ঢাকা ০৬:১১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রধান শিক্ষক হারুনের টিফিন বাণিজ্য (পর্ব ২)

ত্রিপুরারী দেবনাথ তিপু, হবিগঞ্জ
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৪:০০:৫৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ মে ২০২৪ ৫৬ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

হবিগঞ্জের মাধবপুরে উপজেলার ১০নং ছাতিয়াইন ইউপির ছাতিয়াইন বিশ্বনাথ হাই স্কুল এন্ড কলেজে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। ছাতিয়াইন বিশ্বনাথ হাই স্কুল এন্ড কলেজের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির খবর জানতে সরজমিনে অনুসন্ধানে গেলে ওই স্কুল এন্ড কলেজের দুর্নীতি ও অনিয়ম বেরিয়ে আসে।

জানা যায়, ঐ স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক হারুনুর রশিদ ও সহকারী শিক্ষক দীপক কান্তি রায়সহ আরো অনেক শিক্ষক মিলে লাখ লাখ টাকা দুর্নীতি করে আসছে।

অনুসন্ধান কালে ঐ স্কুলের প্রধান শিক্ষক হারুন অর রশিদ নিজেকে স্বচ্ছতার দাবিতে প্রধান শিক্ষক হয়েছেন দাবি করেন। বার বার নিজেকে ধোঁয়া তুলসীপাতা বানানোর আপ্রাণ চেষ্টা করেন৷ কিন্তু অনুসন্ধানে দেখা যায় স্কুল এন্ড কলেজের উন্নয়ন কাজের প্রতিটি ক্ষেত্রেই রয়েছে অনিয়মের মহা তান্ডব।

স্কুলের ছাত্র ছাত্রীদের দুপুরের টিফিনের সময় গেইট আটকিয়ে বাধ্যতা মূলক করা হয় টিফিন খেতে। এক্ষেত্রে কৌশলে নিজ দায়িত্বে বাজার থেকে নাস্তা এনে বাণিজ্য করে যাচ্ছে। তাতে ছাত্র ছাত্রীরা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।

নাম প্রকাশ না করার স্বার্থে অনেক ছাত্র ছাত্রী জানান, অনেক সময় দুপুরে ছুটি হয়ে যায়। কিন্তু টিফিনের খাবার শেষ করে আমাদেরকে ছুটি দেওয়া হয়। টিফিনের পর যদি ক্লাস হয় তখন টিফিন করলে তাতে আমাদের কোন কথা ছিলনা। দুপুরে যেহেতু ছুটি দেওয়া হবে ঐ সময় আমাদের টাকা টা খরচ না করালেও পারতেন। কিন্তুক স্যারের সুবিধার জন্য এমন করে থাকেন। শুধু তা-ই নয়, আমাদের টিফিন থেকেও স্যার সুবিধা ভোগ করেন। যা আমরা মূখ খুলে প্রকাশ করতে পারি না। যে সিঙ্গারা, পুরি ও সমচা ১০ টাকা মূল্য ধরা হয়, তা কখনো বাজারে ১০ টাকা বিক্রি হবে না। দোকানদারের কাছে কম মূল্যে অর্ডার করে বানিয়ে আমাদের কাছ থেকে অধিক মূল্যে বিক্রি করেন। প্রধান শিক্ষক সুবিধা ভোগ করে নিজের পকেট ভারি করতে দ্বিধা বোধ করে না। প্রতিবাদ করলে আমাদের’কে চমর শাস্তি দিয়ে থাকেন বিভিন্ন ভাবে। যার কারনে আমরা কোন ছাত্র ছাত্রী তার প্রতিবাদ করতে পারি না। পরিশেষে তথ্য দেওয়া ছাত্র ছাত্রীরা করজোড়ে মিনতিতে জানান, যদি আমাদের কথা প্রধান শিক্ষক জানতে পারে, তাহলে নিশ্চিত আমাদের’কে প্রতিটি ক্লাসে কৌশলে শাস্তি দিবেন৷

অন্যদিকে, ছাতিয়াইন বাজারের টিফিনের নাস্তা বিক্রয়কারী দোকানদার জানান, আমার কাছ থেকে স্কুলের রঞ্জিত নামে একজন ব্যক্তি টিফিনের জন্য নাস্তা নেন। আর অতিন্দ্র নামে একজন আমাকে টিফিনের বিল পরিশোধ করেন। যতদিন টিফিনের নাস্তা বিক্রয় করি ততদিন আমার কাছ থেকে ২শ /৩শ টাকা সুবিধা ভোগ করেন। এই সুবিধা ভোগ করেন প্রধান শিক্ষক (হারুন অর রশিদ) স্যারের নির্দেশে।

প্রধান শিক্ষক হারুন অর রশিদ ঐ স্কুলে যোগদান করেন, ২০১০ সালের ২০শে অক্টোবর। যোগদানের পর থেকে অদ্যবদি তিনি যত অনিয়ম ও দুর্নীতি করেছেন, তার লাগামহীন দুর্নীতির দায়ে আজ এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কলংকিত হচ্ছে। এই প্রধান শিক্ষক’কে নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করার পর ছাতিয়াইন বিশ্বনাথ হাই স্কুল এন্ড কলেজের আশপাশের এলাকাসহ মাধবপুরবাসী দৃষ্টান্ত মূলক বিচার কামনা করছেন।

এছাড়া প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রথম সংবাদ প্রকাশ করার পর পরেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিক্ষা অফিসার’কে তদন্তের জন্য নির্দেশ প্রদান করেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ কে এম ফয়সাল জানান, বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে ।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

প্রধান শিক্ষক হারুনের টিফিন বাণিজ্য (পর্ব ২)

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৪:০০:৫৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ মে ২০২৪

হবিগঞ্জের মাধবপুরে উপজেলার ১০নং ছাতিয়াইন ইউপির ছাতিয়াইন বিশ্বনাথ হাই স্কুল এন্ড কলেজে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। ছাতিয়াইন বিশ্বনাথ হাই স্কুল এন্ড কলেজের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির খবর জানতে সরজমিনে অনুসন্ধানে গেলে ওই স্কুল এন্ড কলেজের দুর্নীতি ও অনিয়ম বেরিয়ে আসে।

জানা যায়, ঐ স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক হারুনুর রশিদ ও সহকারী শিক্ষক দীপক কান্তি রায়সহ আরো অনেক শিক্ষক মিলে লাখ লাখ টাকা দুর্নীতি করে আসছে।

অনুসন্ধান কালে ঐ স্কুলের প্রধান শিক্ষক হারুন অর রশিদ নিজেকে স্বচ্ছতার দাবিতে প্রধান শিক্ষক হয়েছেন দাবি করেন। বার বার নিজেকে ধোঁয়া তুলসীপাতা বানানোর আপ্রাণ চেষ্টা করেন৷ কিন্তু অনুসন্ধানে দেখা যায় স্কুল এন্ড কলেজের উন্নয়ন কাজের প্রতিটি ক্ষেত্রেই রয়েছে অনিয়মের মহা তান্ডব।

স্কুলের ছাত্র ছাত্রীদের দুপুরের টিফিনের সময় গেইট আটকিয়ে বাধ্যতা মূলক করা হয় টিফিন খেতে। এক্ষেত্রে কৌশলে নিজ দায়িত্বে বাজার থেকে নাস্তা এনে বাণিজ্য করে যাচ্ছে। তাতে ছাত্র ছাত্রীরা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।

নাম প্রকাশ না করার স্বার্থে অনেক ছাত্র ছাত্রী জানান, অনেক সময় দুপুরে ছুটি হয়ে যায়। কিন্তু টিফিনের খাবার শেষ করে আমাদেরকে ছুটি দেওয়া হয়। টিফিনের পর যদি ক্লাস হয় তখন টিফিন করলে তাতে আমাদের কোন কথা ছিলনা। দুপুরে যেহেতু ছুটি দেওয়া হবে ঐ সময় আমাদের টাকা টা খরচ না করালেও পারতেন। কিন্তুক স্যারের সুবিধার জন্য এমন করে থাকেন। শুধু তা-ই নয়, আমাদের টিফিন থেকেও স্যার সুবিধা ভোগ করেন। যা আমরা মূখ খুলে প্রকাশ করতে পারি না। যে সিঙ্গারা, পুরি ও সমচা ১০ টাকা মূল্য ধরা হয়, তা কখনো বাজারে ১০ টাকা বিক্রি হবে না। দোকানদারের কাছে কম মূল্যে অর্ডার করে বানিয়ে আমাদের কাছ থেকে অধিক মূল্যে বিক্রি করেন। প্রধান শিক্ষক সুবিধা ভোগ করে নিজের পকেট ভারি করতে দ্বিধা বোধ করে না। প্রতিবাদ করলে আমাদের’কে চমর শাস্তি দিয়ে থাকেন বিভিন্ন ভাবে। যার কারনে আমরা কোন ছাত্র ছাত্রী তার প্রতিবাদ করতে পারি না। পরিশেষে তথ্য দেওয়া ছাত্র ছাত্রীরা করজোড়ে মিনতিতে জানান, যদি আমাদের কথা প্রধান শিক্ষক জানতে পারে, তাহলে নিশ্চিত আমাদের’কে প্রতিটি ক্লাসে কৌশলে শাস্তি দিবেন৷

অন্যদিকে, ছাতিয়াইন বাজারের টিফিনের নাস্তা বিক্রয়কারী দোকানদার জানান, আমার কাছ থেকে স্কুলের রঞ্জিত নামে একজন ব্যক্তি টিফিনের জন্য নাস্তা নেন। আর অতিন্দ্র নামে একজন আমাকে টিফিনের বিল পরিশোধ করেন। যতদিন টিফিনের নাস্তা বিক্রয় করি ততদিন আমার কাছ থেকে ২শ /৩শ টাকা সুবিধা ভোগ করেন। এই সুবিধা ভোগ করেন প্রধান শিক্ষক (হারুন অর রশিদ) স্যারের নির্দেশে।

প্রধান শিক্ষক হারুন অর রশিদ ঐ স্কুলে যোগদান করেন, ২০১০ সালের ২০শে অক্টোবর। যোগদানের পর থেকে অদ্যবদি তিনি যত অনিয়ম ও দুর্নীতি করেছেন, তার লাগামহীন দুর্নীতির দায়ে আজ এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কলংকিত হচ্ছে। এই প্রধান শিক্ষক’কে নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করার পর ছাতিয়াইন বিশ্বনাথ হাই স্কুল এন্ড কলেজের আশপাশের এলাকাসহ মাধবপুরবাসী দৃষ্টান্ত মূলক বিচার কামনা করছেন।

এছাড়া প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রথম সংবাদ প্রকাশ করার পর পরেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিক্ষা অফিসার’কে তদন্তের জন্য নির্দেশ প্রদান করেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ কে এম ফয়সাল জানান, বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে ।