একমাসে ডাকাতিসহ ১৪ চুরি, আতঙ্ক ফুলবাড়ীতে
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ১০:২৩:৪৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ মে ২০২৪ ৮৪ বার পড়া হয়েছে
দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে আশঙ্কাজনকহারে বেড়েছে চুরি-ডাকাতি। গত একমাসে ১৪টি চুরির ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এজন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তদারকির অভাব বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। এমনকি থানায় অভিযোগ দিয়েও মিলছেনা কোন প্রতিকার এমনটাই দাবী ভুক্তভোগীদের।
চলতি বছরের ৬ এপ্রিল থেকে ৫ মে পর্যন্ত পৌর এলাকাসহ উপজেলার বিভিন্ন বাজারে ৫টি দোকান-রাস্তা, ৯টি বাড়ি এবং একটি স্মৃতিস্তম্ভে চুরি ও ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে।
জানা যায়, ৫ এপ্রিল ( শনিবার) উপজেলার এলুয়াড়ী ইউনিয়নের লালদিঘী বাজারে পিকআপ নিয়ে এসে নৈশ্য প্রহরীকে অস্ত্রের মুখে আটকে রেখে ৩টি দোকানের সার্টারের তালা ভেঙে দুর্ধষ ডাকাতি সংঘটিত হয়। এসময় ডাকাতদল ‘তিনভাই ট্রের্ডাস’ থেকে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকার কিটনাশক, ‘সাগর ট্রেডার্স’ থেকে ৫ লাখ টাকার কিটনাশক ও নগদ ১০ হাজার টাকা ডাকাতি করে নিয়ে যায়। একই সাথে ওই বাজারের ‘পল্লব টেলিকম’ নামের এক বিকাশ এজেন্টের দোকানের তালা ভেঙে নগদ ৮০ হাজার টাকা নিয়ে যায়। এঘটনায় রোববার দুপুরে ফুলবাড়ী থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) শফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
লালদিঘী বাজারের নৈশ্য প্রহরী ইউনুছ আলী জানান, রাত আনুমানিক ৩টার দিকে হটাৎ একটি পিকআপ বাজারে এসে থামে। এরপর পিকআপ থেকে ৭/৮জন লোক নেমে এসে আমাকে দেশী অস্ত্রের মুখে আটকিয়ে তিনটি দোকানের মালামাল ও টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়।
একই রাতে আলাদীপুর ইউনিয়নের আলাদীপুর গ্রামের নিবাস বর্ম্মণের বাড়িতে চোরেরা প্রাচীর টপকে বাড়িতে ঢুকে দেড় ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়। এসময় বাড়ির গৃহিণী সুশিলা বর্ম্মণ টের পেয়ে চিৎকার করলে চোরেরা পালিয়ে যায়।
গত ২৯ এপ্রিল রাতে মুক্তিযুদ্ধের সময় শহিদ হওয়া ভারতীয় মিত্রবাহিনীর সেনাসদস্যদের স্মরণে ফুলবাড়ী সরকারি কলেজের পেছনে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভের লোহার নিরাপত্তা বেষ্টনির গ্রিল চুরি করে নিয়ে গেছে।
এদিকে ২৮ এপ্রিল রাতে পৌর এলাকার চকচকা গ্রামের মাইক ও সাউন্ড সার্ভিসের ব্যবসায়ী মোশারফ হোসেনের বাড়িতে চোরেরা ৫ লাখ টাকার মালামাল নিয়ে যায়। এর মধ্যে ২টি কম্পিউটার সেট, ৯টি ব্যাটারি, মাইকের ইউনিট, মাউথ পিস, তার, মাইক সার্ভিসের বিভিন্ন সামগ্রী।
এছাড়া গত ২৬ এপ্রিল রাতে উপজেলার দ.বাসুদেবপুর গ্রামে ধান কাটা মেশিন থেকে ৬ টি ব্যাটারি চুরি হয়েছে এবং অপর একটি বাড়ি থেকে ১ টি বৈদ্যুতিক মটার চুরি হয়। এর আগে গত ৬ এপ্রিল দুপুরে একই এলাকায় বাড়িতে না থাকায় আনোয়ারুল ইসলামের বাড়ি থেকে নগদ ৬০ হাজার টাকা চুরি হয়।
গত ২৫ এপ্রিল রাতে পৌর এলাকার চাঁদপাড়া গ্রামের মতিয়ার রহমানের বাড়িতে চেতনানাশক ওষুধ স্প্রে করে চুরির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় চোরেরা নগদ ৬৫ হাজার টাকা, স্বর্ণের এক জোড়া কানের দুলও হাতের চুরি নিয়ে যায়। এসময় বাড়িতে থাকা মোটরসাইকেল নিতে দরজা কাটতে গেলে চিৎকারে চোরেরা পালিয়ে যায়।
এর কিছুদিন আগে একই গ্রামের আমিরুল ইসলামের বাড়ি থেকে প্রায় তিন লক্ষাধিক টাকার গরু চুরি করে নিয়ে যায়।
গত ১৪ এপ্রিল দিন দুপুরে শিবনগর ইউনিয়নের বাসুদেবপুর গ্রামের ইউপি সদস্য মঞ্জুআরা বিউটির বাড়িতে নগদ সাড়ে ৩ লাখ টাকা ও ৭ ভরি স্বর্ণালঙ্কার চুরি হয়েছে।
২০ এপ্রিল পৌরসভার সুজাপুর এলাকার কলেজ শিক্ষক মিজানুর রহমানের ছেলের দুরন্ত বাই সাইকেল এবং আয়শার মোড়ের ওমর আলীর ছেলে ভোলার বড় ১টি ছাগল দিনের বেলা চুরি হয়ে যায়।
২৪ এপ্রিল ওই এলাকার খোকন কামারের লোহা লক্কড়ের দোকানে রাতে সিঁদ কেটে দোকানের সব লোহার জিনিসপত্র চুরি করে নিয়ে যায়।একই রাতে সোহরাব রোস্তমের টিউবওয়েল চুরি হয়।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ নবিউল ইসলাম বলেন, ফুলবাড়ীতে মাদকের কারণে এসব চুরি-ডাকাতির ঘটনা ঘটছে। তাই মাদকের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা বৃদ্ধি করতে হবে।
ফুলবাড়ী থানার ওসি মোস্তাফিজার রহমান জানান, অপরাধ দমনে পুলিশি তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। চুরি-ডাকাতি রোধে পুলিশি অভিযানও চলমান।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ফুলবাড়ী সার্কেল) মো. ফরহাদ হোসেন বলেন, চুরি-ডাকাতির ঘটনায় ফুলবাড়ীর পুলিশ প্রশাসন এদের প্রতিহত করতে চেষ্টা চালাচ্ছে, অভিযান অব্যাহত রয়েছ।