ঢাকা ০৭:০১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গরমে পান্তার জুড়ি নেই, এর গুণ জানলে চমকে যাবেন

বাংলা টাইমস ডেস্ক
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০১:৫২:০৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪ ৯৪ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

পান্তা ভাত শরীরের জন্য অনেক বেশি উপকারী । এই গরমে শরীর ঠান্ডা রাখতে এর জুড়ি নেই । সুস্বাদু রেসিপি ও স্বাস্থ্যগুণ জানিয়ে পাতে পান্তা রাখতে বলছেন বিশেষঞ্জরা।

গ্রীষ্মের শুরুতেই তাপদাহে অস্থির মানুষ। এই সময়ে সুস্থ থাকতেজহলে হালকা খাবার খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে । এই গরম থেকে বাঁচতে একবার পরখ করুন পান্তা ভাত । গ্রামে এই খাবারের প্রচলন এখনো রয়েছে। তবে শহুরে মানসিকতারা এটাকে সেভাবে গ্রহণ করেন না । কিন্তু শরীর ঠান্ডারাখতে পান্তা খুবই কার্যকর ।

পান্তাভাতের যতো গুণাগুণ

ভিটামিন বি ১২ ফার্মেন্টেশন এর ফলে পান্তা ভাতে ভিটামিন বি ১২ বেড়ে যায় । শরীরের ক্লান্তিভাব ও অনিদ্রা দূর করতেও সাহায্য করে পান্তা ভাত । অ্যাসিডিটি থেকে মুক্তি পেতেও সাহার্য করে পান্তা ভাত। সুফল পাবেন আলসার রোগীরাও।

নতুন মায়েদের জন্য ফারমেন্টেশনের ফলে ল্যাকটিক অ্যাসিড তৈরি হয় । মায়েদের দুগ্ধ উৎপাদনে সাহায্য করে পান্তা ভাত। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা ন্যাচারাল ল্যাক্সেটিভ হিসাবে বেশ কাজ করে । কোষ্ঠকাঠিন্য কমায় ।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রেপোন্তা ভাত খুবই কার্যকর । পান্তা ভাতে সোডিয়ামের পরিমাণ কম থাকে। অন্যদিকে পটাশিয়ামের পরিমাণ যথেষ্ট বেশি ।

রিহাইড্রেশন পান্তা ‘ বডি রিহাইড্রেটিং ফুড ’ হিসাবে পরিচিত । গরমকালে পান্তা খুবই উপকারী । ত্বকের ঔজ্জ্বল্য ‘ বিউটি সিক্রেট অফ এশিয়া ’ নামেও পরিচিত পান্তা ভাত । এটি কোলাজেন তৈরিতে সাহায্য করে । যা ত্বকের ইলাস্ট্রিসিটি বৃদ্ধি করে, এর ফলে ত্বক মসৃণ, টানটান ও উজ্জ্বল দেখায় ।

মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টে ভরপুর পান্তা ভাতে মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টের প্রাপ্যতা অনেক বেড়ে যায় । উদাহরণস্বরূপ- ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, আয়রনের মতো উপাদানের প্রাপ্যতা বৃদ্ধি পায় । ১০০ গ্রাম সাধারণ ভাতে৩.৪ এমজি আয়রন থাকে । অন্যদিকে পান্তা ভাতে তা দাঁড়ায় প্রায় ২১ গুণ,৭৩.৯১ এমজি ।

পান্তা ভাতে উপকারী ব্যাকটিরিয়া প্রোবায়োটিক্সে ভরপুর থাকে। এটি হজমশক্তিতে সাহায্য করে । সেই সাথে পান্তা সারাদিন কাজ করার জন্য শক্তি জোগাতেও সাহায্য করে ।

