ঢাকা ০৫:৩৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সিলেটে ভয়াবহ বন্যা, পানিবন্দী লাখো মানুষ

সিলেট ব্যুরো
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৭:৫২:৪৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ মে ২০২৪ ৫৭ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে সিলেটে। সদরসহ গোয়াইনঘাট, জকিগঞ্জ, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট ও কোম্পানীগঞ্জের পরিস্থিতি ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। মানুষ শেষ সম্বলটুকু নিয়ে ছুটছেন নিরাপদ আশ্রয়ে। মঙ্গলবার (২৯ মে) বিকাল থেকে এসব উপজেলায় হু হু করে পানি বাড়তে থাকায় পানিবন্দী হয়ে পড়েন লাখো মানুষ। অনেকের ঘরে গলা পর্যন্ত ঢুকে পড়ে পানি। ভেসে গেছে গবাদি পশু ও পুকুর-খামারের মাছ। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্ধ ঘােষণা করা হয়েছে পর্যটন স্পট।

এদিকে, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুতি নিয়েছে জেলা প্রশাসন। এরমধ্যে গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, জকিগঞ্জ, কানাইঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ- এই পাঁচ উপজেলায় ২১৫টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এরমধ্যে গোয়াইনঘাটে ৫৬,কানাইঘাটে ১৮, জৈন্তাপুরে ৪৮, কোম্পানীগঞ্জে ৩৫ ও জকিগঞ্জে ৫৮টি। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে মঙ্গলবার (২৮ মে) বিকাল থেকে মানুষজন উঠতে শুরু করেছে।

এছাড়া বন্যাকবলিত মানুষের জন্য জেলা প্রশাসন থেকে এক হাজার বস্তা শুকনো খাবার, ১৫ টন করে ৭৫ টন চাল, ৫০ হাজার আড়াই লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। প্রয়োজনে বরাদ্দ আরো বাড়ানো হবে। এদিকে, বৃহস্পতিবার (৩০ মে) সকাল থেকে এসব পানিব্ন্দী মানুষকে উদ্ধারে প্রস্তুত রয়েছে সেনাবাহিনী।

ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে সৃষ্ট প্রবল বৃষ্টিতে ভারত সীমান্তবর্তী জৈন্তাপুর উপজেলায় সারি নদী আগেই বিপৎসীমার ওপরে ছিল। সেই সাথে মেঘালয়ের পাহাড় থেকে নামা ঢলে দ্রুতই তলিয়ে যেতে থাকে উপজেলা। একইচিত্র সিলেটের গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট ও জকিগঞ্জ উপজেলাতেও।

তথ্যমতে, বৃহস্পতিবার (৩০ মে) সকাল ৯টায় সিলেটের জৈন্তাপুরে সারি নদীর পানি একদিনে ২০২ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৯৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সুরমা নদী কানাইঘাট উপজেলা পয়েন্টে ১৯৬ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ১৬৬ সেন্টিমিটার ওপর, কুশিয়ারা নদী জকিগঞ্জের অমলসীদ পয়েন্টে ২২০ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ২০২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতের মেঘালয় রাজ্যের চেরাপুঞ্জিতে ৬৩৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। ফলে সিলেটের নদ-নদীর পানি বেড়েছে দ্রুত।

জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী জানান, টিলা এলাকা ছাড়া বাকিসব এলাকা প্লাবিত হয়েছে। মানুষের বাড়ির ছাউনি পর্যন্ত পানিতে ডুবে গেছে। পানিবন্দি হয়েছেন লক্ষাধিক মানুষ।

গোয়াইনঘাট ইউএনও মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, বন্যায় উপজেলার ৭৫ ভাগ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ফলে লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

সিলেটে ভয়াবহ বন্যা, পানিবন্দী লাখো মানুষ

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৭:৫২:৪৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ মে ২০২৪

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে সিলেটে। সদরসহ গোয়াইনঘাট, জকিগঞ্জ, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট ও কোম্পানীগঞ্জের পরিস্থিতি ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। মানুষ শেষ সম্বলটুকু নিয়ে ছুটছেন নিরাপদ আশ্রয়ে। মঙ্গলবার (২৯ মে) বিকাল থেকে এসব উপজেলায় হু হু করে পানি বাড়তে থাকায় পানিবন্দী হয়ে পড়েন লাখো মানুষ। অনেকের ঘরে গলা পর্যন্ত ঢুকে পড়ে পানি। ভেসে গেছে গবাদি পশু ও পুকুর-খামারের মাছ। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্ধ ঘােষণা করা হয়েছে পর্যটন স্পট।

এদিকে, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুতি নিয়েছে জেলা প্রশাসন। এরমধ্যে গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, জকিগঞ্জ, কানাইঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ- এই পাঁচ উপজেলায় ২১৫টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এরমধ্যে গোয়াইনঘাটে ৫৬,কানাইঘাটে ১৮, জৈন্তাপুরে ৪৮, কোম্পানীগঞ্জে ৩৫ ও জকিগঞ্জে ৫৮টি। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে মঙ্গলবার (২৮ মে) বিকাল থেকে মানুষজন উঠতে শুরু করেছে।

এছাড়া বন্যাকবলিত মানুষের জন্য জেলা প্রশাসন থেকে এক হাজার বস্তা শুকনো খাবার, ১৫ টন করে ৭৫ টন চাল, ৫০ হাজার আড়াই লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। প্রয়োজনে বরাদ্দ আরো বাড়ানো হবে। এদিকে, বৃহস্পতিবার (৩০ মে) সকাল থেকে এসব পানিব্ন্দী মানুষকে উদ্ধারে প্রস্তুত রয়েছে সেনাবাহিনী।

ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে সৃষ্ট প্রবল বৃষ্টিতে ভারত সীমান্তবর্তী জৈন্তাপুর উপজেলায় সারি নদী আগেই বিপৎসীমার ওপরে ছিল। সেই সাথে মেঘালয়ের পাহাড় থেকে নামা ঢলে দ্রুতই তলিয়ে যেতে থাকে উপজেলা। একইচিত্র সিলেটের গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট ও জকিগঞ্জ উপজেলাতেও।

তথ্যমতে, বৃহস্পতিবার (৩০ মে) সকাল ৯টায় সিলেটের জৈন্তাপুরে সারি নদীর পানি একদিনে ২০২ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৯৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সুরমা নদী কানাইঘাট উপজেলা পয়েন্টে ১৯৬ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ১৬৬ সেন্টিমিটার ওপর, কুশিয়ারা নদী জকিগঞ্জের অমলসীদ পয়েন্টে ২২০ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ২০২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতের মেঘালয় রাজ্যের চেরাপুঞ্জিতে ৬৩৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। ফলে সিলেটের নদ-নদীর পানি বেড়েছে দ্রুত।

জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী জানান, টিলা এলাকা ছাড়া বাকিসব এলাকা প্লাবিত হয়েছে। মানুষের বাড়ির ছাউনি পর্যন্ত পানিতে ডুবে গেছে। পানিবন্দি হয়েছেন লক্ষাধিক মানুষ।

গোয়াইনঘাট ইউএনও মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, বন্যায় উপজেলার ৭৫ ভাগ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ফলে লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।