ঢাকা ০৭:১৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩০ মার্চ ২০২৫, ১৬ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বন্দিশিবিরে আটকে রেখে নির্যাতন, বিমানবন্দরে গ্রেপ্তার ফখরুদ্দীন

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ১২:০৭:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫ ২৬ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

লিবিয়ায় মানবপাচার ও মুক্তিপণ আদায় চক্রের মূল হোতা ফখরুদ্দীনকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা সংস্থা। রোববার (১৬ মার্চ) বিকেল পৌনে ৬টার সময় মিসরের কায়রো থেকে ঢাকায় অবতরণের পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় বিমানবন্দর থেকে তাকে পালাতে সহায়তার অভিযোগে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ট্রাফিক হেলপার শওকত আলীকেও গ্রেপ্তার করা হয়।

অভিযোগ রয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে বিদেশে ভালো চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে বাংলাদেশিদের লিবিয়া পাচার করত ফখরুদ্দীন ও তার চক্র।

পরে বন্দিশিবিরে আটকে রেখে অমানবিক নির্যাতন চালানো হতো তাদের ওপর। মুক্তিপণ আদায়ের পর ভুক্তভোগীদের মুক্তি না দিয়ে অন্য চক্রের কাছে বিক্রি করে দিতেন ফখরুদ্দীন।

নির্যাতনের ভয়াবহতা সম্পর্কে পাচারের শিকার এক ভুক্তভোগী আশিকুর রহমান সুমন (২১) বলেন, আমাদের ছোট্ট একটি অন্ধকার কক্ষে আটকে রাখা হয়েছিল। দিনে একবার পচা খাবার দিত। আমাদের খাবার পানিও দিত না। যারা পরিবারের থেকে টাকা আনতে ব্যর্থ হতো তাদের লোহার রড দিয়ে পেটানো হতো।

স্বজনকে বাঁচাতে বাধ্য হয়ে মুক্তিপণের টাকা পাঠাতো ভুক্তভোগীর স্বজনরা। তবে টাকা দেওয়ার পরও মুক্তি মিলত না ভুক্তভোগীদের। তাদের আবার নতুন মাফিয়াদের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হতো। একইভাবে মুক্তিপণ আদায়ের পর সুমনসহ কয়েকজনকে অন্য একটি চক্রের কাছে বিক্রি করে দেয় ফখরুদ্দীন। সুমন সেখান থেকে পালিয়ে আসতে সক্ষম হলেও তার ১৬ সহযাত্রী এখনো সেখানে বন্দি রয়েছে।

জানা গেছে, কায়রো বিমানবন্দরে হঠাৎ ফখরুদ্দীনকে দেখতে পান সুমন। চিনতে পেরে দ্রুত তার ছবি তুলে ভুক্তভোগীদের পরিবারের কাছে পাঠান তিনি। পরে বিষয়টি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানানো হলে বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমানে ফখরুদ্দিন ও তার সহযোগীকে বিমানবন্দর থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। চক্রের বাকিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

বন্দিশিবিরে আটকে রেখে নির্যাতন, বিমানবন্দরে গ্রেপ্তার ফখরুদ্দীন

সংবাদ প্রকাশের সময় : ১২:০৭:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫

লিবিয়ায় মানবপাচার ও মুক্তিপণ আদায় চক্রের মূল হোতা ফখরুদ্দীনকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা সংস্থা। রোববার (১৬ মার্চ) বিকেল পৌনে ৬টার সময় মিসরের কায়রো থেকে ঢাকায় অবতরণের পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় বিমানবন্দর থেকে তাকে পালাতে সহায়তার অভিযোগে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ট্রাফিক হেলপার শওকত আলীকেও গ্রেপ্তার করা হয়।

অভিযোগ রয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে বিদেশে ভালো চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে বাংলাদেশিদের লিবিয়া পাচার করত ফখরুদ্দীন ও তার চক্র।

পরে বন্দিশিবিরে আটকে রেখে অমানবিক নির্যাতন চালানো হতো তাদের ওপর। মুক্তিপণ আদায়ের পর ভুক্তভোগীদের মুক্তি না দিয়ে অন্য চক্রের কাছে বিক্রি করে দিতেন ফখরুদ্দীন।

নির্যাতনের ভয়াবহতা সম্পর্কে পাচারের শিকার এক ভুক্তভোগী আশিকুর রহমান সুমন (২১) বলেন, আমাদের ছোট্ট একটি অন্ধকার কক্ষে আটকে রাখা হয়েছিল। দিনে একবার পচা খাবার দিত। আমাদের খাবার পানিও দিত না। যারা পরিবারের থেকে টাকা আনতে ব্যর্থ হতো তাদের লোহার রড দিয়ে পেটানো হতো।

স্বজনকে বাঁচাতে বাধ্য হয়ে মুক্তিপণের টাকা পাঠাতো ভুক্তভোগীর স্বজনরা। তবে টাকা দেওয়ার পরও মুক্তি মিলত না ভুক্তভোগীদের। তাদের আবার নতুন মাফিয়াদের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হতো। একইভাবে মুক্তিপণ আদায়ের পর সুমনসহ কয়েকজনকে অন্য একটি চক্রের কাছে বিক্রি করে দেয় ফখরুদ্দীন। সুমন সেখান থেকে পালিয়ে আসতে সক্ষম হলেও তার ১৬ সহযাত্রী এখনো সেখানে বন্দি রয়েছে।

জানা গেছে, কায়রো বিমানবন্দরে হঠাৎ ফখরুদ্দীনকে দেখতে পান সুমন। চিনতে পেরে দ্রুত তার ছবি তুলে ভুক্তভোগীদের পরিবারের কাছে পাঠান তিনি। পরে বিষয়টি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানানো হলে বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমানে ফখরুদ্দিন ও তার সহযোগীকে বিমানবন্দর থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। চক্রের বাকিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।