হাইকোর্টে মামলায় হেরেও বিজয় দাবিতে ফেসবুকে স্ট্যাটাস
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ১১:১৬:৩৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ মার্চ ২০২৪ ২২৮ বার পড়া হয়েছে
হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পূর্বেই এক আইনজীবী বিজয়ী দাবি করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। হাইকোর্টের বিচারপতি মোহাম্মদ মজিবুর রহমান মিয়া এবং বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীম এর গঠিত বেঞ্চে ফার্স্ট আপীল নং- -৪৮৪/২০১৪ মামলায় বিজয় লাভ করেছেন দাবি করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী এডভোকেট নূর মোহাম্মদ আজমী।
ওই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে ইমপালস বিল্ডার্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলামের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এডভোকেট এম খালেদ আহমেদ আইনজীবী এডভোকেট নূর মোহাম্মদ আজমীকে আদালত অবমাননার নোটিশ পাঠিয়েছেন । সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এডভোকেট এম খালেদ আহমেদ ০৯/০৩/২০২৪ ইং তারিখে ওই নোটিশ পাঠান।
।
জানা গেছে, সিলেট শহরে অবস্থিত ০.৬৩২ শতক জমির মালিকানা নিয়ে হাজী শেখ হাসিনা নামের একব্যক্তি সিলেটের যুগ্ম জেলা জজ আদালতে মামলা করেন । যার নম্বর স্বত্ব মোকদ্দমা নং- ৩৭ /২০১২ । ২০১৪ সালের ২৮ শে অক্টোবর সিলেট জজকোর্টের যুগ্ম জেলা জজ মুহাম্মদ সামছুল ইসলাম মামলার বাদী হাজী শেখ হাসিনার পক্ষে রায় দেন।
আদালত রায়ের একপর্যায়ে বলেন, বাদী পক্ষের বিজ্ঞ কৌসুলীর বক্তব্য নথি, ১৭-২২ নং বিবাদীর দাখিলীয় জবাব ও শপথনামা সহযোগে বিগত ২১- ১১- ২০১২ ইং তারিখের দরখাস্ত ইত্যাদি পর্যালোচনা করিয়া দেখা যায় যে ,জবাবের স্বাক্ষর এবং দরখাস্তের স্বাক্ষর একই ব্যক্তি অর্থাৎ জোবেল লুসাইয়ের বলেই প্রতিয়মান হয়। কাজেই উক্ত জোবেল লুসাই কর্তৃক একেকবার একেক তথ্য দিয়ে আদালতে বিভ্রান্ত করা মোটেই সমীচীন হয়নি। কেননা জোবেল লুসাই একবার বাদীর সাথে আপোষনামা করে আরেকবার বাদীর বিরুদ্ধে জবাব দিয়ে ২৩ নং বিবাদীকে সমর্থন করে এবং পুনরায় তার দেওয়া জবাব শপথনামা সহযোগে অস্বীকার করে। তাতে জোবেল লুসাইয়ের এই আচরণ সাক্ষ্য আইনের ১১৫ ধারা মোতাবেক বারিত এবং তার বিরুদ্ধে বাদী ও বিবাদী ইচ্ছা করলে আইনগত পদক্ষেপ নিতে পারে।
উক্ত রায়ে সংক্ষুব্ধ হয়ে ২৩ নং বিবাদী ইমপালস বিল্ডার্স লিমিটেডের পক্ষে হাইকোর্টে ফাস্ট আপিল দায়ের করা হয়। ফার্স্ট আপীল নং – ৪৮৪/২০১৪।
হাইকোর্টের বিচারপতি মোহাম্মদ মজিবুর রহমান মিয়া এবং বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের সমন্বয়ে গঠিত দ্বৈত বেঞ্চ গত ০৭/০৩/২০২৪ ইং তারিখে আপীলটি খারিজ করে দেন ও বর্ণিতভাবে নিম্ন আদালতের রায় বহাল রাখেন।
এছাড়া ১৮ নং বিবাদীপক্ষে পাল্টা আপিল দায়ের করলে তা গ্রহণযোগ্যতার শুনানীর সময় খারিজ হয়ে যায়। ফলে সম্পূর্ণ রায়টি ১৮ নং বিবাদীপক্ষের বিপক্ষে চলে যায়।
অথচ ১৮ নং বিবাদীপক্ষের আইনজীবী এডভোকেট নূর মোহাম্মদ আজমী গত ০৮/০৩/২০২৪ ইং তারিখে তার ফেইসবুকে লিখেন-
“মামলায় জেতা অবশ্যই আনন্দের। তবে সে আনন্দ কয়েকগুণ বেড়ে যায় যদি মামলা চলাকালে প্রতিপক্ষ বারংবার হেনস্তা করে, ব্যক্তিগত আক্রমণ করে বসে। জায়গা জমি সংক্রান্ত এমনই এক মামলায় (First Appeal) বহু প্রতিকূলতা মোকাবেলা করে আজ জয় লাভ করলাম। আলহামদুলিল্লাহ্”।
ওই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে ইমপালস বিল্ডার্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলামের পক্ষের সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এডভোকেট এম খালেদ আহমেদ এডভোকেট নূর মোহাম্মদ আজমীকে আদালত অবমাননার নোটিশ পাঠানো হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এডভোকেট এম খালেদ আহমেদ গত ০৯/০৩/২০২৪ ইং তারিখে ওই নোটিশ পাঠান। নোটিশে ফেইসবুকের স্ট্যাটাসটি ১২ /০৩/২০২৪ ইং তারিখের মধ্যে অপসারণ বা যৌক্তিকভাবে পরিবর্তন করতে বলা হয়েছে। অন্যথায় আদালত অবমাননার মামলা করা হবে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে। নোটিশের অনুলিপি সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্টার জেনারেল, সিলেটের ডিসি ও কুমিল্লা ডিসিকে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে নোটিশদাতা আইনজীবী এডভোকেট এম খালেদ আহমেদ বলেন, পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হওয়ার আগে এবং ১৮ নং বিবাদীর পাল্টা আপিল খারিজ হয়ে হওয়ার পরও বিজয়ী হয়েছেন এমন দাবি করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়া আদালত অবমাননার শামিল । এজন্য উক্ত আইনজীবীকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে।