‘কোনো রাজনৈতিক দলকে সরিয়ে দেয়ার ইচ্ছা জামায়াতের নেই’
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৫:৫৬:৪৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ ৩৩ বার পড়া হয়েছে
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আওয়ামী লীগসহ কোনো সংগঠন বা দলকে সরানোর জন্য জামায়াতের ভূমিকা পালনের প্রয়োজন নেই । মানুষ সব জানে। তাদের সম্মিলিত প্রজ্ঞাকে আমরা সম্মান করি। এইটুকু বলতে পারি, কোনো রাজনৈতিক দলকে খারিজ করা বা সরিয়ে দেয়ার কোনো ইচ্ছা আমাদের নেই।
শুক্রবার (২২ নভেম্বর) ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজারকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এসব মন্তব্য করেন তিনি।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং জামায়াত মিলেমিশে আওয়ামী লীগের পর এবার বিএনপিকেও সরিয়ে দিতে চাইছে। দুই বড় রাজনৈতিক দলকে বাইরে রেখে নতুন শক্তির উত্থান হবে। এটা কতটা ঠিক? এমন প্রশ্নের জবাবে জামায়াতের আমির বলেন, এই তত্ত্বের কোনো ভিত্তি নেই। কোনো রাজনৈতিক দলকে খারিজ করা বা সরিয়ে দেয়ার কোনো ইচ্ছা আমাদের নেই।
জামায়াতে ইসলামীর ভারতবিরোধিতা নিয়ে তিনি ডা. শফিকুর রহমান বলেন, এটা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এ মতবাদ ছড়ানো হয়েছে, যাতে জামায়াতের রাজনীতির মিথ্যা ব্যাখ্যা ও বিভ্রান্তি তৈরি হয়। সমান মর্যাদা এবং সম্মানের ভিত্তিতে আমরা ভারতসহ সমস্ত প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চাই। আমাদের আন্তর্জাতিক নীতি, সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে শত্রুতা নয়। চাই ভারতও একইরকম সাড়া দিক, পারস্পরিক বিশ্বাস এবং সহাবস্থানের ভিত্তিতে।
জামায়াতে ইসলামীকে দেখা হয় কট্টর ইসলামী দল হিসেবে, এটা কতটা যৌক্তিক? এমন প্রশ্নে শফিকুর রহমান বলেন, আপনারা ধরেই নিচ্ছেন জামায়াতে ইসলামী কট্টরপন্থি মুসলিম সংগঠন। এটা একেবারেই অসত্য। জামায়াত একটি আধুনিক, উদার ও গণতান্ত্রিক দল; যার ভিত্তি ইসলামিক আদর্শ। আরো একটি কথা মনে করিয়ে দিই, আমরা একটি স্বাধীন রাজনৈতিক দল। বিশ্বের অন্য কোনো রাজনৈতিক সংস্থায় আমাদের প্রতিনিধিত্ব নেই।
অন্তর্বর্তী সরকার আসার পর থেকেই সংখ্যালঘু, বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায় তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন হামলা নিয়ে সরব। তাদের উদ্দেশে জামায়াত আমির বলেন, জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের অসামান্য সম্পর্ক এবং বোঝাপড়া রয়েছে। প্রতিটি নাগরিককে সমদৃষ্টিতে দেখা হয় এবং রাষ্ট্রের সব নাগরিককে সমান অধিকার এবং মর্যাদার ভিত্তিতে সম্মান করা হয়। জামায়াত সংখ্যালঘু বা সংখ্যাগুরুর তত্ত্বে বিশ্বাসী নয়। আমরা মনে করি, ধর্মের ভিত্তিতে দেশবাসীর বিভাজন অপরাধ। হিন্দু বা অন্য কোনো সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে হিংসার ইতিহাস জামায়াতের নেই। বরং বিভিন্ন সময়ে জামায়াতে ইসলামী বিভিন্ন বিষয় নিয়ে হিন্দু নেতাদের সঙ্গে আলোচনাও করেছে।
জামায়াতের নেতৃত্বে সরকার এলে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক কোন দিকে যাবে? এমন প্রশ্নের জবাবে শফিকুর রহমান বলেন, আমার মনে হয় না পুরনো আওয়ামী লীগ জমানার সঙ্গে ভারতের নিছকই ঘনিষ্ঠ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ছিল। আমরা সবাই জানি, ওই সম্পর্কে কার কী স্বার্থ ছিল। তবে নিজেদের কথা বলতে পারি, আমরা চাই ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি করতে, তবে তা হতে হবে পারস্পরিক সম্মান এবং সমতার মাধ্যমে। পড়শিদের সঙ্গে কার্যকরী এবং বাস্তবোচিত সম্পর্ক উভয় রাষ্ট্রের পক্ষেই সুবিধাজনক। সরকারে এলে সেটাই করতে চাইব।