ঢাকা ০৯:৫৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তানোরে বিদ্যুতের লোডশেডিং অসহায় মানুষ

ইমরান হোসাইন, তানোর (রাজশাহী)
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৭:০০:০৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

রাজশাহীর তানোরে বৈরী আবহাওয়ার অজুহাতে দিনে রাতে সমানে চলছে বিদ্যুতের ব্যাপক লোডশেডিং। এই লোডশেডিং শুধু নেসকোর নয়, পল্লীবিদ্যুতের অবস্থা আরও ভয়াবহ। বেশ কয়েকদিন ধরে এ উপজেলার গ্রামীণ জনপদের মানুষ দিন রাতের অর্ধেক সময়ই বিদ্যুৎ পাচ্ছেন না। বিদ্যুতের অভাবে ব্যবসা বাণিজ্য ও অফিস পাড়ায় সেবা পাচ্ছে না মানুষ।

এছাড়াও বাসা বাড়ির খাবার পানির পাম্পও চলছে না ঠিকমতো। ফলে মহা সমস্যায় পড়েছে সকল শ্রেণী পেশার মানুষ।
জানা গেছে, পল্লীবিদ্যুৎ ছাড়াও নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানির (নেসকো) সরবরাহের আওতাধীন উপজেলাতেও বিদ্যুতে ঘনঘন আসা যাওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন মানুষ। পল্লীবিদ্যুতের লোডশেডিং আরও অসহনীয় বলে বিভিন্ন এলাকার ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন।

এদিকে, বিদ্যুতের ব্যাপক ঘাটতির কথা ভুক্তভোগীরা জানালেও নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানির কর্মকর্তারা দাবি করছেন কোথাও লোডশেডিং নেই। পবিসের কর্মকর্তারা একই কথা বলছেন। কিন্তু গ্রামীণ জনপদের মানুষ নিরবিছিন্ন বিদ্যুৎ পাচ্ছে না বলে ভুক্তভোগিদের অভিযোগ।

তানোর পৌর এলাকার জিওল গ্রামের বাসিন্দা ওমর হাজী জানান, প্রায় তিন দিন ধরে নেসকোর অসহনীয় ব্যাপক লোডশেডিং হচ্ছে। দিনে রাতে কম করে আট থেকে দশ বার বিদ্যুৎ আসা যাওয়া করছে। চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে ছয় সাত ঘণ্টাই বিদ্যুৎ থাকছে না। গেলো ভাদ্র ও আশ্বিনের শুরুতে তীব্র গরমে বিদ্যুৎবিহীন বাসা বাড়িতে টেকাই মুশকিল হয়ে যাচ্ছে।

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, গত কয়েক দিন ধরে একবার বিদ্যুৎ গেলে দেড় দুই ঘণ্টার আগে আর আসে না। রোববার সকাল থেকে বেশ কয়েকবার বিদ্যুৎ আসা যাওয়া করে এসেছে দুপুর সাড়ে ১২টায়। রাতেও তিন থেকে চারবার পালাক্রমে বিদ্যুতের যাওয়া আসা চলছে। অসহ্য গরমে ঘুমাতে পারছে না অনেক পরিবারের বৃদ্ধ ও শিশুরা। ব্যাপক লোডশেডিংয়ের খবর পাওয়া গেছে পল্লীবিদ্যুৎ আওতাধীন এলাকায়। নেসকোর অধিভুক্ত গ্রাহকরাও সমানভাবে বিদ্যুৎ ভোগান্তির কবলে পড়েছেন।

জানা গেছে, নেসকোর এলাকা বাদে পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহকরাও চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। উপজেলার গ্রামাঞ্চলজুড়ে ছড়িয়ে আছেন পল্লীবিদ্যুতের হাজার হাজার গ্রাহক। এ উপজেলার চন্দনকোঠা গ্রামের বাসিন্দা গনেশ টুডু বলেন, দিনে রাতের বেশির ভাগ সময় বিদ্যুৎ থাকছে না। বিদ্যুৎ না থাকায় বেশির ভাগ মানুষের খাবার পানির পাম্পগুলো চলছে না। এছাড়াও কোন অফিসে গিয়ে বিদ্যুতের কাংখিত সেবা পাওয়া যাচ্ছে না।

আরও জানা গেছে, নেসকোর বিদ্যুৎ চাহিদার চেয়ে ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ বিদ্যুৎ কম আসছে জাতীয় গ্রিড থেকে। ফলে পুরো অঞ্চলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৬ ঘণ্টা করে লোডশেডিং করতে হচ্ছে নেসকোকে। এই অঞ্চলের পল্লীবিদ্যুৎ সমিতিগুলো মোট চাহিদার অর্ধেক বিদ্যুৎ পাচ্ছে। ফলে পবিসের গ্রাহকদের ১২ ঘণ্টা বিদ্যুৎ পাচ্ছেন না। এতে ব্যবসা বাণিজ্যসহ নানাবিধ আর্থিক কর্মকান্ড ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এমন তথ্য এই দুই অফিসের নাম অনিচ্ছুক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানিয়েছেন।

তারা বলেন, রাজশাহীসহ উত্তরাঞ্চলে বেশির ভাগ বিদ্যুৎ আসে ভারতের ঝাড়খন্ড আদানির কোম্পানি থেকে।

এ বিষয়ে তানোর পল্লীবিদ্যুৎ অফিসের ডিজিএম জহুরুল ইসলাম বলেন, আবহাওয়া জনিত কারণে নিরবিছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহে সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। তবে, পল্লীবিদ্যুতের কোন লোডশেডিং নেই বলে দাবি করেন তিনি।

এ ব্যাপারে তানোর নেসকোর আবাসিক প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া বলেন, ঝড়-বৃষ্টির কারণে নেসকো এলাকাধীন বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘন্ন ঘটছে, কিন্তু কোন লোডশেডিং নেই। গ্রাহকরা যে ভোগান্তির কথা বলছেন তা কি মিথ্যা-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আচ্ছা আমি দেখি খোঁজ নিয়ে পরিস্থিতি কী। পরে বিস্তারিত জানানো হবে বলে এড়িয়ে গেছেন তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

তানোরে বিদ্যুতের লোডশেডিং অসহায় মানুষ

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৭:০০:০৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

রাজশাহীর তানোরে বৈরী আবহাওয়ার অজুহাতে দিনে রাতে সমানে চলছে বিদ্যুতের ব্যাপক লোডশেডিং। এই লোডশেডিং শুধু নেসকোর নয়, পল্লীবিদ্যুতের অবস্থা আরও ভয়াবহ। বেশ কয়েকদিন ধরে এ উপজেলার গ্রামীণ জনপদের মানুষ দিন রাতের অর্ধেক সময়ই বিদ্যুৎ পাচ্ছেন না। বিদ্যুতের অভাবে ব্যবসা বাণিজ্য ও অফিস পাড়ায় সেবা পাচ্ছে না মানুষ।

এছাড়াও বাসা বাড়ির খাবার পানির পাম্পও চলছে না ঠিকমতো। ফলে মহা সমস্যায় পড়েছে সকল শ্রেণী পেশার মানুষ।
জানা গেছে, পল্লীবিদ্যুৎ ছাড়াও নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানির (নেসকো) সরবরাহের আওতাধীন উপজেলাতেও বিদ্যুতে ঘনঘন আসা যাওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন মানুষ। পল্লীবিদ্যুতের লোডশেডিং আরও অসহনীয় বলে বিভিন্ন এলাকার ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন।

এদিকে, বিদ্যুতের ব্যাপক ঘাটতির কথা ভুক্তভোগীরা জানালেও নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানির কর্মকর্তারা দাবি করছেন কোথাও লোডশেডিং নেই। পবিসের কর্মকর্তারা একই কথা বলছেন। কিন্তু গ্রামীণ জনপদের মানুষ নিরবিছিন্ন বিদ্যুৎ পাচ্ছে না বলে ভুক্তভোগিদের অভিযোগ।

