শেষ সূর্যাস্ত দেখলেন লক্ষাধিক মানুষ
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ১২:৪৮:২৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১ জানুয়ারী ২০২৫ ৪৩ বার পড়া হয়েছে
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে বছরের শেষ সূর্যাস্ত দেখলেন লক্ষাধিক মানুষ। নতুনের আহবানে পুরোনো সূর্যকে বিদায় জানাতে তারা উত্তাল সমুদ্র সৈকতে সমবেত হয়। উপভোগ করেন বছরের শেষ সূর্যাস্ত। মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) বিকেলে লাল সূর্য যখন ধীরে ধীরে সমুদ্রের বুকে অস্তমিত হচ্ছিল, তখন সবাই মেতে ওঠেন আনন্দ-উচ্ছ্বাসে। হাত নেড়ে বিদায় জানান বছরের শেষ সূর্যকে।
অবশেষে আনন্দ-বেদনা, গল্পগাঁথা নিয়ে বিদায় নিলো ২০২৪ সালের শেষ সূর্য। সেই বিদায়ক্ষণকে স্মরণীয় করে রাখতে পর্যটকের ঢল নেমেছে সৈকত পাড়ে। সূর্য ডুবে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রাপ্তি আর অপ্রাপ্তির হিসেব নিয়ে বিদায় নেয় আরও একটি বছর। বিকেল ৫টা ২৩ মিনিটে কক্সবাজার সাগরতীরে ২০২৪ এর শেষ সূর্য বিদায় নিলো। তখন সবার নজর ছিলো সূর্যের দিকে। কেউ বালিয়াড়ির বুকে এঁকে দিচ্ছে বিদায় ২০২৪, স্বাগত ২০২৫। আবার কেউ কেউ মুঠোফোনে বন্দি করছেন মুহূর্তগুলো। অবশেষে লাল সূর্য নিজেকে সপে দেয় সাগরে। সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে এমন মোহনীয় ক্ষণের সাক্ষী হয়েছেন হাজারো ভ্রমণপিপাসু।
শুরু নতুন বছর ২০২৫। বিদায়ী বছরের শেষ সূর্যাস্ত দেখতে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে জড়ো হয়েছিলেন পর্যটকসহ লক্ষাধিক মানুষ। তারা নতুন বছর যেনো সবাই সুস্থ ও স্বাভাবিকভাবে কাটাতে পারেন সেই প্রত্যাশা করছেন।
ঢাকার থেকে আসা সোহান রেজা বলেন, পরিবার নিয়ে কক্সবাজার ছুটে আসা। সূর্যাস্ত দেখে খুবই ভালো লাগল। সবার সঙ্গে ছবি তুললাম। অনেক মজা হচ্ছে। ২০২৪ সালের শেষ সূর্যাস্ত দেখতে সববয়সী মানুষের পদচারণায় মুখর সাগরতীর। তবে সূর্য ডুবে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রাপ্তি আর অপ্রাপ্তির হিসেব কষছেন অনেকেই।
কুমিল্লা থেকে আগত পর্যটক সুমন বলেন, ২০২৪ সালে অনেক কিছু পেয়েছি। আবার অনেক কিছু হারিয়েছি। কিন্তু নতুন বছর নতুন করে শুরু করতে চাই। আর আগামীতে সুখী, সমৃদ্ধ ও উন্নত বাংলাদেশ চাই।
এদিকে পুরানো বছরকে বিদায় আর নতুন বছর বরণকে কেন্দ্র করে নেয়া হয়েছে কয়েকস্তরের নিরাপত্তা বলয়। র্যাব ১৫ এর ক্যাম্প কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাইফুল ইসলাম বলেন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে কয়েক স্তরের নিরাপত্তার বলয় তৈরি করা হয়েছে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে চলছে তল্লাশি। আশাকরি, পর্যটকরা নিরাপদে থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপন করতে পারবেন।
এদিকে, মঙ্গলবার দুপুরের পর থেকেই পর্যটকদের ভিড় শুরু হয় কক্সবাজারের লাবণী, কলাতলী, ইনানী এবং হিমছড়ি পয়েন্টে। শেষ বিকেলে ভিড় চরমে পৌঁছায়। সৈকতের প্রতিটি প্রান্তে নানা বয়সী মানুষ ব্যস্ত ছিলেন প্রতিটি মুহূর্ত ক্যামেরা বন্দি করতে। কেউ কেউ বন্ধু-বান্ধব বা পরিবারের সঙ্গে দলবদ্ধভাবে উপভোগ করছিলেন সময়।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসন ও পর্যটন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পর্যটকদের সুবিধার্থে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পুলিশ, র্যাব, ট্যুরিস্ট পুলিশ, বিচকর্মি ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকদের সমন্বয়ে পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হচ্ছে।
সুগন্ধা পয়েন্টে দায়িত্বরত বিচকর্মিদের সহকারী সুপারভাইজার বেলাল হোসেন বলেন, দুপুরের পর থেকে পর্যটক আসা শুরু করে। শেষ বিকেলে ভিড় জমে। আমরা পর্যটকদের নিরাপত্তার কাজে সার্বক্ষণিক নিয়োজিত আছি।
কক্সবাজার হোটেল-মোটেল গেস্টহাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সেলিম নেওয়াজ বলেন, বছরের শেষ দিনে পর্যটকদের এমন ভিড় কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পের জন্য আশার আলো। আমরা আশা করছি, আগামী দিনগুলোতেও পর্যটকরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসবেন।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের সহকারী পুলিশ সুপার আবুল কালাম বলেন, থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপনে উন্মুক্ত কোনো আয়োজন না থাকলেও পর্যটকদের নিরাপত্তায় কঠোর অবস্থানে রয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (পর্যটন সেল) তানভীর হোসেন বলেন, সমুদ্রসৈকত ও অন্যান্য এলাকায় ফানুস উড্ডয়ন নিষেধ করা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সৈকতের প্রতিটি পয়েন্টে আমাদের বিচকর্মিরা পর্যটকদের নিরাপত্তায় সবসময় সক্রিয় রয়েছে।