ঢাকা ০৬:১১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঝালকাঠিতে দুর্ঘটনা/ ট্রাকের চালক-হেলপার আটক, জানা গেলো নিহতদের পরিচয়

শাহ জালাল, বরিশাল
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৮:২৭:৩৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪ ৮১ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ঝালকাঠিতে সিমেন্ট বোঝাই ট্রাকের ব্রেক ফেইল করে সড়ক দুর্ঘটনায় শিশুসহ ১৪ জন নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরও ১৭ জন। বুধবার ১৭ এপ্রিল বেলা দেড়টার দিকে খুলনা-বরিশাল মহাসড়কের ঝালকাঠির গাবখান টোল ঘরের সামনে এই দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর প্রায় দুই ঘন্টা মহাসড়কের সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়।

উদ্ধার কার্যক্রম শেষ হওয়ার পর বেলা সাড়ে ৩টার দিকে যানবাহন চলাচলের জন্য সড়ক ছেড়ে দেওয়া হয়। ঘটনার সাথে সাথে ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক ফারাহ্ধসঢ়; গুল নিঝুম, পুলিশ সুপার আফরোজুল হক টুটুল ঘটনাস্থলে ছুটে যান। ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিসের টিম ঘটনাস্থলে এসে উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করে।

ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক ফারাহ্ গুল নিঝুম জানান, দুর্ঘটনার কারন তদন্তে ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। নিহতদের পরিবারের জন্য ৫ লাখ টাকা, পঙ্গুত্ব বরণ করলে ৩ লাখ এবং আহতদের জন্য এক লাখ টাকা বরাদ্দের কথা ঘোষনা করেছে সরকার।

oppo_1024

ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা মোঃ শফিকুল ইসলাম জানান, ঝালকাঠি থেকে এপর্যন্ত ১১ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এরমধ্যে প্রাইভেট কারে একই পরিবারের ছিল ৬ জন, হাসপাতালে নেয়ার পরে মারা যায় ৪ জন এবং ট্রাকের ধাক্কায় উল্টে যাওয়া অপর ট্রাকের মধ্য থেকে একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়াও গুরুতর আহত অবস্থায় বলিশাল শের-ই- বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুইজন মারা যায়। পরে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে আরও একজন মারা যায়।

তিনি জানান, দুর্ঘটনাকবলিত ট্রাকটি ব্রীজ থেকে নামার সময় গতি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ব্রেক ফেইল করায় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে জানাগেছে।

হাসপাতাল পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যে নিহতরা হলা- ঝালকাঠি সদর উপজেলার শেখের হাট ইউনিয়নের শিশু রিফাত(৫), রাফি (৩), সাদি(১৩), গাবখান ইউনিয়নের আব্দুর রহিম, নজরুল ইসলাম (৩০), সরুপকাঠি ইউনিয়নের রুহুল আমিন, গাবখানের শহিদুল ইসলাম (৩৫), ধানসিড়ি ইউনিয়নের ওস্তাখান গ্রামের মিরাজ (৪০), সোহেল (২৫), আনোয়ার , কামাল, হেমায়েত, জাহাঙ্গির এবং কাঠালিয়া উপজেলার শৌল জালিয়া ইউনিয়নের তালগাছিয়া গ্রামের তাহমিনা বেগম (২৫) ।

প্রত্যক্ষ ও স্থানীয়দের সূত্রে জানাযায়, খুলনা থেকে আসা গাবখান ব্রীজ থেকে নামার সময় (খুলনা মেট্রো-ট ১১-৯৫৭ নম্বরের) সিমেন্ট বোঝাই ট্রাকটি দ্রুতগতীতে টোল ঘরের দিকে যাচ্ছিল। এসময় নিয়ন্ত্রন হারিয়ে ঘাতক ট্রাকটি টোল দেয়ার জন্য অপেক্ষায় থাকা ৩টি বেটারী চালিত অটো রিক্সা, একটি প্রাভেট কার (ঢাকা মোট্র- গ ৩৯-৫৭৪২) এবং ঘরের আসবাবব পত্র বহনকারী অপর একটি ট্রাক (ঢাকা মেট্র-ন ১২-২২০৪) কে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলে অটোরিক্সা ৩টি এবং প্রাইভেট কারটি দুমরে মুচড়ে যায়। এসময় প্রাইভেট কার ও অটোরিক্সার ৭ জন ঘটনাস্থলেই মারা যায়।

ঝালকাঠির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল মহিতুল ইসলাম জানান, ঘাতক ট্রাকের চালক মোঃ আল আমিনসহ হেলপারকে অভিযান চালিয়ে আটক করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে তার কাছে একটি ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়া গেলেও গাড়ীর কোন বৈধ কাগজপত্র পাওয়া যায়নি।

ঝালকাঠির সিভিল সার্জন ডাক্তার এসএম জহিরুল ইসলাম বলেন, সড়ক দুর্ঘটানয় হাসপাতালে আনা আহতদের সর্বচ্চ গুরুত্ব দিয়ে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়েছে। নিহতদের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

ঝালকাঠিতে দুর্ঘটনা/ ট্রাকের চালক-হেলপার আটক, জানা গেলো নিহতদের পরিচয়

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৮:২৭:৩৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪

ঝালকাঠিতে সিমেন্ট বোঝাই ট্রাকের ব্রেক ফেইল করে সড়ক দুর্ঘটনায় শিশুসহ ১৪ জন নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরও ১৭ জন। বুধবার ১৭ এপ্রিল বেলা দেড়টার দিকে খুলনা-বরিশাল মহাসড়কের ঝালকাঠির গাবখান টোল ঘরের সামনে এই দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর প্রায় দুই ঘন্টা মহাসড়কের সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়।

উদ্ধার কার্যক্রম শেষ হওয়ার পর বেলা সাড়ে ৩টার দিকে যানবাহন চলাচলের জন্য সড়ক ছেড়ে দেওয়া হয়। ঘটনার সাথে সাথে ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক ফারাহ্ধসঢ়; গুল নিঝুম, পুলিশ সুপার আফরোজুল হক টুটুল ঘটনাস্থলে ছুটে যান। ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিসের টিম ঘটনাস্থলে এসে উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করে।

ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক ফারাহ্ গুল নিঝুম জানান, দুর্ঘটনার কারন তদন্তে ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। নিহতদের পরিবারের জন্য ৫ লাখ টাকা, পঙ্গুত্ব বরণ করলে ৩ লাখ এবং আহতদের জন্য এক লাখ টাকা বরাদ্দের কথা ঘোষনা করেছে সরকার।

oppo_1024

ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা মোঃ শফিকুল ইসলাম জানান, ঝালকাঠি থেকে এপর্যন্ত ১১ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এরমধ্যে প্রাইভেট কারে একই পরিবারের ছিল ৬ জন, হাসপাতালে নেয়ার পরে মারা যায় ৪ জন এবং ট্রাকের ধাক্কায় উল্টে যাওয়া অপর ট্রাকের মধ্য থেকে একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়াও গুরুতর আহত অবস্থায় বলিশাল শের-ই- বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুইজন মারা যায়। পরে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে আরও একজন মারা যায়।

তিনি জানান, দুর্ঘটনাকবলিত ট্রাকটি ব্রীজ থেকে নামার সময় গতি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ব্রেক ফেইল করায় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে জানাগেছে।

হাসপাতাল পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যে নিহতরা হলা- ঝালকাঠি সদর উপজেলার শেখের হাট ইউনিয়নের শিশু রিফাত(৫), রাফি (৩), সাদি(১৩), গাবখান ইউনিয়নের আব্দুর রহিম, নজরুল ইসলাম (৩০), সরুপকাঠি ইউনিয়নের রুহুল আমিন, গাবখানের শহিদুল ইসলাম (৩৫), ধানসিড়ি ইউনিয়নের ওস্তাখান গ্রামের মিরাজ (৪০), সোহেল (২৫), আনোয়ার , কামাল, হেমায়েত, জাহাঙ্গির এবং কাঠালিয়া উপজেলার শৌল জালিয়া ইউনিয়নের তালগাছিয়া গ্রামের তাহমিনা বেগম (২৫) ।

প্রত্যক্ষ ও স্থানীয়দের সূত্রে জানাযায়, খুলনা থেকে আসা গাবখান ব্রীজ থেকে নামার সময় (খুলনা মেট্রো-ট ১১-৯৫৭ নম্বরের) সিমেন্ট বোঝাই ট্রাকটি দ্রুতগতীতে টোল ঘরের দিকে যাচ্ছিল। এসময় নিয়ন্ত্রন হারিয়ে ঘাতক ট্রাকটি টোল দেয়ার জন্য অপেক্ষায় থাকা ৩টি বেটারী চালিত অটো রিক্সা, একটি প্রাভেট কার (ঢাকা মোট্র- গ ৩৯-৫৭৪২) এবং ঘরের আসবাবব পত্র বহনকারী অপর একটি ট্রাক (ঢাকা মেট্র-ন ১২-২২০৪) কে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলে অটোরিক্সা ৩টি এবং প্রাইভেট কারটি দুমরে মুচড়ে যায়। এসময় প্রাইভেট কার ও অটোরিক্সার ৭ জন ঘটনাস্থলেই মারা যায়।

ঝালকাঠির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল মহিতুল ইসলাম জানান, ঘাতক ট্রাকের চালক মোঃ আল আমিনসহ হেলপারকে অভিযান চালিয়ে আটক করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে তার কাছে একটি ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়া গেলেও গাড়ীর কোন বৈধ কাগজপত্র পাওয়া যায়নি।

ঝালকাঠির সিভিল সার্জন ডাক্তার এসএম জহিরুল ইসলাম বলেন, সড়ক দুর্ঘটানয় হাসপাতালে আনা আহতদের সর্বচ্চ গুরুত্ব দিয়ে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়েছে। নিহতদের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।