ঢাকা ০৭:৪৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ৩০ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দুই সন্তান নিয়ে খেতে রেস্তোরাঁয় গেলেন মা, ঠিকানা হলো মর্গে

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৯:২৬:০০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১ মার্চ ২০২৪ ১৬৭ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

রাজধানীর বেইলি রোডে রেস্তোরাঁয় খেতে গিয়ে আগুনে পুড়ে শেষ হয়ে গেল একটি পরিবার। তারা হলেন- মা পপি ও তার দুই সন্তান সান রায় (১০) ও সম্পূর্ণা রায় (১২)। বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাত আড়াইটার দিকে ঢাকা মেডিকেল মর্গের সামনে কথা হয় তাদের মামা পীযুষ পোদ্দারের সঙ্গে।

তিনি জানান, ভাগ্নি সম্পূর্ণা পড়ত সিদ্ধেশ্বরী গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের ষষ্ঠ শ্রেণিতে। আর সান রায় পড়ত উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল এন্ড কলেজের চতুর্থ শ্রেণিতে। বাবা-মায়ের সঙ্গে মালিবাগে থাকত তারা।

পিযুষ পোদ্দার আরও বলেন, বেইলি রোডে আগুন লাগার খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে তিনি সেখানে চলে যান। এসে দেখেন দাউ দাউ করে রেস্তোরাঁ জ্বলছে। কিন্তু কোথাও পপি, সম্পূর্ণ ও সানের খোঁজ পাননি। এরপর মধ্যরাতে ছুটে এসেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে। সম্পূর্ণা ও সানের মরদেহ খুঁজে পেয়েছেন। কিন্তু পপির কোনো খোঁজ পাচ্ছেন না।

রাজধানীর বেইলি রোডে একটি ভবনে ভয়াবহ আগুনে নারী-শিশুসহ প্রাণ গেছে অন্তত ৪৫ জনের। আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। তাদের ঢাকা মেডিকেল, শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বেশিরভাগের অবস্থাই আশঙ্কাজনক।

বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে নয়টার কিছু পরে নিচ তলার একটি দোকানে আগুনের সূত্রপাত। মুহূর্তের ভেতর আগুন ছড়িয়ে পড়ে দোতালায় থাকা কাচ্চিভাই, খানাজ, ইলিয়নসহ ভবনটির সব দোকানে। প্রাণ বাচাঁতে এদিক সেদিক ছুটতে থাকে শিশু নারী পুরুষ সবাই। ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট প্রায় ২ ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ইলেকট্রিক ক্রেনের মাধ্যমে ভবন থেকে জীবিত নামিয়ে আনা হয় প্রায় ৭৫ জনকে। খবর পেয়ে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে ছুটে আসেন নিহতদের স্বজনেরা।

ফায়ার সার্ভিস জানায়, ভবনের নিচতলার একটি দোকান থেকে আগুন লাগে। কালো ধোঁয়ার আচ্ছন্ন হয়ে যায় পুরো ভবন। যাতে শ্বাসকষ্টে প্রাণহানি বেড়েছে। ভবনটিতে বেশকিছু ফাস্টফুড ও রেস্টুরেন্ট ছিল। নিহতদের বেশিরভাগই রাতের খাবার খেতে গিয়েছিলেন সেখানে।

এদিকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে সভাপতি করা হয়েছে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরীকে। এছাড়া কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে রয়েছেন ঢাকা বিভাগের উপপরিচালক মো. ছালেহ উদ্দিন। এছাড়া সংশ্লিষ্ট জোনের ডিএডি, সিনিয়র স্টেশন অফিসার এবং ওয়ারহাউজ ইন্সপেক্টরকে কমিটির সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

দুই সন্তান নিয়ে খেতে রেস্তোরাঁয় গেলেন মা, ঠিকানা হলো মর্গে

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৯:২৬:০০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১ মার্চ ২০২৪

রাজধানীর বেইলি রোডে রেস্তোরাঁয় খেতে গিয়ে আগুনে পুড়ে শেষ হয়ে গেল একটি পরিবার। তারা হলেন- মা পপি ও তার দুই সন্তান সান রায় (১০) ও সম্পূর্ণা রায় (১২)। বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাত আড়াইটার দিকে ঢাকা মেডিকেল মর্গের সামনে কথা হয় তাদের মামা পীযুষ পোদ্দারের সঙ্গে।

তিনি জানান, ভাগ্নি সম্পূর্ণা পড়ত সিদ্ধেশ্বরী গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের ষষ্ঠ শ্রেণিতে। আর সান রায় পড়ত উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল এন্ড কলেজের চতুর্থ শ্রেণিতে। বাবা-মায়ের সঙ্গে মালিবাগে থাকত তারা।

পিযুষ পোদ্দার আরও বলেন, বেইলি রোডে আগুন লাগার খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে তিনি সেখানে চলে যান। এসে দেখেন দাউ দাউ করে রেস্তোরাঁ জ্বলছে। কিন্তু কোথাও পপি, সম্পূর্ণ ও সানের খোঁজ পাননি। এরপর মধ্যরাতে ছুটে এসেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে। সম্পূর্ণা ও সানের মরদেহ খুঁজে পেয়েছেন। কিন্তু পপির কোনো খোঁজ পাচ্ছেন না।

রাজধানীর বেইলি রোডে একটি ভবনে ভয়াবহ আগুনে নারী-শিশুসহ প্রাণ গেছে অন্তত ৪৫ জনের। আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। তাদের ঢাকা মেডিকেল, শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বেশিরভাগের অবস্থাই আশঙ্কাজনক।

বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে নয়টার কিছু পরে নিচ তলার একটি দোকানে আগুনের সূত্রপাত। মুহূর্তের ভেতর আগুন ছড়িয়ে পড়ে দোতালায় থাকা কাচ্চিভাই, খানাজ, ইলিয়নসহ ভবনটির সব দোকানে। প্রাণ বাচাঁতে এদিক সেদিক ছুটতে থাকে শিশু নারী পুরুষ সবাই। ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট প্রায় ২ ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ইলেকট্রিক ক্রেনের মাধ্যমে ভবন থেকে জীবিত নামিয়ে আনা হয় প্রায় ৭৫ জনকে। খবর পেয়ে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে ছুটে আসেন নিহতদের স্বজনেরা।

ফায়ার সার্ভিস জানায়, ভবনের নিচতলার একটি দোকান থেকে আগুন লাগে। কালো ধোঁয়ার আচ্ছন্ন হয়ে যায় পুরো ভবন। যাতে শ্বাসকষ্টে প্রাণহানি বেড়েছে। ভবনটিতে বেশকিছু ফাস্টফুড ও রেস্টুরেন্ট ছিল। নিহতদের বেশিরভাগই রাতের খাবার খেতে গিয়েছিলেন সেখানে।

এদিকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে সভাপতি করা হয়েছে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরীকে। এছাড়া কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে রয়েছেন ঢাকা বিভাগের উপপরিচালক মো. ছালেহ উদ্দিন। এছাড়া সংশ্লিষ্ট জোনের ডিএডি, সিনিয়র স্টেশন অফিসার এবং ওয়ারহাউজ ইন্সপেক্টরকে কমিটির সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে।