ঢাকা ০১:২৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আজ ২৯ এপ্রিল : উপকূলবাসী ভোলেনি সেই ভয়াল রাতের কথা

কক্সবাজার প্রতিনিধি
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ১০:২৩:১১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ৫৭ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

কক্সবাজার উপকূলের মানুষন এখনো ভুলেনি ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিলের প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড়ের ভয়াবহতা। দিনটি এলেই যেনো শোকের ছায়া নেমে আসে উপকূলের স্বজন হারানো পরিবারগুলোয়। সেই ২৯ এপ্রিল প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড়ের থাবায় কক্সবাজারে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ নিহত হয়।

ওইদিন এক মহাপ্লাবনকারী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস লন্ডভন্ড করে দেয় উপকূলীয় জনপদ। ২৫০ কিলোমিটার বেগে আঘাত হানা সেই ঘূর্ণিঝড়ের উচ্চতা ছিল ৬ ফুট। ওই জলোচ্ছ্বাসে চট্টগ্রামের দক্ষিণ পূর্ব উপকূলের প্রায় ১ লাখ ৩৮ হাজার মানুষ নিহত হয়।

ওই ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে ভেসে গিয়েছিল ফসলের ক্ষেত, লাখ-লাখ গবাদি পশু। সবমিলিয়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ছিল দেড় বিলিয়ন ডলার। ওইসময় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় ভোলা, হাতিয়া, চট্টগ্রামের সন্দীপ, আনোয়ারা, বাঁশখালী, কক্সবাজারের চকরিয়া, মহেশখালী ও কুতুবদিয়ায়। যদিও এই ঘূর্ণিঝড়ের ৩৩ বছরেও সেসব উপকূলীয় এলাকা এখনও অরক্ষিত।

সেদিন রাত ১০টার পর ১০ থেকে ২৫ ফুট উচ্চতায় সাগরের পানি মুহূর্তেই ধেয়ে আসে লোকালয়। জলোচ্ছ্বাস ও ঘূর্ণিঝড়ের তান্ডবলীলায় ওই রাতে অনেক মা হারায় সন্তানকে, স্বামী হারায় স্ত্রীকে, ভাই হারায় বোনকে। কোথাও কোথাও গোটা পরিবারই হারিয়ে যায় পানির স্রোতে। ২৯ এপ্রিলের সেই ধ্বংসযজ্ঞের স্মৃতি বয়ে উপকূলীয় মানুষের কাছে দিনটি ফিরে আসে বারংবার। দিনটি বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি শোকাবহ দিন। ওই রাতের ভয়াবহতা যেনো দীর্ঘস্থায়ী এক ক্ষতচিহ্ন রেখে গেছে মানুষের মনে।

৯১ সালের ঘুর্ণিঝড়ে মা, বাবা, চাচা, ও দাদী হারনো মহেশখালীর ধলঘাটার সিকদার পাড়ার শওকত আলী বলেন, ২৯ এপ্রিলের দিনটি আমাদের জন্য খুবই বেদনাদায়ক। আমার পরিবারের ৮ সদস্যের মধ্যে কর্তা ব্যক্তিদের যারা বাড়িতে ছিলেন তারা সকলেই মৃত্যুবরণ করেছেন। আমাদের বদুয়ার পাড়ায় মানুষ ছিল ১৬৫ জন। এর মধ্যে ঘুর্ণিঝড়ে একই দিনে মৃত্যুবরণ করেছেন ১২৫ জন। মাত্র একটি পরিবার ছাড়া অপর সকল পরিবারের একাধিক সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। এই ভয়াবহ দিনটি আমাদের জন্য শোকের একটি দিন। শুধুমাত্র হারানোর বেদনা নিয়ে বেঁচে আছেন ধলঘাটার প্রায় ১৪ হাজার মানুষ।

মহেশখালী-কুতুবদিয়া সংসদীয় আসনের এমপি আশেক উল্লাহ রফিক বলেন, এপ্রিল মাসটি উপকূলবাসীর জন্য বেদনাদায়ক একটি দিন। ২৯ এপ্রিল কক্সবাজার উপকূলে মৃত্যুবরণ করেছেন প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। আমি সকল শোকাহত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জনাই। আশাকরি অচিরেই মহেশখালী ও কুতুবদিয়া উপকূল শতভাগ সুরক্ষিত হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আজ ২৯ এপ্রিল : উপকূলবাসী ভোলেনি সেই ভয়াল রাতের কথা

