ঢাকা ১০:১৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নাফনদীর মিয়ানমার অংশে নিষেধাজ্ঞা আরাকান আর্মির

চট্টগ্রাম ব্যুরো
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০১:৩১:০১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪ ৯১ বার পড়া হয়েছে

বাংলাদেশ অংশে বিজিবির টহল জোরদার

বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বাংলাদেশের সাথে মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী রাখাইন রাজ্যের মংডু শহরও শতভাগ নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে বিচ্ছিন্নতাবাদি গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। টানা ছয় মাস তীব্র লড়াইয়ের পর সর্বশেষ ৮ ডিসেম্বর মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি)-র ৫ নম্বর ব্যাটালিয়নের ঘাঁটি দখলের মধ্যে দিয়ে এই জেলা শহরটি শতভাগ নিয়ন্ত্রণের কথা জানিয়ে বিবৃতি প্রকাশ করেছে আরাকান আর্মি।

এরমধ্যে থাইল্যান্ড থেকে প্রকাশিত মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম দ্য ইরাবতির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশ মিয়ানমারের ২৭০ কিলোমিটার সীমান্ত অঞ্চলের মংডু শহর পুরোটাই আরাকান আর্মির দখলে গেছে।

আরাকান আর্মির নিজস্ব ওয়েব সাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, টানা ৬ মাস ধরে লড়াই করে রবিবার বিজিপির ৫ নম্বর ব্যাটালিয়নের ঘাঁটি থেকে জান্তা সরকারের অনুগত রোহিঙ্গা সহযোগী আরাকান রোহিঙ্গা আর্মি (এআরএ), আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) ও রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও)-র সদস্যরা পালিয়েছে। ইতিমধ্যে জান্তা বাহিনীর একজন পদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থুরিন তুনকে আটক করেছে। থুরিন ছিলেন রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ১৫ নং অপারেশন কমান্ডের অধিনায়ক। একইসঙ্গে জান্তার সেনা ও রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠীর ৮০ জন যোদ্ধাকে আটক করেছে বিদ্রোহীরা।

ইরাবতির প্রতিবেদনে বলা হয়, সীমান্ত এলাকার তিনটি টাউনশিপ-মংডু, বুথিডং ও পালেতাওয়া দখলের নেওয়ার দাবি করেছে আরাকান আর্মি। মংডু ও বুথিডং বরাবর বাংলাদেশের সীমান্ত, আর পালেতাওয়ার সঙ্গে ভারতের সীমান্ত রয়েছে।


একই সঙ্গে নাফনদীর মিয়ানমারের অংশে অনির্দিষ্টকালের জন্য নৌ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে আরাকান আর্মি।

তাদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আরাকান আর্মি সফলভাবে রাখাইন রাজ্যের মংডু অঞ্চলের সামরিক জান্তার বর্ডার গার্ড পুলিশ ডিভিশনের (৫ নম্বর) শেষ অবশিষ্ট ফাঁড়িটি দখল করে এবং নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। এতে সামরিক জান্তার সশস্ত্র সদস্য, তাদের সহযোগী আরএসও, আরসা, এআরএ সদস্যরা এখনও এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে। তারা অতর্কিত হামলা অব্যাহত রেখেছে। যা শুরু মাত্র ৫ নম্বর ব্যাটালিয়নের কাছাকাছি এলাকায় না। মংডু অঞ্চলের অন্যান্য অংশেও এমন হামলা হচ্ছে। তাই সামরিক প্রয়োজনীয়তা এবং জননিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগের কারণে নাফ নদীতে (রাখাইন প্রান্তে) সমস্ত নদী পরিবহন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়েছে।

এর প্রেক্ষিতে নাফনদীর বাংলাদেশ অংশে টহল জোরদার করেছে বলে জানিয়েছেন বিজিবির টেকনাফস্থ ২ ব্যাটালিয়নের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর সৈয়দ ইশতিয়াক মুর্শেদ। সোমবার এক বিবৃতিতে তিনি জানিয়েছেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে সীমান্তের নাফনদীতে টহল তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে সোমবার টেকনাফ ব্যাটালিয়নের দায়িত্বপূর্ণ বিআরএম-৬ হতে বিআরএম-১০ পর্যন্ত নাফ নদীর ঝুকিপূর্ণ স্থান সমূহে এবং বাংলাদেশের জলসীমায় বিদ্যমান দ্বীপের আধিপত্য বিস্তারের জন্য নৌ টহল পরিচালনা করা হয়। সীমান্তে নিছিদ্র নিরাপত্তায় বিজিবি দিন-রাত ২৪ ঘন্টা জলে ও স্থলে টহল পরিচালনা করা হচ্ছে ও সোচ্চার রয়েছে। এছাড়া সীমান্তের যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিজিবি সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায়ও রয়েছে।

