ঢাকা ০৯:৪৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইবিতে মঞ্চ নির্মাণে কাটা পড়ল বৃক্ষ, বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিবাদ

ইবি প্রতিনিধি
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৫:৪৫:৪৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ মার্চ ২০২৪ ৬৩ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) দুই যুগের পুরোনো তিনটি বৃক্ষ নিধন করে ‘বৈশাখী মঞ্চ’ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। গত রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ ভবন এবং ফলিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদ ভবনের মাঝামাঝি স্থানে এই গাছগুলো কাটা হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার (৪ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠন ও পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে।

এদিন সকাল ১০টায় অনুষদ ভবন সংলগ্ন বটতলা পার্শ্ববর্তী স্থানে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, ইবি সংসদ।

এসময় সংগঠনটির সভাপতি মাহমুদুল হাসান ও সাধারণ সম্পাদক নুর আলম, কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য মুখলেসুর রাহমান সুইট, ইবি সংসদের সহ-সভাপতি সাদিয়া মাহমুদ মীম ও দপ্তর সম্পাদক মনির হোসেনসহ অন্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এরপর বেলা সাড়ে ১১টায় একই স্থানে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন ‘ডিপ ইকোলজি এন্ড স্নেক কনজারভেশন ফাউন্ডেশন’ এর সদস্যরা।

অবস্থান কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের হাতে ‘সৌন্দর্য বর্ধনের নামে বৃক্ষ নিধন বন্ধ হোক’, ‘সবুজের রক্তক্ষরণ বন্ধ করো’, ‘একাডেমিক ভবনের পাশে মুক্ত মঞ্চ চাই না’, ‘প্রকৃতির ক্ষতি করে স্থাপনা তৈরি বন্ধ করো’, ‘প্রকৃতি ধ্বংস করে উন্নয়ন চাই না’ ও ‘উন্নয়নের নামে গাছ কাটা চলবে না’ ইত্যাদি বিভিন্ন দাবি সম্বলিত প্লাকার্ড দেখা যায়।

এদিকে বৃক্ষ নিধন করে মঞ্চ নির্মাণের প্রতিবাদে গণ স্বাক্ষর সম্বলিত প্রতিবাদ লিপি ও প্রতীকী চিত্র প্রদর্শন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবাদী সংগঠন অভয়ারণ্য।

এছাড়া বৃক্ষ নিধনের প্রতিবাদে কোষাধ্যক্ষ বরাবর পাঁচ দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবাদী আরেক সংগঠন গ্রীন ভয়েস।

তাদের দাবিগুলো হলো, উন্নয়ন ও সৌন্দর্য বর্ধনের নামে বৃক্ষ নিধন বন্ধ করতে হবে, কর্তনকৃত বৃক্ষের ক্ষতিপূরন স্বরুপ দ্বিগুন বৃক্ষ রোপন ও পরিচর্যা করতে হবে, বনায়ন রক্ষার্থে সুনির্দিষ্ট রোড ম্যাপ প্রণয়ন করা, সুপরিকল্পিত বনায়ন ও পরিচর্যা করা ও প্রাকৃতিক ভারসাম্যপূর্ণ ক্যাম্পাস বাস্তবায়ন করা।

ডিপ ইকোলজি এন্ড স্নেক কনজারভেশন ফাউন্ডেশন’র টিম লিডার ইয়ারাবি আঁখি বলেন, গাছ আমাদের পরম বন্ধু এটা ছোট বেলা থেকে জানি। উন্নয়নের নামে হুটহাট গাছ কেটে কোন উন্নয়ন বয়ে আনবে তা আমাদের বোধগম্য নয়। এ গাছগুলো রোদের সময় আমাদের ছায়া দিত। সকল শিক্ষার্থী ও সচেতন মহলদের এ ব্যাপারে এগিয়ে আসা উচিত।

অভয়ারণ্য’র সভাপতি ইসতিয়াক ফেরদৌস ইমন বলেন, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাতশ’র মতো গাছ লাগিয়েছি। কিন্তু বৃক্ষ নিধন করে মঞ্চ নির্মাণের যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে আমরা প্রতীকী চিত্রাঙ্কনের মাধ্যমে এর প্রতিবাদে করছি। আমরা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিভিন্ন মতামত নিয়েছি। সেগুলো আমরা আমাদের অঙ্কের মাধ্যমে তুলে ধরছি।’

বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য মুখলেসুর রাহমান সুইট বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি একাডেমিক ভবনের মাঝামাঝি একটা গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় এই বৈশাখী মঞ্চ নির্মাণ করা হচ্ছে। যার ফলে শিক্ষার্থীদের ক্লাস-পরীক্ষার ব্যাঘাত ঘটবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি বৃক্ষ নিধন করে বৈশাখী মঞ্চ নির্মাণ বন্ধ না করে তাহলে ছাত্র ইউনিয়ন ইবি সংসদ শিক্ষার্থীদের নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া বলেন, সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে কথা বলেই গাছ কাটা হয়েছে। কাজের প্রয়োজনে গাছ কাটায় লাগে। প্রয়োজনে পরবর্তীতে গাছ লাগানো হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

