সচিবালয়ে আগুনকাণ্ড
নাশকতা নয়, বৈদ্যুতিক লুজ কানেকশন
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ১১:৫৪:০৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ ৩৪ বার পড়া হয়েছে
সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কোনো ধরনের নাশকতা প্রমাণ মেলেনি। বৈদ্যুতিক লুজ কানেকশনের কারণে অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত হয়েছে। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গঠিত উচ্চপর্যায়ে তদন্ত কমিটির প্রাথমিক রিপোর্টে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার সামনে অনুষ্ঠিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তদন্ত কমিটির অন্যতম সদস্য বুয়েটের অধ্যাপক ড. মাকসুদ হেলালী এসব তথ্য জানান।
এ সময় তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। তার সঙ্গে প্রাথমিক তদন্ত কমিটির রিপোর্ট নিয়ে প্রায় এক ঘণ্টা বিস্তারিত আলোচনা হয়। প্রধান উপদেষ্টা বিশেষজ্ঞ দলের কাছে বিভিন্ন বিষয়ে খুঁটিনাটি জেনে নিয়ে ভবিষ্যতে করণীয় সম্পর্কে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।
এদিকে, সচিবালয়ের প্রবেশপথে সেই চিরপরিচিত জটলা নেই। নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের কর্মব্যস্ততা কমেছে। প্রবেশ পাস বন্ধ থাকায় আগের মতো দর্শনার্থীদের আনাগোনাও নেই। গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয় ঘুরে এমন অপরিচিত দৃশ্য দেখা গেছে। আগের রূপে নেই সেই সচিবালয়।
সম্প্রতি সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর সেখানে দর্শনার্থীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়। অগ্নিকাÐের পর পাঁচ দিন পর্যন্ত প্রবেশ করতে পারেননি সচিবালয় বিটে কাজ করা সাংবাদিকরাও। এরপর সোমবার থেকে অস্থায়ী পাস নিয়ে প্রবেশের অনুমতি মিলেছে সাংবাদিকদের।
সরেজমিন দেখা গেছে, পুরো সচিবালয় এলাকা ফাঁকা। পার্কিংয়ে নেই গাড়ির বহর। আগে দর্শনার্থীদের ভিড় লেগে থাকত মন্ত্রণালয়গুলোতে। লিফটগুলোর সামনে লম্বা লাইন দেখা যেত। আজ সেখানে মানুষের উপস্থিতি খুবই কম। অধিকাংশ খাবারের দোকান বন্ধ। যেগুলো খোলা আছে, সেগুলোতেও কাস্টমার নেই বললেই চলে। পুড়ে যাওয়া সাত নম্বর ভবনে কার্যক্রম চলছে না। ভবনের চারপাশে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। সেখানে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে।
বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ঘুরে দেখা গেছে, অনেকটাই নীরবে কাজ করছেন সকলে। অন্যান্য দিনের মতো গল্প-আড্ডা নেই। জরুরি বৈঠক ছাড়া ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কক্ষ ছেড়ে বাইরে যাচ্ছেন না। সাংবাদিকদের সঙ্গেও তেমন কথা বলছেন না তারা। সচিবালয়ে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা জানিয়েছেন, দর্শনার্থীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকায় লোকজন কম। যাদের আগে থেকে কোনো মন্ত্রণালয় বা কর্মকর্তার সঙ্গে অ্যাপোয়েনমেন্ট আছে, শুধু তারাই প্রবেশের সুযোগ পাচ্ছেন। সাংবাদিকদের সীমিত পরিসরে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে।
গত বুধবার মধ্যরাতে সচিবালয়ের সাত নম্বর ভবনে আগুন লাগে। এতে ভবনের চারটি ফ্লোর পুড়ে যায়। এ চারটি ফ্লোরে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দুই বিভাগ, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ছিল। এর মধ্যে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দাপ্তরিক কার্যক্রম চালানো হচ্ছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নগর ভবনে।