এদিকে সোমবার সন্ধ্যার পর থেকে কক্সবাজারের টেকনাফের সীমান্ত এলাকার মানুষ নতুন করে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শুনতে পাননি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

নাফনদীর মিয়ানমার অংশে নিষেধাজ্ঞা আরাকান আর্মির

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০১:৩১:০১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪

বাংলাদেশের সাথে মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী রাখাইন রাজ্যের মংডু শহরও শতভাগ নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে বিচ্ছিন্নতাবাদি গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। টানা ছয় মাস তীব্র লড়াইয়ের পর সর্বশেষ ৮ ডিসেম্বর মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি)-র ৫ নম্বর ব্যাটালিয়নের ঘাঁটি দখলের মধ্যে দিয়ে এই জেলা শহরটি শতভাগ নিয়ন্ত্রণের কথা জানিয়ে বিবৃতি প্রকাশ করেছে আরাকান আর্মি।

এরমধ্যে থাইল্যান্ড থেকে প্রকাশিত মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম দ্য ইরাবতির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশ মিয়ানমারের ২৭০ কিলোমিটার সীমান্ত অঞ্চলের মংডু শহর পুরোটাই আরাকান আর্মির দখলে গেছে।

আরাকান আর্মির নিজস্ব ওয়েব সাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, টানা ৬ মাস ধরে লড়াই করে রবিবার বিজিপির ৫ নম্বর ব্যাটালিয়নের ঘাঁটি থেকে জান্তা সরকারের অনুগত রোহিঙ্গা সহযোগী আরাকান রোহিঙ্গা আর্মি (এআরএ), আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) ও রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও)-র সদস্যরা পালিয়েছে। ইতিমধ্যে জান্তা বাহিনীর একজন পদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থুরিন তুনকে আটক করেছে। থুরিন ছিলেন রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ১৫ নং অপারেশন কমান্ডের অধিনায়ক। একইসঙ্গে জান্তার সেনা ও রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠীর ৮০ জন যোদ্ধাকে আটক করেছে বিদ্রোহীরা।

ইরাবতির প্রতিবেদনে বলা হয়, সীমান্ত এলাকার তিনটি টাউনশিপ-মংডু, বুথিডং ও পালেতাওয়া দখলের নেওয়ার দাবি করেছে আরাকান আর্মি। মংডু ও বুথিডং বরাবর বাংলাদেশের সীমান্ত, আর পালেতাওয়ার সঙ্গে ভারতের সীমান্ত রয়েছে।


একই সঙ্গে নাফনদীর মিয়ানমারের অংশে অনির্দিষ্টকালের জন্য নৌ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে আরাকান আর্মি।

তাদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আরাকান আর্মি সফলভাবে রাখাইন রাজ্যের মংডু অঞ্চলের সামরিক জান্তার বর্ডার গার্ড পুলিশ ডিভিশনের (৫ নম্বর) শেষ অবশিষ্ট ফাঁড়িটি দখল করে এবং নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। এতে সামরিক জান্তার সশস্ত্র সদস্য, তাদের সহযোগী আরএসও, আরসা, এআরএ সদস্যরা এখনও এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে। তারা অতর্কিত হামলা অব্যাহত রেখেছে। যা শুরু মাত্র ৫ নম্বর ব্যাটালিয়নের কাছাকাছি এলাকায় না। মংডু অঞ্চলের অন্যান্য অংশেও এমন হামলা হচ্ছে। তাই সামরিক প্রয়োজনীয়তা এবং জননিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগের কারণে নাফ নদীতে (রাখাইন প্রান্তে) সমস্ত নদী পরিবহন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়েছে।

এর প্রেক্ষিতে নাফনদীর বাংলাদেশ অংশে টহল জোরদার করেছে বলে জানিয়েছেন বিজিবির টেকনাফস্থ ২ ব্যাটালিয়নের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর সৈয়দ ইশতিয়াক মুর্শেদ। সোমবার এক বিবৃতিতে তিনি জানিয়েছেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে সীমান্তের নাফনদীতে টহল তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে সোমবার টেকনাফ ব্যাটালিয়নের দায়িত্বপূর্ণ বিআরএম-৬ হতে বিআরএম-১০ পর্যন্ত নাফ নদীর ঝুকিপূর্ণ স্থান সমূহে এবং বাংলাদেশের জলসীমায় বিদ্যমান দ্বীপের আধিপত্য বিস্তারের জন্য নৌ টহল পরিচালনা করা হয়। সীমান্তে নিছিদ্র নিরাপত্তায় বিজিবি দিন-রাত ২৪ ঘন্টা জলে ও স্থলে টহল পরিচালনা করা হচ্ছে ও সোচ্চার রয়েছে। এছাড়া সীমান্তের যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিজিবি সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায়ও রয়েছে।

এদিকে সোমবার সন্ধ্যার পর থেকে কক্সবাজারের টেকনাফের সীমান্ত এলাকার মানুষ নতুন করে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শুনতে পাননি।