ঢাকা ০৫:৩৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ১৫ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দশ বছরে পানির দাম বেড়েছে ৯ বার

চট্টগ্রাম ব্যুরো
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ১২:৪৯:৪২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৫ মে ২০২৪ ৬৯ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

চট্টগ্রাম ওয়াসা আবাসিক গ্রাহকদের জন্য এক লাফে ৩০ শতাংশ পানির দাম বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে। বর্তমানে আবাসিক গ্রাহকেরা এক হাজার লিটার পানি ১৮ টাকায় কিনছেন। বাণিজ্যিক বা অনাবাসিক গ্রাহকরা একই পরিমাণ পানির জন্য ওয়াসাকে দিচ্ছেন ৩৭ টাকা।

অথচ ঢাকার আবাসিক গ্রাহকরা ঢাকা ওয়াসার কাছ থেকে এক হাজার লিটার পানি কিনছেন ১৫ টাকা দরে। অর্থাৎ ঢাকার চেয়ে চট্টগ্রামে ওয়াসার পানির দাম বর্তমানে বেশি হওয়া সত্ত্বেও আরেকদফা দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্তকে অযৌক্তিক দাবি ভোক্তাদের।


বর্তমানে ওয়াসার আবাসিক গ্রাহক সংযোগ ৭৮ হাজার ৫৪২টি ও বাণিজ্যিক সংযোগ ৭ হাজার ৭৬৭টি। নগরের প্রায় ১ হাজার ২০০ কিলোমিটার পাইপলাইনের মাধ্যমে পানি সরবরাহ করা হয়।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম ওয়াসা প্রতি বছরই কোটি কোটি টাকা লাভ করে। তারপরও আবার পানির দাম বাড়াতে চায় সেবা সংস্থাটি। গত দশ বছরে ৯ বার পানির দাম বাড়িয়েছে। এছাড়া লাভে থাকা সত্ত্বেও আরেক দফা পানির দাম বাড়ানোর যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন গ্রাহক ও বিশেষজ্ঞরা। তবে লাভ করলেও সেবার মান না বাড়িয়ে দাম বাড়ানোর এই সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া যায় না। উৎপাদন বাড়ালেও সংস্থাটি সকল নাগরিকের জন্য সুপেয় পানির ব্যবস্থা করতে পারেনি। নগরের অনেক এলাকায় দিনের পর দিন পানি থাকে না। আবার পানি থাকলেও লবণাক্ততার কারণে সে পানি পান করা যায় না। কর্তৃপক্ষের উচিত সেসব সমস্যার সমাধান করা। মড়ার উপর খাড়ার ঘায়ের মতো এই দুর্মূল্যের বাজারে পানির দাম বৃদ্ধি না করে গ্রাহকরা কীভাবে দিন-রাত নিরবচ্ছিন্ন পানি পাবে সে ব্যাপারে তৎপর হওয়া।

গ্রাহকেরা বলছেন, ওয়াসা লোকসানে চললে কথা ছিলো। কিন্তু সংস্থাটি প্রতিবছরই পানি বিক্রি করে লাভ করছে। ফলে এ সময়ে পানির দাম বাড়িয়ে গ্রাহকের কাঁধে আরও চাপ সৃষ্টি করার যৌক্তিকতা নেই।

এদিকে লাভে থাকায় সংস্থাটি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উৎসাহ বোনাস বা প্রণোদনা দেওয়ার উদ্যোগও নিয়েছে। গত বছর নিয়মিত বেতন-ভাতার বাইরে দুটি করে মূল বেতন বিশেষ পুরস্কার হিসেবে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ওয়াসা কর্তৃপক্ষ। এতে ব্যয় ধরা হয় প্রায় আড়াই কোটি টাকা।

কয়েকবছর ধরে শুষ্ক মৌসুমে পানির উৎপাদন স্বাভাবিকভাবে কমে যায়। সেসময় পানিতে লবণাক্ততা বৃদ্ধি পায়। বাধ্য হয়ে তখন গ্রাহকদের পানি কিনে পান করতে হয়। এ বছর ১০ মার্চ থেকে উৎপাদন এক ধাক্কায় ৭ থেকে ৮ কোটি লিটার কমে যায়। এরফলে নিয়মিত পানি পাচ্ছে না অনেক এলাকাবাসী। লবণাক্ততার জন্য হালিশহর, উত্তর ও দক্ষিণ পতেঙ্গা, কাটগড়, বাকলিয়া, কর্নেলহাট, আকবর শাহ, পাহাড়তলীসহ একাধিক এলাকায় সংকট তৈরি হয়েছে।

জানা গেছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩০৮ কোটি ৫৪ লাখ ৯ হাজার টাকা, মোট রাজস্ব ব্যয় ২৪৯ কোটি ৪৩ লাখ।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

