ঢাকা ০৬:০৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বেইলি রোডে পুড়ে যাওয়া ভবনের ছাদেও ছিলো রেস্তোরাঁ

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ১১:৪২:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ মার্চ ২০২৪ ১৭৮ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

রাজধানীর রেইলি রোডে আগুনে পুড়ে যাওয়া আবাসিক ভবনে অনুমোদনহীনভাবে চলছিলো নামীদামী রেস্তোরাঁ। এসব ব্যবসার অনুমোদন না থাকলেও ভবন মালিকের আতাতে এসব রেস্তোরাঁ দিনের পর দির পলে আসছিলো নির্বিঘ্নে। জরাজীর্ণ ভবনে ছোট্ট সিড়িই একমাত্র আসা যাওয়ার পথ। কাঁচঘেরা এসব রেস্টুরেন্ট যেন এক একটি মৃত্যুপুরী। প্রতিটি রেস্টুরেন্টে ঝুঁকিপূর্ণভাবে একাধিক সিলিন্ডার পাশাপাশি রেখে ডজনখানেক চুলায় দিনভর চলে রান্না।

বেইলি রোডে আগুন লাগা গ্রিন কজি কটেজ লাগোয়া আরেকটি ভবন গোল্ডেন প্যালেসে বড় বড় সব নামিদামি রেস্টুরেন্ট।

আবাসিক ভবনটির পঞ্চম তলা জুড়েই রয়েছে রেস্টুরেন্টসহ কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, একটির সঙ্গে আরেকটি লাগোয়া। নিচ থেকে পঞ্চম তলা পর্যন্ত ওঠার সিঁড়ি একেবারেই সরু। সিড়ির পাশেই রাখা আছে নানা সামগ্রী।

বেইলি রোডে পুড়ে যাওয়া ভবনের ছাদেও ছিলো রেস্তোরাঁ। অ্যামব্রোশিয়া নামে রেস্টুরেন্টকে ছাদ ভাড়া দেয় ভবন মালিক। এমনকি ভবনটিতে গ্যাস সংযোগ দেওয়া হয়েছে প্লাস্টিক পাইপ দিয়ে।

জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাতে আগুন লাগে গ্রিন কোজি কটেজের নিচতলায় চুমুক নামে দোকানে। কিছুদিন আগে চালু হওয়া দোকানটির মালিক শফিকুল ইসলাম লিমন ও আনোয়ারুল হক।

ভবনটি সাততলা পর্যন্ত আবাসিক ও অফিসের অনুমতি নেওয়া হলেও ভাড়া দেওয়া হয় রেস্তোরাঁ। ছাদেও বিশেষ কায়দায় ভাড়া দেওয়া হয় অ্যামব্রোশিয়া নামের রেস্টুরেন্টকে। তাই আগুন লাগার পর অনেকেই সেখানে আশ্রয় নিতে পারেননি।

ডিএমপির অতিরিক্ত আইজি ড. খ. মহিদ উদ্দিন বলেন, গাফিলতিটা এমন এক পর্যায়ে যে, তা আগুন ধরিয়ে দেওয়ার শামিল। এ ধরনের দাহ্য পদার্থ ও নিরাপত্তাহীনতা থাকলে আগুন লাগার আশঙ্কা বেশি।

ফায়ার সার্ভিসের সাবেক মহাপরিচালক আবু নাঈম মোঃ শাহিদউল্লাহ বলেন, মামলার দীর্ঘসূত্রতা এত বেশি হয় যে, যে ইন্সপেক্টর আজকে মামলা করল সে ডিডি (ডেপুটি ডিরেক্টর) হয়ে অবসরে যাওয়ার পরও আদালতে এর কার্যক্রমে যেতে হয় তাকে।’

বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০টার দিকে রাজধানীর বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিট প্রায় দুই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় এ পর্যন্ত ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।

ঘটনার পর ফায়ার সার্ভিস জানায়, পুরো ভবনে অসংখ্য গ্যাস সিলিন্ডার মজুত ছিল। এমনকি সিঁড়িতেও মজুত ছিল সিলিন্ডার। ফলে ভবনটিতে আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে তা দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে।

ভবনটিতে কাচ্চি ভাই, পিৎজা ইন, স্ট্রিট ওভেন, খানাসসহ বেশ কয়েকটি রেস্টুরেন্ট ছিল। এ ছাড়া ইলিয়েন, ক্লোজেস্ট ক্লাউডসহ বেশকিছু জনপ্রিয় পোশাকের দোকান ছিলো।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

