ঢাকা ০১:৩৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ২৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

লাম্পি স্কিন ডিজিজে আক্রান্ত গরু, আতঙ্কে খামারিরা

আজিজুল হক সরকার, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর)
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ১২:৩২:৫৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ মে ২০২৪ ৮৭ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে লাম্পি স্কিন ডিজিজ (এলএসডি) ৪টি ইউনিয়নে বাড়ি বাড়ি দেখা দিয়েছে ।অন্য ইউনিয়ন গুলোতেও ছেয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে প্রায় ২৪টি গরু মারা গেছে। আসন্ন কুরবানীর ঈদ ঘনিয়ে আসায় আতঙ্কে আছেন খামারি-ধর্মপ্রাণ মানুষরাও। উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস ৩টি মারা যাওয়ার কথা বলছে।

ফুলবাড়ী উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে এবং ১টি পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় এলাকায় এই লাম্পি স্কিন ডিজিজ ছড়িয়ে পড়েছে।বেশি অক্রান্ত উপজেলার এলুয়াড়ী ,আলাদীপুর,খয়েরবাড়ী এবং শিবনগর ইউনিয়ন।এই ৪ ইউনিয়নের বাড়ি বাড়ি লাম্পি স্কিন ডিজিজ দেখা দিয়েছে।মারা গেছে প্রায় ২৪ টি ছোট-বড় গরু।তবে ৮ ইউনিয়নের প্রতিটিতে ৭/৮টির বেশি করে গরু মারা যাওয়ার কথা বলছেন অনেকে।এখনি গুরুত্ব না দিলে খামারিদের সর্বস্বান্ত হতে হবে বলে খামারিরা আশঙ্কা প্রকাশ করছেন। খামারিদের আশঙ্কা ইতোমধ্যে উপজেলার সর্বত্র এরোগ ছড়িয়ে পড়েছে ।

লাম্পি স্কিন ডিজিজে মারা: গরু মারা যাওয়া লাম্পি স্কিন ডিজিজে সর্বস্বান্তদের মধ্যে আলাদীপুর ইউনিয়নের কুরমুট গ্রামের শ্রী সাগর চন্দ্রের দেড় মাসের ১টি বাছুর মারা যায় গত সোমবার,্ঐ ইউনিয়নের ধরমপুর গ্রামের রেজার ১৫ দিনের বাছর গত সপ্তাহে মারা যায়।শিবনগর ইউনিয়নের উরিপুর গ্রামের আসাদুজ্জামানের বিদেশী ২টা বড় গাভী ১ দিনের ব্যবধানে মারা গেছে ২৬-২৭ এপ্রিল। আলাদীপুর গ্রামের বিধান চন্দ্রের ১টি বাছুর মারা যায়। আলাদীপুর তালতলা গ্রামের বৈসাগুর ১টি বাছুর মারা গেছে ১০ দিন আগে । বেতদিঘী ইউনিয়নের বেতদিঘী গ্রামের রাশেদুল ইসলামের ১টি এঁড়ে বাছুর মারা যায় গত সপ্তাহে ।একই গ্রামের ফিরোজ হোসেনের এঁড়ে বাছুর মারা যায়। পৌরসভার বারোকোনা গ্রামের মিস্তাজুল সরকারের ১টি বাছুর মারা গেছে রোজার মধ্যে,মোবারক পুরের দুখু মিয়ার ১টি বাছুর মারা গেছে রোজার মধ্যে,পৌরসভার কানাহার ডাঙ্গার রায়হানের ৩ মাসের বোকনা বাছুর মারা গেছে গত সপ্তাহে, খয়েরবাড়ী ইউনিয়নের মোহদীপুর গ্রামে দু’সপ্তাহ আগে বাছুর মারা গেছে।ওই এলাকার শাহীন আলমের ১টি এঁেড় বাছুর গত সপ্তাহে মারা গেছে।এছাড়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস ৩টি গরু মারা যাওয়ার কথা বলছে। তবে সেগুলোর বয়স ঠিকানা কিছুই জানাতে পারেনি।

লাম্পি স্কিন ডিজিজে আক্রান্ত: লাম্পি স্কিন ডিজিজে আক্রান্ত হয়ে নাকে-মুখে দ্যাগদ্যাগে ঘা নিয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ হাসপাতালে এসেছেন পৌরসভার চকচকা গ্রামের মাহাবুর ইসলাম(৩৬)। তিনি বলেন, “ফিজিএম জাতের ৩ মাস বয়সের বোকনা বাছুরটি প্রথমে হোমিও চিকিৎসা করাই। ভালো না হওয়ায় ১ সপ্তাহ আগে এই হাসপাতালে আনি।চিকিৎসকের কথামত আজকেও এনেছি।অবস্থা খুবই খারাপ। লাম্পি স্কিন ডিজিজে আক্রান্ত হয়ে নাকে-মুখে দ্যাগদ্যাগে ঘা হয়েছে।আর বাচার আশা নেই। গাভীটির ৩/৪ কেজি করে দুধ হতো ”

শিবনগর ইউনিয়নের পাটকপাড়া থেকে উৎপল রায় ৩ মাসের এঁড়ে বাছুর নিয়ে হাসপাতালে এসছেন। “বেতদিঘী ইউনিয়নের সৈয়দপুর গ্রাম থেকে ইয়াছিন আলী এসেছেন লাম্পি স্কিন ডিজিজে আক্রান্ত ২টি বাছুর নিয়ে।১ মাস বয়সের এঁড়ে বাছুর এবং ১ সপ্তাহ বয়সের বোকনা বাছুর নিয়ে।” ৮/৯ দিন থেকে লাম্পি স্কিন ডিজিজে আক্রান্ত রোগের ছিমটম নিয়ে বেতদিঘী থেকে এঁড়ে বাছুর নিয়ে এসেছেন হিমেল হোসেন। আনন্দ বাজার থেকে সাইদুল ইসলাম এনছেন ১টি বিদেশী এঁড়ে বাছুর।১০ দিন আগেও এনেছিলেন হাসপাতালে কিন্তু কমছেনা বলে জানালেন।”পশ্চিম গৌরী পাড়ার হাসান আলীর ১টি ৩ মাসের বাছুর এই রোগে আক্রান্ত,কাজী সাখাওয়াত আলীর ৩টি গরু আক্রান্ত।দৌলতপুর ইউনিয়নের বারাই পাড়া গ্রামের মকছেদ আলীর ৪/৫ মাসের বোকনা বাছুর এই রোগে আক্রান্ত। নবাবগঞ্জ উপজেলার শিমুল বাড়ী থেকে সাজেদুল ইসলাম এঁড়ে বাছুর নিয়ে এসেছেন হাসপাতালে।

ফুলবাড়ীর সবথেকে বড় অর্ণব গরুর খামারে সহস্রাধিক গরু ছিল।এসব রোগের কারণে খামার উঠে দিয়েছেন বলেও জানালেন ওই খামারের সেবাদানকারী এল এস পি (লাইফ স্টক সার্ভিস প্রোপাইটার) মো. নুর ইসলাম (তিনি উপজেলার শিবনগর ইউনিয়নে ফুলবাড়ী উপজেলা প্রাণিসম্পদ হাসপাতাল কর্তৃক এল এস পি নিয়োগপ্রাপ্ত) । তবে তার চিকিৎসায় অত্র এলাকায় কিছু গরু ভালোও হয়েছে এবং হচ্ছে বলে জানান।

ফুলবাড়ী উপজেলা প্রাণিসম্পদ হাসপাতালে দেড় মাস বয়সের বাছুর নিয়ে এসেছেন শিবনগর ইউনিয়নের পাটকপাড়া থেকে উৎপল রায় ।তিনি বলেন, আক্রান্ত গরুর শরীর চাকাচাকা হয়ে যায়, লোম উঠে যায়,ক্ষত হয়ে শরীরের চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। পা ফুলে যায়, শরীরে উচ্চ তাপমাত্রার জ্বর আসে । জ্বরের সাথে নাক-মুখ দিয়ে লালা বের হয়।খাওয়া বন্ধ হয়ে যায়।ছটপট করতে করতে গরু মারা যায়।

ফুলবাড়ী প্রাণিসম্পদ দপ্তর সূত্রে জানা যায় ,ফুলবাড়ী উপজেলায় নিবন্ধিত খামারের সংখ্যা ৪৪ টি। অনিবন্ধিত খামার আছে ২৫৭ টি । নিবন্ধিত ভেড়ার খামারের সংখ্যা ১ টি। অনিবন্ধিত ভেড়ার খামারের সংখ্যা ১১০ টি। ফুলবাড়ীতে গরুর সংখ্যা রয়েছে এক লাখ ৪৩ হাজার ২৫০টি।

উপজেলার এলুয়াড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ নবিউল ইসলাম বলেন, এই রোগের কারণে অনেকে গরু বিক্রি করতে শুরু করেছেন। প্রায় মাস হতে চললো এই এলাকায় লাম্পি স্কিন ডিজিজ (এলএসডি) দেখা দিয়েছে। রোগাক্রান্ত হয়ে আছে উপজেলার গ্রামে গ্রামে। খামারিরা অসহায় হয়ে পড়েছে।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রবিউল ইসলাম বলেন ,“রফিক মেডিসিন ফার্মা” নামে (বেসরকারি কো. ভাবে) ভ্যাকসিন এসেছে তাও অপ্রতুল।সরকারি ভাবে ভ্যাকসিন আসতে তাও ৩/৪ মাস সময় লাগবে। ভ্যাকসিন আসলে কিছুটা স্বস্তি। লাম্পি স্কিন বছরে ২ বার এই ডিজিজ (এলএসডি) দেখা দেয়। এটি ভাইরাসজনিত মৌসুমী চর্মরোগ যা মশা -মাছির মাধ্যমে ছড়ায়। কোন গবাদি পশু এ রোগে আক্রান্ত হলে তাকে পৃথক করে মশারির নিচে রাখতে হবে ।ভেক্সিন না আসা পর্যন্ত এন্টিবায়োটিক দেয়া যাবে না।কেননা, আক্রান্ত প্রাণি এমনিতেই দুর্বল হয়ে পড়ে। এমতাবস্থায় এন্টিবায়োটিক দিলে আক্রান্ত প্রাণি মারা যেতে পারে।আমাদের প্রাণিসম্পদ দপ্তরে যোগাযোগ করে চিকিৎসা নিলেই সুস্থ হয়ে যাবে।তবে তথাকথিত পল্লি চিকিৎসক (পিসি)রা ভুলভাল চিকিৎসা দিয়ে গরুর সর্বনাশ করছেন বলেও তিনি অভিযোগ করেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

লাম্পি স্কিন ডিজিজে আক্রান্ত গরু, আতঙ্কে খামারিরা

সংবাদ প্রকাশের সময় : ১২:৩২:৫৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ মে ২০২৪

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে লাম্পি স্কিন ডিজিজ (এলএসডি) ৪টি ইউনিয়নে বাড়ি বাড়ি দেখা দিয়েছে ।অন্য ইউনিয়ন গুলোতেও ছেয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে প্রায় ২৪টি গরু মারা গেছে। আসন্ন কুরবানীর ঈদ ঘনিয়ে আসায় আতঙ্কে আছেন খামারি-ধর্মপ্রাণ মানুষরাও। উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস ৩টি মারা যাওয়ার কথা বলছে।

ফুলবাড়ী উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে এবং ১টি পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় এলাকায় এই লাম্পি স্কিন ডিজিজ ছড়িয়ে পড়েছে।বেশি অক্রান্ত উপজেলার এলুয়াড়ী ,আলাদীপুর,খয়েরবাড়ী এবং শিবনগর ইউনিয়ন।এই ৪ ইউনিয়নের বাড়ি বাড়ি লাম্পি স্কিন ডিজিজ দেখা দিয়েছে।মারা গেছে প্রায় ২৪ টি ছোট-বড় গরু।তবে ৮ ইউনিয়নের প্রতিটিতে ৭/৮টির বেশি করে গরু মারা যাওয়ার কথা বলছেন অনেকে।এখনি গুরুত্ব না দিলে খামারিদের সর্বস্বান্ত হতে হবে বলে খামারিরা আশঙ্কা প্রকাশ করছেন। খামারিদের আশঙ্কা ইতোমধ্যে উপজেলার সর্বত্র এরোগ ছড়িয়ে পড়েছে ।

লাম্পি স্কিন ডিজিজে মারা: গরু মারা যাওয়া লাম্পি স্কিন ডিজিজে সর্বস্বান্তদের মধ্যে আলাদীপুর ইউনিয়নের কুরমুট গ্রামের শ্রী সাগর চন্দ্রের দেড় মাসের ১টি বাছুর মারা যায় গত সোমবার,্ঐ ইউনিয়নের ধরমপুর গ্রামের রেজার ১৫ দিনের বাছর গত সপ্তাহে মারা যায়।শিবনগর ইউনিয়নের উরিপুর গ্রামের আসাদুজ্জামানের বিদেশী ২টা বড় গাভী ১ দিনের ব্যবধানে মারা গেছে ২৬-২৭ এপ্রিল। আলাদীপুর গ্রামের বিধান চন্দ্রের ১টি বাছুর মারা যায়। আলাদীপুর তালতলা গ্রামের বৈসাগুর ১টি বাছুর মারা গেছে ১০ দিন আগে । বেতদিঘী ইউনিয়নের বেতদিঘী গ্রামের রাশেদুল ইসলামের ১টি এঁড়ে বাছুর মারা যায় গত সপ্তাহে ।একই গ্রামের ফিরোজ হোসেনের এঁড়ে বাছুর মারা যায়। পৌরসভার বারোকোনা গ্রামের মিস্তাজুল সরকারের ১টি বাছুর মারা গেছে রোজার মধ্যে,মোবারক পুরের দুখু মিয়ার ১টি বাছুর মারা গেছে রোজার মধ্যে,পৌরসভার কানাহার ডাঙ্গার রায়হানের ৩ মাসের বোকনা বাছুর মারা গেছে গত সপ্তাহে, খয়েরবাড়ী ইউনিয়নের মোহদীপুর গ্রামে দু’সপ্তাহ আগে বাছুর মারা গেছে।ওই এলাকার শাহীন আলমের ১টি এঁেড় বাছুর গত সপ্তাহে মারা গেছে।এছাড়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস ৩টি গরু মারা যাওয়ার কথা বলছে। তবে সেগুলোর বয়স ঠিকানা কিছুই জানাতে পারেনি।

লাম্পি স্কিন ডিজিজে আক্রান্ত: লাম্পি স্কিন ডিজিজে আক্রান্ত হয়ে নাকে-মুখে দ্যাগদ্যাগে ঘা নিয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ হাসপাতালে এসেছেন পৌরসভার চকচকা গ্রামের মাহাবুর ইসলাম(৩৬)। তিনি বলেন, “ফিজিএম জাতের ৩ মাস বয়সের বোকনা বাছুরটি প্রথমে হোমিও চিকিৎসা করাই। ভালো না হওয়ায় ১ সপ্তাহ আগে এই হাসপাতালে আনি।চিকিৎসকের কথামত আজকেও এনেছি।অবস্থা খুবই খারাপ। লাম্পি স্কিন ডিজিজে আক্রান্ত হয়ে নাকে-মুখে দ্যাগদ্যাগে ঘা হয়েছে।আর বাচার আশা নেই। গাভীটির ৩/৪ কেজি করে দুধ হতো ”

শিবনগর ইউনিয়নের পাটকপাড়া থেকে উৎপল রায় ৩ মাসের এঁড়ে বাছুর নিয়ে হাসপাতালে এসছেন। “বেতদিঘী ইউনিয়নের সৈয়দপুর গ্রাম থেকে ইয়াছিন আলী এসেছেন লাম্পি স্কিন ডিজিজে আক্রান্ত ২টি বাছুর নিয়ে।১ মাস বয়সের এঁড়ে বাছুর এবং ১ সপ্তাহ বয়সের বোকনা বাছুর নিয়ে।” ৮/৯ দিন থেকে লাম্পি স্কিন ডিজিজে আক্রান্ত রোগের ছিমটম নিয়ে বেতদিঘী থেকে এঁড়ে বাছুর নিয়ে এসেছেন হিমেল হোসেন। আনন্দ বাজার থেকে সাইদুল ইসলাম এনছেন ১টি বিদেশী এঁড়ে বাছুর।১০ দিন আগেও এনেছিলেন হাসপাতালে কিন্তু কমছেনা বলে জানালেন।”পশ্চিম গৌরী পাড়ার হাসান আলীর ১টি ৩ মাসের বাছুর এই রোগে আক্রান্ত,কাজী সাখাওয়াত আলীর ৩টি গরু আক্রান্ত।দৌলতপুর ইউনিয়নের বারাই পাড়া গ্রামের মকছেদ আলীর ৪/৫ মাসের বোকনা বাছুর এই রোগে আক্রান্ত। নবাবগঞ্জ উপজেলার শিমুল বাড়ী থেকে সাজেদুল ইসলাম এঁড়ে বাছুর নিয়ে এসেছেন হাসপাতালে।

