যশোরে ইটভাটা থেকে ২ কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে পরিবেশ অধিদপ্তর
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ১১:৫১:১৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৫ ১৬ বার পড়া হয়েছে
যশোরে তের- চৌদ্দ বছর ধরে ইটভাটা ব্যবসা চালিয়ে গেলেও লাইসেন্স প্রপ্তি থেকে বঞ্চিত রয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। নানা অজুহাতে পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা লাইসেন্স প্রদানে তালবাহানা করছেন। অথচ, শতাধিক এই সব ইটভাটা থেকে বছরে তারা দুই কোটির অধিক টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ।
যশোর ইটভাটা ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, যশোরে পরিবেশ অধিদপ্তরের দেওয়া ছাড়পত্রে বৈধ ইটভাটা ৩০ টি এবং অবৈধ (তথাকথিত) ইটভাটা ১১৬টি। এই বৈধ এবং অবৈধ মিলে ১৪৬ টি ইটভাটা রয়েছে। যশোর পরিবেশ অধিদপ্তর ‘১১৬ অবৈধ’ ইটভাটার ব্যবসা পরিচালনার জন্য বছরের দুই লাখ টাকা করে দুই কোটি ৩২ লাখ টাকারও অধিক হাতিয়ে নিচ্ছে।
যশোর ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি নাজির আহমেদ মুন্নু (ভৈরব ব্রিকস) ও সাধারণ সম্পাদক সেলিম রেজা বাবুল (মেসার্স ফাইল ব্রিক্স) জানান, আমরা প্রতি বছর কাস্টম ভ্যাট ৫ লাখ, ইউনিয়ন পরিষদের ট্যাক্স ও ট্রেড লাইসেন্স ৫০হাজার, ভূমি উন্নয়ন কর ৩০ হাজার, জেলা প্রশাসকের এলআর ফান্ডে ৫০হাজার, বিভিন্ন অকেশনে (১৬ই ডিসেম্বর ২৬ শে মার্চ) ৫-৭ হাজার, কল কারখানা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শকের ছাড়পত্র বাবদ ১০ হাজার, বিএসটিআই অনুমোদন ৪০ হাজার, ফায়ার সার্ভিসের ছাড়পত্র ১৫ হাজার, ভূমি উন্নয়ন খাজনা ৩০ হাজার টাকা দিয়ে আসছি।
প্রতি বছর ইটভাটা মালিকরা ১০ লক্ষাধিক টাকা সরকারকে রাজস্ব দিলেও বৈধতা পাচ্ছেন না। আমাদের দাবি, যশোরে ১১৬টি অবৈধের ভাটা একেবারে বন্ধ করে দিক, তা না হলে বৈধতা দিক। পরিবেশ অধিদপ্তর যদি টাকা না নিতো আমাদের ভাটাগুলো চলছে কীভাবে।
অভয়নগর ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি আফসার আলী ও চৌগাছা ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি তৌহিদ দেওয়ান জানান, একটি ইটভাটায় দেড় থেকে দুইশ’ শ্রমিক কাজ করে। ১৪৬টি ভাটায় কাজ করে ৩০ হাজারের অধিক শ্রমিক। প্রতিটি শ্রমিকের পরিবারে যদি চারজন করে সদস্য থাকে, তা হলে এক লক্ষ বিশ হাজার লোকের পেট চলে এই ইটভাটা থেকে। পরিবেশ অধিদপ্তর ১ লাখ ২০ হাজার লোকের রুটি রুজি নিয়ে যে ইঁদুর-বিড়াল খেলা খেলছে, তা মেনে নেওয়া কঠিন। অথচ পরিবেশ অধিদপ্তর টাকা নিয়েও আমাদের ছাড়পত্র দেয় না। বছরের শুরুতেই অভিযানের নামে পরিবেশ অধিদপ্তর ইটভাটায় হামলা চালায়। প্রতি ভাটা থেকে দুই লাখ তাদের হাতে পৌঁছালেই ঝামেলা শেষ। যে ইটের ভাটার টাকা বকেয়া ( দিতে দেরি হয়)। সেখানেই ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে দুই- তিন লাখ টাকা জরিমানা করে আদায় করে। তাহলে এই যে ভ্যাটসহ বিভিন্ন খাতে টাকা দেই সেগুলো অবৈধ। আমাদের দাবি, যশোরে ১১৬টি অবৈধ ভাটা একেবারে বন্ধ করে দিক, তা না হলে বৈধতা দিক বলেন ইট ভাটা মালিকরা।
যশোর পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো.ইমদাদুল হক বাংলা টাইমসকে বলেন, যশোর পরিবেশ অধিদপ্তরের কোনো কর্মকর্তা ইটভাটা থেকে কোন অবৈধ সুযোগ-সুবিধা নেন কী আমার জানা নাই।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যখন পারি তখনই অভিযানে যাই জনবল কম। তথ্য গোপনের ক্ষেত্রে বরলে এটা সহকারী পরিচালক সৌমেন মিত্রের তথ্য গোপন করেছে এটা আর হবে না।
জানতে চাইলে যশোরের জেলা প্রশাসক যশোরের জেলা প্রশাসক মো. আজহারুল ইসলাম বলেন, যশোরে নতুন এসেছি আমি এখানকার অনেক কিছুই আমার অজানা। আগে কী হয়েছে, জানা নেই। তবে ইটের ভাটায় লাইসেন্স বা ছাড়পত্র এটা পরিবেশ অধিদপ্তরের বিষয়।
ইটভাটার লাইসেন্স নিতে হলে ইকোফ্রেন্ডলি বা পরিবেশবান্ধব হতে হবে। এটা ২০২৫ -২০২৬ চালু হচ্ছে জানান তিনি।