ঢাকা ১১:৫৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ০২ এপ্রিল ২০২৫, ১৯ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শ্রীমঙ্গলে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত ৩৯, আটক ১৪

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৯:২৩:৫১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩১ মার্চ ২০২৫ ১১ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলায় দোকানের সামনে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা রাখাকে কেন্দ্র করে পবিত্র ঈদের চাঁদ দেখারাতে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। জেলা বিএনপির সদস্য ও সাবেক পৌর মেয়র মহসিন মিয়া (মধু) ও শ্রীমঙ্গল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্য আনার মিয়ার সমর্থকদের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। উভয় পক্ষের অন্তত ৩৯ জনের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় মহসিন মিয়াসহ ১৪ জনকে আটক করেছে যৌথ বাহিনী।

রোববার (৩০ মার্চ) দিবাগত রাত একটার দিকে শহরের গদার বাজার এলাকায় অটোরিকশা রাখা নিয়ে ঘটনার সূত্রপাত। এরপর দুই পক্ষের হয়ে লড়াই করতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে শহরে জড়ো হন সমর্থকেরা। একপর্যায়ে দুই পক্ষ মারমুখী অবস্থান নেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ফাঁকা গুলি ছোড়ে পুলিশ। এ সময় শহরের বিভিন্ন মার্কেটে ঈদের কেনাকাটা করতে আসা লোকজন আটকা পড়েন। পরে দিবাগত রাত তিনটার সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, শহরের গদার বাজার এলাকায় সাবেক মেয়র মহসিন মিয়ার ‘বিনা লাভের বাজার’ নামে একটি স্টল আছে। ওই স্টলের সামনে টমটম (ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা) রাখা নিয়ে মহসিন মিয়ার সঙ্গে টমটম চালকদের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। চালকদের পক্ষে মহসিন মিয়ার সঙ্গে কথা–কাটাকাটিতে জড়ান শ্রীমঙ্গল ইউপির সাবেক সদস্য আনার মিয়া।এ সুত্রে জেরে সাবেক মেয়র মহসিন মিয়া মধু’র সন্ত্রাসী বাহিনী ১৫টি টমটম ও সাগর নামে শ্রমিক পরিবহনের একটি কারগাড়ী ভাংচুর করেন। এ খবর টমটম চালকদের এলাকা পশ্চিম ভাড়াউড়া গ্রামে পৌঁছালে ৪’শ থেকে ৫’শ জন গ্রামবাসী লাঠিসোঁটা নিয়ে শহরে আসেন। অপর পক্ষে মহসিন মিয়ার লোকজনও শহরে জড়ো হন। দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাঁদানে গ্যাসের শেল ও ফাঁকা গুলি ছোড়ে পুলিশ। পরে সেনাবাহিনী মাঠে নেমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

উপজেলা প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় শহরে দোকানপাটে আটকে পড়া সাধারণ মানুষ নিরাপদে সরিয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় হাসপাতাল সূত্রে জানাজায় উভয় পক্ষের অন্তত ৩৯ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সংঘর্ষে উপজেলার সবুজবাগ এলাকার জয় চৌধুরী নামের একজন পথচারী গুরুতর আহত হয়েছেন। তাঁকে রাতেই সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে শহরের একাধিক ব্যবসায়ী জানান, প্রতিবছর ঈদের আগের রাতে সারা রাত দোকান খোলা রাখেন তারা। এমনিতেই এবার বেচাবিক্রি কম এর মধ্যে মারামারির কারণে অনেক মালামাল অবিক্রীত থেকে গেছে। অনেকেই ঈদের কেনাকাটা করতে পারেনি। এতে ব্যবসায়ীদের অনেক ক্ষতি হয়েছে।

শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ায় শহরে বিশৃঙ্খলা তৈরি হলে পুলিশ ৫৬টি শটগানের ফাঁকাগুলি ছুড়ে দুই পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে পুলিশ ও যৌথ বাহিনীর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। এ ঘটনায় অভিযান চালিয়ে সাবেক মেয়র, বিএনপি নেতা মহসিন মিয়া মধুসহ ১৪ জনকে আটক করে থানায় হস্তান্তর করে যৌথ বাহিনী।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

শ্রীমঙ্গলে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত ৩৯, আটক ১৪

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৯:২৩:৫১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩১ মার্চ ২০২৫

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলায় দোকানের সামনে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা রাখাকে কেন্দ্র করে পবিত্র ঈদের চাঁদ দেখারাতে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। জেলা বিএনপির সদস্য ও সাবেক পৌর মেয়র মহসিন মিয়া (মধু) ও শ্রীমঙ্গল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্য আনার মিয়ার সমর্থকদের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। উভয় পক্ষের অন্তত ৩৯ জনের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় মহসিন মিয়াসহ ১৪ জনকে আটক করেছে যৌথ বাহিনী।

রোববার (৩০ মার্চ) দিবাগত রাত একটার দিকে শহরের গদার বাজার এলাকায় অটোরিকশা রাখা নিয়ে ঘটনার সূত্রপাত। এরপর দুই পক্ষের হয়ে লড়াই করতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে শহরে জড়ো হন সমর্থকেরা। একপর্যায়ে দুই পক্ষ মারমুখী অবস্থান নেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ফাঁকা গুলি ছোড়ে পুলিশ। এ সময় শহরের বিভিন্ন মার্কেটে ঈদের কেনাকাটা করতে আসা লোকজন আটকা পড়েন। পরে দিবাগত রাত তিনটার সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, শহরের গদার বাজার এলাকায় সাবেক মেয়র মহসিন মিয়ার ‘বিনা লাভের বাজার’ নামে একটি স্টল আছে। ওই স্টলের সামনে টমটম (ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা) রাখা নিয়ে মহসিন মিয়ার সঙ্গে টমটম চালকদের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। চালকদের পক্ষে মহসিন মিয়ার সঙ্গে কথা–কাটাকাটিতে জড়ান শ্রীমঙ্গল ইউপির সাবেক সদস্য আনার মিয়া।এ সুত্রে জেরে সাবেক মেয়র মহসিন মিয়া মধু’র সন্ত্রাসী বাহিনী ১৫টি টমটম ও সাগর নামে শ্রমিক পরিবহনের একটি কারগাড়ী ভাংচুর করেন। এ খবর টমটম চালকদের এলাকা পশ্চিম ভাড়াউড়া গ্রামে পৌঁছালে ৪’শ থেকে ৫’শ জন গ্রামবাসী লাঠিসোঁটা নিয়ে শহরে আসেন। অপর পক্ষে মহসিন মিয়ার লোকজনও শহরে জড়ো হন। দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাঁদানে গ্যাসের শেল ও ফাঁকা গুলি ছোড়ে পুলিশ। পরে সেনাবাহিনী মাঠে নেমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

উপজেলা প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় শহরে দোকানপাটে আটকে পড়া সাধারণ মানুষ নিরাপদে সরিয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় হাসপাতাল সূত্রে জানাজায় উভয় পক্ষের অন্তত ৩৯ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সংঘর্ষে উপজেলার সবুজবাগ এলাকার জয় চৌধুরী নামের একজন পথচারী গুরুতর আহত হয়েছেন। তাঁকে রাতেই সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে শহরের একাধিক ব্যবসায়ী জানান, প্রতিবছর ঈদের আগের রাতে সারা রাত দোকান খোলা রাখেন তারা। এমনিতেই এবার বেচাবিক্রি কম এর মধ্যে মারামারির কারণে অনেক মালামাল অবিক্রীত থেকে গেছে। অনেকেই ঈদের কেনাকাটা করতে পারেনি। এতে ব্যবসায়ীদের অনেক ক্ষতি হয়েছে।

শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ায় শহরে বিশৃঙ্খলা তৈরি হলে পুলিশ ৫৬টি শটগানের ফাঁকাগুলি ছুড়ে দুই পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে পুলিশ ও যৌথ বাহিনীর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। এ ঘটনায় অভিযান চালিয়ে সাবেক মেয়র, বিএনপি নেতা মহসিন মিয়া মধুসহ ১৪ জনকে আটক করে থানায় হস্তান্তর করে যৌথ বাহিনী।