দিনাজপুরে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৪ কিলোমিটার
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ১২:১৮:২৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ জানুয়ারী ২০২৫ ৪৮ বার পড়া হয়েছে
বছরের প্রথম দিনে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে দিনাজপুরে ১০.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। প্রচণ্ড শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। কনকনে শীত ও হিমেল হাওয়ায় খেটে খাওয়া মানুষ গরম কাপড়ের অভাবে কষ্টের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। রাতের বেলা বৃষ্টির মতো কুয়াশার পড়ছে।
বুধবার (১ জানুয়ারি) দিনাজপুরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এদিন বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৪ শতাংশ। আর বাতাসের গড় গতিবেগ ঘণ্টায় চার কিলোমিটার।
আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) দিনাজপুরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৫ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। আর মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) তাপমাত্রা কমে দাঁড়ায় ১১ দশমিক ৪ ডিগ্রিতে।
আবহাওয়াবিদদের ভাষায়, তাপমাত্রা ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে হলে সেটাকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ, ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে হলে সেটা মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ এবং ৪ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে হলে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বলে। আর যদি তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আরও নিচে নেমে যায়, তাহলে তাকে তীব্রতর শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়। সে হিসেবে দিনাজপুরের তাপমাত্রা মৃদু শৈত্যপ্রবাহের কাছাকাছি রয়েছে।
এমন আবহাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষেরা। গায়ে মোটা জামা কাপড় জড়িয়ে তাদের কর্মস্থলে বের হতে দেখা গেছে। ঘন কুয়াশার কারণে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে যানবাহন।
দিনাজপুর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তোফাজ্জল হোসেন জানান, উত্তরের হিমালয়ের সামনে জলীয় বাষ্প বলয় অবস্থান করায় ঠান্ডা বাতাস ছিল না। বর্তমানে জলীয় বাষ্প বলয় অপসারিত হয়ে বাতাসের গতিবেগ বেড়েছে। ফলে শীতের তীব্রতা বেড়েছে। এই আবহাওয়া আগামী দু-একদিন থাকতে পারে। তাপমাত্রা আরও কমে শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কা রয়েছে।
তবে ৩ তারিখের পরে আবারও জলীয় বাষ্প বলয় হিমালয়ের সামনে অবস্থান করলে বাতাসের গতিবেগ কমে গিয়ে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তে পারে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
এদিকে, উত্তর দিক থেকে আসা বাতাসে কাবু হয়ে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ। দিনের বেলাতেও যানবাহন চলাচল করছে হেডলাইট জ্বালিয়ে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রচন্ড শীতে নিম্ন আয়ের মানুষ কাজে যেতে পারছে না। নদীতীরবর্তী এলাকায় বসবাসরত মানুষ বেশি কষ্ট পাচ্ছে। শ্রমিক ও কৃষকদের কাজ করা দুরূহ হয়ে পড়েছে।
জেলা প্রশাসন থেকে ১৩ উপজেলাসহ দিনাজপুর জেলার জন্য মাত্র ১৩ হাজার কম্বল বরাদ্দ করা হয়। যা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। আরো ২০ হাজার কম্বলের চাহিদা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) রফিকুল ইসলাম।
দিনাজপুর শিশু হাসপাতাল ও সদর হাসপাতালে শীতজনিত ডায়রিয়া, ব্রংকাইটিস, শ্বাসকষ্ট ও হাঁপানিসহ বিভিন্ন রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. ওয়ারেশ খুব জরুরি প্রয়োজন ছাড়া শিশু এবং বয়স্ক মানুষদের ঘরের ব্ইারে বের না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
দিনাজপুরের আশপাশসহ দেশের অন্যান্য কয়েকটি জেলার আজকের সকাল ৬ঃ০০ টার তাপমাত্রা: তেতুলিয়া (পঞ্চগড়): ১২.৫, সৈয়দপুর: ১২.৪, রংপুর: ১৩.০, রাজারহাট (কুড়িগ্রাম): ১১.০, ডিমলা (নিলফামারী): ১৩.০, বদলগাছি (নওগাঁ): ১১.৮, বগুড়া: ১৩.৮, রাজশাহী: ১২.৫, চুয়াডাঙ্গা: ১২.০, যশোর: ১২.৪ এবং শ্রীমঙ্গল (সিলেট): ১৩.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।