ঢাকা ০৫:৪৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তিন সিন্ডিকেটে জিম্মি তেল

রংপুর প্রতিনিধি
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৫:৪৮:৩৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৪ ৯৬ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ভোজ্য তেল সয়াবিনশুন্য হয়ে পড়েছে রংপুরসহ আশে পাশের জেলাগুলো। তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে তেলের। প্যাকেটজাত বা বোতলজাত কোন ধরনের ভোজ্য তেলই মিলছে না বাজারে। বাধ্য হয়ে ভোক্তারা ড্রামে রাখা নিম্নমানের পাম ওয়েল কিনতে বাধ্য হচ্ছে।

ব্যাবসায়ীরা বলছেন, বোতলজাত করা সোয়াবিন তেল বড় বড় কোম্পানী গুলো ১৫ দিন ধরে সরবরাহ না করায় তেলের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। ২/১ টি দোকানে মিললেও প্রতি লিটার তেল ২শ ২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ব্যাবসায়ীরা আরও বলছেন, সিন্ডিকেট চক্র পুরো তেলের বাজার নিয়ন্ত্রণ করায় এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ভোক্তারা চরম সংকটে পড়েছে।

অবিশ্বাস্য হলেও সত্য বিভাগীয় নগরী রংপুরের পাইকারী আর খুচরা বাজারে কোথায় বোতলজাত সোয়াবিন তেল নেই। নগরীর প্রধান বাজার সিটি বাজারে ঘুরে দেখা গেছে, পুরো বাজারে সয়াবিন তেল শুন্য। কোন দোকানেই সয়বাবিন তেল পাওয়া যাচ্ছেনা।

ভোক্তারা বলছেন, তেলের জন্য দোকানে দোকানে ঘুরে বোতল জাত সয়াবিন তেল পাচ্ছেনা। ২/১ টি দোকানে মিললেও প্রতি লিটার তেল ২শ ২০ টাকা লিটার দাম হাকাচ্ছে দোকানদাররা। আবার সেই দামেও মিলছেনা ভোজ্য তেল। এক লিটার বা দুই লিটারের বোতল পাওয়া গেলেও এক বোতলের বেশী তেল বিক্রি করছেনা ব্যাবসায়ীরা।

তবে বিক্রি নিষিদ্ধ নিম্নমানের ড্রামে রাখা খোলা পাম ওয়েল বাজারে পাওয়া গেলেও সেটাও ১৩০ টাকা কেঁজির পাম ওয়েল বিক্রি হচ্ছে ১৮৫ থেকে ১৯০ টাকা। ব্যাবসায়ীরা বলছেন দুই সপ্তাহ ধরে বোতল জাত করা সয়াবিন তেল সরবরাহ বন্ধ রেখেছে বড় বড় কোম্পানী গুলো। তেল সংকটের জন্য নগরীর বড় বড় সিন্ডিকেট ব্যাবসায়ী চক্রকে দায়ি করছেন তারা। বিভাগীয় নগরী রংপুরের বড় দুটি মার্কেট সিটি বাজার ও নবাবগজ্ঞ বাজারে গিয়ে দেখা গেছে এই দৃশ্য।

সিটি বাজারে অন্তত ১০টি দোকান ঘুরে একটি দোকানে বোতলজাত সয়াবিন দেখতে পাওয়া গেছে। তবে তার পরিমান খুবই কম। সিটি বাজারের পাইকারী তেল ব্যাবসায়ী সাহাবুল ইসলাম জানান, সিটি গ্রুপসহ ভোজ্য সয়াবিন তেল কোম্পানীগুলো গত দুই সপ্তাহ ধরে কোন তেলই সরবরাহ করছেনা। ফলে তাদের কাছে বোতলজাত সোয়াবিন তেল নেই। ফলে গ্রাহকদের চাহিদার কথা বিবেচনা করে ড্রামের পাম ওয়েল বিক্রি করতে হচ্ছে। সেই পাম ওয়েলের দামও ড্রাম প্রতি ২ থেকে ৩ হাজার বৃদ্ধি পাওয়ায় খোলা পাম ওয়েল বিক্রি করতে হচ্ছে ১০ থেকে ১শ ৮৫ টাকা। ওই ব্যাবসায়ী স্বীকার করেন পাম ওয়েল মধ্য বিত্ত শ্রেনীর গ্রাহকরা কিনতে আগ্রহী হচ্ছেনা। নিম্ন বিত্ত এবং হোটেল রেষ্টুরেন্ট সহ সহ ফুটপাতের হোটেল গুলো পাম ওয়েলের বড় খদ্দের বলে জানালেন তিনি।

তবে বোতলজাত সয়াবিন না পেয়ে খদ্দেররা রাইস ব্রান্ডের তেল ও সরিষার তেলের বোতলজাত করা তেল কিনছেন। তবে ওই সব তেল প্রতি লিটার ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা হওয়ায় সব শ্রেনীর গ্রাহকরা কিনছেন না।

সিটি বাজারের অপর এক ব্যবসায়ী সেলায়মান চৌধুরী বললেন, রংপুরে ৩ জন চিহ্নিত তেল সিন্ডিকেট ব্যাবসায়ী আছেন। যারা পুরো রংপুরের তেলের বাজার নিয়ন্ত্রন করছেন বিষয়টি ভোক্তা অধিকার সহ প্রশাসনও জানে। কিন্তু অজ্ঞাত কারনে তাদের গুদাম গুলোতে কোন অভিযান চালায় না।

তিনি বলেন, তাদের গুদামে হাজার হাজার বোতলজাত ষ্টক করেছে তারা। কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।

এভাবে সিটি বাজারে অন্তত ১৫টি দোকান সরেসমিন ঘুরে মাত্র ২টি দোকানে ৫/৭ বোতল এক লিটার পরিমানের ভোজ্য সয়াবিন দেখতে পাওয়া গেছে। সব দোকানদার একটা কথাই কবলছেন সরবরাহ না থাকায় তারা বিক্রি করতে পারছেননা। ক্ষুদ্র ব্যাবসায়ী আপেল মিয়া জানান ৩০ বছর ধরে গালামালের ব্যাবসা করছেন ভোজ্য তেলের এমন সংকট তিনি দেখেননি। তবে এটাকে কৃত্রিম সংকট বলছেন তিনি।

এদিকে, বাজার করতে আসা গৃহবধু শাহনাজ বললেন, বেশ কয়েকটা দোকান ঘুরে কোথাও সয়াবিন তেল পেলাম না। বাধ্য হয়ে সরিষার তেল এক লিটার কিনালম ১শ ৪০ টাকা লিটার দরে।

তিনি বললেন, কোম্পানীর সরিষার তেল গুলোর মান তেমন ভালো নয়। তার পরেও বাধ্য হয়ে কিনতে হচ্ছে। চাকুরী জিবী আনিস বললেন আলু সিন্ডিকেট , পিয়াজ সিন্ডিকেটের পরে এখন তেল সিন্ডিকেটের কাছে আমরা জিম্মি হয়ে পড়েছি। ভোক্তা অধিকারের কি কাজ বুঝলামনা। তারা বা প্রশাসন কেন ব্যাবস্থা গ্রহন করছেনা এমন প্রশ্ন ছুড়ে দেন তিনি।

অন্যদিকে, ভোক্তারা বাজার ও বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে বোতলজাত সয়াবিন তেল না পাওয়ায় বাধ্য হয়ে ড্রামে করে রাখা নিম্নমানের পাম ওয়েল কিনছেন অনেক চড়া দামে। যদিও পাম ওয়েল মানব দেহের জন্য ক্ষতিকর তার পরেও তেলের অভাবে কিনতে হচ্ছে বলে জানিয়ে বলেন সিন্ডিকেট চক্র ভোক্তাদের জিম্মি করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করেছেন। এ ব্যাপারে প্রশাসন ও ভোক্তা অধিকার কোন পদক্ষেপ গ্রহন না করার ফলে তারা বড় বড় কোম্পানীর কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছেন।

