আগুনে মৃত্যুর মিছিল থামছেই না
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ০২:২১:৩৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১ মার্চ ২০২৪ ১৬৪ বার পড়া হয়েছে
একের পর এক অঘ্নিকান্ডের ঘটনা। একটি ঘটনার রেশ না কাটতেই আরেকটি ঘটনা ঘটছে। নিমতলী, চুড়িহাট্ট, বনানীর পর এবার বেইলি রোড আগুন। আগুনে প্রাণহানি যেন প্রায় নিয়মিত ঘটনা। তথ্যমতে, দেশে গড়ে দিনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ৭৭টি। এ অবস্থা থেকে মুক্তির উপায় কি?।বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফায়ার সার্ভিসসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন না হলে, প্রাণহানীর ঝুঁকি কমবে না।
বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে রাজধানীর বেইলি রোডে ভবনের আগুনের এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ৪৬। ফায়ার সার্ভিসের ১৩ ইউনিটের চেষ্টায় দুই ঘন্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও পুড়ে গেছে বাণিজ্যিক ভবনটি। ভয়াবহ এ অগ্নিকান্ডের ঘটনায় শোক জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী দলীয় নেতা।
বেইলি রোডের আগুনে এই মৃত্যুর মিছিল নতুন কিছু নয়। এর আগে ২০১০ সালের ১৩ জুন ট্রান্সফর্মার বিস্ফোরণের আগুনে প্রায় ৩ ঘণ্টা ধরে পোড়ে পুরান ঢাকার নিমতলি। সরকারি হিসাবেই তাতে প্রাণ যায় ১১৭ জনের। পরে মৃত্যু হয় এক নারী ও শিশুর। রাসায়নিকের গুদাম থাকায় ভয়বহ রূপ নেয় সেই আগুন। শতচেষ্টায়ও সেখান থেকে পুরোপুরি সরানো যায়নি রাসায়নিকের মজুদ।
২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি চকবাজারের চুড়ি হাট্টায় আবারও সেই একই ঘটনার পুরাবৃত্তি। সেই আগুন কেড়ে নয় ৭৮ জনের প্রাণ। পরে শিল্প মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি জানায়, প্রাইভেটকারের সিলিন্ডার থেকে লাগা আগুনে বিস্ফোরিত হয় পিকআপের গ্যাস সিলিন্ডার।
একই বছরে ২৮ মার্চে বনানীর এফআর টাওয়ারে আগুন। ২২ তলা ওই ভবনের আট তলায় শুরু হয়ে সে আগুন ছড়ায় পুরো ভবনে। মৃত্যু হয় ২৬ জনের। প্রাণ বাঁচাতে লাফিয়ে পড়েও মৃত্যু হয় একজনের। আর এবার অগ্নিকুণ্ড হল রাজধানীর বেইলি রোড।
ফায়ার সার্ভিসের সাবেক মহাপরিচালক আহম্মদ আলী বলেন, যারা বিল্ডিংয়ের ক্লিয়ারেন্সগুলো দেয়, রাজউক ও ফায়ার সার্ভিসকে আমি মনে করি দায়ত্বটা নিতে হবে। এখানে তাদের প্যানাল্টির আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
রাজধানীর বেইলি রোডে ভবনে আগুনে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪৬ জনে দাড়িয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। শুক্রবার (১ মার্চ) সকালে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে এসে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন এসব তথ্য জানিয়েছেন।এ ঘটনায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ১০ জন এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২ জন ভর্তি আছেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাত পৌনে ১০টার দিকে ভবনটিতে আগুন লাগে। আগুন নেভানোর পর হতাহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয়।
রাতে বেইলি রোডের যে ভবনে আগুন লেগেছে, সেটি সাততলা। ভবনের দ্বিতীয় তলায় ‘কাচ্চি ভাই’ নামের খাবারের দোকান রয়েছে। তৃতীয় তলায় একটি পোশাকের দোকান ছাড়া ওপরের তলাগুলোতেও রয়েছে খাবারের দোকান। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর থেকে খাবারের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় হয়। অনেকেই পরিবার নিয়ে সেখানে খেতে যান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভবনটি প্রথম ও দ্বিতীয় তলায় আগুন লাগার পর তা ওপরের দিকে ছড়িয়ে পড়ে। কিছুক্ষণের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। পাশাপাশি ক্রেনের সাহায্যে ভবনের সপ্তম তলা ও ছাদে আশ্রয় নেওয়া ব্যক্তিদের নামিয়ে আনতে থাকেন তাঁরা।