কয়লা আমদানি: দরপত্র প্রক্রিয়া স্থগিত রাখতে আইএমইডি’র নির্দেশনা
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৬:১৮:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ জুন ২০২৪ ৭৩ বার পড়া হয়েছে
মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য কয়লা আমদানি ও সরবরাহের দরপত্র প্রক্রিয়ায় কোনো প্রকার চুক্তি সম্পাদন না করতে নির্দেশনা দিয়েছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি)।
আরও পড়ুন :বেনজীরের আরও ৯১ একর জমি জব্দের নির্দেশ
গত মঙ্গলবার প্রকল্পটি বাস্তবায়নকারী রাষ্ট্রয়াত্ত্ব প্রতিষ্ঠান কোল পাওয়ার জেনারেশন কম্পানিকে (সিপিজিসিবিএল) এক চিঠির মাধ্যমে এ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, পাবলিক প্রকিউরম্যান বিধি মালা-২০০৮ অনুযায়ী সরকার কর্তৃক গঠিত রিভিউ প্যানেল থেকে একটি আপিল চলমান থাকায় বিধিমালা অনুযায়ী চুক্তি সম্পাদনের নোটিশ জারি করা হতে বিরত থাকার অনুরোধ করা হলো।
আরও পড়ুন :ঢাকায় ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে ২০ শতাংশ ভবন ধ্বংসে পড়তে পারে
সম্প্রতি দরপত্র প্রক্রিয়ার সচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অভিযোগ জমা দিয়েছেন দরপত্রে অংশ নেয়া একটি আন্তর্জাতিক কনসোটিয়াম। একই কনসোটিয়াম সম্প্রতি আইএমইডিতেও সংশ্লিষ্ট দরপত্র পূন:মূল্যায়ণের জন্য আবেদন করেন।
চলতি বছরের এপ্রিলে আইএমইডি মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের কয়লা আমদানির দরপত্র প্রক্রিয়ায় আদর্শমান বজায় রাখা হয়নি জানিয়ে বিদ্যুত্ বিভাগের সিনিয়র সচিব বরাবর একটি চিঠি পাঠিয়েছেন।
আরও পড়ুন :ঢাকা সফরে আসছেন মোদি!
গত বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মূখ্যসচিব বরাবর পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, দরপত্রে অংশ নেয়া ৪টি কনসোটিয়ামের আর্থিক প্রস্তাবনা মূল্যায়ন না করেই সকলকে বাতিল ঘোষণা করা হয়। চলমান দরপত্রটিতে বাছাই প্রক্রিয়ায় অনিয়ম ও পক্ষপাতিত্ব মূলক আচরণ উল্লেখ করে চিঠিতে আরও বলা হয়, বাতিলকৃত একটি আর্থিক প্রস্তাবনাকে পূনর্বহাল করার জন্য কিছু সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও কতিপয় বোর্ড সদস্য সংঘব্ধভাবে বিশেষ কম্পানিটির সাথে অবৈধভাবে দেশের প্রচলিত আইন ও বিধিমালা অমান্য করে গত ৫ জুন বিকেলে নেগোশিয়েশন মিটিং করে। যা সম্পূর্ণ অনৈতিক ও অবৈধ।
বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, কক্সবাজারের মহেশখালীতে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট সক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্রটির দ্বিতীয় ইউনিটের বাণিজ্যিক উত্পাদন চলতি মাস থেকে শুরু হওয়ার কথা। জাপানের আর্থিক সহায়তায় নির্মিত দুই ইউনিটেরবিদ্যুৎকেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট থেকে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরুর পর দ্বিতীয় ইউনিটও পরীক্ষামূলক উত্পাদন শুরু করেছে। গত বছর ২৪ ডিসেম্বর থেকে দ্বিতীয় ইউনিটের পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হলেও প্রথম ইউনিটের বাণিজ্যিক উত্পাদন শুরু হয়েছে একই মাসের ২৬ তারিখ থেকে।
আরও পড়ুন :রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকবে ব্যাংক!
দরপত্র অংশ নেয়া প্রতিষ্ঠানগুলো সূত্রে জানা গেছে, দরপত্র প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারী দেশী-বিদেশী চার প্রতিষ্ঠান যথাযথ পদ্ধতি অনুসরণ করে প্রস্তাবনা দাখিল করলেও ‘আর্থিক সক্ষমতা নেই’ অযুহাতে প্রথমেই তিন প্রতিষ্ঠানকে বাদ দেয়া হয়। পরবর্তীতে ২৭ মে কারিগরি কমটির সভায় চারটি কনসোটিয়ামের সবগুলোর আর্থিক প্রস্তাবনা বাতিল হয়।
সর্বশেষ ৩১ মে সিপিজিসিবিএল’র বোর্ড সভায় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিদ্যামান পরিস্থিতিতে জাতীয় গুরুত্ব বিবেচনায় বাতিলকৃত ইউনিক সিমেন্ট কনসোটিয়ামকে নিয়ে সমঝোতা করার অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন :বেনজীরের আলাদীনের চেরাগ দুদকে বন্দি
যদিও প্রকল্প কর্মকর্তাদের সেচ্ছাচারিতায় বাতিল হওয়া তিন কনসোটিয়ামের একটি গত ২৯ মে বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিবের কাছে দরপত্র পূণর্মূল্যায়নের জন্য আবেদন করেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি কোনো প্রকার উত্তর পায়নি।
দরপত্রের প্রাথমিক শর্তনুযায়ী, কমপক্ষে ১২ মিলিয়ন মেট্রিক টন কয়লা আমদানির অভিজ্ঞতার শর্ত উল্লেখ ছিলো, যা কয়লা আমাদানি সংশ্লিষ্ট দরপত্রের জন্য একটি প্রাসঙ্গিক শর্ত। কিন্তু একটি বিশেষ প্রতিষ্ঠানকে অনৈতিক সুবিধা প্রদানের উদ্দেশ্যে উক্ত শর্তটি শিথিল করে ১২ মিলিয়ন মেট্রিক টন লোহা, সার, কেমিক্যাল, সিমেন্ট অথবা খাদ্য শস্য আমদানীর অভিজ্ঞতাকে যোগ্যতা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়, যা একটি অসম প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করে।