দশ বছরে পানির দাম বেড়েছে ৯ বার

সংবাদ প্রকাশের সময় : ১২:৪৯:৪২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৫ মে ২০২৪

চট্টগ্রাম ওয়াসা আবাসিক গ্রাহকদের জন্য এক লাফে ৩০ শতাংশ পানির দাম বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে। বর্তমানে আবাসিক গ্রাহকেরা এক হাজার লিটার পানি ১৮ টাকায় কিনছেন। বাণিজ্যিক বা অনাবাসিক গ্রাহকরা একই পরিমাণ পানির জন্য ওয়াসাকে দিচ্ছেন ৩৭ টাকা।

অথচ ঢাকার আবাসিক গ্রাহকরা ঢাকা ওয়াসার কাছ থেকে এক হাজার লিটার পানি কিনছেন ১৫ টাকা দরে। অর্থাৎ ঢাকার চেয়ে চট্টগ্রামে ওয়াসার পানির দাম বর্তমানে বেশি হওয়া সত্ত্বেও আরেকদফা দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্তকে অযৌক্তিক দাবি ভোক্তাদের।


বর্তমানে ওয়াসার আবাসিক গ্রাহক সংযোগ ৭৮ হাজার ৫৪২টি ও বাণিজ্যিক সংযোগ ৭ হাজার ৭৬৭টি। নগরের প্রায় ১ হাজার ২০০ কিলোমিটার পাইপলাইনের মাধ্যমে পানি সরবরাহ করা হয়।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম ওয়াসা প্রতি বছরই কোটি কোটি টাকা লাভ করে। তারপরও আবার পানির দাম বাড়াতে চায় সেবা সংস্থাটি। গত দশ বছরে ৯ বার পানির দাম বাড়িয়েছে। এছাড়া লাভে থাকা সত্ত্বেও আরেক দফা পানির দাম বাড়ানোর যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন গ্রাহক ও বিশেষজ্ঞরা। তবে লাভ করলেও সেবার মান না বাড়িয়ে দাম বাড়ানোর এই সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া যায় না। উৎপাদন বাড়ালেও সংস্থাটি সকল নাগরিকের জন্য সুপেয় পানির ব্যবস্থা করতে পারেনি। নগরের অনেক এলাকায় দিনের পর দিন পানি থাকে না। আবার পানি থাকলেও লবণাক্ততার কারণে সে পানি পান করা যায় না। কর্তৃপক্ষের উচিত সেসব সমস্যার সমাধান করা। মড়ার উপর খাড়ার ঘায়ের মতো এই দুর্মূল্যের বাজারে পানির দাম বৃদ্ধি না করে গ্রাহকরা কীভাবে দিন-রাত নিরবচ্ছিন্ন পানি পাবে সে ব্যাপারে তৎপর হওয়া।

গ্রাহকেরা বলছেন, ওয়াসা লোকসানে চললে কথা ছিলো। কিন্তু সংস্থাটি প্রতিবছরই পানি বিক্রি করে লাভ করছে। ফলে এ সময়ে পানির দাম বাড়িয়ে গ্রাহকের কাঁধে আরও চাপ সৃষ্টি করার যৌক্তিকতা নেই।

এদিকে লাভে থাকায় সংস্থাটি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উৎসাহ বোনাস বা প্রণোদনা দেওয়ার উদ্যোগও নিয়েছে। গত বছর নিয়মিত বেতন-ভাতার বাইরে দুটি করে মূল বেতন বিশেষ পুরস্কার হিসেবে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ওয়াসা কর্তৃপক্ষ। এতে ব্যয় ধরা হয় প্রায় আড়াই কোটি টাকা।

কয়েকবছর ধরে শুষ্ক মৌসুমে পানির উৎপাদন স্বাভাবিকভাবে কমে যায়। সেসময় পানিতে লবণাক্ততা বৃদ্ধি পায়। বাধ্য হয়ে তখন গ্রাহকদের পানি কিনে পান করতে হয়। এ বছর ১০ মার্চ থেকে উৎপাদন এক ধাক্কায় ৭ থেকে ৮ কোটি লিটার কমে যায়। এরফলে নিয়মিত পানি পাচ্ছে না অনেক এলাকাবাসী। লবণাক্ততার জন্য হালিশহর, উত্তর ও দক্ষিণ পতেঙ্গা, কাটগড়, বাকলিয়া, কর্নেলহাট, আকবর শাহ, পাহাড়তলীসহ একাধিক এলাকায় সংকট তৈরি হয়েছে।

জানা গেছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩০৮ কোটি ৫৪ লাখ ৯ হাজার টাকা, মোট রাজস্ব ব্যয় ২৪৯ কোটি ৪৩ লাখ।