ঢাকা ০৩:৪১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রশ্নফাঁস: বিসিএস’র জন্য দিতে হতো ৪৫ লাখ

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ১১:১৮:৪৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১২ জুলাই ২০২৪ ৩৫ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) বিগত ১২ বছরে বিসিএসসহ ৩০টি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ উঠেছে। আর এই অভিযোগে ভিত্তিতে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে প্রশ্নফাঁসের জড়িত ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তাদের কাছ থেকে উঠে এসেছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর কিছু তথ্য।

গ্রেপ্তারকৃতরা দু’টি গ্রুপে কাজ করতেন। চুক্তি অনুযায়ী একজন প্রার্থীর কাছে প্রিলিমিনারি পরীক্ষার আগে এক থেকে দুই লাখ টাকা নিতো। তারপর লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার আগে এক থেকে দুই লাখ টাকা দিতে হতো। নিয়োগ চূড়ান্ত হলে দিতে হতো বাকি টাকা। সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে ১৮ থেকে ২০ লাখ টাকা নিতো এই চক্রটি। আর বিসিএসের জন্য দিতে হতো ৪৫ থেকে ৫০ লাখ টাকা।

সিআইডি জানায়, প্রশ্নফাঁস চক্রের সদস্যদের হোয়াটসঅ্যাপ কথোপকথন থেকে প্রশ্নফাঁস সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়া মিলেছে বেশ কিছু ডিজিটাল আলামতও। তাদের কাছ থেকে দু’টি বিসিএস পরীক্ষার শত শত প্রবেশপত্রের ফটোকপি পাওয়া গেছে। তবে তা কোন দুটি বিসিএস পরীক্ষার প্রবেশপত্র এই বিষয়ে কিছু জানায়নি সিআইডি।

প্রশ্নফাঁস চক্রটি এক যুগ ধরে বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস করে আসছে। এর সাথে বিজি প্রেসকেন্দ্রিক একটি চক্র জড়িত বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রশ্নপত্র হোয়াটসঅ্যাপ বা মেসেঞ্জারে দেয়া হতো না। বরং পরীক্ষার আগের রাতে চুক্তিবদ্ধ পরীক্ষার্থীদের নেওয়া হতো গোপন আস্তানায়।

পিএসসির প্রশ্নফাঁসে জড়িত থাকার অভিযোগে সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলীসহ ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এরমধ্যে রয়েছেন পিএসসির উপপরিচালক আবু জাফর, উপপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম, সহকারী পরিচালক আলমগীর কবির।

এছাড়াও গ্রেপ্তার হয়েছে-অফিস সহায়ক সাজেদুল ইসলাম, ডেসপাস রাইডার খলিলুর রহমান, অডিটর প্রিয়নাথ রায়, সেনাবাহিনীর সাবেক সদস্য নোমান সিদ্দিকী, ব্যবসায়ী জাহিদুল ইসলাম, ঢাবির প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের রাজনীতি করা ব্যবসায়ী আবু সোলায়মান মো. সোহেল, ঢাকার ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অফিসের কর্মী মামুনুর রশীদ, ব্যবসায়ী সাখাওয়াত হোসেন ও তাঁর ভাই সায়েম হোসেন, নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের নিরাপত্তাকর্মী শাহাদাত হোসেন, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ছাত্র লিটন সরকার,শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের টেকনিশিয়ান নিয়ামুন হাসান ও আবেদ আলীর ছেলে ছাত্রলীগ নেতা সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়াম।

এরমধ্যে প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (বিপিএসসি) ঊর্ধ্বতন ৩ কর্মকর্তাসহ গ্রেপ্তার পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে অভিযুক্তদের সাময়িক বরখাস্ত করেছে পিএসসি। তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে দুর্নীতি দমন কমিশনকে চিঠি দিয়েছে সংস্থাটি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

প্রশ্নফাঁস: বিসিএস’র জন্য দিতে হতো ৪৫ লাখ

সংবাদ প্রকাশের সময় : ১১:১৮:৪৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১২ জুলাই ২০২৪

বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) বিগত ১২ বছরে বিসিএসসহ ৩০টি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ উঠেছে। আর এই অভিযোগে ভিত্তিতে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে প্রশ্নফাঁসের জড়িত ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তাদের কাছ থেকে উঠে এসেছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর কিছু তথ্য।

গ্রেপ্তারকৃতরা দু’টি গ্রুপে কাজ করতেন। চুক্তি অনুযায়ী একজন প্রার্থীর কাছে প্রিলিমিনারি পরীক্ষার আগে এক থেকে দুই লাখ টাকা নিতো। তারপর লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার আগে এক থেকে দুই লাখ টাকা দিতে হতো। নিয়োগ চূড়ান্ত হলে দিতে হতো বাকি টাকা। সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে ১৮ থেকে ২০ লাখ টাকা নিতো এই চক্রটি। আর বিসিএসের জন্য দিতে হতো ৪৫ থেকে ৫০ লাখ টাকা।

সিআইডি জানায়, প্রশ্নফাঁস চক্রের সদস্যদের হোয়াটসঅ্যাপ কথোপকথন থেকে প্রশ্নফাঁস সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়া মিলেছে বেশ কিছু ডিজিটাল আলামতও। তাদের কাছ থেকে দু’টি বিসিএস পরীক্ষার শত শত প্রবেশপত্রের ফটোকপি পাওয়া গেছে। তবে তা কোন দুটি বিসিএস পরীক্ষার প্রবেশপত্র এই বিষয়ে কিছু জানায়নি সিআইডি।

প্রশ্নফাঁস চক্রটি এক যুগ ধরে বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস করে আসছে। এর সাথে বিজি প্রেসকেন্দ্রিক একটি চক্র জড়িত বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রশ্নপত্র হোয়াটসঅ্যাপ বা মেসেঞ্জারে দেয়া হতো না। বরং পরীক্ষার আগের রাতে চুক্তিবদ্ধ পরীক্ষার্থীদের নেওয়া হতো গোপন আস্তানায়।

পিএসসির প্রশ্নফাঁসে জড়িত থাকার অভিযোগে সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলীসহ ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এরমধ্যে রয়েছেন পিএসসির উপপরিচালক আবু জাফর, উপপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম, সহকারী পরিচালক আলমগীর কবির।

এছাড়াও গ্রেপ্তার হয়েছে-অফিস সহায়ক সাজেদুল ইসলাম, ডেসপাস রাইডার খলিলুর রহমান, অডিটর প্রিয়নাথ রায়, সেনাবাহিনীর সাবেক সদস্য নোমান সিদ্দিকী, ব্যবসায়ী জাহিদুল ইসলাম, ঢাবির প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের রাজনীতি করা ব্যবসায়ী আবু সোলায়মান মো. সোহেল, ঢাকার ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অফিসের কর্মী মামুনুর রশীদ, ব্যবসায়ী সাখাওয়াত হোসেন ও তাঁর ভাই সায়েম হোসেন, নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের নিরাপত্তাকর্মী শাহাদাত হোসেন, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ছাত্র লিটন সরকার,শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের টেকনিশিয়ান নিয়ামুন হাসান ও আবেদ আলীর ছেলে ছাত্রলীগ নেতা সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়াম।

এরমধ্যে প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (বিপিএসসি) ঊর্ধ্বতন ৩ কর্মকর্তাসহ গ্রেপ্তার পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে অভিযুক্তদের সাময়িক বরখাস্ত করেছে পিএসসি। তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে দুর্নীতি দমন কমিশনকে চিঠি দিয়েছে সংস্থাটি।