ঢাকা ১২:২১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শেখ হাসিনা ভারতে থাকবেন ‘আতিথেয়তায়’

বাংলা টাইমস ডেস্ক
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৮:৩৫:৪৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪ ৪২ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন ভারতে। দেশটিতে তিনি কী হিসেবে থাকছেন এ নিয়ে অনেকের প্রশ্ন থাকলেও এতোদিন মুখ খুলেনি ভারতের নীতিনির্ধারকরা। ভারতে শেখ হাসিনার থাকার বিষয়ে বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) অল্প শব্দ খরচ করেছে দেশটি।

এদিন আনুষ্ঠানিকভাবে ভারত সরকার জানায়, আমিরাত বা মধ্যপ্রাচ্যের কোনও দেশে শেখ হাসিনার যাওয়ার খবর বা তার পরবর্তী গন্তব্য হিসেবে আলোচনায় আসা এসব দেশের নাম আপাতত ভিত্তিহীন।

‘শেখ হাসিনাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেয়া নিয়ে ভারত যা ভাবছে’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন করেছে বিবিসি বাংলা। সংবাদমাধ্যমটিকে দিল্লির সাউথ ব্লকের এক শীর্ষস্থানীয় সরকারি কর্মকর্তা জানিয়েছে, দীর্ঘ সময়ের জন্য শেখ হাসিনাকে ভারতে থাকতে দিতে হবে, এই আয়োজনের দিকেই এগোচ্ছে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার।

এমন প্রেক্ষাপটে দুইটি বিষয় সামনে চলে আসে। প্রথমত, দিল্লির কাছে এই মুহূর্তে শেখ হাসিনা একজন রাষ্ট্রীয় অতিথি। এ পরিচয়ই তাকে সেখানে অবস্থান করার জন্য একদিকে যথেষ্ট। অপরদিকে, পরিস্থিতি বিবেচনায় তার অবস্থানকালীন স্ট্যাটাসটি আনুষ্ঠানিকভাবে পরিবর্তন করারও এখতিয়ার রয়েছে দিল্লির।

এ দুই পরিস্থিতির সাপেক্ষে অবশ্য দ্বিতীয়টির আলোচনা এই মুহূর্তে আসছে না। এর কারণ, প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন প্রতিবেশি এই দেশের সরকারের সাথে বেশ সখ্যতা তৈরি করেছিলেন শেখ হাসিনা। তার ক্ষমতায় থাকাকালীন ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের পরিবর্তনেও ‘শেখ হাসিনার ঢাকার সাথে কংগ্রেস বা বিজেপির দিল্লির’ সম্পর্ক খুব একটা পরিবর্তন হয়নি। এই প্রসঙ্গে দেশটির কূটনৈতিক মহলের বা আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিশ্লেষকরাও প্রায় সবাই একমত, এই সঙ্কটের মুহূর্তে শেখ হাসিনার পাশে ভারতকে দাঁড়াতেই হবে। কারণ, তা না করলে আগামী দিনে দক্ষিণ এশিয়া বা প্রতিবেশি কোনও দেশের কোনও নেতাই ভারতের বন্ধুত্বে ভরসা রাখতে পারবেন না।

আর পুরনো বন্ধুত্বের মর্যাদা দেয়ার সবচেয়ে সম্মানজনক রাস্তা হলো, শেখ হাসিনাকে রাষ্ট্রীয় অতিথির সম্মান দিয়ে যতদিন দরকার, ততদিন ভারতেই রেখে দেয়া।

দ্বিতীয় ব্যপারটির সম্ভাবনা যে নেই, তা প্রথমটির ভেতরেই প্রমাণিত। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, রাহুল গান্ধি কিংবা আমিত শাহ দুজনেরই কেউই শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থান নিয়ে বিপরীত মন্তব্য করবে না। রাজনৈতিক মাঠের দুই প্রতিপক্ষও শেখ হাসিনা ইস্যুতে এক। এ রকম বন্ধু থাকলে সেখানে অতিথি হিসেবে আওয়ামী লীগ সভাপতির থাকাটাই স্বাভাবিক, রাজনৈতিক আশ্রয়ের আনুষ্ঠানিকতা কিংবা সেই ট্যাগ দিল্লি কোনোভাবেই দেবে না শেখ হাসিনার নামে।

এই মুহূর্তে দিল্লি মনে করছে, শেখ হাসিনা এখন দেশটিতে ‘যেভাবে আছেন, সেভাবেই থাকুন’– মানে সেটা দেশের অতিথির স্ট্যাটাসে এবং অবশ্যই যতদিন দরকার।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুথানে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। সামরিক বিমানে চেপে উড়ে যান ভারতে। ১৯৭৫ সালে শেখ হাসিনা যখন সপরিবারে ভারতে আশ্রয় পেয়েছিলেন তখনও কিন্তু টেকনিক্যালি তাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেয়া হয়নি। বরং পরিচয় গোপন রেখে তাকে অতিথি হিসেবেই রেখেছিল ভারত। বেশ কয়েক বছর সেখানে ছিলেন তিনি। এরপর ১৯৮১ সালে দেশে ফেরেন শেখ হাসিনা।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