সংবাদ প্রকাশের সময় : ১০:২৩:১১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪

কক্সবাজার উপকূলের মানুষন এখনো ভুলেনি ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিলের প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড়ের ভয়াবহতা। দিনটি এলেই যেনো শোকের ছায়া নেমে আসে উপকূলের স্বজন হারানো পরিবারগুলোয়। সেই ২৯ এপ্রিল প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড়ের থাবায় কক্সবাজারে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ নিহত হয়।

ওইদিন এক মহাপ্লাবনকারী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস লন্ডভন্ড করে দেয় উপকূলীয় জনপদ। ২৫০ কিলোমিটার বেগে আঘাত হানা সেই ঘূর্ণিঝড়ের উচ্চতা ছিল ৬ ফুট। ওই জলোচ্ছ্বাসে চট্টগ্রামের দক্ষিণ পূর্ব উপকূলের প্রায় ১ লাখ ৩৮ হাজার মানুষ নিহত হয়।

ওই ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে ভেসে গিয়েছিল ফসলের ক্ষেত, লাখ-লাখ গবাদি পশু। সবমিলিয়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ছিল দেড় বিলিয়ন ডলার। ওইসময় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় ভোলা, হাতিয়া, চট্টগ্রামের সন্দীপ, আনোয়ারা, বাঁশখালী, কক্সবাজারের চকরিয়া, মহেশখালী ও কুতুবদিয়ায়। যদিও এই ঘূর্ণিঝড়ের ৩৩ বছরেও সেসব উপকূলীয় এলাকা এখনও অরক্ষিত।

সেদিন রাত ১০টার পর ১০ থেকে ২৫ ফুট উচ্চতায় সাগরের পানি মুহূর্তেই ধেয়ে আসে লোকালয়। জলোচ্ছ্বাস ও ঘূর্ণিঝড়ের তান্ডবলীলায় ওই রাতে অনেক মা হারায় সন্তানকে, স্বামী হারায় স্ত্রীকে, ভাই হারায় বোনকে। কোথাও কোথাও গোটা পরিবারই হারিয়ে যায় পানির স্রোতে। ২৯ এপ্রিলের সেই ধ্বংসযজ্ঞের স্মৃতি বয়ে উপকূলীয় মানুষের কাছে দিনটি ফিরে আসে বারংবার। দিনটি বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি শোকাবহ দিন। ওই রাতের ভয়াবহতা যেনো দীর্ঘস্থায়ী এক ক্ষতচিহ্ন রেখে গেছে মানুষের মনে।

৯১ সালের ঘুর্ণিঝড়ে মা, বাবা, চাচা, ও দাদী হারনো মহেশখালীর ধলঘাটার সিকদার পাড়ার শওকত আলী বলেন, ২৯ এপ্রিলের দিনটি আমাদের জন্য খুবই বেদনাদায়ক। আমার পরিবারের ৮ সদস্যের মধ্যে কর্তা ব্যক্তিদের যারা বাড়িতে ছিলেন তারা সকলেই মৃত্যুবরণ করেছেন। আমাদের বদুয়ার পাড়ায় মানুষ ছিল ১৬৫ জন। এর মধ্যে ঘুর্ণিঝড়ে একই দিনে মৃত্যুবরণ করেছেন ১২৫ জন। মাত্র একটি পরিবার ছাড়া অপর সকল পরিবারের একাধিক সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। এই ভয়াবহ দিনটি আমাদের জন্য শোকের একটি দিন। শুধুমাত্র হারানোর বেদনা নিয়ে বেঁচে আছেন ধলঘাটার প্রায় ১৪ হাজার মানুষ।

মহেশখালী-কুতুবদিয়া সংসদীয় আসনের এমপি আশেক উল্লাহ রফিক বলেন, এপ্রিল মাসটি উপকূলবাসীর জন্য বেদনাদায়ক একটি দিন। ২৯ এপ্রিল কক্সবাজার উপকূলে মৃত্যুবরণ করেছেন প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। আমি সকল শোকাহত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জনাই। আশাকরি অচিরেই মহেশখালী ও কুতুবদিয়া উপকূল শতভাগ সুরক্ষিত হবে।