ফুলবাড়ীর সবথেকে বড় অর্ণব গরুর খামারে সহস্রাধিক গরু ছিল।এসব রোগের কারণে খামার উঠে দিয়েছেন বলেও জানালেন ওই খামারের সেবাদানকারী এল এস পি (লাইফ স্টক সার্ভিস প্রোপাইটার) মো. নুর ইসলাম (তিনি উপজেলার শিবনগর ইউনিয়নে ফুলবাড়ী উপজেলা প্রাণিসম্পদ হাসপাতাল কর্তৃক এল এস পি নিয়োগপ্রাপ্ত) । তবে তার চিকিৎসায় অত্র এলাকায় কিছু গরু ভালোও হয়েছে এবং হচ্ছে বলে জানান।

ফুলবাড়ী উপজেলা প্রাণিসম্পদ হাসপাতালে দেড় মাস বয়সের বাছুর নিয়ে এসেছেন শিবনগর ইউনিয়নের পাটকপাড়া থেকে উৎপল রায় ।তিনি বলেন, আক্রান্ত গরুর শরীর চাকাচাকা হয়ে যায়, লোম উঠে যায়,ক্ষত হয়ে শরীরের চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। পা ফুলে যায়, শরীরে উচ্চ তাপমাত্রার জ্বর আসে । জ্বরের সাথে নাক-মুখ দিয়ে লালা বের হয়।খাওয়া বন্ধ হয়ে যায়।ছটপট করতে করতে গরু মারা যায়।

ফুলবাড়ী প্রাণিসম্পদ দপ্তর সূত্রে জানা যায় ,ফুলবাড়ী উপজেলায় নিবন্ধিত খামারের সংখ্যা ৪৪ টি। অনিবন্ধিত খামার আছে ২৫৭ টি । নিবন্ধিত ভেড়ার খামারের সংখ্যা ১ টি। অনিবন্ধিত ভেড়ার খামারের সংখ্যা ১১০ টি। ফুলবাড়ীতে গরুর সংখ্যা রয়েছে এক লাখ ৪৩ হাজার ২৫০টি।

উপজেলার এলুয়াড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ নবিউল ইসলাম বলেন, এই রোগের কারণে অনেকে গরু বিক্রি করতে শুরু করেছেন। প্রায় মাস হতে চললো এই এলাকায় লাম্পি স্কিন ডিজিজ (এলএসডি) দেখা দিয়েছে। রোগাক্রান্ত হয়ে আছে উপজেলার গ্রামে গ্রামে। খামারিরা অসহায় হয়ে পড়েছে।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রবিউল ইসলাম বলেন ,“রফিক মেডিসিন ফার্মা” নামে (বেসরকারি কো. ভাবে) ভ্যাকসিন এসেছে তাও অপ্রতুল।সরকারি ভাবে ভ্যাকসিন আসতে তাও ৩/৪ মাস সময় লাগবে। ভ্যাকসিন আসলে কিছুটা স্বস্তি। লাম্পি স্কিন বছরে ২ বার এই ডিজিজ (এলএসডি) দেখা দেয়। এটি ভাইরাসজনিত মৌসুমী চর্মরোগ যা মশা -মাছির মাধ্যমে ছড়ায়। কোন গবাদি পশু এ রোগে আক্রান্ত হলে তাকে পৃথক করে মশারির নিচে রাখতে হবে ।ভেক্সিন না আসা পর্যন্ত এন্টিবায়োটিক দেয়া যাবে না।কেননা, আক্রান্ত প্রাণি এমনিতেই দুর্বল হয়ে পড়ে। এমতাবস্থায় এন্টিবায়োটিক দিলে আক্রান্ত প্রাণি মারা যেতে পারে।আমাদের প্রাণিসম্পদ দপ্তরে যোগাযোগ করে চিকিৎসা নিলেই সুস্থ হয়ে যাবে।তবে তথাকথিত পল্লি চিকিৎসক (পিসি)রা ভুলভাল চিকিৎসা দিয়ে গরুর সর্বনাশ করছেন বলেও তিনি অভিযোগ করেন।