ঢাকা ০৬:০৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ৩০ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সমাবেশে বক্তারা/ ২০ লাখ মানুষ উচ্ছেদ করে কোন উন্নয়ন চাই না

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৭:২৪:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ মার্চ ২০২৪ ১২৮ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

কামরাঙ্গীরচর আমাদের জন্মভূমি, ২০ লাখ মানুষের বসতভিটা। উন্নয়নের নামে আমাদের জন্মভূমি থেকে উচ্ছেদ করা হলে সেই উন্নয়ন আমরা চাই না। গত রবিবার কামরাঙ্গীরচর হাসপাতাল মাঠে রাজধানীর প্রান্তিক অঞ্চলটি অধিগ্রহণ করে কেন্দ্রীয় বাণিজ্যিক অঞ্চল (সিবিডি) প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রতিবাদে আয়োজিত এক সমাবেশের বক্তারা এসব কথা বলেন।

কামরাঙ্গীরচর জন্মভূমি রক্ষা কমিটি আয়োজিত এ সমাবশে অংশ নেয় এলাকাটির তিনটি ওয়ার্ডের প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক বাসিন্দা। সমাবেশ শেষে সিবিডি বাতিলের দাবিতে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেন কামরাঙ্গীরচরের জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক, শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন কামরাঙ্গীরচর জন্মভূমি রক্ষা কমিটির উপদেষ্টা ও কামরাঙ্গীরচর থানা আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রহিম। সভাপতির বক্তব্যে তিনি

সিবিডি প্রকল্প বাতিল না হলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার হুশিয়ারি দেন। এছাড়া এলাকার বাসিন্দাদের অধিকার রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

সিডিবি প্রকল্প বাস্তাবয়িত হলে কামরাঙ্গীরচরের হাজার বছরের ঐতিহ্য ধ্বংস হবে বলে মন্তব্য করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৫৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহাম্মদ হোসেন। তিনি বলেন, সিবিডি প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে কামরাঙ্গীরচরের মানুষ বিতাড়িত হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও মেয়র তাপসের কাছে আমাদের আবেদন, কামরাঙ্গীরচরবাসীকে উচ্ছেদ না করে যেসব জায়গা খালি রয়েছে, সেখানে এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হোক।

তিনি আরো বলেন, আমি এলাকার জনপ্রতিনিধি। এখানে আমার এলাকার ভোটাররা শুধু ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে না। দীর্ঘ সময় ধরে যারা এখানে বসবাস করে আসছে, স্বপ্ন দেখছে সুন্দর জীবনের তাদেরও সব স্বপ্ন ভেঙ্গে যাবে। তাই আমরা বার বার এই প্রকল্পের বিরুদ্ধে বলছি। আমরা আগেও বলেছি এখনো বলছি এলাকার মানুষের জীবন ধ্বংস করে উন্নয়ন আমরা চাইনা। উন্নয়ন করতে হলে সবাইকে নিয়ে করতে হবে। কাউকে বিতাড়িত করে নয়।

কামরাঙ্গীরচর থানার রোড এলাকার বাসিন্দা জুম্মন মিয়া বলেন, ‘উন্নয়নের নামে বিলাসিতা আমরা চাই না। কামরাঙ্গীরচরের যেখানে খালি জায়গা রয়েছে, সেখানে এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হোক। সিবিডি প্রকল্প বাতিলের ঘোষণা না আসা পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।’

কামরাঙ্গীরচর থানা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নাজমুল হাসান বলেন, ‘যে উন্নয়নে আমরা ভিটেমাটি ছাড়া হব, সেই উন্নয়ন আমরা চাই না। বর্তমানে কামরাঙ্গীরচরবাসীর মাঝে ভিটেমাটি হারানোর আতঙ্ক বিরাজ করছে।’

কামরাঙ্গীরচর থানা শিক্ষক ফোরামের সভাপতি ও কেমব্রিজ স্কুলের প্রধান শিক্ষক সৈয়দা সুলতানা মাহমুদা বলেন, ‘আমাদের জন্মভূমি থেকে উচ্ছেদ করে কোনো উন্নয়ন প্রকল্প আমরা চাই না। আমাদের বসতভিটা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হুমকির মুখে। প্রকল্প নিয়ে সিটি কর্পোরেশনের লুকোচুরি ভূমিকা মানুষকে আরো আতঙ্কিত এবং বিক্ষুব্ধ করেছে।’

সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন কামরাঙ্গীরচর নাগরিক পরিষদের সদস্য সচিব এস এম মাওলা রেজা, জন্মভুমি রক্ষা কমিটির সদস্য হাজী মো. ফারুখ হোসেন, মামুন আহমেদ, নাজমুল হাসান মিলন, আরিফ মাদবর, আমির হোসেন লবণ, সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ।

সমাবেশ এবং আন্দোলনের বিষয়ে ঢাকা দক্ষিন সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবু নাছের বলেন, ‘কারাঙ্গিরচরে স্থানীয়দের আন্দোলনের কথা আমরা জানতে পেরেছি। যারা আন্দোলন করছেন তারা সঠিক তথ্য জানেন না। অথবা তাদের ভুল তথ্য দিয়ে আন্দোলনের জন্য উসকে দেয়া হচ্ছে। আমরা খুব দ্রুত সময়ের মধ্য বাসিন্দাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সঠিক তথ্য জানিয়ে দেব।’

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

সমাবেশে বক্তারা/ ২০ লাখ মানুষ উচ্ছেদ করে কোন উন্নয়ন চাই না

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৭:২৪:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ মার্চ ২০২৪

কামরাঙ্গীরচর আমাদের জন্মভূমি, ২০ লাখ মানুষের বসতভিটা। উন্নয়নের নামে আমাদের জন্মভূমি থেকে উচ্ছেদ করা হলে সেই উন্নয়ন আমরা চাই না। গত রবিবার কামরাঙ্গীরচর হাসপাতাল মাঠে রাজধানীর প্রান্তিক অঞ্চলটি অধিগ্রহণ করে কেন্দ্রীয় বাণিজ্যিক অঞ্চল (সিবিডি) প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রতিবাদে আয়োজিত এক সমাবেশের বক্তারা এসব কথা বলেন।

কামরাঙ্গীরচর জন্মভূমি রক্ষা কমিটি আয়োজিত এ সমাবশে অংশ নেয় এলাকাটির তিনটি ওয়ার্ডের প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক বাসিন্দা। সমাবেশ শেষে সিবিডি বাতিলের দাবিতে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেন কামরাঙ্গীরচরের জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক, শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন কামরাঙ্গীরচর জন্মভূমি রক্ষা কমিটির উপদেষ্টা ও কামরাঙ্গীরচর থানা আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রহিম। সভাপতির বক্তব্যে তিনি

সিবিডি প্রকল্প বাতিল না হলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার হুশিয়ারি দেন। এছাড়া এলাকার বাসিন্দাদের অধিকার রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

সিডিবি প্রকল্প বাস্তাবয়িত হলে কামরাঙ্গীরচরের হাজার বছরের ঐতিহ্য ধ্বংস হবে বলে মন্তব্য করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৫৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহাম্মদ হোসেন। তিনি বলেন, সিবিডি প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে কামরাঙ্গীরচরের মানুষ বিতাড়িত হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও মেয়র তাপসের কাছে আমাদের আবেদন, কামরাঙ্গীরচরবাসীকে উচ্ছেদ না করে যেসব জায়গা খালি রয়েছে, সেখানে এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হোক।

তিনি আরো বলেন, আমি এলাকার জনপ্রতিনিধি। এখানে আমার এলাকার ভোটাররা শুধু ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে না। দীর্ঘ সময় ধরে যারা এখানে বসবাস করে আসছে, স্বপ্ন দেখছে সুন্দর জীবনের তাদেরও সব স্বপ্ন ভেঙ্গে যাবে। তাই আমরা বার বার এই প্রকল্পের বিরুদ্ধে বলছি। আমরা আগেও বলেছি এখনো বলছি এলাকার মানুষের জীবন ধ্বংস করে উন্নয়ন আমরা চাইনা। উন্নয়ন করতে হলে সবাইকে নিয়ে করতে হবে। কাউকে বিতাড়িত করে নয়।

কামরাঙ্গীরচর থানার রোড এলাকার বাসিন্দা জুম্মন মিয়া বলেন, ‘উন্নয়নের নামে বিলাসিতা আমরা চাই না। কামরাঙ্গীরচরের যেখানে খালি জায়গা রয়েছে, সেখানে এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হোক। সিবিডি প্রকল্প বাতিলের ঘোষণা না আসা পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।’

কামরাঙ্গীরচর থানা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নাজমুল হাসান বলেন, ‘যে উন্নয়নে আমরা ভিটেমাটি ছাড়া হব, সেই উন্নয়ন আমরা চাই না। বর্তমানে কামরাঙ্গীরচরবাসীর মাঝে ভিটেমাটি হারানোর আতঙ্ক বিরাজ করছে।’

কামরাঙ্গীরচর থানা শিক্ষক ফোরামের সভাপতি ও কেমব্রিজ স্কুলের প্রধান শিক্ষক সৈয়দা সুলতানা মাহমুদা বলেন, ‘আমাদের জন্মভূমি থেকে উচ্ছেদ করে কোনো উন্নয়ন প্রকল্প আমরা চাই না। আমাদের বসতভিটা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হুমকির মুখে। প্রকল্প নিয়ে সিটি কর্পোরেশনের লুকোচুরি ভূমিকা মানুষকে আরো আতঙ্কিত এবং বিক্ষুব্ধ করেছে।’

সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন কামরাঙ্গীরচর নাগরিক পরিষদের সদস্য সচিব এস এম মাওলা রেজা, জন্মভুমি রক্ষা কমিটির সদস্য হাজী মো. ফারুখ হোসেন, মামুন আহমেদ, নাজমুল হাসান মিলন, আরিফ মাদবর, আমির হোসেন লবণ, সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ।

সমাবেশ এবং আন্দোলনের বিষয়ে ঢাকা দক্ষিন সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবু নাছের বলেন, ‘কারাঙ্গিরচরে স্থানীয়দের আন্দোলনের কথা আমরা জানতে পেরেছি। যারা আন্দোলন করছেন তারা সঠিক তথ্য জানেন না। অথবা তাদের ভুল তথ্য দিয়ে আন্দোলনের জন্য উসকে দেয়া হচ্ছে। আমরা খুব দ্রুত সময়ের মধ্য বাসিন্দাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সঠিক তথ্য জানিয়ে দেব।’