পাহাড়ে অপহরণ, মুক্তিপণ দিয়ে ফিরলেন ১০ কৃষক
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৭:৫২:০৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ ১৩২ বার পড়া হয়েছে
কক্সবাজারের টেকনাফের জনপদ ও পাহাড়ি এলাকায় একের পর এক অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। সকাল সন্ধ্যা কোথায় কি হচ্ছে মানুষের মুখে সমালোচনার যেন শেষ নেই।
টেকনাফে পাহাড়ে গরু চরাতে গিয়ে অপহরণের শিকার হন ১০ কৃষক। তারা ২ লাখ টাকায় মুক্তিপণ দিয়ে ফিরে এসেছেন। ২৭ মার্চ (বুধবার) রাত সাড়ে ১১ টার সময় টেকনাফের হোয়াইক্যং রৈক্ষ্যং ২২ নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পশ্চিমে পাহাড় থেকে তাদেরকে ফেরত দেওয়া হয়।
অপহৃতদের পরিবার বলছে, তাদের সবাইকে প্রায় দুই লাখ টাকা মুক্তিপণে ছাড়া পায়। মুক্তিপণের বিষয় নিশ্চিত করে উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান নুর আহমেদ আনোয়ারী বলেন, ‘দুর্বৃত্তদের হাতে অপহরণের শিকার আট কৃষক মুক্তিপণে ফিরে এসেছেন। তবে পুলিশ বলছে, অপহৃতরা ফেরত এসেছে। কিন্তু মুক্তিপণের বিষয়টি অবগত নই। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
ফেরত আসা অপহৃতরা হলো- জুনাইদ (১২), মোহাম্মদ নুর (১০), শাকিল(১৫),ফরিদ আলম (৩৫),আকতার (২৫), ইসমাইল প্রকাশ সোনায়া (২৪), ছৈয়দ হোছাইন বাবুল (২৬),ফজল কাদের (৪০)। এছাড়া গত দুইদিন অপহৃত অলি আহমদ(৩২) ও নুর মোহাম্মদ(১৭) মুক্তিপণে ফিরে আসেন।
ফিরে আসা অপহৃত শাকিলের পিতা লেদু মিয়া বলেন, রাতে ২০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দিয়ে ছেলে ফেরত দিয়েছে অপহরণকারীরা। কষ্টের সময় মানুষের কাছ থেকে দার করে টাকা নিয়ে ছেলে অপহরণকারীর হাত থেকে ছাড়া পায়। ছেলের সাথে বাকিরাও সবাই মুক্তিপণ দিয়ে ফেরত এসেছে।
হোয়াইক্যং কানজর পাড়া এলাকার গ্রাম পুলিশ শেখ কবির জানান, আগের দু’জনসহ অপহৃত দশজনকে অপহরণকারীরা মুক্তিপণে ফেরত দিয়েছে। তাদের কাছ থেকে ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা মুক্তিপণ নিয়ে রৈক্ষ্যং ২২ নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পশ্চিমে ছেড়ে দিয়ে চলে যায় অপহরণকারীরা। পরে পরিবারের লোকজন গিয়ে তাদের উদ্ধার করা নিয়ে আসে। এর আগে বুধবার সকালে পাহাড়ে কাজ করতে গেলে অপহরণের শিকার হন তারা।
এদিকে, ২৭ মার্চ বুধবার সকালে টেকনাফের হোয়াইক্যং রৈক্ষ্যং বাদিবন্যা পাহাড় থেকে ৮ জন এবং ২৬ মার্চ মঙ্গলবার উপজেলার হোয়াইক্যং কম্বনিয়া পাহাড়ি এলাকায় গরু চরাতে গিয়ে দুইজনসহ ১০ কৃষক অপহরণ শিকার হয়েছিল।
এবিষয়ে হ্নীলা পানখালীর ৪নং ওয়ার্ডের হামিদ হোসাইন জানান, চলতি মাসে হ্নীলা-হোয়াইক্যং ইউনিয়নের প্রায় ২৫ জন কৃষককে অস্ত্রধারী অপহরণকারীরা ধরে নিয়ে যান। পরে তাদের কাছ থেকে মুক্তিপণ নিয়ে ফেরত দেন। এসব ঘটনায় এলাকার লোকজন মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।’
টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী জানান, ‘এলাকায় নতুন করে অপহরণ মুক্তিমান আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ নতুন করে রোহিঙ্গা আসার পর এ ধরনের ঘটনা খুব বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে আমাদের পাহাড়ি এলাকায় যেসব কৃষক জীবিকা নির্বাহ করে তাঁরা এখন খুব বিপদে। প্রতিদিন কেউ না কেউ অপহরণের শিকার হচ্ছে।
টেকনাফে মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ ওসমান গনি বলেন, অপহৃতরা কৃষকরা ফিরেএসেছে। অপহরণকারীদের ধরতে আমরা কাজ করছি।
এদিকে গত ৯ মার্চ টেকনাফ হ্নীলা ইউনিয়নের পূর্ব পানখালী গ্রামের মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ ছেলে ছোয়াদ বিন আব্দুল্লাহ(৬) কে আবু হুরাইরা মাদ্রাসার সামনে থেকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।সে উক্ত মাদ্রাসার প্রথম শ্রেণির ছাত্র।আজ ১ ৯ দিন অতিবাহিত হলেও অপহৃত ছোয়াদকে উদ্ধার করতে পারেনি প্রশাসন।
তথ্যমতে, গত ২০২৩ সালের মার্চ থেকে ২০২৪ এর ২৮ মার্চ পর্যন্ত সীমান্ত উপজেলা টেকনাফের পাহাড় কেন্দ্রিক ১১৬ জন অপহরণের ঘটনা ঘটেছে, তার মধ্যে ৬৫ জন স্থানীয় এবং ৫১ জন রোহিঙ্গা। এরমধ্যে বেশির ভাগই মুক্তিপণ দিয়ে ফিরে এসেছে।