জুলাই আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন
আন্দোলনে শহীদ বরিশালের ২৭ জন, তালিকায় নেই আ’ লীগ নেতার তথ্য
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৮:৪১:০৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ৭৫ বার পড়া হয়েছে
জুলাই আগস্টে ছাত্র জনতার লাগাতর আন্দোলনে বরিশালের ২৭ জন শহীদ হয়েছেন। এরমধ্যে ৯ জন শিক্ষার্থী, একজন সাংবাদিক ও ১৭ জন পেশাজীবী। তবে এরা কেউ বরিশালে শহীদ হননি। ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য স্থানে তারা গুলিবিদ্ধ হন। আর তার প্রধান কারন বরিশালের পুলিশ ছররা গুলি ছোঁড়ার আগ্নেয়াস্ত্র ও রাবার বুলেট ও সাউন্ডগ্রেনেড ব্যবহারের অস্ত্র ছাড়া অন্য মরনঘাতি অস্ত্র ব্যবহার করেনি।
অবশ্য উল্লিখিত ২৭ জন শহীদের মধ্যে অধিকাংশকে নিজ নিজ গ্রামে দাফন করা হয়েছে। বরিশাল জেলা প্রশাসন উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে বরিশালের ২৭ জন শহীদের তালিকা প্রস্তুত করেছে। তবে এই তালিকায় ছাত্রদের হামলায় বরিশালের প্রবীন আওয়ামী লীগ নেতা মফিজুল ইসলাম টুটুল শহীদ হওয়ার কোন তথ্য নেই।
বরিশালের শহীদের মধ্যে রয়েছেন গৌরনদী উপজেলার পশ্চিম শাওরা গ্রামের ইলিয়াস খান (২৬)। তিনি পশ্চিম শাওরা আলীয়া মাদ্রাসার ছাত্র ছিলেন। মোহাম্মদপুর এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিওরোসায়েন্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরন করেন। মেহেন্দিগঞ্জ পানবাড়িয়া গ্রামের সরোয়ার হোসেন খান (১৮)। তিনি ঢাকায় লেখাপড়া করতেন।
এছাড়া কাজিরহাট থানার হেসামদ্দি গ্রামের মো. মারুফ (১৭)। তিনি ঢাকায় লেখাপড়া করতেন। ঢাকার বাড্ডা এলাকায় তাকে দাফন করা হয়েছে। মুলাদি উপজেলার কাজিরচর গ্রামের মো. জিহাদ হোসেন (১৯)। তিনি ঢাকায় লেখাপড়া করতেন। খেলারচর গ্রামের সিফাত হোসেন (১৭)। তিনিও ঢাকায় লেখাপড়া করতেন। বংশাল রোডে তিনি নিহত হন। বাবুগঞ্জ উপজেলার বাহেরচর ক্ষুদ্রকাঠি গ্রামের আবদুল্লাহ আল আবির (২৩)। তিনি ঢাকায় লেখাপড়া করতেন। তাকে বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এনে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তাকে নিজ বাড়িতেই দাফন করা হয়েছে।
একই উপজেলার মানিককাঠি গ্রামের মো. ফয়সাল আহমেদ শান্ত (২০)। তিনি চট্টগ্রামে লেখাপড়া করতেন। চট্টগ্রামেই তিনি গুলিবিদ্ধ হন। তাকে বাড়িতে এনে দাফন করা হয়েছে। একই গ্রামের মো. রাকিব হোসাইন (২৬)। তিনি ঢাকায় লেখাপড়া করতেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরন করেন। বানারিপাড়া উপজেলার বড় চাউলাকাঠি গ্রামের অহিদুল ইসলাম (২২)। তিনি ব্রজমোহন কলেজের ছাত্র হলেও ঢাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারান। হিজলা উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের মো. রিয়াজ রাঢ়ি (২৪)। তিনি ঢাকায় লেখাপড়া করতেন। সাইন্স ল্যাব এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