ভাত খেতে বারণ থাকলে পান্তা ভাত চলতে পারে

পান্তা ভাতের প্রোবায়োটিক টাইপ টু ডায়াবেটিসের আশঙ্কা বাড়িয়ে দেওয়া স্থূলতা ও ইনসুলিন রেজিস্ট‌্যান্সের সমস্যা রোধ করতে সাহায্য করে । পান্তা ভাতের প্রোবায়োটিকের প্রভাবে শরীরে ফ্যাট সঞ্চয়ের প্রবণতা কমে যায়। রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়িয়ে ডায়াবেটিসে সংক্রমণের হার কমায়। এছাড়া সংক্রমণ হলে পান্তা ভাত সুস্থতার হার বাড়িয়ে তোলে।

পান্তা ভাত খেলে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ সহজ হয় তার ফলে হৃদরোগের আশঙ্কাও কমে জলে ভেজানো ভাতে অ্যান্টি ডায়াবেটিক উপাদানগুলির কার্যকারিতাও বৃদ্ধি পায় অনেকটাই পান্তা ভাতের প্রোবায়োটিকের গুণে নানা ভিটামিনের সংশ্লেষ বাড়ে ফলে শরীরে ডায়াবেটিসের মাত্রা নিয়ন্ত্রিত হতে পারে ।

তবে ভাতের মতোই পান্তা ভাতেও গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ও গ্লাইসেমিক লোড বেশি তাই খুব বেশি খাওয়া উচিত নয় । ডায়াবেটিস রোগীর ভাতের থালার চার ভাগের এক ভাগ হবে পান্তা ভাত বাকিটায় থাকবে ডাল, তরকারি ও প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার । তবে তীব্র গরমে শরীরের জন্য পান্তা উপাদেয় এবং উপকারী, দুই- ই । গরমে ডায়েরিয়া ও হিট স্ট্রোক প্রতিরোধে গ্রীষ্মপ্রধান অঞ্চলের বাসিন্দাদের ডায়েটে পান্তা ভাতের উপস্থিতি প্রয়োজনীয় ।

ভাত সিদ্ধ করে তা সারারাত জলে ভিজিয়ে রেখে সকালে ব্যবহার করলেই তার নাম হয়ে যায় পান্তা ভাত। এই সাধারণ পান্তা ভাত ওড়িশায় পাখালা নামে পরিচিত, যা নানাবিধ ভাবে পরিবেশিত হয় ।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

গরমে পান্তার জুড়ি নেই, এর গুণ জানলে চমকে যাবেন

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০১:৫২:০৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪

পান্তা ভাত শরীরের জন্য অনেক বেশি উপকারী । এই গরমে শরীর ঠান্ডা রাখতে এর জুড়ি নেই । সুস্বাদু রেসিপি ও স্বাস্থ্যগুণ জানিয়ে পাতে পান্তা রাখতে বলছেন বিশেষঞ্জরা।

গ্রীষ্মের শুরুতেই তাপদাহে অস্থির মানুষ। এই সময়ে সুস্থ থাকতেজহলে হালকা খাবার খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে । এই গরম থেকে বাঁচতে একবার পরখ করুন পান্তা ভাত । গ্রামে এই খাবারের প্রচলন এখনো রয়েছে। তবে শহুরে মানসিকতারা এটাকে সেভাবে গ্রহণ করেন না । কিন্তু শরীর ঠান্ডারাখতে পান্তা খুবই কার্যকর ।

পান্তাভাতের যতো গুণাগুণ

ভিটামিন বি ১২ ফার্মেন্টেশন এর ফলে পান্তা ভাতে ভিটামিন বি ১২ বেড়ে যায় । শরীরের ক্লান্তিভাব ও অনিদ্রা দূর করতেও সাহায্য করে পান্তা ভাত । অ্যাসিডিটি থেকে মুক্তি পেতেও সাহার্য করে পান্তা ভাত। সুফল পাবেন আলসার রোগীরাও।

নতুন মায়েদের জন্য ফারমেন্টেশনের ফলে ল্যাকটিক অ্যাসিড তৈরি হয় । মায়েদের দুগ্ধ উৎপাদনে সাহায্য করে পান্তা ভাত। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা ন্যাচারাল ল্যাক্সেটিভ হিসাবে বেশ কাজ করে । কোষ্ঠকাঠিন্য কমায় ।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রেপোন্তা ভাত খুবই কার্যকর । পান্তা ভাতে সোডিয়ামের পরিমাণ কম থাকে। অন্যদিকে পটাশিয়ামের পরিমাণ যথেষ্ট বেশি ।

