ঢাকা ০৪:৪৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১১ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
ডা. জাহাঙ্গির ও ডা. তাসনিম’র বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইনি নোটিশ দুঃসহ স্মৃতির কথা মনে হলে আজও গা শিউরে ওঠে-পঙ্গু রেবেকা টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে পাথরবোঝাই ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বসতঘরে ঘুমন্ত নারী নিহত মেলান্দহে অপরাধ রোধে বিট পুলিশিং সমাবেশ অনুষ্ঠিত আওয়ামী যুবলীগ ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের দাবীতে পাবনায় বিক্ষোভ টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে পাথরবোঝাই এক ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বসতঘরে এক নারী নিহত আতাহার-বদরুদ্দোজা লাকী-সবুর পরিষদের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা রাস্তা পারাপারে চালু হলো স্বয়ংক্রিয় ট্রাফিক সিগন্যাল আইসিটি খাতের দুর্নীতি তদন্তে টাস্কফোর্স গঠন, ২১ জুনের মধ্যে প্রতিবেদন বাবার ভুলের জন্য ক্ষমা চাইলেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ

সাদুল্যাপুরে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বাকবিতন্ডা

সরকার লুৎফর রহমান,গাইবান্ধা
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ১০:৩২:১০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৫ ১৬ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলায় হ-য-ব-র-ল অবস্থার মধ্যে দিয়ে বাংলা বর্ষবরণ-১৪৩২ উৎসব পালন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানের শুরুতেই জাতীয় সংগীত পরিবেশন নিয়ে হট্টগোল ও বাকবিতণ্ডার ঘটনা ঘটে।

বর্ষবরণ অনুষ্ঠানটি বাজেট স্বল্পতার কথা বলে সংকোচিত (সীমিত পরিসর) আয়োজন করে উপজেলা প্রশাসন। তবে বরাদ্দের অর্থ ব্যয় করে প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিজেদের জন্য বৈশাখের পোশাক-পরিচ্ছেদ ক্রয় করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

সোমবার (১৪এপ্রিল) সকাল ১১টার দিকে সাদুল্লাপুর উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত ‘পহেলা বৈশাখ উদযাপন’ অনুষ্ঠানস্থল সাদুল্যাপুর বহুমূখী পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীরা জানান, উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে বর্ষবরণ উপলক্ষে বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা শেষে হাইস্কুল মাঠে সমাবেশস্থলে অংশ নেয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, শিক্ষক-কর্মচারী ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের সদস্য এবং উপজেলা প্রশাসনের কর্মকতা-কর্মচারীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ। অনুষ্ঠানের শুরুতেই বাজানো হয় জাতীয় সংগীত ও এসো হে বৈশাখ এসো এসো গানটি। এতে বাদ পড়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সামাজিক সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের সদস্য ছাড়াও মাঠে দাঁড়িয়ে থাকা বিভিন্ন পেশার মানুষ। কোন বার্তা না দিয়েই শুধুমাত্র উপজেলা প্রশাসনের কর্মকতা-কর্মচারীরা এই জাতীয় সংগীতে অংশ নেয়।

এ বিষয়ে সাদুল্যাপুর বহুমূখী পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. এনশাদ আলী সরকার বলেন, মাঠে সমাবেশে স্থলে অংশগ্রহণকারী সকলকে সাথে নিয়ে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের নিয়ম। কিন্তু মাঠের পশ্চিম পাশে দাঁড়িয়ে শিক্ষার্থীসহ অন্যরা যখন অপেক্ষা করছে ঠিক তখনেই মাঠের পূর্ব পাশে উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারী দাঁড়িয়ে জাতীয় সংগীত পরিবেশন শুরু করেন। এনিয়ে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে রাজনৈতিক নেতাসহ উপস্থিত লোকজনের মধ্যে হট্রগোলের সৃষ্টি হয়।

এ বিষয়ে সাদুল্যাপুর উপজেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক ও জেলা তাঁতীদলের আহবায়ক সাবেক ভিপি আ স ম সাজ্জাদ হোসেন পল্টন বলেন, মাঠে কোন ধরণের বার্তা না দিয়ে আমাদের সকলকে অবজ্ঞা করে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। পরে সঞ্চালকের কাছে মাইক্রোফোন নিয়ে প্রতিবাদ জানাই। প্রশাসনের ইচ্ছেমতো জাতীয় সংগীত পরিবেশনের ঘটনায় অনুষ্ঠানের শৃঙ্খলা নষ্ট হয়। ফ্যাসিস্ট মুক্ত এবারের বর্ষবরণ সারাদেশে উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপিত হয়। তবে এখনো ফ্যাসিস্টদের দোসর অনেক কর্মকর্তা নানা অপতৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে। সময় এসেছে এই কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করতে হবে।

এসময় মাঠে থাকা সাদুল্যাপুর সরকারি ডিগ্রী কলেজের সহকারি অধ্যাপক মাহমদুল হক মিলন জানান, প্রশাসনের হটকারিতায় বর্ষবরণ অনুষ্ঠানটির সার্বজনীয়তা প্রশ্নবিদ্ধ হয়। এতে অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া উপস্থিত সকলে প্রতিবাদ করেন। যদিও পরবর্তীতে উপস্থিত সবার অংশগ্রহণে দ্বিতীয়বার জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়।

এদিকে, এবার বর্ষবরণ উদযাপনে উপজেলা প্রশাসনের সংকোচিত অনুষ্ঠানের আয়োজন ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাজনৈতিক দলের নেতা ও সুধিমহলসহ অনেকেই। বর্ষবরণ উপলক্ষে কোন আলোচনা সভা রাখা হয়নি। শুধু চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা আর অডিটরিয়াম হল রুমে নামমাত্র একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে বর্ষবরণ উৎসবের তাৎপর্য ও অনুষ্ঠান উপভোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছে শতশত শিক্ষার্থী ও তরুণ প্রজন্ম।

যদিও বরাদ্দকৃত অর্থের স্বল্পতা দোহাই দিয়ে সংকোচিত বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে উপজেলা প্রশাসন। অথচ প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বরাদ্দের অর্থ ব্যয়ে নিজেদের জন্য পোশাক-পরিচ্ছেদ (পাঞ্জাবী, গামছা) ক্রয় করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

এ বিষয়ে সাদুল্যাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাজী মোহাম্মদ অনিক ইসলাম বলেন, মাঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের বিষয়টি নিয়ে ভুলবোঝাবুঝি হলেও তাৎক্ষণিক তা সমাধান হয়েছে। পরে উপস্থিত সকলে মিলে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। বাজেট স্বল্পতার কারণে সীমিত পরিসরে বাংলা বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বরাদ্দের অর্থ অনুষ্ঠানের আয়োজনেই ব্যয় করা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

সাদুল্যাপুরে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বাকবিতন্ডা

সংবাদ প্রকাশের সময় : ১০:৩২:১০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৫

গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলায় হ-য-ব-র-ল অবস্থার মধ্যে দিয়ে বাংলা বর্ষবরণ-১৪৩২ উৎসব পালন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানের শুরুতেই জাতীয় সংগীত পরিবেশন নিয়ে হট্টগোল ও বাকবিতণ্ডার ঘটনা ঘটে।

বর্ষবরণ অনুষ্ঠানটি বাজেট স্বল্পতার কথা বলে সংকোচিত (সীমিত পরিসর) আয়োজন করে উপজেলা প্রশাসন। তবে বরাদ্দের অর্থ ব্যয় করে প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিজেদের জন্য বৈশাখের পোশাক-পরিচ্ছেদ ক্রয় করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

সোমবার (১৪এপ্রিল) সকাল ১১টার দিকে সাদুল্লাপুর উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত ‘পহেলা বৈশাখ উদযাপন’ অনুষ্ঠানস্থল সাদুল্যাপুর বহুমূখী পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীরা জানান, উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে বর্ষবরণ উপলক্ষে বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা শেষে হাইস্কুল মাঠে সমাবেশস্থলে অংশ নেয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, শিক্ষক-কর্মচারী ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের সদস্য এবং উপজেলা প্রশাসনের কর্মকতা-কর্মচারীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ। অনুষ্ঠানের শুরুতেই বাজানো হয় জাতীয় সংগীত ও এসো হে বৈশাখ এসো এসো গানটি। এতে বাদ পড়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সামাজিক সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের সদস্য ছাড়াও মাঠে দাঁড়িয়ে থাকা বিভিন্ন পেশার মানুষ। কোন বার্তা না দিয়েই শুধুমাত্র উপজেলা প্রশাসনের কর্মকতা-কর্মচারীরা এই জাতীয় সংগীতে অংশ নেয়।

