ঢাকা ০৩:৪২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এমপি আব্দুল হাই মারা গেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ১০:৪৬:৫৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৬ মার্চ ২০২৪ ১২৪ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ঝিনাইদহ-১ আসনের সংসদ সদস্য ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল হাই মারা গেছেন। শনিবার (১৬ মার্চ) ভোরে থাইল্যান্ডের বামরুনদগ্রাদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয় বলে নিশ্চিত করেছেন আব্দুল হাইয়ের ব্যক্তিগত সহকারী শহিদুল ইসলাম।

বেশ কিছুদিন লিভার জটিলতাসহ নানা রোগে অসুস্থ হয়ে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন আব্দুল হাই। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয় বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে। মৃত্যুকালে আব্দুল হাই স্ত্রী, ১ মেয়ে ২ ছেলেসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

১৯৫২ সালের পহেলা মে শৈলকূপা উপজেলার মহম্মদপুর গ্রামে জন্ম নেন আব্দুল হাই। ফয়জুদ্দিন মোল্লা ও ছকিরন নেছা দম্পতির ৩ ছেলে ও ২ মেয়ের মধ্যে সবার ছোট তিনি। তাঁর শিক্ষাজীবন শুরু পার্শ্ববর্তী মির্জাপুর গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। সেখান থেকে পাস করার পর ভর্তি হন বসন্তপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। মাধ্যমিক পাস করার পর ভর্তি হন ঝিনাইদহ কেশবচন্দ্র কলেজে। সেখান থেকে বিএ পাস করেন। বসন্তপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে থাকা অবস্থায় তিনি ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। তৎকালীন ঝিনাইদহ মহকুমা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন আব্দুল হাই।

১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলে বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে ঝাঁপিয়ে পড়েন মুক্তিযুদ্ধে। তিনিই ঝিনাইদহে স্বাধীন বাংলার প্রথম পতাকা উত্তোলন করেন। ভারত থেকে মুজিব বাহিনীর ট্রেনিং নিয়ে দেশে কমান্ডার হিসেবে বিভিন্ন স্থানে পাক বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করেন। দেশ স্বাধীনের পর তিনি ঝিনাইদহ যুবলীগের আহ্বায়ক ও ১৯৭৩ সালে যুবলীগের মহকুমা সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। আশির দশকে জেলা আওয়ামী লীগের যুব ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন তিনি। পরে ১৯৮৭ সালে ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হন।

আব্দুল হাই ১৯৯৬ সালে জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। পরে ১৯৯৮ সালে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঝিনাইদহ-১ আসন (শৈলকূপা উপজেলা) থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি । এরপর ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে তিনি ঝিনাইদহ-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ২০১২ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। ২০০৫ সালে ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হন আব্দুল হাই এমপি। মৃত্যু পর্যন্ত তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন।

আব্দুল হাইয়ের মৃত্যুর খবরে ঝিনাইদহে সর্বত্র শোকের ছায়া নেমে আসে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

এমপি আব্দুল হাই মারা গেছেন

সংবাদ প্রকাশের সময় : ১০:৪৬:৫৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৬ মার্চ ২০২৪

ঝিনাইদহ-১ আসনের সংসদ সদস্য ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল হাই মারা গেছেন। শনিবার (১৬ মার্চ) ভোরে থাইল্যান্ডের বামরুনদগ্রাদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয় বলে নিশ্চিত করেছেন আব্দুল হাইয়ের ব্যক্তিগত সহকারী শহিদুল ইসলাম।

বেশ কিছুদিন লিভার জটিলতাসহ নানা রোগে অসুস্থ হয়ে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন আব্দুল হাই। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয় বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে। মৃত্যুকালে আব্দুল হাই স্ত্রী, ১ মেয়ে ২ ছেলেসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

১৯৫২ সালের পহেলা মে শৈলকূপা উপজেলার মহম্মদপুর গ্রামে জন্ম নেন আব্দুল হাই। ফয়জুদ্দিন মোল্লা ও ছকিরন নেছা দম্পতির ৩ ছেলে ও ২ মেয়ের মধ্যে সবার ছোট তিনি। তাঁর শিক্ষাজীবন শুরু পার্শ্ববর্তী মির্জাপুর গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। সেখান থেকে পাস করার পর ভর্তি হন বসন্তপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। মাধ্যমিক পাস করার পর ভর্তি হন ঝিনাইদহ কেশবচন্দ্র কলেজে। সেখান থেকে বিএ পাস করেন। বসন্তপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে থাকা অবস্থায় তিনি ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। তৎকালীন ঝিনাইদহ মহকুমা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন আব্দুল হাই।

১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলে বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে ঝাঁপিয়ে পড়েন মুক্তিযুদ্ধে। তিনিই ঝিনাইদহে স্বাধীন বাংলার প্রথম পতাকা উত্তোলন করেন। ভারত থেকে মুজিব বাহিনীর ট্রেনিং নিয়ে দেশে কমান্ডার হিসেবে বিভিন্ন স্থানে পাক বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করেন। দেশ স্বাধীনের পর তিনি ঝিনাইদহ যুবলীগের আহ্বায়ক ও ১৯৭৩ সালে যুবলীগের মহকুমা সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। আশির দশকে জেলা আওয়ামী লীগের যুব ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন তিনি। পরে ১৯৮৭ সালে ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হন।

আব্দুল হাই ১৯৯৬ সালে জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। পরে ১৯৯৮ সালে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঝিনাইদহ-১ আসন (শৈলকূপা উপজেলা) থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি । এরপর ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে তিনি ঝিনাইদহ-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ২০১২ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। ২০০৫ সালে ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হন আব্দুল হাই এমপি। মৃত্যু পর্যন্ত তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন।

আব্দুল হাইয়ের মৃত্যুর খবরে ঝিনাইদহে সর্বত্র শোকের ছায়া নেমে আসে।