রিহাইড্রেশন পান্তা ‘ বডি রিহাইড্রেটিং ফুড ’ হিসাবে পরিচিত । গরমকালে পান্তা খুবই উপকারী । ত্বকের ঔজ্জ্বল্য ‘ বিউটি সিক্রেট অফ এশিয়া ’ নামেও পরিচিত পান্তা ভাত । এটি কোলাজেন তৈরিতে সাহায্য করে । যা ত্বকের ইলাস্ট্রিসিটি বৃদ্ধি করে, এর ফলে ত্বক মসৃণ, টানটান ও উজ্জ্বল দেখায় ।

মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টে ভরপুর পান্তা ভাতে মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টের প্রাপ্যতা অনেক বেড়ে যায় । উদাহরণস্বরূপ- ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, আয়রনের মতো উপাদানের প্রাপ্যতা বৃদ্ধি পায় । ১০০ গ্রাম সাধারণ ভাতে৩.৪ এমজি আয়রন থাকে । অন্যদিকে পান্তা ভাতে তা দাঁড়ায় প্রায় ২১ গুণ,৭৩.৯১ এমজি ।

পান্তা ভাতে উপকারী ব্যাকটিরিয়া প্রোবায়োটিক্সে ভরপুর থাকে। এটি হজমশক্তিতে সাহায্য করে । সেই সাথে পান্তা সারাদিন কাজ করার জন্য শক্তি জোগাতেও সাহায্য করে ।

ভাত খেতে বারণ থাকলে পান্তা ভাত চলতে পারে

পান্তা ভাতের প্রোবায়োটিক টাইপ টু ডায়াবেটিসের আশঙ্কা বাড়িয়ে দেওয়া স্থূলতা ও ইনসুলিন রেজিস্ট‌্যান্সের সমস্যা রোধ করতে সাহায্য করে । পান্তা ভাতের প্রোবায়োটিকের প্রভাবে শরীরে ফ্যাট সঞ্চয়ের প্রবণতা কমে যায়। রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়িয়ে ডায়াবেটিসে সংক্রমণের হার কমায়। এছাড়া সংক্রমণ হলে পান্তা ভাত সুস্থতার হার বাড়িয়ে তোলে।

পান্তা ভাত খেলে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ সহজ হয় তার ফলে হৃদরোগের আশঙ্কাও কমে জলে ভেজানো ভাতে অ্যান্টি ডায়াবেটিক উপাদানগুলির কার্যকারিতাও বৃদ্ধি পায় অনেকটাই পান্তা ভাতের প্রোবায়োটিকের গুণে নানা ভিটামিনের সংশ্লেষ বাড়ে ফলে শরীরে ডায়াবেটিসের মাত্রা নিয়ন্ত্রিত হতে পারে ।

তবে ভাতের মতোই পান্তা ভাতেও গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ও গ্লাইসেমিক লোড বেশি তাই খুব বেশি খাওয়া উচিত নয় । ডায়াবেটিস রোগীর ভাতের থালার চার ভাগের এক ভাগ হবে পান্তা ভাত বাকিটায় থাকবে ডাল, তরকারি ও প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার । তবে তীব্র গরমে শরীরের জন্য পান্তা উপাদেয় এবং উপকারী, দুই- ই । গরমে ডায়েরিয়া ও হিট স্ট্রোক প্রতিরোধে গ্রীষ্মপ্রধান অঞ্চলের বাসিন্দাদের ডায়েটে পান্তা ভাতের উপস্থিতি প্রয়োজনীয় ।

ভাত সিদ্ধ করে তা সারারাত জলে ভিজিয়ে রেখে সকালে ব্যবহার করলেই তার নাম হয়ে যায় পান্তা ভাত। এই সাধারণ পান্তা ভাত ওড়িশায় পাখালা নামে পরিচিত, যা নানাবিধ ভাবে পরিবেশিত হয় ।