শেখ হাসিনা ভারতে থাকবেন ‘আতিথেয়তায়’

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৮:৩৫:৪৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন ভারতে। দেশটিতে তিনি কী হিসেবে থাকছেন এ নিয়ে অনেকের প্রশ্ন থাকলেও এতোদিন মুখ খুলেনি ভারতের নীতিনির্ধারকরা। ভারতে শেখ হাসিনার থাকার বিষয়ে বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) অল্প শব্দ খরচ করেছে দেশটি।

এদিন আনুষ্ঠানিকভাবে ভারত সরকার জানায়, আমিরাত বা মধ্যপ্রাচ্যের কোনও দেশে শেখ হাসিনার যাওয়ার খবর বা তার পরবর্তী গন্তব্য হিসেবে আলোচনায় আসা এসব দেশের নাম আপাতত ভিত্তিহীন।

‘শেখ হাসিনাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেয়া নিয়ে ভারত যা ভাবছে’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন করেছে বিবিসি বাংলা। সংবাদমাধ্যমটিকে দিল্লির সাউথ ব্লকের এক শীর্ষস্থানীয় সরকারি কর্মকর্তা জানিয়েছে, দীর্ঘ সময়ের জন্য শেখ হাসিনাকে ভারতে থাকতে দিতে হবে, এই আয়োজনের দিকেই এগোচ্ছে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার।

এমন প্রেক্ষাপটে দুইটি বিষয় সামনে চলে আসে। প্রথমত, দিল্লির কাছে এই মুহূর্তে শেখ হাসিনা একজন রাষ্ট্রীয় অতিথি। এ পরিচয়ই তাকে সেখানে অবস্থান করার জন্য একদিকে যথেষ্ট। অপরদিকে, পরিস্থিতি বিবেচনায় তার অবস্থানকালীন স্ট্যাটাসটি আনুষ্ঠানিকভাবে পরিবর্তন করারও এখতিয়ার রয়েছে দিল্লির।

এ দুই পরিস্থিতির সাপেক্ষে অবশ্য দ্বিতীয়টির আলোচনা এই মুহূর্তে আসছে না। এর কারণ, প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন প্রতিবেশি এই দেশের সরকারের সাথে বেশ সখ্যতা তৈরি করেছিলেন শেখ হাসিনা। তার ক্ষমতায় থাকাকালীন ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের পরিবর্তনেও ‘শেখ হাসিনার ঢাকার সাথে কংগ্রেস বা বিজেপির দিল্লির’ সম্পর্ক খুব একটা পরিবর্তন হয়নি। এই প্রসঙ্গে দেশটির কূটনৈতিক মহলের বা আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিশ্লেষকরাও প্রায় সবাই একমত, এই সঙ্কটের মুহূর্তে শেখ হাসিনার পাশে ভারতকে দাঁড়াতেই হবে। কারণ, তা না করলে আগামী দিনে দক্ষিণ এশিয়া বা প্রতিবেশি কোনও দেশের কোনও নেতাই ভারতের বন্ধুত্বে ভরসা রাখতে পারবেন না।

আর পুরনো বন্ধুত্বের মর্যাদা দেয়ার সবচেয়ে সম্মানজনক রাস্তা হলো, শেখ হাসিনাকে রাষ্ট্রীয় অতিথির সম্মান দিয়ে যতদিন দরকার, ততদিন ভারতেই রেখে দেয়া।

দ্বিতীয় ব্যপারটির সম্ভাবনা যে নেই, তা প্রথমটির ভেতরেই প্রমাণিত। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, রাহুল গান্ধি কিংবা আমিত শাহ দুজনেরই কেউই শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থান নিয়ে বিপরীত মন্তব্য করবে না। রাজনৈতিক মাঠের দুই প্রতিপক্ষও শেখ হাসিনা ইস্যুতে এক। এ রকম বন্ধু থাকলে সেখানে অতিথি হিসেবে আওয়ামী লীগ সভাপতির থাকাটাই স্বাভাবিক, রাজনৈতিক আশ্রয়ের আনুষ্ঠানিকতা কিংবা সেই ট্যাগ দিল্লি কোনোভাবেই দেবে না শেখ হাসিনার নামে।

এই মুহূর্তে দিল্লি মনে করছে, শেখ হাসিনা এখন দেশটিতে ‘যেভাবে আছেন, সেভাবেই থাকুন’– মানে সেটা দেশের অতিথির স্ট্যাটাসে এবং অবশ্যই যতদিন দরকার।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুথানে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। সামরিক বিমানে চেপে উড়ে যান ভারতে। ১৯৭৫ সালে শেখ হাসিনা যখন সপরিবারে ভারতে আশ্রয় পেয়েছিলেন তখনও কিন্তু টেকনিক্যালি তাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেয়া হয়নি। বরং পরিচয় গোপন রেখে তাকে অতিথি হিসেবেই রেখেছিল ভারত। বেশ কয়েক বছর সেখানে ছিলেন তিনি। এরপর ১৯৮১ সালে দেশে ফেরেন শেখ হাসিনা।