ইবিতে মঞ্চ নির্মাণে কাটা পড়ল বৃক্ষ, বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিবাদ

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৫:৪৫:৪৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ মার্চ ২০২৪

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) দুই যুগের পুরোনো তিনটি বৃক্ষ নিধন করে ‘বৈশাখী মঞ্চ’ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। গত রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ ভবন এবং ফলিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদ ভবনের মাঝামাঝি স্থানে এই গাছগুলো কাটা হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার (৪ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠন ও পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে।

এদিন সকাল ১০টায় অনুষদ ভবন সংলগ্ন বটতলা পার্শ্ববর্তী স্থানে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, ইবি সংসদ।

এসময় সংগঠনটির সভাপতি মাহমুদুল হাসান ও সাধারণ সম্পাদক নুর আলম, কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য মুখলেসুর রাহমান সুইট, ইবি সংসদের সহ-সভাপতি সাদিয়া মাহমুদ মীম ও দপ্তর সম্পাদক মনির হোসেনসহ অন্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এরপর বেলা সাড়ে ১১টায় একই স্থানে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন ‘ডিপ ইকোলজি এন্ড স্নেক কনজারভেশন ফাউন্ডেশন’ এর সদস্যরা।

অবস্থান কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের হাতে ‘সৌন্দর্য বর্ধনের নামে বৃক্ষ নিধন বন্ধ হোক’, ‘সবুজের রক্তক্ষরণ বন্ধ করো’, ‘একাডেমিক ভবনের পাশে মুক্ত মঞ্চ চাই না’, ‘প্রকৃতির ক্ষতি করে স্থাপনা তৈরি বন্ধ করো’, ‘প্রকৃতি ধ্বংস করে উন্নয়ন চাই না’ ও ‘উন্নয়নের নামে গাছ কাটা চলবে না’ ইত্যাদি বিভিন্ন দাবি সম্বলিত প্লাকার্ড দেখা যায়।

এদিকে বৃক্ষ নিধন করে মঞ্চ নির্মাণের প্রতিবাদে গণ স্বাক্ষর সম্বলিত প্রতিবাদ লিপি ও প্রতীকী চিত্র প্রদর্শন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবাদী সংগঠন অভয়ারণ্য।

এছাড়া বৃক্ষ নিধনের প্রতিবাদে কোষাধ্যক্ষ বরাবর পাঁচ দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবাদী আরেক সংগঠন গ্রীন ভয়েস।

তাদের দাবিগুলো হলো, উন্নয়ন ও সৌন্দর্য বর্ধনের নামে বৃক্ষ নিধন বন্ধ করতে হবে, কর্তনকৃত বৃক্ষের ক্ষতিপূরন স্বরুপ দ্বিগুন বৃক্ষ রোপন ও পরিচর্যা করতে হবে, বনায়ন রক্ষার্থে সুনির্দিষ্ট রোড ম্যাপ প্রণয়ন করা, সুপরিকল্পিত বনায়ন ও পরিচর্যা করা ও প্রাকৃতিক ভারসাম্যপূর্ণ ক্যাম্পাস বাস্তবায়ন করা।

ডিপ ইকোলজি এন্ড স্নেক কনজারভেশন ফাউন্ডেশন’র টিম লিডার ইয়ারাবি আঁখি বলেন, গাছ আমাদের পরম বন্ধু এটা ছোট বেলা থেকে জানি। উন্নয়নের নামে হুটহাট গাছ কেটে কোন উন্নয়ন বয়ে আনবে তা আমাদের বোধগম্য নয়। এ গাছগুলো রোদের সময় আমাদের ছায়া দিত। সকল শিক্ষার্থী ও সচেতন মহলদের এ ব্যাপারে এগিয়ে আসা উচিত।

অভয়ারণ্য’র সভাপতি ইসতিয়াক ফেরদৌস ইমন বলেন, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাতশ’র মতো গাছ লাগিয়েছি। কিন্তু বৃক্ষ নিধন করে মঞ্চ নির্মাণের যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে আমরা প্রতীকী চিত্রাঙ্কনের মাধ্যমে এর প্রতিবাদে করছি। আমরা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিভিন্ন মতামত নিয়েছি। সেগুলো আমরা আমাদের অঙ্কের মাধ্যমে তুলে ধরছি।’

বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য মুখলেসুর রাহমান সুইট বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি একাডেমিক ভবনের মাঝামাঝি একটা গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় এই বৈশাখী মঞ্চ নির্মাণ করা হচ্ছে। যার ফলে শিক্ষার্থীদের ক্লাস-পরীক্ষার ব্যাঘাত ঘটবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি বৃক্ষ নিধন করে বৈশাখী মঞ্চ নির্মাণ বন্ধ না করে তাহলে ছাত্র ইউনিয়ন ইবি সংসদ শিক্ষার্থীদের নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া বলেন, সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে কথা বলেই গাছ কাটা হয়েছে। কাজের প্রয়োজনে গাছ কাটায় লাগে। প্রয়োজনে পরবর্তীতে গাছ লাগানো হবে।