ঢাকা ০৩:২৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৪৯ বছর আগের সেই ভবনেই শেখ হাসিনা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৫:৪৭:৪৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪ ১৪ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ছাত্র-জনতার গনঅভ্যুথানে গত ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে চলে যান। এরপর তাকে নিয়ে জল্পনা কল্পনার শেষ নাই। কিভাবে আছেন, কোথায় আছেন, আগামীতে কোথায় যাবেন এমন অনেক প্রশ্ন এখন জনমনে। শেখ হাসিনা যখন ভারতে পা রাখেন, দিল্লির বিশ্বাস ছিল তার এ আসাটা সাময়িক। ইউরোপ কিংবা মধ্যপ্রাচ্যের কোনো দেশে যাওয়ার আগে এটা একটা সংক্ষিপ্ত যাত্রাবিরতি হবে বলেই মনে করেছিলেন ভারত।

যে কোনো মুহূর্তে তৃতীয় কেনো দেশের উদ্দেশে তিনি রওনা হয়ে যাবেন, এই ধারণা থেকেই প্রথম দু-চারদিন তাকে ও সঙ্গে বোন শেখ রেহানাকে রাখা হয়েছিল দিল্লির উপকণ্ঠে গাজিয়াবাদের হিন্ডন বিমানঘাঁটির টার্মিনাল বিল্ডিং-এ, যেটির নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনার ভার দেশটির বিমান বাহিনীর। ভারতে তার পদার্পণের একশো দিনের মাথায় এসে একটা প্রশ্ন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে, শেখ হাসিনাকে কীভাবে ও কী ধরনের নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে?

শেখ হাসিনার তৃতীয় কোনো দেশে পাড়ি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না, এটা স্পষ্ট হয়ে ওঠার পর ভারত সরকার তাকে হিন্ডন থেকে সরিয়ে আনে দিল্লির কাছাকাছি কোনো গোপন ঠিকানায়। যে ব্যাপারে ভারত সরকার আজ পর্যন্ত কোনো তথ্যই প্রকাশ করেনি।

ভারতের রাজধানী দিল্লির কেন্দ্রস্থলকে চক্রাকারে ঘিরে রয়েছে যে ইনার রিং রোড, তার ঠিক ওপরেই চারতলা পেল্লায় বাড়িটা। ডাক বিভাগের রেকর্ড অনুযায়ী ঠিকানা ৫৬ রিং রোড, লাজপত নগর, দিল্লি ১১০০২৪।

লাজপত নগরের সেই ভবনে এসে ওঠার ঠিক ৪৯ বছর পর বাংলাদেশ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে শেখ হাসিনা যখন আরও একবার ভারতে এসে আশ্রয় নেন। শহরের দক্ষিণপ্রান্তে পাঞ্জাবি অধ্যুষিত ওই এলাকায় এই বাড়িটার আলাদা করে কোনো বিশেষত্ব চোখে পড়ার কোনো কারণ নেই! প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে স্বামী ও সন্তানদের নিয়ে শেখ হাসিনা যখন প্রথম ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলেন তার ঠিকানা ছিল রিং রোডের ওপরে এই ভবনটাই?

ভারতে তার পদার্পণের একশো দিনের মাথায় এসে এই প্রশ্নটা ওঠা খুব স্বাভাবিক যে এখন শেখ হাসিনাকে কীভাবে ও কী ধরনের নিরাপত্তা দেয়া হয়েছে? আর সেটার পেছনে কারণটাই বা কী?

বর্তমানে শেখ হাসিনা ‘জেড প্লাস প্লাস’ নিরাপত্তা পাচ্ছেন। সরকারি পদমর্যাদা ও নিরাপত্তাগত ঝুঁকি বিবেচনায় ভারতের ভিভিআইপি-রা বিভিন্ন ক্যাটেগরির নিরাপত্তা পেয়ে থাকেন। এরমধ্যে ‘জেড প্লাস প্লাস’-কেই সর্বোচ্চ বলে ধরা হয়।

দিল্লিতে থাকা মেয়ে সাইমা ওয়াজেদ এবং ভার্জিনিয়াতে থাকা ছেলে সজীব ওয়াজেদের সঙ্গেও শেখ হাসিনার প্রায় রোজই যোগাযোগ হচ্ছে। নিউজ চ্যানেল, খবরের কাগজ বা ইন্টারনেটেও তার সম্পূর্ণ অ্যাকসেস আছে।

এদিকে, গত সপ্তাহে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প বিজয়ী হওয়ার পর আওয়ামী লীগের বহু নেতাকর্মীও হয়তো ভাবছেন, তাদের নেত্রীর দেশে ফেরা এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা! তবে শেখ হাসিনা এই মুহূর্তে যে দেশের আতিথেয়তায় আছেন তারা কিন্তু এখনই অতটা আগ বাড়িয়ে ভাবতে রাজি নয়। রাজনীতির উইকেটে পোড় খাওয়া ব্যাটার শেখ হাসিনাও নিশ্চয় এটা জানেন এবং সেই অনুযায়ী উপযুক্ত সুযোগ এলে তবেই সেটা কাজে লাগাবেন একশো দিনের মাথায় ভারতও আপাতত এটুকুতেই তাদের ভাবনা সীমিত রাখছে!

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

৪৯ বছর আগের সেই ভবনেই শেখ হাসিনা

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৫:৪৭:৪৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪

ছাত্র-জনতার গনঅভ্যুথানে গত ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে চলে যান। এরপর তাকে নিয়ে জল্পনা কল্পনার শেষ নাই। কিভাবে আছেন, কোথায় আছেন, আগামীতে কোথায় যাবেন এমন অনেক প্রশ্ন এখন জনমনে। শেখ হাসিনা যখন ভারতে পা রাখেন, দিল্লির বিশ্বাস ছিল তার এ আসাটা সাময়িক। ইউরোপ কিংবা মধ্যপ্রাচ্যের কোনো দেশে যাওয়ার আগে এটা একটা সংক্ষিপ্ত যাত্রাবিরতি হবে বলেই মনে করেছিলেন ভারত।

যে কোনো মুহূর্তে তৃতীয় কেনো দেশের উদ্দেশে তিনি রওনা হয়ে যাবেন, এই ধারণা থেকেই প্রথম দু-চারদিন তাকে ও সঙ্গে বোন শেখ রেহানাকে রাখা হয়েছিল দিল্লির উপকণ্ঠে গাজিয়াবাদের হিন্ডন বিমানঘাঁটির টার্মিনাল বিল্ডিং-এ, যেটির নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনার ভার দেশটির বিমান বাহিনীর। ভারতে তার পদার্পণের একশো দিনের মাথায় এসে একটা প্রশ্ন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে, শেখ হাসিনাকে কীভাবে ও কী ধরনের নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে?

শেখ হাসিনার তৃতীয় কোনো দেশে পাড়ি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না, এটা স্পষ্ট হয়ে ওঠার পর ভারত সরকার তাকে হিন্ডন থেকে সরিয়ে আনে দিল্লির কাছাকাছি কোনো গোপন ঠিকানায়। যে ব্যাপারে ভারত সরকার আজ পর্যন্ত কোনো তথ্যই প্রকাশ করেনি।

ভারতের রাজধানী দিল্লির কেন্দ্রস্থলকে চক্রাকারে ঘিরে রয়েছে যে ইনার রিং রোড, তার ঠিক ওপরেই চারতলা পেল্লায় বাড়িটা। ডাক বিভাগের রেকর্ড অনুযায়ী ঠিকানা ৫৬ রিং রোড, লাজপত নগর, দিল্লি ১১০০২৪।

লাজপত নগরের সেই ভবনে এসে ওঠার ঠিক ৪৯ বছর পর বাংলাদেশ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে শেখ হাসিনা যখন আরও একবার ভারতে এসে আশ্রয় নেন। শহরের দক্ষিণপ্রান্তে পাঞ্জাবি অধ্যুষিত ওই এলাকায় এই বাড়িটার আলাদা করে কোনো বিশেষত্ব চোখে পড়ার কোনো কারণ নেই! প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে স্বামী ও সন্তানদের নিয়ে শেখ হাসিনা যখন প্রথম ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলেন তার ঠিকানা ছিল রিং রোডের ওপরে এই ভবনটাই?

ভারতে তার পদার্পণের একশো দিনের মাথায় এসে এই প্রশ্নটা ওঠা খুব স্বাভাবিক যে এখন শেখ হাসিনাকে কীভাবে ও কী ধরনের নিরাপত্তা দেয়া হয়েছে? আর সেটার পেছনে কারণটাই বা কী?

বর্তমানে শেখ হাসিনা ‘জেড প্লাস প্লাস’ নিরাপত্তা পাচ্ছেন। সরকারি পদমর্যাদা ও নিরাপত্তাগত ঝুঁকি বিবেচনায় ভারতের ভিভিআইপি-রা বিভিন্ন ক্যাটেগরির নিরাপত্তা পেয়ে থাকেন। এরমধ্যে ‘জেড প্লাস প্লাস’-কেই সর্বোচ্চ বলে ধরা হয়।

দিল্লিতে থাকা মেয়ে সাইমা ওয়াজেদ এবং ভার্জিনিয়াতে থাকা ছেলে সজীব ওয়াজেদের সঙ্গেও শেখ হাসিনার প্রায় রোজই যোগাযোগ হচ্ছে। নিউজ চ্যানেল, খবরের কাগজ বা ইন্টারনেটেও তার সম্পূর্ণ অ্যাকসেস আছে।

এদিকে, গত সপ্তাহে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প বিজয়ী হওয়ার পর আওয়ামী লীগের বহু নেতাকর্মীও হয়তো ভাবছেন, তাদের নেত্রীর দেশে ফেরা এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা! তবে শেখ হাসিনা এই মুহূর্তে যে দেশের আতিথেয়তায় আছেন তারা কিন্তু এখনই অতটা আগ বাড়িয়ে ভাবতে রাজি নয়। রাজনীতির উইকেটে পোড় খাওয়া ব্যাটার শেখ হাসিনাও নিশ্চয় এটা জানেন এবং সেই অনুযায়ী উপযুক্ত সুযোগ এলে তবেই সেটা কাজে লাগাবেন একশো দিনের মাথায় ভারতও আপাতত এটুকুতেই তাদের ভাবনা সীমিত রাখছে!