নতুন শিক্ষাক্রমে ২০২৬ সালে এসএসসি পরীক্ষা ডিসেম্বর মাসে শুরু হবে। সেই সাথে প্রতিটি বিষয়ের মূল্যায়নে বিরতিসহ ৫ ঘণ্টা পরীক্ষা হবে। এর আগে ফেব্রুয়ারি মাসে এসএসসি পরীক্ষা হতো।

বৃহস্পতিবার (২৩ মে) নতুন কারিকুলামের সাথে সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জনো গেছে।

জানা গেছে, স্কুলের বার্ষিক ও অর্ধবার্ষিক মূল্যায়ন প্রক্রিয়া ৭টি ধাপে শিক্ষাক্রমে মূল্যায়ন পদ্ধতি নির্ধারণ করে নতুন কারিকুলাম নিয়ে গঠিত উচ্চপর্যায়ের কমিটি। সেই অনুযায়ী এসএসসি পরীক্ষা হবে ডিসেম্বরে।

সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, নতুন শিক্ষা কারিকুলামে এসএসসি পরীক্ষা হবে শুধু দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ের ওপর ভিত্তি করে। ৫ ঘণ্টাব্যাপী পরীক্ষার লিখিত মূল্যায়নে ওয়েটেজ ৬৫ শতাংশ এবং কার্যক্রমভিত্তিক মূল্যায়নে ৩৫ শতাংশ থাকবে।

চলতি বছরের ৩১ মে’র মধ্যে পরীক্ষা পদ্ধতি চূড়ান্ত হবে। তবে ওই পরীক্ষার নাম এসএসসি থাকবে কিনা সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত চুড়ান্ত হয়নি। সবকিছু চূড়ান্ত করতে চলতি মাসের মধ্যে এই সংক্রান্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে বৈঠকে বসবে মন্ত্রণালয়।

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফরহাদুল ইসলাম এসব বিষয়ে বলেন,নতুন শিক্ষা কারিকুলামে এসএসসি পরীক্ষা নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত আসতে যাচ্ছে। আরেকটি বৈঠকে চূড়ান্ত হওয়ার পর এসব বিষয়ে জানিয়ে দেয়া হবে। আগামী ২৭ মে কর্মশালায় চূড়ান্ত হতে পারে নতুন কারিকুলামে মূল্যায়ন পদ্ধতি।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার এ প্রসঙ্গে বলেন, বছরের শেষে পরীক্ষা নিলে শিক্ষাবর্ষ পুরোপুরি ব্যবহার করা যাবে। এসব বিবেচনায় এসএসসি পরীক্ষা ডিসেম্বর নেয়ার সুপারিশ রয়েছে। চলতি মাসের বেঠকেই তা চূড়ান্ত হতে পারে।

এসএসসি পরীক্ষা হবে ৫ ঘণ্টা: এনসিটিবি’র ‘২০২৫ এর দশম শ্রেণি শেষে পাবলিক মূল্যায়ন পরীক্ষা’ সংক্রান্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বর্তমান শিক্ষাক্রম অনুযায়ী এসএসসি পরীক্ষা ৩ ঘণ্টা হলেও আগামী বছর থেকে সময়ে পরিবর্তন আসছে। ২০২৫ সালে এই পরীক্ষা হবে নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী। এতে ১০টি বিষয়ের ওপর শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হবে। প্রতিটি বিষয়ের মূল্যায়ন হবে ৫ ঘণ্টায়। দীর্ঘ এই সময় পরীক্ষার হলেই অবস্থান করতে হবে পরীক্ষার্থীদের। অবশ্য মাঝে বিরতি পাবেন পরীক্ষার্থীরা।

২০২৫ সালে দশম শ্রেণিতে শিক্ষার্থীরা ১০টি বিষয় পড়বে। বিষয়গুলো হলো-ইংরেজি, বাংলা, গণিত, বিজ্ঞান, ডিজিটাল প্রযুক্তি, ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান, জীবন ও জীবিকা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা, ধর্মশিক্ষা, শিল্প ও সংস্কৃতি। এ পাঠ্যসূচির ওপরই অনুষ্ঠিত হবে এসএসসি পরীক্ষা।

বিষয়ের চাহিদা ও যোগ্যতা অনুযায়ী প্রকল্পভিত্তিক সমস্যা সমাধান, কাজ, অ্যাসাইনমেন্ট ইত্যাদির পাশাপাশি লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে মূল্যায়ন করা হবে পরীক্ষার্থীদের। মূল্যায়নে অনুসন্ধান, মডেল তৈরি, প্রদর্শন, উপস্থাপন, পরীক্ষণ, পরিকল্পনা প্রণয়ন ইত্যাদি বিষয় থাকবে।

এ ছাড়া নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী এসএসসি পরীক্ষা গ্রহণের সার্বিক আয়োজনের জন্য বিষয়ভিত্তিক ৬০০ শিক্ষকের সমন্বয়ে রিসোর্সপুল গঠন করার পরিকল্পনা রয়েছে। রিসোর্সপুলকে প্রথমে বোর্ডের আয়োজনে এনসিটিবির বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে সাত দিনের প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। আর ১১টি শিক্ষা বোর্ডের প্রতিটির জন্য প্রতি বিষয়ে চারজন করে ৪৪ জন শিক্ষককে চূড়ান্ত করা হবে।

উল্লেখ্য, নতুন শিক্ষাক্রম ২০২৩ সালে প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। আর চলতি বছর বাস্তবায়ন করা হয়েছে দ্বিতীয়, তৃতীয়, অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে। আর ২০২৫ সালে পঞ্চম ও দশম শ্রেণিতে। এছাড়া ২০২৬ সালে একাদশ এবং ২০২৭ সালে দ্বাদশ শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে।