ঢাকা ০৬:৫২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ অনির্দিষ্ট: অধ্যাদেশ হচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৯:২৭:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ নভেম্বর ২০২৪ ২৫ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আইনি কাঠামোর মধ্যে আনা হচ্ছে। এই লক্ষ্যে ‘অন্তর্বর্তী সরকার অধ্যাদেশ, ২০২৪’-এর খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। অধ্যাদেশটি জারি হলে আদালতে বৈধতার প্রশ্ন তুলে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে অবৈধ বা বাতিল করা যাবে না। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত নতুন প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব নেওয়ার দিন পর্যন্ত হবে বর্তমান সরকারের মেয়াদ।

বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো কার্যক্রমের বৈধতা সম্পর্কে বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টসহ অন্য কোনো আদালত বা কর্তৃপক্ষ কোনোভাবেই কোনো প্রশ্ন উত্থাপন বা তা অবৈধ বা বাতিল করতে পারবে না, এমন কথাও বলা হয়েছে এতে। বলা হয়েছে, এ সম্পর্কে কোনো আদালতে প্রশ্ন উত্থাপন বা মামলাও করা যাবে না। নির্বাহী ক্ষমতা প্রয়োগ, জরুরি অবস্থা ঘোষণায় প্রধান উপদেষ্টার পরামর্শ নেওয়াসহ সার্বিক বিষয়কে আইনি ভিত্তি নিয়ে এই অধ্যাদেশের খসড়া করা হয়েছে। খসড়ার শিরোনাম করা হয়েছে ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অধ্যাদেশ, ২০২৪’।

গত ১৯ সেপ্টেম্বর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এই খসড়ার নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়। সেটি এখন গেজেট প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে। গতকাল শুক্রবার মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশীদ বলেন,স্বাভাবিকভাবেই পরবর্তী নির্বাচিত সরকার ক্ষমতা গ্রহণের আগ পর্যন্ত বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদ বহাল থাকবে। অধ্যাদেশটি যখন জারি হবে তখনই আপনারা জানতে পারবেন। আইন উপদেষ্টা মহোদয় এখন দেশের বাইরে। উপদেষ্টা দেশে এলে কথা বলে নেবেন।

গত ৫ অগাস্ট গণ আন্দোলনের মুখে দেশ ছেড়ে ভারতে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ৮ অগাস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে শপথ নেয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। তার আগেই ভেঙে দেয়া হয় সংসদ। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ কতোদিন হবে, সে বিষয়ে এখনও কোনো ধারণা দেয়া হয়নি। সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন বিষয়ে সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে, এরমধ্যে রয়েছে সাংবিধানিক সংস্কারও। সংবিধানে বলা আছে, সংসদ ভেঙে দিলে ৯০ দিনের মধ্যে ভোট হতে হবে, আর কোনো দৈব দুর্বিপাকে সেটা করা না গেলে পরের ৯০ দিনেই হতে হবে নির্বাচন। শুরুতে বিএনপি অন্তর্বর্তী সরকারকে সময় দেয়ার কথা বললেও এখন দ্রæত নির্বাচন দেওয়ার দাবি করছে। তবে সরকার শুরু থেকেই তার মেয়াদ এবং নির্বাচনের সময়সীমা সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কোনো বক্তব্য দিচ্ছে না। সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান ১৮ মাসের মধ্যে নির্বাচনের আভাস দিয়ে একটি বিদেশি সংবাদ মাধ্যমে বক্তব্য দিলেও সরকারের তরফে সেটি ‘ব্যক্তিগত বক্তব্য’ বলে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ২০২৫ সালের শেষে ভোট হতে পারে বলে একটি বক্তব্য দেয়ার পরে সেটি ‘সরকারের বক্তব্য নয়’ বলে প্রতিক্রিয়া জানান ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন। বিএনপি অবশ্য এরমধ্যে দ্রæত নির্বাচন দেওয়ার দাবি তুলছে, তারা বলছে, সংবিধান সংশোধন বা সংস্কারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচিত সংসদ, সেটিই হবে টেকসই। আরেক আলোচিত দল জামায়াতে ইসলামী শুরুতে ‘আগে সংস্কার, পরে নির্বাচন’ এমন একটি অবস্থান নিলেও এখন ‘দ্রæত সংস্কার করে নির্বাচন’ দেওয়ার কথা বলছে। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ ও তার শরিকদের জনসমর্থন যাই থাকুক না কেন, তাদেরকে ‘ফ্যাসিবাদী’ আখ্যা দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার তাদের কথা মাথায় না রেখেই সব কিছু করছে। এমনকি নির্বাচনি ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আওয়ামী লীগকে ছাড়া নির্বাচন করলে সেটি অগ্রহণযোগ্য হবে না।
‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কর্তৃক প্রণীত অধ্যাদেশ ও কার্যক্রমের বৈধতা’ বিষয়ে প্রস্তাবিত অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, সংবিধান এবং আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যা কিছুই থাকুক না কেন, নতুন সংসদ গঠিত হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী যে তারিখে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন, সেই তারিখের মধ্যবর্তী সময়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রয়োগ করা ক্ষমতা, অধ্যাদেশ, বিধিমালা, প্রবিধানমালা, প্রজ্ঞাপন, আদেশ, কর্মকাÐ ও গৃহীত ব্যবস্থা আইনানুযায়ী যথাযথভাবে করা এবং গ্রহণ হয়েছে বলে গণ্য হবে। সুপ্রিম কোর্ট বা অন্য কোনো আদালত বা কর্তৃপক্ষের কাছে এর বৈধতা সম্পর্কে কোনো প্রশ্ন উত্থাপন করা যাবে না বা একে অবৈধ বা বাতিল করতে পারবে না।
অন্তর্বর্তী সরকার একটি অধ্যাদেশের খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে, যাতে বলা হয়েছে সরকারের কোনো সিদ্ধান্ত আদালতে চ্যালেঞ্জ করা যাবে না। ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন ও কার্যধারা রক্ষণ’ সংক্রান্ত ধারায় বলা হয়েছে- অন্তর্বর্তী সরকার গঠন বা এর প্রধান উপদেষ্টা বা কোনো উপদেষ্টাদের নিয়োগ সম্পর্কে কোনো ত্রæটি রয়েছে, কেবল এ কারণে কোনো কাজ অবৈধ হবে না বা এ সম্পর্কে কোনো আদালতে প্রশ্ন উত্থাপন বা মামলা করা যাবে না।
তিন দশকেরও বেশি সময় আগে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ব্যবস্থা এসেছিল দেশে। ১৯৯০ সালের ডিসেম্বরে সেনাশাসক হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের পতনের পর পঞ্চম জাতীয় নির্বাচন আয়োজনে প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে গঠন করা হয়েছিল অন্তর্র্বতী সরকার। পরে সংবিধানে তত্ত¡াবধায়ক সরকার গঠন হলে ১৯৯৬ সালের ১২ জুন, ২০০১ এবং ২০০৮ সালের নির্বাচন হয় তত্ত¡বধায়ক সরকারের অধীনে। তত্ত¡াবধায়ক সরকার ব্যবস্থার মেয়াদ ছিল ৯০ দিন। তবে সবশেষ ২০০৭ সালে ১১ জানুয়ারি ফখরুদ্দীন আহমেদের নেতৃত্বে তত্ত¡াবধায়ক সরকার শপথ নেয়। তবে এই সরকার ক্ষমতায় থাকে প্রায় দুই বছর। ২০১১ সালে এক রায়ে তত্ত¡াবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অসাংবিধানিক বলে রায় দেয় সুপ্রিম কোর্ট। ওই বছরের ৩০ জুন তত্ত¡াবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্ত করে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী পাস করে নবম সংসদ।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ অনির্দিষ্ট: অধ্যাদেশ হচ্ছে