অন্যদিকে, কনজুমার এসেসিয়েশন ক্যাব রংপুর জেলা সভাপতি আব্দুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমরা পেয়াজ , আলু সিন্ডিকেটের মতো তেল সিন্ডিকেট দেখছি বড় বড় কোম্পানী আর ব্যাবসায়ীরা মিলে সিন্ডিকেট করে সাধারন ভোক্তাদের জিম্মি করেছেন। এখরন বাজারে যে পাম ওয়েল ড্রামে করে বিক্রয় হচ্ছে সেটা বিক্রয় করা আইনত নিষিদ্ধ হলেও প্রশাসনের কোন নজরদারি নেই। গত বুধবার আমরা ক্যাবের পক্ষে নগরীতে মানব বন্ধন ও বিক্ষোভ করেছি ভোক্তা অধিকারের মহাপরিচালকের বরাবর স্মারক লিপি দিয়েছি বলে জানান তিনি।

সার্বিক বিষয়ে জানতে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর রংপুর বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়ে গিয়ে কোন দায়িত্বশীল কর্মকর্তাকে পাওয়া যায়নি। বিভাগীয় কর্মকর্তা ঢাকায় গেছেন, জেলা কর্মকর্তা মিটিং নিয়ে ব্যাস্ত আছেন বলে জানালেন এক ভোক্তা অধিকার কর্মকর্তা।

তবে নাম প্রকাশে অনিশ্চুক এক ভোক্তা অধিকার কর্মকর্তা জানান, অভিযান পরিচালনা করতে গেলে প্রয়োজনীয় সংখ্যক আইন শৃংখলা বাহিনী পাওয়া যায়না। তাদের নানান ব্যাস্ততার কথা শোনান তারা। তবে শুধু ভোক্তা অধিকার নয় সমন্মিত ভাবে অভিযান পরিচালনা করা দরকার সিন্ডিকেট ব্যাবসায়ীদের গ্রেফতার করে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দেয়া দরকার বলে মনে করেন তিনি।

তবে ভোক্তাদের দাবি রংপুরসহ আশে পার্শ্বের জেলা গুলোতে প্যাকেট জাত বা খোলা কোন ধরনের সয়াবিন তেল সংকটের জন্য দায়িদের চিহ্নিত করে দ্রুত কঠোর ব্যাবস্থা গ্রহন করা দরকার।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

তিন সিন্ডিকেটে জিম্মি তেল

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৫:৪৮:৩৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৪

ভোজ্য তেল সয়াবিনশুন্য হয়ে পড়েছে রংপুরসহ আশে পাশের জেলাগুলো। তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে তেলের। প্যাকেটজাত বা বোতলজাত কোন ধরনের ভোজ্য তেলই মিলছে না বাজারে। বাধ্য হয়ে ভোক্তারা ড্রামে রাখা নিম্নমানের পাম ওয়েল কিনতে বাধ্য হচ্ছে।

ব্যাবসায়ীরা বলছেন, বোতলজাত করা সোয়াবিন তেল বড় বড় কোম্পানী গুলো ১৫ দিন ধরে সরবরাহ না করায় তেলের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। ২/১ টি দোকানে মিললেও প্রতি লিটার তেল ২শ ২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ব্যাবসায়ীরা আরও বলছেন, সিন্ডিকেট চক্র পুরো তেলের বাজার নিয়ন্ত্রণ করায় এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ভোক্তারা চরম সংকটে পড়েছে।

অবিশ্বাস্য হলেও সত্য বিভাগীয় নগরী রংপুরের পাইকারী আর খুচরা বাজারে কোথায় বোতলজাত সোয়াবিন তেল নেই। নগরীর প্রধান বাজার সিটি বাজারে ঘুরে দেখা গেছে, পুরো বাজারে সয়াবিন তেল শুন্য। কোন দোকানেই সয়বাবিন তেল পাওয়া যাচ্ছেনা।

ভোক্তারা বলছেন, তেলের জন্য দোকানে দোকানে ঘুরে বোতল জাত সয়াবিন তেল পাচ্ছেনা। ২/১ টি দোকানে মিললেও প্রতি লিটার তেল ২শ ২০ টাকা লিটার দাম হাকাচ্ছে দোকানদাররা। আবার সেই দামেও মিলছেনা ভোজ্য তেল। এক লিটার বা দুই লিটারের বোতল পাওয়া গেলেও এক বোতলের বেশী তেল বিক্রি করছেনা ব্যাবসায়ীরা।

