ঢাকা ০৬:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ৬ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পালানোর আগে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে চেয়েছিলেন হাসিনা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ১২:৩৪:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫ ২৯ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট পালিয়ে ভারতে যান আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওইদিন দুপুরে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে সেনা প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান জানান, প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন। শুরুতে রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগ পত্র পাঠিয়েছেন বলা হলেও তা করেননি বলেই জানা যায়।

এবার জানা গেলো সাবেক এই স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী আগস্টের প্রথম দিকে সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের পরিকল্পনা করছিলেন।

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এমনই দাবি করেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু।

সংবাদমাধ্যমটির দাবি, দ্য হিন্দু জানতে পেরেছে, শেখ হাসিনা আগস্টের প্রথম সপ্তাহে সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের পরিকল্পনা করছিলেন এবং সামরিক বাহিনী পরিস্থিতি স্থিতিশীল করার জন্য লকডাউন নিশ্চিত করতে মাঠে ছিল যাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা যায়।

পত্রিকার সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে পতিত আওয়ামী লীগের শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেছেন, আমরা সে সময়ে গণভবনে ছিলাম এবং ক্রমাগত পরিকল্পনা করছিলাম, কীভাবে বিক্ষোভের সমাধান করা যায়। আমাদের মধ্যে কেউ কেউ মনে করেছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর (সাবেক) আকস্মিক পদত্যাগে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়বে। সে কারণেই লকডাউনের পরিকল্পনা করা হয়েছিল।

২০২৪ সালের জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে ঢাকার পরিস্থিতি নাটকীয়ভাবে পরিবর্তন হয়। এই সময়ে শেখ হাসিনা চীনে রওনা হন এবং তার সরকারের বিরুদ্ধে একটি পূর্ণাঙ্গ ছাত্র-নেতৃত্বাধীন আন্দোলন তীব্র বিক্ষোভের রূপ ধারণ করে। ছাত্ররা যখন ‘এক দফা দাবি-শেখ হাসিনার পদত্যাগ’ দাবি করেন, তখন নওফেলকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্র-সমন্বয়কারীদের সঙ্গে আলোচনা করতে বলেছিলেন শেখ হাসিনা। পরে ছাত্রবিক্ষোভ তীব্র হয়ে উঠলে তিনি আত্মগোপনে চলে যান।

নওফেল মনে করেন, আগামী দিনে অন্তর্বর্তী সরকারের ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে যুক্তরাষ্ট্রে আগত ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের মনোভাবের ওপর। নওফেল বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস হিলারি ক্লিনটনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারণায় বিনিয়োগ করেছিলেন। আমি নিশ্চিত, ২০ জানুয়ারি ট্রাম্পের শপথ নেওয়ার পরে অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য কিছু প্রতিক্রিয়া হবে।

‘ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে’ অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে অন্যান্য সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলের, বিশেষ করে পশ্চিম এশিয়ার ঘটনাবলি থেকে বিচ্ছিন্নভাবে দেখা উচিত নয়।’

বাংলাদেশে গত পাঁচ মাসে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় অর্থনীতি ও শিল্পে অস্থিরতা বেড়েছে বলেও অভিযোগ করেন নওফেল।

তিনি আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সংবিধানের মৌলিক পরিবর্তন আনার কোনো এখতিয়ার নেই। বাংলাদেশের আদর্শিক গতিপথ নির্ধারণেরও এখতিয়ার নেই।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

পালানোর আগে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে চেয়েছিলেন হাসিনা

সংবাদ প্রকাশের সময় : ১২:৩৪:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট পালিয়ে ভারতে যান আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওইদিন দুপুরে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে সেনা প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান জানান, প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন। শুরুতে রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগ পত্র পাঠিয়েছেন বলা হলেও তা করেননি বলেই জানা যায়।

এবার জানা গেলো সাবেক এই স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী আগস্টের প্রথম দিকে সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের পরিকল্পনা করছিলেন।

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এমনই দাবি করেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু।

সংবাদমাধ্যমটির দাবি, দ্য হিন্দু জানতে পেরেছে, শেখ হাসিনা আগস্টের প্রথম সপ্তাহে সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের পরিকল্পনা করছিলেন এবং সামরিক বাহিনী পরিস্থিতি স্থিতিশীল করার জন্য লকডাউন নিশ্চিত করতে মাঠে ছিল যাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা যায়।

পত্রিকার সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে পতিত আওয়ামী লীগের শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেছেন, আমরা সে সময়ে গণভবনে ছিলাম এবং ক্রমাগত পরিকল্পনা করছিলাম, কীভাবে বিক্ষোভের সমাধান করা যায়। আমাদের মধ্যে কেউ কেউ মনে করেছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর (সাবেক) আকস্মিক পদত্যাগে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়বে। সে কারণেই লকডাউনের পরিকল্পনা করা হয়েছিল।

২০২৪ সালের জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে ঢাকার পরিস্থিতি নাটকীয়ভাবে পরিবর্তন হয়। এই সময়ে শেখ হাসিনা চীনে রওনা হন এবং তার সরকারের বিরুদ্ধে একটি পূর্ণাঙ্গ ছাত্র-নেতৃত্বাধীন আন্দোলন তীব্র বিক্ষোভের রূপ ধারণ করে। ছাত্ররা যখন ‘এক দফা দাবি-শেখ হাসিনার পদত্যাগ’ দাবি করেন, তখন নওফেলকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্র-সমন্বয়কারীদের সঙ্গে আলোচনা করতে বলেছিলেন শেখ হাসিনা। পরে ছাত্রবিক্ষোভ তীব্র হয়ে উঠলে তিনি আত্মগোপনে চলে যান।

নওফেল মনে করেন, আগামী দিনে অন্তর্বর্তী সরকারের ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে যুক্তরাষ্ট্রে আগত ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের মনোভাবের ওপর। নওফেল বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস হিলারি ক্লিনটনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারণায় বিনিয়োগ করেছিলেন। আমি নিশ্চিত, ২০ জানুয়ারি ট্রাম্পের শপথ নেওয়ার পরে অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য কিছু প্রতিক্রিয়া হবে।

‘ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে’ অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে অন্যান্য সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলের, বিশেষ করে পশ্চিম এশিয়ার ঘটনাবলি থেকে বিচ্ছিন্নভাবে দেখা উচিত নয়।’

বাংলাদেশে গত পাঁচ মাসে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় অর্থনীতি ও শিল্পে অস্থিরতা বেড়েছে বলেও অভিযোগ করেন নওফেল।

তিনি আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সংবিধানের মৌলিক পরিবর্তন আনার কোনো এখতিয়ার নেই। বাংলাদেশের আদর্শিক গতিপথ নির্ধারণেরও এখতিয়ার নেই।