এ বিষয়ে সাদুল্যাপুর বহুমূখী পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. এনশাদ আলী সরকার বলেন, মাঠে সমাবেশে স্থলে অংশগ্রহণকারী সকলকে সাথে নিয়ে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের নিয়ম। কিন্তু মাঠের পশ্চিম পাশে দাঁড়িয়ে শিক্ষার্থীসহ অন্যরা যখন অপেক্ষা করছে ঠিক তখনেই মাঠের পূর্ব পাশে উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারী দাঁড়িয়ে জাতীয় সংগীত পরিবেশন শুরু করেন। এনিয়ে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে রাজনৈতিক নেতাসহ উপস্থিত লোকজনের মধ্যে হট্রগোলের সৃষ্টি হয়।

এ বিষয়ে সাদুল্যাপুর উপজেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক ও জেলা তাঁতীদলের আহবায়ক সাবেক ভিপি আ স ম সাজ্জাদ হোসেন পল্টন বলেন, মাঠে কোন ধরণের বার্তা না দিয়ে আমাদের সকলকে অবজ্ঞা করে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। পরে সঞ্চালকের কাছে মাইক্রোফোন নিয়ে প্রতিবাদ জানাই। প্রশাসনের ইচ্ছেমতো জাতীয় সংগীত পরিবেশনের ঘটনায় অনুষ্ঠানের শৃঙ্খলা নষ্ট হয়। ফ্যাসিস্ট মুক্ত এবারের বর্ষবরণ সারাদেশে উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপিত হয়। তবে এখনো ফ্যাসিস্টদের দোসর অনেক কর্মকর্তা নানা অপতৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে। সময় এসেছে এই কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করতে হবে।

এসময় মাঠে থাকা সাদুল্যাপুর সরকারি ডিগ্রী কলেজের সহকারি অধ্যাপক মাহমদুল হক মিলন জানান, প্রশাসনের হটকারিতায় বর্ষবরণ অনুষ্ঠানটির সার্বজনীয়তা প্রশ্নবিদ্ধ হয়। এতে অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া উপস্থিত সকলে প্রতিবাদ করেন। যদিও পরবর্তীতে উপস্থিত সবার অংশগ্রহণে দ্বিতীয়বার জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়।

এদিকে, এবার বর্ষবরণ উদযাপনে উপজেলা প্রশাসনের সংকোচিত অনুষ্ঠানের আয়োজন ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাজনৈতিক দলের নেতা ও সুধিমহলসহ অনেকেই। বর্ষবরণ উপলক্ষে কোন আলোচনা সভা রাখা হয়নি। শুধু চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা আর অডিটরিয়াম হল রুমে নামমাত্র একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে বর্ষবরণ উৎসবের তাৎপর্য ও অনুষ্ঠান উপভোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছে শতশত শিক্ষার্থী ও তরুণ প্রজন্ম।

যদিও বরাদ্দকৃত অর্থের স্বল্পতা দোহাই দিয়ে সংকোচিত বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে উপজেলা প্রশাসন। অথচ প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বরাদ্দের অর্থ ব্যয়ে নিজেদের জন্য পোশাক-পরিচ্ছেদ (পাঞ্জাবী, গামছা) ক্রয় করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

এ বিষয়ে সাদুল্যাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাজী মোহাম্মদ অনিক ইসলাম বলেন, মাঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের বিষয়টি নিয়ে ভুলবোঝাবুঝি হলেও তাৎক্ষণিক তা সমাধান হয়েছে। পরে উপস্থিত সকলে মিলে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। বাজেট স্বল্পতার কারণে সীমিত পরিসরে বাংলা বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বরাদ্দের অর্থ অনুষ্ঠানের আয়োজনেই ব্যয় করা হয়েছে।