তবে বিক্রি নিষিদ্ধ নিম্নমানের ড্রামে রাখা খোলা পাম ওয়েল বাজারে পাওয়া গেলেও সেটাও ১৩০ টাকা কেঁজির পাম ওয়েল বিক্রি হচ্ছে ১৮৫ থেকে ১৯০ টাকা। ব্যাবসায়ীরা বলছেন দুই সপ্তাহ ধরে বোতল জাত করা সয়াবিন তেল সরবরাহ বন্ধ রেখেছে বড় বড় কোম্পানী গুলো। তেল সংকটের জন্য নগরীর বড় বড় সিন্ডিকেট ব্যাবসায়ী চক্রকে দায়ি করছেন তারা। বিভাগীয় নগরী রংপুরের বড় দুটি মার্কেট সিটি বাজার ও নবাবগজ্ঞ বাজারে গিয়ে দেখা গেছে এই দৃশ্য।

সিটি বাজারে অন্তত ১০টি দোকান ঘুরে একটি দোকানে বোতলজাত সয়াবিন দেখতে পাওয়া গেছে। তবে তার পরিমান খুবই কম। সিটি বাজারের পাইকারী তেল ব্যাবসায়ী সাহাবুল ইসলাম জানান, সিটি গ্রুপসহ ভোজ্য সয়াবিন তেল কোম্পানীগুলো গত দুই সপ্তাহ ধরে কোন তেলই সরবরাহ করছেনা। ফলে তাদের কাছে বোতলজাত সোয়াবিন তেল নেই। ফলে গ্রাহকদের চাহিদার কথা বিবেচনা করে ড্রামের পাম ওয়েল বিক্রি করতে হচ্ছে। সেই পাম ওয়েলের দামও ড্রাম প্রতি ২ থেকে ৩ হাজার বৃদ্ধি পাওয়ায় খোলা পাম ওয়েল বিক্রি করতে হচ্ছে ১০ থেকে ১শ ৮৫ টাকা। ওই ব্যাবসায়ী স্বীকার করেন পাম ওয়েল মধ্য বিত্ত শ্রেনীর গ্রাহকরা কিনতে আগ্রহী হচ্ছেনা। নিম্ন বিত্ত এবং হোটেল রেষ্টুরেন্ট সহ সহ ফুটপাতের হোটেল গুলো পাম ওয়েলের বড় খদ্দের বলে জানালেন তিনি।

তবে বোতলজাত সয়াবিন না পেয়ে খদ্দেররা রাইস ব্রান্ডের তেল ও সরিষার তেলের বোতলজাত করা তেল কিনছেন। তবে ওই সব তেল প্রতি লিটার ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা হওয়ায় সব শ্রেনীর গ্রাহকরা কিনছেন না।

সিটি বাজারের অপর এক ব্যবসায়ী সেলায়মান চৌধুরী বললেন, রংপুরে ৩ জন চিহ্নিত তেল সিন্ডিকেট ব্যাবসায়ী আছেন। যারা পুরো রংপুরের তেলের বাজার নিয়ন্ত্রন করছেন বিষয়টি ভোক্তা অধিকার সহ প্রশাসনও জানে। কিন্তু অজ্ঞাত কারনে তাদের গুদাম গুলোতে কোন অভিযান চালায় না।

তিনি বলেন, তাদের গুদামে হাজার হাজার বোতলজাত ষ্টক করেছে তারা। কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।

এভাবে সিটি বাজারে অন্তত ১৫টি দোকান সরেসমিন ঘুরে মাত্র ২টি দোকানে ৫/৭ বোতল এক লিটার পরিমানের ভোজ্য সয়াবিন দেখতে পাওয়া গেছে। সব দোকানদার একটা কথাই কবলছেন সরবরাহ না থাকায় তারা বিক্রি করতে পারছেননা। ক্ষুদ্র ব্যাবসায়ী আপেল মিয়া জানান ৩০ বছর ধরে গালামালের ব্যাবসা করছেন ভোজ্য তেলের এমন সংকট তিনি দেখেননি। তবে এটাকে কৃত্রিম সংকট বলছেন তিনি।

এদিকে, বাজার করতে আসা গৃহবধু শাহনাজ বললেন, বেশ কয়েকটা দোকান ঘুরে কোথাও সয়াবিন তেল পেলাম না। বাধ্য হয়ে সরিষার তেল এক লিটার কিনালম ১শ ৪০ টাকা লিটার দরে।

তিনি বললেন, কোম্পানীর সরিষার তেল গুলোর মান তেমন ভালো নয়। তার পরেও বাধ্য হয়ে কিনতে হচ্ছে। চাকুরী জিবী আনিস বললেন আলু সিন্ডিকেট , পিয়াজ সিন্ডিকেটের পরে এখন তেল সিন্ডিকেটের কাছে আমরা জিম্মি হয়ে পড়েছি। ভোক্তা অধিকারের কি কাজ বুঝলামনা। তারা বা প্রশাসন কেন ব্যাবস্থা গ্রহন করছেনা এমন প্রশ্ন ছুড়ে দেন তিনি।

অন্যদিকে, ভোক্তারা বাজার ও বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে বোতলজাত সয়াবিন তেল না পাওয়ায় বাধ্য হয়ে ড্রামে করে রাখা নিম্নমানের পাম ওয়েল কিনছেন অনেক চড়া দামে। যদিও পাম ওয়েল মানব দেহের জন্য ক্ষতিকর তার পরেও তেলের অভাবে কিনতে হচ্ছে বলে জানিয়ে বলেন সিন্ডিকেট চক্র ভোক্তাদের জিম্মি করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করেছেন। এ ব্যাপারে প্রশাসন ও ভোক্তা অধিকার কোন পদক্ষেপ গ্রহন না করার ফলে তারা বড় বড় কোম্পানীর কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছেন।

অন্যদিকে, কনজুমার এসেসিয়েশন ক্যাব রংপুর জেলা সভাপতি আব্দুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমরা পেয়াজ , আলু সিন্ডিকেটের মতো তেল সিন্ডিকেট দেখছি বড় বড় কোম্পানী আর ব্যাবসায়ীরা মিলে সিন্ডিকেট করে সাধারন ভোক্তাদের জিম্মি করেছেন। এখরন বাজারে যে পাম ওয়েল ড্রামে করে বিক্রয় হচ্ছে সেটা বিক্রয় করা আইনত নিষিদ্ধ হলেও প্রশাসনের কোন নজরদারি নেই। গত বুধবার আমরা ক্যাবের পক্ষে নগরীতে মানব বন্ধন ও বিক্ষোভ করেছি ভোক্তা অধিকারের মহাপরিচালকের বরাবর স্মারক লিপি দিয়েছি বলে জানান তিনি।

সার্বিক বিষয়ে জানতে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর রংপুর বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়ে গিয়ে কোন দায়িত্বশীল কর্মকর্তাকে পাওয়া যায়নি। বিভাগীয় কর্মকর্তা ঢাকায় গেছেন, জেলা কর্মকর্তা মিটিং নিয়ে ব্যাস্ত আছেন বলে জানালেন এক ভোক্তা অধিকার কর্মকর্তা।

তবে নাম প্রকাশে অনিশ্চুক এক ভোক্তা অধিকার কর্মকর্তা জানান, অভিযান পরিচালনা করতে গেলে প্রয়োজনীয় সংখ্যক আইন শৃংখলা বাহিনী পাওয়া যায়না। তাদের নানান ব্যাস্ততার কথা শোনান তারা। তবে শুধু ভোক্তা অধিকার নয় সমন্মিত ভাবে অভিযান পরিচালনা করা দরকার সিন্ডিকেট ব্যাবসায়ীদের গ্রেফতার করে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দেয়া দরকার বলে মনে করেন তিনি।

তবে ভোক্তাদের দাবি রংপুরসহ আশে পার্শ্বের জেলা গুলোতে প্যাকেট জাত বা খোলা কোন ধরনের সয়াবিন তেল সংকটের জন্য দায়িদের চিহ্নিত করে দ্রুত কঠোর ব্যাবস্থা গ্রহন করা দরকার।