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৯:২৭:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ নভেম্বর ২০২৪

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আইনি কাঠামোর মধ্যে আনা হচ্ছে। এই লক্ষ্যে ‘অন্তর্বর্তী সরকার অধ্যাদেশ, ২০২৪’-এর খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। অধ্যাদেশটি জারি হলে আদালতে বৈধতার প্রশ্ন তুলে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে অবৈধ বা বাতিল করা যাবে না। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত নতুন প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব নেওয়ার দিন পর্যন্ত হবে বর্তমান সরকারের মেয়াদ।

বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো কার্যক্রমের বৈধতা সম্পর্কে বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টসহ অন্য কোনো আদালত বা কর্তৃপক্ষ কোনোভাবেই কোনো প্রশ্ন উত্থাপন বা তা অবৈধ বা বাতিল করতে পারবে না, এমন কথাও বলা হয়েছে এতে। বলা হয়েছে, এ সম্পর্কে কোনো আদালতে প্রশ্ন উত্থাপন বা মামলাও করা যাবে না। নির্বাহী ক্ষমতা প্রয়োগ, জরুরি অবস্থা ঘোষণায় প্রধান উপদেষ্টার পরামর্শ নেওয়াসহ সার্বিক বিষয়কে আইনি ভিত্তি নিয়ে এই অধ্যাদেশের খসড়া করা হয়েছে। খসড়ার শিরোনাম করা হয়েছে ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অধ্যাদেশ, ২০২৪’।

গত ১৯ সেপ্টেম্বর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এই খসড়ার নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়। সেটি এখন গেজেট প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে। গতকাল শুক্রবার মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশীদ বলেন,স্বাভাবিকভাবেই পরবর্তী নির্বাচিত সরকার ক্ষমতা গ্রহণের আগ পর্যন্ত বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদ বহাল থাকবে। অধ্যাদেশটি যখন জারি হবে তখনই আপনারা জানতে পারবেন। আইন উপদেষ্টা মহোদয় এখন দেশের বাইরে। উপদেষ্টা দেশে এলে কথা বলে নেবেন।

গত ৫ অগাস্ট গণ আন্দোলনের মুখে দেশ ছেড়ে ভারতে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ৮ অগাস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে শপথ নেয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। তার আগেই ভেঙে দেয়া হয় সংসদ। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ কতোদিন হবে, সে বিষয়ে এখনও কোনো ধারণা দেয়া হয়নি। সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন বিষয়ে সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে, এরমধ্যে রয়েছে সাংবিধানিক সংস্কারও। সংবিধানে বলা আছে, সংসদ ভেঙে দিলে ৯০ দিনের মধ্যে ভোট হতে হবে, আর কোনো দৈব দুর্বিপাকে সেটা করা না গেলে পরের ৯০ দিনেই হতে হবে নির্বাচন। শুরুতে বিএনপি অন্তর্বর্তী সরকারকে সময় দেয়ার কথা বললেও এখন দ্রæত নির্বাচন দেওয়ার দাবি করছে। তবে সরকার শুরু থেকেই তার মেয়াদ এবং নির্বাচনের সময়সীমা সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কোনো বক্তব্য দিচ্ছে না। সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান ১৮ মাসের মধ্যে নির্বাচনের আভাস দিয়ে একটি বিদেশি সংবাদ মাধ্যমে বক্তব্য দিলেও সরকারের তরফে সেটি ‘ব্যক্তিগত বক্তব্য’ বলে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ২০২৫ সালের শেষে ভোট হতে পারে বলে একটি বক্তব্য দেয়ার পরে সেটি ‘সরকারের বক্তব্য নয়’ বলে প্রতিক্রিয়া জানান ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন। বিএনপি অবশ্য এরমধ্যে দ্রæত নির্বাচন দেওয়ার দাবি তুলছে, তারা বলছে, সংবিধান সংশোধন বা সংস্কারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচিত সংসদ, সেটিই হবে টেকসই। আরেক আলোচিত দল জামায়াতে ইসলামী শুরুতে ‘আগে সংস্কার, পরে নির্বাচন’ এমন একটি অবস্থান নিলেও এখন ‘দ্রæত সংস্কার করে নির্বাচন’ দেওয়ার কথা বলছে। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ ও তার শরিকদের জনসমর্থন যাই থাকুক না কেন, তাদেরকে ‘ফ্যাসিবাদী’ আখ্যা দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার তাদের কথা মাথায় না রেখেই সব কিছু করছে। এমনকি নির্বাচনি ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আওয়ামী লীগকে ছাড়া নির্বাচন করলে সেটি অগ্রহণযোগ্য হবে না।
‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কর্তৃক প্রণীত অধ্যাদেশ ও কার্যক্রমের বৈধতা’ বিষয়ে প্রস্তাবিত অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, সংবিধান এবং আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যা কিছুই থাকুক না কেন, নতুন সংসদ গঠিত হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী যে তারিখে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন, সেই তারিখের মধ্যবর্তী সময়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রয়োগ করা ক্ষমতা, অধ্যাদেশ, বিধিমালা, প্রবিধানমালা, প্রজ্ঞাপন, আদেশ, কর্মকাÐ ও গৃহীত ব্যবস্থা আইনানুযায়ী যথাযথভাবে করা এবং গ্রহণ হয়েছে বলে গণ্য হবে। সুপ্রিম কোর্ট বা অন্য কোনো আদালত বা কর্তৃপক্ষের কাছে এর বৈধতা সম্পর্কে কোনো প্রশ্ন উত্থাপন করা যাবে না বা একে অবৈধ বা বাতিল করতে পারবে না।
অন্তর্বর্তী সরকার একটি অধ্যাদেশের খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে, যাতে বলা হয়েছে সরকারের কোনো সিদ্ধান্ত আদালতে চ্যালেঞ্জ করা যাবে না। ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন ও কার্যধারা রক্ষণ’ সংক্রান্ত ধারায় বলা হয়েছে- অন্তর্বর্তী সরকার গঠন বা এর প্রধান উপদেষ্টা বা কোনো উপদেষ্টাদের নিয়োগ সম্পর্কে কোনো ত্রæটি রয়েছে, কেবল এ কারণে কোনো কাজ অবৈধ হবে না বা এ সম্পর্কে কোনো আদালতে প্রশ্ন উত্থাপন বা মামলা করা যাবে না।
তিন দশকেরও বেশি সময় আগে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ব্যবস্থা এসেছিল দেশে। ১৯৯০ সালের ডিসেম্বরে সেনাশাসক হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের পতনের পর পঞ্চম জাতীয় নির্বাচন আয়োজনে প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে গঠন করা হয়েছিল অন্তর্র্বতী সরকার। পরে সংবিধানে তত্ত¡াবধায়ক সরকার গঠন হলে ১৯৯৬ সালের ১২ জুন, ২০০১ এবং ২০০৮ সালের নির্বাচন হয় তত্ত¡বধায়ক সরকারের অধীনে। তত্ত¡াবধায়ক সরকার ব্যবস্থার মেয়াদ ছিল ৯০ দিন। তবে সবশেষ ২০০৭ সালে ১১ জানুয়ারি ফখরুদ্দীন আহমেদের নেতৃত্বে তত্ত¡াবধায়ক সরকার শপথ নেয়। তবে এই সরকার ক্ষমতায় থাকে প্রায় দুই বছর। ২০১১ সালে এক রায়ে তত্ত¡াবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অসাংবিধানিক বলে রায় দেয় সুপ্রিম কোর্ট। ওই বছরের ৩০ জুন তত্ত¡াবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্ত করে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী পাস করে নবম সংসদ।