বেইলি রোডে পুড়ে যাওয়া ভবনের ছাদেও ছিলো রেস্তোরাঁ

সংবাদ প্রকাশের সময় : ১১:৪২:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ মার্চ ২০২৪

রাজধানীর রেইলি রোডে আগুনে পুড়ে যাওয়া আবাসিক ভবনে অনুমোদনহীনভাবে চলছিলো নামীদামী রেস্তোরাঁ। এসব ব্যবসার অনুমোদন না থাকলেও ভবন মালিকের আতাতে এসব রেস্তোরাঁ দিনের পর দির পলে আসছিলো নির্বিঘ্নে। জরাজীর্ণ ভবনে ছোট্ট সিড়িই একমাত্র আসা যাওয়ার পথ। কাঁচঘেরা এসব রেস্টুরেন্ট যেন এক একটি মৃত্যুপুরী। প্রতিটি রেস্টুরেন্টে ঝুঁকিপূর্ণভাবে একাধিক সিলিন্ডার পাশাপাশি রেখে ডজনখানেক চুলায় দিনভর চলে রান্না।

বেইলি রোডে আগুন লাগা গ্রিন কজি কটেজ লাগোয়া আরেকটি ভবন গোল্ডেন প্যালেসে বড় বড় সব নামিদামি রেস্টুরেন্ট।

আবাসিক ভবনটির পঞ্চম তলা জুড়েই রয়েছে রেস্টুরেন্টসহ কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, একটির সঙ্গে আরেকটি লাগোয়া। নিচ থেকে পঞ্চম তলা পর্যন্ত ওঠার সিঁড়ি একেবারেই সরু। সিড়ির পাশেই রাখা আছে নানা সামগ্রী।

বেইলি রোডে পুড়ে যাওয়া ভবনের ছাদেও ছিলো রেস্তোরাঁ। অ্যামব্রোশিয়া নামে রেস্টুরেন্টকে ছাদ ভাড়া দেয় ভবন মালিক। এমনকি ভবনটিতে গ্যাস সংযোগ দেওয়া হয়েছে প্লাস্টিক পাইপ দিয়ে।

জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাতে আগুন লাগে গ্রিন কোজি কটেজের নিচতলায় চুমুক নামে দোকানে। কিছুদিন আগে চালু হওয়া দোকানটির মালিক শফিকুল ইসলাম লিমন ও আনোয়ারুল হক।

ভবনটি সাততলা পর্যন্ত আবাসিক ও অফিসের অনুমতি নেওয়া হলেও ভাড়া দেওয়া হয় রেস্তোরাঁ। ছাদেও বিশেষ কায়দায় ভাড়া দেওয়া হয় অ্যামব্রোশিয়া নামের রেস্টুরেন্টকে। তাই আগুন লাগার পর অনেকেই সেখানে আশ্রয় নিতে পারেননি।

ডিএমপির অতিরিক্ত আইজি ড. খ. মহিদ উদ্দিন বলেন, গাফিলতিটা এমন এক পর্যায়ে যে, তা আগুন ধরিয়ে দেওয়ার শামিল। এ ধরনের দাহ্য পদার্থ ও নিরাপত্তাহীনতা থাকলে আগুন লাগার আশঙ্কা বেশি।

ফায়ার সার্ভিসের সাবেক মহাপরিচালক আবু নাঈম মোঃ শাহিদউল্লাহ বলেন, মামলার দীর্ঘসূত্রতা এত বেশি হয় যে, যে ইন্সপেক্টর আজকে মামলা করল সে ডিডি (ডেপুটি ডিরেক্টর) হয়ে অবসরে যাওয়ার পরও আদালতে এর কার্যক্রমে যেতে হয় তাকে।’

বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০টার দিকে রাজধানীর বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিট প্রায় দুই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় এ পর্যন্ত ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।

ঘটনার পর ফায়ার সার্ভিস জানায়, পুরো ভবনে অসংখ্য গ্যাস সিলিন্ডার মজুত ছিল। এমনকি সিঁড়িতেও মজুত ছিল সিলিন্ডার। ফলে ভবনটিতে আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে তা দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে।

ভবনটিতে কাচ্চি ভাই, পিৎজা ইন, স্ট্রিট ওভেন, খানাসসহ বেশ কয়েকটি রেস্টুরেন্ট ছিল। এ ছাড়া ইলিয়েন, ক্লোজেস্ট ক্লাউডসহ বেশকিছু জনপ্রিয় পোশাকের দোকান ছিলো।