ঢাকা ০৪:১৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ৩০ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গ্রাহকের অর্ধকোটি টাকা পোস্টমাস্টারের পকেটে

ইমরান হোসাইন, তানোর (রাজশাহী)
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ১২:২৮:২১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪ ১১২ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ডাক বিভাগের রাজশাহীর তানোর ডিজিটাল পোস্ট অফিস থেকে গ্রাহকের প্রায় কোটি টাকা গায়েব হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্তে নেমেছে রাজশাহীর ডাক বিভাগের কর্মকর্তারা। টাকা গায়েবের ঘটনার বিষয়ে সত্যতা পাওয়ায় তানোর ডিজিটাল পোস্ট অফিস পোস্ট মাস্টার মকছেদ আলীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

এ ঘটনায় রাজশাহীর ডাক বিভাগের পরিদর্শক মজিবুর রহমান বাদি হয়ে তানোর পোস্ট মাস্টার মকছেদ আলীকে অভিযুক্ত করে তানোর থানায় জিডি করেছেন। সোমবার (১৮ মার্চ) সকালে রাজশাহী ডাক বিভাগের ডেপুটি পোস্ট মাস্টার জেনারেল মনিরু জামানের নেতৃত্বে একটি তদন্ত টিম তানোর পোস্টে এসে গ্রাহকদের কাগজপত্র দেখা শুরু করেন।

এ সময় একের পর এক গ্রাহকরা পোস্ট অফিসে উপস্থিত হন। গ্রাহকরা অফিসের মধ্যে হৈচৈ শুরু করেন। ডেপুটি জেনারেল কর্মকর্তা গ্রাহকদের শান্ত করে তাদের কথা শুনেন এবং তাদের আশ্বস্ত করেন টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবেন তিনি।

তানোর উপজেলার কামারগাঁ বারঘরিয়া গ্রামের ভুক্তভুগি গ্রাহক জয়নাল আবেদীন বলেন, ২০২১ সালে আমি বাংলাদেশ পোষ্ট অফিস সঞ্চয় ব্যাংক তানোর পোস্ট অফিসে মেয়াদী আমানত হিসাবে এফডিএ করি ৬ লাখ টাকা। পরে ২০২২ সালে আবারও ৪ লাখ টাকা এফডিএ করি। প্রথম বারের ৬ লাখ টাকার সরকারী খাতাসহ পাশ বহিতে আছে। কিন্তু পরে ৪ লাখ টাকা আমার পাশ বহিতে হাতে লেখে তুলে দিয়েছে কিন্তু সরকারী রেজিস্ট্রি খাতায় কোন লেখা নেই। ৪ লাখের কোন হদিস পাওয়া যাচ্ছে না।

অপরদিকে, পুস্প রানী ৫ লাখ টাকা, সাবিয়া খাতুনের ৪ লাখ টাকা, অরুপ কুমারের ৫ লাখ ৩৮ হাজার টাকা, কৃষ্ণ রানীর ৫ লাখ টাকা, রাশেদুল ৩ লাখ টাকা, আঙ্গুরা খাতুনের ৫ লাখ টাকা, পার্থ দাসের ১ লাখ টাকা, রেজিয়া খাতুনের ৫ লাখ টাকাসহ অনেক গ্রাহকের প্রায় কোটি হাতিয়ে নিয়েছেন তানোর পোস্ট অফিসের মাষ্টার মকছেদ আলী।

তদন্তে কমিটি গ্রাহকদের পাশ বই সংগ্রহ করে রিছিব দেন। টাকা লোপাটের প্রমান পেয়েছে কর্মকর্তা। তদন্তের সার্থে অনেক কিছু গোপন রাখছে কর্তৃপক্ষ। রোববার পর্যন্ত গ্রাহকদের দেয়া তথ্য মতে সব মিলিয়ে ৫০ লাখ টাকার বেশি টাকা লোপাটের প্রমান পেয়েছেন।

রাজশাহী ডাক বিভাগের ডেপুটি পোস্ট মাস্টার জেনারেল মনিরু জামান বলেন, তানোর ডিজিটাল পোস্ট অফিসের পোস্ট মাস্টার মকছেদ আলীকে সাময়িক ভাবে চাকুরী থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তাকে অফিসে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তিনি অফিসের উপস্থিত ছিলেন না। তার ফোন বন্ধ। আমরা গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলে প্রমান পেয়িছি গ্রাহকদের লাখ লাখ টাকা নেবার ঘটনা সত্যতা পেয়েছি। এ যাবত ৫০ লাখ টাকা লোপাটের প্রমান মিলেছে।

তানোর পোস্ট অফিসে প্রায় ২২০ জন গ্রাহক আছেন। অনেক গ্রাহক বিষয়টি জানেন না। সেজন্য এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে। অন্য গ্রাহকরা এলে আরো বেশি টাকার অংক বাড়বে বলে আমরা ধারনা করছি। এবিষয়ে তানোর থানায় জিডি করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ আইনগত ব্যবস্থা নিবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

