তারেক রহমানের ফাঁসি চাওয়া ছাত্রলীগ নেত্রী বিথী এখনো অধরা
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ১২:২৬:০৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৫ ৪৭ বার পড়া হয়েছে
বরিশালে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের এক নারী নেত্রীর নানা অপকর্মের ফিরিস্তির পর এবার উঠে এসেছে স্বৈরাচারি দল আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে অংশ নিয়ে বিভিন্ন নেতিবাচক কর্মসূচীতে। নিষিদ্ধ মহানগর ও জেলা ছাত্রলীগের একাধিক নেতাদের সাথে জনমুখী দল জাতীয়তাবাদি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ফাঁসি চেয়ে একাধিক মিছিলে সম্মুখে অংশ নিয়েছেন তিনি।
এর একাধিক চিত্র হাতে এসেছে প্রতিবেদকের। অভিযুক্ত নেত্রী হলেন জেলা ছাত্রলীগের ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদক শারমিন কবির বিথী ।
সেই চিত্রে দেখা গেছে, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় অভিযুক্ত করে মহিলা আওয়ামী লীগের ‘ তারেক জিয়ার ফাঁসি চাই’ ব্যানারে সম্মুখ সারিতে অংশ নিয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। একইসাথে তারেক জিয়াকে খুনি আখ্যায়িত করে নানা স্লোগান দিয়ে রাজপথে সরব ছিল এই বিথী। যদিও গ্রেনেড হামলায় দায়ের করা মামলাটি সম্প্রতি মিথ্যা প্রমাণিত হয়। একইসাথে আদালত সব আসামিকে খালাস প্রদান করেন।
এছাড়া তার সাথে সখ্যতার অংশ হিসেবে দক্ষিণে আওয়ামী লীগের গডফাদার আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ ও তার ছেলে সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ, জেলা ছাত্রলীগের আসীম দেওয়ান, আব্দুর রাজ্জাকসব নিষিদ্ধ শীর্ষ ছাত্রলীগ নেতাদের সাথে সক্রিয়ভাবে বিএনপি বিরোধী সব কার্যক্রমে উপস্থিতির জানান দিয়েছেন।
কর্মসূচি সম্বলিত একাধিক চিত্র পাওয়া গেছে। যদিও ৫ আগস্ট স্বৈরাচারি আওয়ামী লীগের পতন হওয়ার সাথে সাথে সব নেতারা চলে গেছেন আত্নগোপনে। অভিযুক্ত বিথিও সেই থেকে লাপাত্তা।
জানা গেছে, ৫ আগস্টের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বাধা প্রধান ও হামলাসহ একাধিক রাজনৈতিক মামলায় আসামি করা হয়েছে অভিযুক্ত বিথীকে। দীর্ঘদিন ধরে আত্মগোপনে থাকায় পুলিশ তার টিকিটিও ছুতে পাচ্ছে না। এদিকে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের বিথীর হাতে নির্যাতিত ও নানাভাবে হয়রানীর শিকার ব্যক্তিরা বিচার চেয়ে ফুসে ওঠেছেন। একাধিক দপ্তরে দিয়েছেন লিখিত অভিযোগও।
সম্প্রতি স্বৈরাচারি দলের নেত্রী বিথীর বিরুদ্ধে একাধিক জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিকে ছাত্রলীগের পদ বাগিয়ে নিয়ে প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন অপকর্মে ফিরিস্তি অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সংবাদ প্রকাশিত হয়। তথাপি এখন পর্যন্ত আইন শৃঙ্খলা বাহীনির খাচায় অধরাই রয়ে গেছেন বিথী। আর এনিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন হয়রানীর শিকার ব্যক্তিরা।
তারা অভিযোগে জানিয়েছেন, দীর্ঘ বছর ধরে বিথীর নানা ধরণের হয়রানীর শিকার হয়েছিলাম। স্বৈরাচারি আওয়ামী লীগের পতনের পর আত্নগোপনে রয়েছে বিথী। আওয়ামী লীগের একাধিক নেত্রী আটক হলেও বিথীকে আইনের আওতায় আনতে পারছেন না সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। আমরা অবিলম্বে আওয়ামী লীগের দোসর বিথীকে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি। এ বিষয়ে তারা সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
উল্লেখ্য, অভযুক্ত শারমিন কবির বিথী জেলার গৌরনদী উপজেলার পিংলাকাঠী ইউনিয়নের হাজীপাড়া গ্রামের মৃত এইচ এম শাহজাহান কবিরের মেয়ে। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগীরা।
অভিযোগকারীরা জানান, শারমিনের শৈশব কাটে প্রত্যন্ত গ্রামে দারিদ্র পরিবারে। উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করেই ভর্তি হন বরিশালের বিএম কলেজে। পর্যায়ক্রমে যুক্ত হয় রাজনীতিতে। মাদক ও বিভিন্ন ধরণের সঙ্গে বিশাল সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন বিএম কলেজজুড়ে। তারা জানান, একপর্যায়ে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতাদের সাথে সখ্যতা গড়ে জেলা ছাত্রলীগের ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদিকার পদটিও বাঘিয়ে নেন। এরপর থেকে আর পিছে তাকাতে হয়নি বিথিকে।
অভিযোগকারীরা জানান, আওয়ামী লীগের শাসনামলে তারেক রহমানের ফাঁসি চেয়ে রাজপথে সক্রিয় ছিলেন শারমিন। এ জন্য পুরস্কৃতও হয়েছেন তিনি। আওয়ামী সরকারের পতনের পরেও একাধিক মামলায় আসামি করা হয় শারমিনকে। বর্তমানে তিনি নিজ বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন একইসাথে পলাতক ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদেরও নিজ বাড়িতে রেখেছেন। শারমিনের বিরুদ্ধে আরও চাঞ্চল্যকর অভিযোগ দিয়েছেন এলাকাবাসী।
তারা আরও জানান, ক্ষমতার অপব্যবহার ও নিজ রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে প্রভাব খাটিয়ে নিজের পিতাকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে দীর্ঘ কয়েক বছর যাবত বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা ও ভাতা গ্রহণ করে আসছেন। যেখানে তার মুক্তিযোদ্ধা ভাতাই শুরু হয়েছে তার মৃত্যুর পরে।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত শারমিনের মুঠোফোনে একাধিকবার সংযোগের চেষ্টা করা হলেও তা ব্যর্থ হয়।