তানোর পৌর এলাকার জিওল গ্রামের বাসিন্দা ওমর হাজী জানান, প্রায় তিন দিন ধরে নেসকোর অসহনীয় ব্যাপক লোডশেডিং হচ্ছে। দিনে রাতে কম করে আট থেকে দশ বার বিদ্যুৎ আসা যাওয়া করছে। চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে ছয় সাত ঘণ্টাই বিদ্যুৎ থাকছে না। গেলো ভাদ্র ও আশ্বিনের শুরুতে তীব্র গরমে বিদ্যুৎবিহীন বাসা বাড়িতে টেকাই মুশকিল হয়ে যাচ্ছে।

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, গত কয়েক দিন ধরে একবার বিদ্যুৎ গেলে দেড় দুই ঘণ্টার আগে আর আসে না। রোববার সকাল থেকে বেশ কয়েকবার বিদ্যুৎ আসা যাওয়া করে এসেছে দুপুর সাড়ে ১২টায়। রাতেও তিন থেকে চারবার পালাক্রমে বিদ্যুতের যাওয়া আসা চলছে। অসহ্য গরমে ঘুমাতে পারছে না অনেক পরিবারের বৃদ্ধ ও শিশুরা। ব্যাপক লোডশেডিংয়ের খবর পাওয়া গেছে পল্লীবিদ্যুৎ আওতাধীন এলাকায়। নেসকোর অধিভুক্ত গ্রাহকরাও সমানভাবে বিদ্যুৎ ভোগান্তির কবলে পড়েছেন।

জানা গেছে, নেসকোর এলাকা বাদে পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহকরাও চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। উপজেলার গ্রামাঞ্চলজুড়ে ছড়িয়ে আছেন পল্লীবিদ্যুতের হাজার হাজার গ্রাহক। এ উপজেলার চন্দনকোঠা গ্রামের বাসিন্দা গনেশ টুডু বলেন, দিনে রাতের বেশির ভাগ সময় বিদ্যুৎ থাকছে না। বিদ্যুৎ না থাকায় বেশির ভাগ মানুষের খাবার পানির পাম্পগুলো চলছে না। এছাড়াও কোন অফিসে গিয়ে বিদ্যুতের কাংখিত সেবা পাওয়া যাচ্ছে না।

আরও জানা গেছে, নেসকোর বিদ্যুৎ চাহিদার চেয়ে ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ বিদ্যুৎ কম আসছে জাতীয় গ্রিড থেকে। ফলে পুরো অঞ্চলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৬ ঘণ্টা করে লোডশেডিং করতে হচ্ছে নেসকোকে। এই অঞ্চলের পল্লীবিদ্যুৎ সমিতিগুলো মোট চাহিদার অর্ধেক বিদ্যুৎ পাচ্ছে। ফলে পবিসের গ্রাহকদের ১২ ঘণ্টা বিদ্যুৎ পাচ্ছেন না। এতে ব্যবসা বাণিজ্যসহ নানাবিধ আর্থিক কর্মকান্ড ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এমন তথ্য এই দুই অফিসের নাম অনিচ্ছুক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানিয়েছেন।

তারা বলেন, রাজশাহীসহ উত্তরাঞ্চলে বেশির ভাগ বিদ্যুৎ আসে ভারতের ঝাড়খন্ড আদানির কোম্পানি থেকে।

এ বিষয়ে তানোর পল্লীবিদ্যুৎ অফিসের ডিজিএম জহুরুল ইসলাম বলেন, আবহাওয়া জনিত কারণে নিরবিছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহে সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। তবে, পল্লীবিদ্যুতের কোন লোডশেডিং নেই বলে দাবি করেন তিনি।

এ ব্যাপারে তানোর নেসকোর আবাসিক প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া বলেন, ঝড়-বৃষ্টির কারণে নেসকো এলাকাধীন বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘন্ন ঘটছে, কিন্তু কোন লোডশেডিং নেই। গ্রাহকরা যে ভোগান্তির কথা বলছেন তা কি মিথ্যা-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আচ্ছা আমি দেখি খোঁজ নিয়ে পরিস্থিতি কী। পরে বিস্তারিত জানানো হবে বলে এড়িয়ে গেছেন তিনি।