গ্রাহকের অর্ধকোটি টাকা পোস্টমাস্টারের পকেটে

সংবাদ প্রকাশের সময় : ১২:২৮:২১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪

ডাক বিভাগের রাজশাহীর তানোর ডিজিটাল পোস্ট অফিস থেকে গ্রাহকের প্রায় কোটি টাকা গায়েব হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্তে নেমেছে রাজশাহীর ডাক বিভাগের কর্মকর্তারা। টাকা গায়েবের ঘটনার বিষয়ে সত্যতা পাওয়ায় তানোর ডিজিটাল পোস্ট অফিস পোস্ট মাস্টার মকছেদ আলীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

এ ঘটনায় রাজশাহীর ডাক বিভাগের পরিদর্শক মজিবুর রহমান বাদি হয়ে তানোর পোস্ট মাস্টার মকছেদ আলীকে অভিযুক্ত করে তানোর থানায় জিডি করেছেন। সোমবার (১৮ মার্চ) সকালে রাজশাহী ডাক বিভাগের ডেপুটি পোস্ট মাস্টার জেনারেল মনিরু জামানের নেতৃত্বে একটি তদন্ত টিম তানোর পোস্টে এসে গ্রাহকদের কাগজপত্র দেখা শুরু করেন।

এ সময় একের পর এক গ্রাহকরা পোস্ট অফিসে উপস্থিত হন। গ্রাহকরা অফিসের মধ্যে হৈচৈ শুরু করেন। ডেপুটি জেনারেল কর্মকর্তা গ্রাহকদের শান্ত করে তাদের কথা শুনেন এবং তাদের আশ্বস্ত করেন টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবেন তিনি।

তানোর উপজেলার কামারগাঁ বারঘরিয়া গ্রামের ভুক্তভুগি গ্রাহক জয়নাল আবেদীন বলেন, ২০২১ সালে আমি বাংলাদেশ পোষ্ট অফিস সঞ্চয় ব্যাংক তানোর পোস্ট অফিসে মেয়াদী আমানত হিসাবে এফডিএ করি ৬ লাখ টাকা। পরে ২০২২ সালে আবারও ৪ লাখ টাকা এফডিএ করি। প্রথম বারের ৬ লাখ টাকার সরকারী খাতাসহ পাশ বহিতে আছে। কিন্তু পরে ৪ লাখ টাকা আমার পাশ বহিতে হাতে লেখে তুলে দিয়েছে কিন্তু সরকারী রেজিস্ট্রি খাতায় কোন লেখা নেই। ৪ লাখের কোন হদিস পাওয়া যাচ্ছে না।

অপরদিকে, পুস্প রানী ৫ লাখ টাকা, সাবিয়া খাতুনের ৪ লাখ টাকা, অরুপ কুমারের ৫ লাখ ৩৮ হাজার টাকা, কৃষ্ণ রানীর ৫ লাখ টাকা, রাশেদুল ৩ লাখ টাকা, আঙ্গুরা খাতুনের ৫ লাখ টাকা, পার্থ দাসের ১ লাখ টাকা, রেজিয়া খাতুনের ৫ লাখ টাকাসহ অনেক গ্রাহকের প্রায় কোটি হাতিয়ে নিয়েছেন তানোর পোস্ট অফিসের মাষ্টার মকছেদ আলী।

তদন্তে কমিটি গ্রাহকদের পাশ বই সংগ্রহ করে রিছিব দেন। টাকা লোপাটের প্রমান পেয়েছে কর্মকর্তা। তদন্তের সার্থে অনেক কিছু গোপন রাখছে কর্তৃপক্ষ। রোববার পর্যন্ত গ্রাহকদের দেয়া তথ্য মতে সব মিলিয়ে ৫০ লাখ টাকার বেশি টাকা লোপাটের প্রমান পেয়েছেন।

রাজশাহী ডাক বিভাগের ডেপুটি পোস্ট মাস্টার জেনারেল মনিরু জামান বলেন, তানোর ডিজিটাল পোস্ট অফিসের পোস্ট মাস্টার মকছেদ আলীকে সাময়িক ভাবে চাকুরী থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তাকে অফিসে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তিনি অফিসের উপস্থিত ছিলেন না। তার ফোন বন্ধ। আমরা গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলে প্রমান পেয়িছি গ্রাহকদের লাখ লাখ টাকা নেবার ঘটনা সত্যতা পেয়েছি। এ যাবত ৫০ লাখ টাকা লোপাটের প্রমান মিলেছে।

তানোর পোস্ট অফিসে প্রায় ২২০ জন গ্রাহক আছেন। অনেক গ্রাহক বিষয়টি জানেন না। সেজন্য এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে। অন্য গ্রাহকরা এলে আরো বেশি টাকার অংক বাড়বে বলে আমরা ধারনা করছি। এবিষয়ে তানোর থানায় জিডি করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ আইনগত ব্যবস্থা নিবে।