হিজলা উপজেলার ক্ষুন্নাগোবিন্দপুর গ্রামের মো. আতিকুর রহমান (৩৪)। তিনি একজন সাংবাদিক ছিলেন। যাত্রাবাড়ি এলাকায় তিনি গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।
গৌরনদী উপজেলার নলচিড়া গ্রামের ইমরান খলিফা (৩২)। তিনি ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা কর্মীর চাকুরি করতেন। ঢাকার শাহজাদপুরে তিনি নিহত হন। হোসনাবাদ গ্রামের জয়নাল সিকদার (২৫)। তিনি ঢাকায় রং মিস্ত্রীর কাজ করতেন। তিনি ঢাকা-চিটাগাং রোডে নিহত হন। মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার নন্দপুরা গ্রামের সুমাইয়া সুমি (২২)। তিনি একটি পোষাক কারখানার শ্রমিক ছিলেন। উজিরপুর উপজেলার পূর্ব কেশবকাঠি গ্রামের মো. মিজানুর রহমান (২৮)। তিনি ঢাকায় মুদি দোকানের ব্যবসা করতেন। বড়াকোঠা গ্রামের মো. সাইফুল ইসলাম (২২)। তিনি ঢাকায় গাড়ি চালাতেন। বাকেরগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ কবাই গ্রামের মো. সুমন শিকদার (৩২০)। তিনি ঢাকায় পিকআপ চালাতেন। বাড্ডা এলাকায় তার মৃত্যু হয়।
এছাড়া শাকবুনিয়া গ্রামের মো. রফিউল ইসলাম ফরাজি (২৭)। তিনি ঢাকায় ইলেট্রিক মালামালের ব্যবসা করতেন। চরাদি ইউনিয়নের কৃষ্ণকাঠি গ্রামের মো. শাওন সিকদার (২৩)। তিনি ঢাকায় রাজমিস্ত্রীর কাজ করতেন। দুধাল গ্রামের মো. আবদুল ওয়াদুদ (৪৫)। তিনি ঢাকায় দর্জির কাজ করতেন। ইডেন মহিলা কলেজ এলাকায় তার মৃত্যু হয়। ক্ষুদ্রকাঠি গ্রামের আরিফুর রহমান রাসেল (৩০)। তিনি ঢাকায় পপুলার ডায়গনস্টিক সেন্টারে চাকুরি করতেন। ক্ষুদ্রকাঠি গ্রামের সজিব হাওলাদার (২২)। তিনি ঢাকার বাড্ডা এলাকায় হোটেল ব্যবসায়ী ছিলেন। বানারিপাড়া উপজেলার জম্বুদিপ গ্রামের রাকিব বেপারী (২০)। তিনি নারায়নগঞ্জে গার্মেন্টস শ্রমিক ছিলেন। ঢাকা-চিটাগাং রোডে তিন মৃত্যু বরণ করেন।
ধারাসিয়া গ্রামের আল আমিন রনি (২৩)। তিনি ওয়ার্কশপ মিস্ত্রী ছিলেন। মহাখালি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় তিনি গুলিবিদ্ধ হন। পূর্ব সালিয়াবাকপুর গ্রামের হাফেজ মোহাম্মদ জসিমউদ্দিন (৩৫)। তিনি ঢাকায় ওয়ার্কশপ মিস্ত্রী ছিলেন। আগৈলঝারা উপজেলার পূর্ব বাগধা গ্রামের সাগর হাওলাদার (১৬)। তিনি ঢাকায় চায়ের দোকানের কর্মচারী ছিলেন। তিনি মিরপুরে গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারান। হিজলা উপজেলার ক্ষুন্নাগোবিন্দপুর গ্রামের মো. শহিন (২৫)। তিনি নারায়গঞ্জে হোটেল বয় হিসাবে কর্মরত ছিলেন। তিনি চিটাগাং রোডে গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারান।