অভিভাবক মকছেদ আলী ,মো. আলম ও এজাজ মন্ডল বলেন, মামুনুর রশিদের মতো চরিত্রহীন শিক্ষককে আমরা আমাদের এই বিদ্যালয়ে চাইনা। সে যদি এখানে নিয়োগপ্রাপ্ত হয় তবে আমরা আমাদের সন্তানদের বিদ্যালয় থেকে বের করে কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলবো।

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির শিক্ষক প্রতিনিধি রায়হান আলী,মোছা. শাহানুর আলম, তাহেরা বেগম ও সহকারী শিক্ষক ওয়াহেদ আলী বলেন, আমরা জানতে পেরেছি আদালত কর্তৃক ঘোষিত ও মোহনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির অব্যাহতিপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষক মামুনুর রশীদকে জয়নগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগদানের জন্য নিয়োগ বোর্ড আজকে ছিল। প্রার্থীদের মধ্যে দেলোয়ার হোসেন,মহসীন আলী, রাকিবুল ইসলাম জানিয়েছেন, আজকে (সোমবার ) প্রধান শিক্ষক নিয়োগ বোর্ড হবে এই মর্মে তারা রোববার (৯ জুন) ১০টায় চিঠি পেয়েছেন।

বিতর্কিত শিক্ষক মামনুর রশীদ মুঠোফোনে বলেন,অন্য একটি নিয়োগের জন্য নিয়োগ বোর্ডটি স্থগিত করেছে। আমার নিয়োগে কোনো সমস্যা হবে না।

ডিজির প্রতিনিধি প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালেক বলেন, ফোনে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুনীল রায় জানিয়েছিলেন আজকে (সোমবার) প্রধান শিক্ষক নিয়োগ বোর্ড হওয়ার কথা। কিন্তু কোনো কাগজপত্র পাইনি।

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি অবসর প্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্বাস আলী তার মুঠোফোনে একাধিক কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুনীল রায় তার মুঠোফোনে একাধিক কল দিলেও তিনি রিসিভ করে শুধু নিয়োগ বোর্ডটি বাতিল করা হয়েছে বলে এটুকু জানান।

এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নূর আলম বলেন, মৌখিকভাবে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে বলা হলেও লিখিতভাবে কোনো কিছু বলা হয়নি। এর ফলে নিয়োগ হবে কি না তাও তিনি জানেন না।

ডিসির প্রতিনিধি সহকারী কমিশনার(ভূমি) মুহাম্মদ জাফর আরিফ চৌধুরী বলেন,যেহেতু ওই প্রতিষ্ঠানে দু’টি শূন্য পদ রয়েছে।তারা (ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুনীল রায়সহ) চাচ্ছেন তাদের মন মতো শুধু প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দিতে। সেটি আমি কখনো বাস্তবায়ন করতে দিতে পারি না। নিয়োগ স্থগিত করা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

সুবিধা নিয়ে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের প্রতিবাদে বিক্ষোভ

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৬:০৩:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ জুন ২০২৪

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে অব্যাহতিপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষক মামনুর রশীদকে জয়নগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগে নীলনকশা বাস্তবায়নের প্রতিবাদে বিক্ষোভসহ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।

সোমবার (১০ জুন) বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচির করেন জয়নগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক-কর্মচারী, শিক্ষার্থী-অভিভাবকসহ এলাকাবাসীর যৌথ আয়োজনে।

মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন-বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির শিক্ষক প্রতিনিধি রায়হান আলী, সহকারী শিক্ষক ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির শিক্ষক তাহেরা বেগম, সহকারী শিক্ষক ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির শিক্ষক শাহানুর আলম, সহকারী শিক্ষক আশরাফুল আলম, সহকারী শিক্ষক ওয়াহেদ আলী, বিদ্যালয়ের জমিদাতা আফজাল তালুকদার, অভিভাবক মো. আলম, শিক্ষার্থী মোছা. লামিয়া আক্তার, এজাজ মন্ডল, সুরাইয়া আক্তার রিতু, রিক্ত চন্দ্র রায় প্রমুখ।

মানবন্ধন শেষে প্রতিবাদ জানিয়ে বিদ্যালয় চত্বরে বিক্ষোভ করেন সব শিক্ষক-কর্মচারী, শিক্ষার্থী-অভিভাবকসহ এলাকাবাসী।

জানা যায়, ২০২৩ সালের ১৭ মে প্রধান শিক্ষক মো. শাহরিয়ার রশিদ মারা গেলে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে সুনীল রায় দায়িত্ব পালন করেন। এরমধ্যে সুনীল রায়সহ কমিটির ক’জন বিতর্কিত এবং আগের প্রতিষ্ঠানের অব্যাহতিপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষক মামনুর রশীদকে জয়নগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগদানের পরিকল্পনা করে।এতে করে জয়নগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক-কর্মচারী, শিক্ষার্থী-অভিভাবকসহ এলাকাবাসী ফুঁসে ওঠে। তবে বিক্ষোভ ও মানববন্ধনের জন্য সকালে নিয়োগ পক্রিয়া স্থাগিত করেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। বর্তমান ম্যানেজিং কমিটির মেয়াদ চলতি মাসের ১১ তারিখ (মঙ্গলবার) শেষ হয়ে যাবে। এ কারণে সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক তড়িঘড়ি করে নিয়োগ পক্রিয়া শেষ করে তাদের অসৎ উদ্দেশ্য হাসিলের অপচেষ্টা চালাচ্ছেন।সেজন্য বিতর্কিত মামনুর রশীদের নিয়োগের ব্যাপারে এলাকাবাসী সোচ্চার হয়।

দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী সুবর্ণা রায়,লামি আক্তার, ফারজানা আক্তার,৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী মোস্তফা আক্তার মিঠু,আশিকুর রহমান জানান, আমরা শুনেছি প্রধান শিক্ষককে যাকে নিতে চাওয়া হচ্ছে তার নাকি আচরণ ভালো না। তার নামে অনেক মামলা আছে। তাকে নাকি আগের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে। এমন বিতর্কিত মানুষকে আমরা প্রধান শিক্ষক হিসেবে মেনে নেবো না। তাকে নিয়োগ দেয়া হলে আমরা শ্রেণিকক্ষে যাবো না।

অভিভাবক মকছেদ আলী ,মো. আলম ও এজাজ মন্ডল বলেন, মামুনুর রশিদের মতো চরিত্রহীন শিক্ষককে আমরা আমাদের এই বিদ্যালয়ে চাইনা। সে যদি এখানে নিয়োগপ্রাপ্ত হয় তবে আমরা আমাদের সন্তানদের বিদ্যালয় থেকে বের করে কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলবো।

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির শিক্ষক প্রতিনিধি রায়হান আলী,মোছা. শাহানুর আলম, তাহেরা বেগম ও সহকারী শিক্ষক ওয়াহেদ আলী বলেন, আমরা জানতে পেরেছি আদালত কর্তৃক ঘোষিত ও মোহনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির অব্যাহতিপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষক মামুনুর রশীদকে জয়নগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগদানের জন্য নিয়োগ বোর্ড আজকে ছিল। প্রার্থীদের মধ্যে দেলোয়ার হোসেন,মহসীন আলী, রাকিবুল ইসলাম জানিয়েছেন, আজকে (সোমবার ) প্রধান শিক্ষক নিয়োগ বোর্ড হবে এই মর্মে তারা রোববার (৯ জুন) ১০টায় চিঠি পেয়েছেন।

বিতর্কিত শিক্ষক মামনুর রশীদ মুঠোফোনে বলেন,অন্য একটি নিয়োগের জন্য নিয়োগ বোর্ডটি স্থগিত করেছে। আমার নিয়োগে কোনো সমস্যা হবে না।

ডিজির প্রতিনিধি প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালেক বলেন, ফোনে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুনীল রায় জানিয়েছিলেন আজকে (সোমবার) প্রধান শিক্ষক নিয়োগ বোর্ড হওয়ার কথা। কিন্তু কোনো কাগজপত্র পাইনি।

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি অবসর প্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্বাস আলী তার মুঠোফোনে একাধিক কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুনীল রায় তার মুঠোফোনে একাধিক কল দিলেও তিনি রিসিভ করে শুধু নিয়োগ বোর্ডটি বাতিল করা হয়েছে বলে এটুকু জানান।

এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নূর আলম বলেন, মৌখিকভাবে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে বলা হলেও লিখিতভাবে কোনো কিছু বলা হয়নি। এর ফলে নিয়োগ হবে কি না তাও তিনি জানেন না।

ডিসির প্রতিনিধি সহকারী কমিশনার(ভূমি) মুহাম্মদ জাফর আরিফ চৌধুরী বলেন,যেহেতু ওই প্রতিষ্ঠানে দু’টি শূন্য পদ রয়েছে।তারা (ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুনীল রায়সহ) চাচ্ছেন তাদের মন মতো শুধু প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দিতে। সেটি আমি কখনো বাস্তবায়ন করতে দিতে পারি না। নিয়োগ স্থগিত করা হয়েছে।